স্ট্যাটাস রক্ষা করতে গিয়ে ঈমান বিসর্জন!
কথিত ‘সামাজিক স্ট্যাটাস’ বজায় রাখতে গিয়ে মুসলমানরা যে কি রকম বেহাল অবস্থায় পড়েছে, এটা ভালোভাবে উপলব্ধি করার জন্য একটি ঘটনা উল্লেখ করতে হয়....
কিতাবে বর্ণিত আছে, এক পিতা তার পুত্রকে নিয়ে
একটি গাধা বিক্রয় করার জন্য হাটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলো। পথিমধ্যে কয়েকজন লোক বলাবলি
করতে লাগলো- ‘এরা বাপ-বেটা দেখি আরো বড় গাধা। দুজনে না হেঁটে একজন গাধার পিঠে উঠলেই
হয়।’ তাদের কথা শুনে পিতা তার ছেলেকে গাধার পিঠে উঠিয়ে হাঁটা দিলো। এভাবে কিছুদূর যেতেই
আরো কিছু লোক বললো- দেখ, ছেলেটা কতবড় বেয়াদব, বয়স্ক পিতাকে গাধার পিঠে না উঠিয়ে নিজেই গাধার পিঠে চড়ে বসেছে।
তাদের এ কথা শুনে ছেলে দ্রুত গাধার পিঠ থেকে নেমে তার পিতাকে গাধার পিঠে উঠালো। এভাবেই
চলতে চলতে আবারো কিছু লোক বলতে লাগলো- কেমন পাষন্ড পিতা, ছোট্ট ছেলেটাকে হাঁটিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, আর নিজে গাধার পিঠে আরাম করে বসে আছে। এ কথা শুনে পিতা তার ছেলেকেও
গাধার পিঠে উঠিয়ে নিলো। পিতা-পুত্র একসাথে গাধার পিঠে চড়ে যেতে লাগলো। তাদেরকে এ অবস্থায়
দেখে- এবার আরো কিছু লোক বলতে লাগলো- দেখ,
এরা কেমন
যালিম, একটি অবলা নিরীহ প্রাণীর পিঠে
দু’জনে উঠে বসেছে। এত মানুষের এত কথা শুনে পিতা-পুত্র দুজনেই গাধার পিঠ থেকে নেমে গাধাকে
বেঁধে নিজেদের কাঁধে চড়িয়ে রওয়ানা হলো। কিছুদূর যেতেই পথিমধ্যে একটি সাঁকো পার হতে
গিয়ে পিতা-পুত্র গাধাসহ সাঁকো ভেঙ্গে পানিতে পড়ে গেলো। পানির স্রোতে গাধা ভেসে গেলো।
এত এত মানুষের কথা আর সামাজিক স্ট্যাটাস বজায় রাখতে গিয়ে বিড়ম্বনার শিকার পিতা-পুত্র
দুজনেই শেষ পর্যন্ত এভাবেই নিজেদের মান-সম্মানের সাথে সাথে অর্থ-সম্পদও হারালো।
পাঠক! হয়তো ঘটনাটি পড়ে মনে মনে হাসছেন। অথচ আপনি একটু ভেবে দেখুন- কিভাবে পিতা-পুত্রের
মতোই আজকের মুসলমানরা শুধু কেবল সমাজের দশজনের কথা শুনে, তাদের সামনে নিজের স্ট্যটাসকে বজায় রাখতে গিয়ে এক এক করে ইসলাম
ছেড়ে দিচ্ছে। মুসলমান আজ দাড়ি রাখতে লজ্জা পায়, টুপি পরতে লজ্জা পায়, সুন্নতী পোশাক পরিধান
করতে লজ্জা পায়, সুন্নত পালন করতে লজ্জা
পায়। নাউযুবিল্লাহ!
শুধু ইসলাম ছেড়েই তারা থামেনি, গাধাকে কাঁধে নেয়ার মতো
করে তারা আজ কাফির-মুশরিকদের আচার-সংস্কৃতি,
তাদের প্যান্ট, শার্ট, কোট, টাই পরিধান করে গর্ব করে। হিন্দুদের পূজায় গিয়ে তাদের কীর্তন
শুনে, তাদের পূজার প্রসাদ খেয়ে প্রশংসা
করে। নাউযুবিল্লাহ!
অথচ সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি জেরুজালেম বিজয়ের আনুষ্ঠানিক
আহারপর্বেও নিজ দস্তরখানা থেকে রুটির টুকরোগুলো উঠিয়ে খেয়ে নিয়েছেন। জনৈক ব্যক্তি উনাকে
সামাজিক স্ট্যটাসের কথা বললে- তিনি জোর গলায় বলে উঠলেন- এসব বিধর্মীদের সামনে আমি
‘সুন্নত মুবারক’ উনার আমল পরিত্যাগ করবো?
অথচ এসব
সুন্নত মুবারক পালনই আমাদের সম্মান ও মর্যাদার কারন। সুবহানাল্লাহ!
No comments