Header Ads

Islamic Quotes Urdu Facebook Cover. QuotesGram

খাছ সুন্নতী সবজি কদু খাওয়ার বহুমাত্রিক উপকারিতা






পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে রয়েছে-

 হযরত আনাস ইবনে মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে একজন দর্জী ছাহাবী রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি দাওয়াত করলেন। হযরত আনাস ইবনে মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ওই দাওয়াত কবূল করে উপস্থিত হলেন। উনার মুবারক খিদমতে কদু ও গোশতের টুকরাসহ শুরুয়া এবং রুটি পেশ করা হলো। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাত মুবারক দিয়ে পেয়ালা থেকে বেছে বেছে কদুর টুকরা কয়েববার উঠিয়ে খেলেন। হযরত আনাস ইবনে মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন- সেদিন হতে আমি সবসময় কদুকে মুহব্বত করে থাকি, যদিও পূর্বে মুহব্বত করতাম না।” 

(বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, আহমদ শরীফ)


খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন: “হে আমার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি কায়িনাতবাসীকে জানিয়ে দিন, কায়িনাতবাসী যদি তোমরা আমাকে মুহব্বত করে থাকো অর্থাৎ যদি আমার (মহান আল্লাহ পাক) মুহব্বত পেতে চাও, তাহলে তোমরা আমাকে ইত্তিবা করো অর্থাৎ তারা যেন আপনাকে ইত্তেবা (অনুসরণ) করে। তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদের গুনাহখতা ক্ষমা করবেন, তাদের প্রতি দয়ালু হবেন, তাদেরকে মুহব্বত করবেন। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি ক্ষমাশীল ও দয়ালু।” (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ)

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কদু খেতে অত্যন্ত পছন্দ করতেন। আর তাই কদু খাওয়া সম্মানিত খাছ সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত। আর এই কারণে কদু অত্যস্ত সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর একটি সবজি। কদুর পাতা ও ডগা শাক হিসেবে এবং কদু তরকারী, সালাদ ও ভাজি হিসেবে খাওয়া হয়। মুসলমানগণ উনাদের কাছে কদু অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি সবজি। বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতের কদু চাষ হয়।


উল্লেখ্য, প্রতি ১০০ গ্রাম কদুতে আছে- কার্বোহাইড্রেট ২.৫ গ্রাম, প্রোটিন ০.২ গ্রাম, ফ্যাট ০.৬ গ্রাম, ভিটামিন-সি ৬ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২০ মি.গ্রা., ফসফরাস ১০ মি.গ্রা, পটাশিয়াম ৮৭ মি.গ্রা., নিকোটিনিক অ্যাসিড ০.২ মি.গ্রা.। এছাড়াও কদুতে রয়েছে খনিজ লবণ, ভিটামিন বি-১, বি-২,ও আয়রন।

যেহেতু কদুর মূল উপাদান হলো- পানি; তাই কদু খেলে দেহ ঠা-া থাকে। দীর্ঘক্ষণ ধরে রোদে কাজ করার পর কদুর তরকারী খেলে দেহ বেশ ঠা-া হয় এবং দেহের ভেতরের অস্বস্তি লাগা অনেকটা কমে যায়। গরমের কারণে আমাদের দেহ থেকে যে পানি বের হয়ে যায়, কদু খেলে সেটার অনেকটাই পূরণ হয়। তাই প্রচ- গরমের সময় কদু খেলে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকিও কমে যায়।

মহান আল্লাহ পাক উনার বিশেষ কুদরত যে- সুন্নতী সবজি কদুতে আছে- প্রাকৃতিক প্রোটিন ও ভিটামিন। তাই নিয়মিত কদু খেলে ত্বক ভেতর থেকে ভালো হয়। ত্বকের আর্দ্রতা ঠিক থাকে। এছাড়াও যাদের ত্বক তৈলাক্ত তাদের ত্বকের তৈলাক্ততার সমস্যা অনেকটাই কমে যায় কদু খেলে। এছাড়ও কদু কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে পেট পরিষ্কার রাখে। ফলে মুখে ব্রণ উঠার প্রবণতাও কমে যায়।

সুন্নতী সবজি কদু বেশি ওজন কমাতে সাহায্য করে। কদুতে প্রচুর পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার থাকে, যা ওজন কমাতে অত্যন্ত সহায়ক। নিয়মিত কদু খেলে দেহ কম ক্যালোরিযুক্ত হবে। ফলে ওজনের ভারসাম্য রক্ষা হয়।

জ্বর, ডায়রিয়া ও অন্যান্য বড় ধরনের অসুখে দেহে পানির অভাব দেখা দেয়। এসব রোগে দেহ হতে প্রচুর পরিমাণে পানি বের হয়ে যায় বলে পানিশূন্যতার সৃষ্টি হয় এবং তা কিডনির উপর প্রভাব ফেলে। সুন্নতী সবজি কদুতে প্রচুর পানি থাকে, যা দেহের পানির পরিমাণ ঠিক রাখতে সাহায্য করে। তাই এ ধরনের অসুখের সময় অধিক পরিমাণে কদু খেলে দেহের পানিশূন্যতা দূর হয়ে যায় এবং দেহ সতেজ থাকে।

সুন্নতী সবজি কদু হজমে সাহায্য করে। কদুতে প্রচুর পরিমাণে দ্রবণীয় এবং অদ্রবণীয় ফাইবার আছে। দ্রবণীয় ফাইবার খাবার সহজে হজম করতে সাহায্য করে এবং হজম সংক্রান্ত সকল সমস্যা সমাধানে সহায়তা করে। তাই নিয়মিত সুন্নতী সবজি কদু খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য, অর্শ, পেটফাঁপা ও অ্যাসিডিটি সমস্যা সমাধানে খুবই উপকার পাওয়া যায়। অদ্রবণীয় ফাইবার পাইলসের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।

নিয়মিত সুন্নতী সবজি কদু খাওয়া হার্টের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কদুতে কলেস্টেরল পরিমাণ শূন্য; যা হার্টের রোগীদের সুস্থ রাখতে অত্যন্ত সহায়ক। এতে ভিটামিন-সি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট প্রচুর পরিমাণে রয়েছে; যা হার্টের জন্য খুবই উপকারী।



সুন্নতী সবজি কদুর বেশিরভাগ অংশ পানি দ্বারা পূর্ণ; যা খেলে দেহের উপর শীতল প্রভাব ফেলে। ফলে মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। অর্থাৎ নিয়মিত কদু খেলে মানসিক চাপ কমে। উচ্চ রক্তচাপবিশিষ্ট রোগীদের জন্য কদু আদর্শ সবজি।

সুন্নতী সবজি কদুতে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকায় নিয়মিত কদু খেলে প্রসাবে কোনো সমস্যা হয় না। প্রস্রাবের জ্বালা-পোড়ার সমস্যা দূর করতে এবং প্রসাব যাতে হলুদ না হয়, সেজন্য নিয়মিত কদু খাওয়া খুবই জরুরী।


সুন্নতী সবজি কদু দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। নিদ্রাহীনতা দূর করে পরিপূর্ণ ঘুমের জন্য কদু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কদুতে রয়েছে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস, যা দেহের ঘামজনিত লবণের ঘাটতি দূর করে। দাঁত ও হাঁড়কে মজবুত করে।

অর্থাৎ সুন্নতী সবজি কদুকে মহান আল্লাহ পাক তিনি বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে হিফাযত থাকার উসীলা এবং বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে আরোগ্য লাভেরও উসীলা করেছেন।

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কদুকে পছন্দ করার কারণে মহান আল্লাহ পাক তিনি কদুর মধ্যে এত বেশুমার রহমত, বরকত, নিয়ামত দান করেছেন এবং কদু এত উপকারিতায় সমৃদ্ধ হয়েছে।

মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সকলকে নিয়মিত কদু খেয়ে সুমহান সুন্নত মুবারক উনার ইত্তেবা (অনুসরণ) করার তওফীক দান করুন। (আমীন)

No comments

ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য।

  ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য। ডাল খাওয়ার ফলে কলব প্রসারিত হয় এবং চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পায়। পূর্ববর্তী হযরত নবী-রসুল আলাইহিমুস সালাম উ...

Powered by Blogger.