নবীপ্রেমের একটি সুন্দর ঘটনা। পড়ুন চোখে পানি চলে আসবে ।
আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। তিনিও বিশিষ্ট ছাহাবী। যদিও তিনি সপ্তম হিজরীতে ঈমান এনেছেন। সবচেয়ে বেশি হাদীছ শরীফ তিনি বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন যে, আমি সপ্তম হিজরীতে বাইয়াত হওয়ার পর, ঈমান আনার পর থেকে আল্লাহ পাক-এর হাবীব থেকে জুদা হয়নি। আমি কখনো ব্যবসা করিনি। চাকুরী করিনি। টাকা-পয়সার জন্য কখনও আমি সেই মসজিদুন নববী শরীফ থেকে বের হইনি। আমি আহলে ছুফ্ফার অন্তর্ভূক্ত থাকতাম খেয়ে, না খেয়ে। অর্থাৎ দেখা যেত একাধারে ২ দিন, ৪দিন, ৫দিনও উনার খাওয়ার কোন ব্যবস্থা হতনা। উনি কারো কাছে খাবার তলবও করতেন না। তারপরেও এত কষ্ট করেও তিনি একাধারা থেকেছেন ইল্ম্ অর্জন করার জন্য। আল্লাহ পাক-এর হাবীব-এর ছোহবত ইখতিয়ার করার জন্য।
একবারের ঘটনা, একটা কিতাবে বর্ণিত রয়েছে যে, তিনি যেহেতু কোন কাজ করতেন না। সারাদিন সেখানে পড়ে থাকতেন। আল্লাহ পাক -এর হাবীব-এর ছোহবত ইখতিয়ার করতেন। ইল্ম্ অর্জন করতেন। এমন অবস্থা হলো ২৪ ঘণ্টা উনার মাথা ঘুরাতো। তিনি দাঁড়াতে পারতেন না, বসতে পারতেন না, শুয়ে থাকতে হত ক্ষুধার কারণে। তখন তিনি প্রথম আফদ্বালুন নাছ, বা’দাল আম্বিয়া হযরত আবু বকর ছিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত উমর বিন খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, আরো কয়েকজন ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম আসলে উনাদেরকে ইশারা করলেন কাছে আসার জন্য। উনারা বুঝতে পারলেন যে, উনি ক্ষুধার কারণে এই অবস্থা হয়েছে। উনাদের কাছে তেমন খাদ্য ছিল না যে, উনারা দিবেন। উনারা চলে গেলেন। লোকেরা বলাবলি করতে লাগল যে, হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে জিনে ধরেছে। নাউযুবিল্লাহ।
আল্লাহ পাক-এর হাবীব আসলেন। এসে বুঝতে পারলেন। বললেন, হে আবু হুরায়রা! এদিকে আস। তিনি আসলেন। বসালেন। কিছুক্ষণ পর দেখা গেল, এক পেয়ালা দুধ আসল। এক পেয়ালা দুধ যখন আসল। হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে কাছে ডাকলেন। কাছে আস। তিনি বলেন, তিনি নিজে বর্ণনা করেছেন যে, আমি মনে মনে চিন্তা করলাম, ঠিক আছে আল্লাহ পাক-এর হাবীব যখন আমাকে ডেকেছেন, এই পেয়ালা দুধ পান করলে হয়ত আমার শরীরটা সুস্থ হয়ে যাবে। কিন্তু আল্লাহ পাক-এর হাবীব কি বললেন? হে আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! এক কাজ কর, দেখত বাইরে কতজন রয়েছে, তাদের সবাইকে ডাক।
হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি নিজে বলতেছেন যে, আমি তখন মনে মনে চিন্তা করলাম। আল্লাহ পাক-এর হাবীব-এর একটা সুন্নত রয়েছে সেটা হচ্ছে যিনি বণ্টন করেন তিনি শেষে খান। এখনতো আমাকে বণ্টন করতে দেয়া হবে। বাইরে কত লোক রয়েছে? গুনে দেখা গেল, ৮০ জন লোক রয়েছে। ৮০ জন। সবাইকে ডাকা হলো হুজরা শরীফে।
আল্লাহ পাক-এর হাবীব বললেন, হে হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তাহলে সবাইকে দাও। উনি বললেন, আমি মনে মনে চিন্তা করলাম? যাও একটা খাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছিল, এখন দেখা যাচ্ছে, হয়ত আমি আর কিছুই পাবনা। কারণ, ৮০ জনকে এক পেয়ালা দুধ খাওয়ালে কি থাকতে পারে? আল্লাহ পাক-এর হাবীব বললেন, হে হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! দিতে থাক। আল্লাহ পাক-এর উপর তাওয়াক্কুল করে দিতে থাক। আল্লাহ পাক রিযিকের মালিক, বরকতের মালিক।
তিনি একে একে একজন একজন করে ৮০ জনকে পান করালেন। দুধ যেমন ছিল তেমনই রয়ে গেল। সুবহানাল্লাহ।
(পবিত্র হাদীছ শরীফ)
No comments