Header Ads

Islamic Quotes Urdu Facebook Cover. QuotesGram

শবে বরাতে রিযিক বৃদ্ধি করা হয় এবং কতজন জন্মগ্রহণ করবে ও কতজন মৃত্যুবরণ করবে তা ধার্য করা হয় | এটা কুরআন-সুন্নাহ সম্মত কি-না?





উপরোক্ত বক্তব্যের সঠিক জবাব হলো, হ্যাঁ, এটা অবশ্যই কুরআন-সুন্নাহ সম্মত | যেমন, এ প্রসঙ্গে কালামুল্লাহ শরীফে “সূরা দুখান”-এর ৪নং আয়াত শরফে আল্লাহ্ পাক ইরশাদ করেন-

فيها يفرق كل امر حكيم
অর্থ: “এটি (শবে বরাত) এমন এক রাত যে রাতে সমস্ত প্রজ্ঞাসম্পন্ন বিষয়ের ফায়সালা করা হয় |”

# এ আয়াত শরীফের ব্যাখ্যায় হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে-
فيها ان يكتب كل مولود من بنى ادم فى هذه السنة وفيها ان يكتب كل هالك من بنى ادم فى هذه السنة وفيها ترفع اعمالهم وفيها تنزل ارزاقهم.
অর্থ:বরাতের রাতে ফায়সালা করা হয় কতজন সন্তান এক বৎসরে জন্ম গ্রহণ করবে এবং কতজন সন্তান মৃত্যু বরণ করবে | এ রাত্রিতে বান্দাদের আমল (আল্লাহ্ পাক-এর নিকট) পেশ করা হয় এবং এ রাত্রিতে বান্দাদের রিযিকের ফায়সালা করা হয় |”
(বাইহাক্বী, মিশকাত)

# উক্ত আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় রঈসুল মুফাসসিরীন হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন-
قد اخبر الله سجانه عن هذه الليلة المبار كة التى هى ليلة النصف من شعبان انه تعالى يفرق فيها كل امر من اموره المحكمة .
অর্থ: “মহান আল্লাহ্ পাক তিনি ‘লাইলাতুম্ মুবারাকাহ্’ অর্থাৎ বরকতময় রাত্রি বলতে শা’বান মাসের মধ্য রাত অর্থাৎ শবে বরাতকে বুঝিয়েছেন | আল্লাহ্ পাক তিনি এ রাতে সকল প্রজ্ঞা সম্পন্ন বিষয়ের ফায়ছালা করে থাকেন |”
(ছফওয়াতুত্ তাফসীর)

# এ প্রসঙ্গে তাফসীর জগতের সুবিখ্যাত এবং সুপ্রসিদ্ধ তাফসীর, “তাফসীরে ইবনে কাছীর”-এর ৪র্থ খণ্ডের ২১০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-

ومن قال انها ليلة النصف من شعبان كما روى عن عكرمة ..... والحديث الذى رواه عبد الله بن صالح عن الليث عن عقيل عن االزهرى. اخبرنى عثمان بن محمد بن المغيرة الاخنس فال ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال تقطع الاجال من شعبان الى شعبان حتى ان الرجل لينكح ويولد له وقد اخرج اسمه فى الموتى.
অর্থ: “যারা বলে থাকেন লাইলাতুম মুবারাকা দ্বারা উদ্দেশ্য অর্ধ শা’বানের রাত তথা শবে বরাত | তারা দলীল হিসেবে পেশ করেন যেমন, হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে ছলেহ রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত লাইছ রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণনা করেন, তিনি হযরত আকীল রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে, তিনি হযরত ইমাম যুহরী রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণনা করেছেন | তিনি বলেন, আমাদের কাছে হযরত উসমান ইবনে মুহম্মদ ইবনে মুগীরা ইবনে আখনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেছেন | তিনি বলেন, হযরত রসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, এক শা’বান থেকে পরবর্তী শা’বান পর্যন্ত অর্থাৎ ১৫ই শা’বান হতে পরবর্তী ১৫ই শা’বান পর্যন্ত মৃতদের তালিকা প্রস্তুত করা হয় এবং এমনকি ব্যক্তির বিবাহ সেই বৎসর তার কি সন্তান জন্মলাভ করবে এবং সেই বৎসর কখন মৃত্যুবরণ করবে তার যাবতীয় তালিকা প্রস্তুত করা হয় এই শবে বরাতে |”
(অনুরূপভাবে তাফসীরে জালালাইন শরীফ-এর ৪১০ পৃষ্ঠায় ২২ নম্বর হাশিয়ায় উল্লেখ আছে)

# হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে-
عن حضرت محمد بن الميسرة بن الاخفش رحمة الله عليه ان رسول الله صلى الله على وسلم قال يقطع الا جال من شعبان الى شعبان حتى ان الر جل لينكح ويولد له ولقد اجرج اسمه فى الموتى.

অর্থ: “হযরত মুহম্মদ ইবনে মাইসারা ইবনে আখফাশ রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণিত রয়েছে, রসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, শা’বান মাসে (শবে বরাতে) পরবর্তী শাবান মাস পর্যন্ত মৃত্যুর ফায়ছালা করা হয় | এমনকি লোকেরা যে বিবাহ করবে এবং ওই বৎসর তার থেকে সন্তান জন্মগ্রহণ করবে তার তালিকাও প্রস্তুত করা হয় এবং ওই বৎসরে মৃত্যুদের নামেরও তালিকা প্রস্তুত করা হয় |”
(তাফসীরে মাযহারী ৮ম খণ্ড, ৩৬৮ পৃষ্ঠা)

# “তাফসীরে মাযহারী”-এর ১০ খণ্ডে উল্লেখ আছে-
قال عكر مة تقدير المقادير وابرام الامور فى ليلة النصف من شعبان فيها ينسخ الاحياء من الاموات فلا يز داد فيهم ولاينقص منهم ويؤيده.
অর্থ:হযরত ইকরামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, স্থিরকৃত যাবতীয় বিষয়গুলো যথাসময়ে নির্ধারণ ও ফায়ছালা করা হয়ে থাকে মধ্য শাবানের রাতে তথা শবে বরাতে | এই রাতে তালিকা প্রস্তুত করা হয় মৃত্যু ও জীবিতদের | এই তালিকা থেকে কোন বৃদ্ধিও করা হয়না এবং কোন কমতিও করা হয়না | বরং তা সুদৃরভাবে সম্পন্ন করা হয় |”

# বিশ্বখ্যাত তাফসীর তাফসীরে মাদিরক-এ ليلة المباركة এ আয়াতাংশের তাফসীরে উল্লেখ আছে-
وهذه الليلة مفرق كل أمر حكيم ومعنى يفرق يفصل ويكتب كل أمر من ارزاق العباد واجالهم وجميع أمورهم من هذه الليلة الى ليلة القدرالتى تجى فى السنت المقبلة
অর্থ: ليلة مباركة (লাইলাতুম মুবারাকাহ) দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে অর্ধ শা’বানের রাত তথা শবেবরাত এবং এই মুবারকময় রাতে সকল প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয়সমূহের ফায়সালা করা হয় | আয়াত শরীফ-এর يفرق শব্দের অর্থ হচ্ছে يفصل (ইউফাছছালু) তথা ফায়ছালা করা, এবং يكتب (ইউকতাবু) তথা লেখা হয় প্রত্যেক বান্দাদের রিযিক বা জীবিকাসমূহ | তাদের মৃত্যুর সময় সীমাও লেখা হয় এবং সমস্ত বিষয়ের তালিকা লেখা হয় এই মুবারক রাতে তথা শবে বরাতে | আর ক্বদর রাতে তথা মর্যাদাবান রাতে ওই সমস্ত ফায়সালাকৃত বিষয়গুলো চালু করা হয় তথা কার্যকরী করা হয় যা সামনের এক বৎসর পর্যন্ত চলতে থাকে |

(তাফসীরু হাশিয়াতিল খাযিন ৪র্থ খণ্ড, পৃঃ ১১২)

# হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে-
عن حضرت ابن عباس رضى الله تعالى عنه ان الله يقضى الاقضية فى اليلة النصف من شعبان ويسلمها الى ار بابها فى ليلة القدر.
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত আছে, হযরত রসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, অর্ধ শাবানের রাতে তথা শবে বরাতে আল্লাহ্ পাক তিনি যাবতীয় বিষয়ের সিদ্ধান্ত চূরান্ত করেন আর ক্বদর রাতে সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন বা কার্যকরী করার জন্য তালিকা অর্পণ করেন বাস্তবায়নকারী ফেরেশতাগণের হাতে |”
(তাফসীরে খাযিন ৪র্থ খণ্ড, ১১২ পৃষ্ঠা)

# হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে-
عن ام المؤمنين حضرت عائشة عليها السلام ان النبى صلى الله عليه وسلم كان يصوم شعبان كله فسالته قال ان الله تعالى يكتب فيه كل نفس ميتة تلك السنة.
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্ব আলাইহাস সালাম তিনি বর্ণনা করেন, রসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পূর্ণ শা’বান মাসে রোযা রাখতেন অতঃপর আমি রসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলাম | তিনি জবাবে বললেন, শাবান মাসে (শবে বরাতে) ওই বৎসর যারা ইন্তিকাল করবে তাদের প্রত্যেকেরই তালিকা প্রস্তুত করা হয় |”
(তাফসীরে দুররে মানছুর ৬ষ্ঠ খণ্ড ২৬ পৃষ্ঠা)

অতএব, “শা’বানের মধ্য রাতে অর্থাৎ শবে বরাতে রিযিক বৃদ্ধি করা হয় এবং কতজন জন্মগ্রহণ করবে এবং কতজন মৃত্যুবরণ করবে তা ধার্য বা ফায়ছালা করা হয়”- এটা সম্পূর্ণরূপে কুরআন-সুন্নাহ্ সম্মত তা উপরোক্ত বিশ্ববিখ্যাত, নির্ভরযোগ্য হাদীছ শরীফ, তাফসীর, শরাহ ও ব্যাখ্যাগ্রন্থ থেকে প্রমাণিত হলো |

সুতরাং এর বিপরীত বক্তব্য পেশ করা সম্পূর্ণরূপে কুফরীর অন্তর্ভূক্ত | কোন মুসলমান কুফরী করলে সে ইসলাম ও মুসলমান থেকে খারিজ হয়ে প্রকাশ্য মুরতাদ ও কাফিরে পরিণত হয়ে যাবে |

{ দলীলসমূহ: তাফসীরে খাযিন, বাগবী, কুরতুবী, কবীর, ইবনে কাছির, মাযহারী, রুহুল বয়ান, রুহুল মায়ানী, আবী সউদ, বাইযাবী, দুররে মানছুর, জালালাইন, কামালাইন, তাবারী, লুবাব, নাযমুদ দুরার, গরায়িব, মাদারিক, ছফওয়াতুত্ তাফসীর, যাদুল মাছীর, আল মুহাররারুল ওয়াজিয, মাওয়াহিব, হাশিয়ায়ে শিহাব, ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, দুররে মাছূন, কাশশাফ, দিয়াউল কুরআন, আহকামুল কুরআন, কাসীমী, মিযান, মাওয়ারদী, নূরুল ইরফান, তাফহিমুল কুরআন, বাইহাক্বী, মিশকাত, মিরকাত, আশআতুল লুময়াত, লুময়াত, শরহুত্ব ত্বীবী, তালিকুছ্ ছবীহ্ মুযাহিরে হক্ব ইত্যাদি }

No comments

ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য।

  ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য। ডাল খাওয়ার ফলে কলব প্রসারিত হয় এবং চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পায়। পূর্ববর্তী হযরত নবী-রসুল আলাইহিমুস সালাম উ...

Powered by Blogger.