আদম পাহাড় বা অ্যাডাম পিক
মহান আল্লাহ তা’য়ালা আমাদের আদি পিতা হযরত আদম সফিউল্লাহ
আলাইহিস সালাম উনাকে নামিয়ে দেয়া সেই পাহাড়ের বিস্তারীত ইতিহাস খুব কম
সংখ্যক মানুষই জানেন। তাই এখনই জেনে নিন, সেই অ্যাডাম পিক বা আদম চূড়ার বিস্তারীত ইতিহাস।
শ্রীলঙ্কার
দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তের শ্রীপাডা নামক প্রদেশে এই চূড়াটি
অবস্থিত । খ্রিস্টান, হিন্দু, বৌদ্ধ ও মুসলিম_ এই
চার ধর্মের অনুসারীদের কাছে অতি পবিত্র এই চূড়াটি (পাহাড়টি)। এই চূড়াতেই মানুষের আদি
পিতা হযরত আদম সফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম বেহেশত থেকে সরাসরি তাশরীফ নিয়েছিলেন।
চূড়াটির চারদিকে সবুজের বিপুল সমারোহ, মাঝেমধ্যে
পাহাড়ি উঁচু-নিচু টিলা। পাহাড়ি চূড়ার আশপাশে রয়েছে অসংখ্য ছো্ট নদী ও পাহাড়ি ঝরনা। সব মিলে
এক মায়াবী নয়নাভিরাম দৃশ্য।
হযরত
আদম সফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম বেহেশত থেকে তাশ্রীফ নেন শ্রীলঙ্কায়, আর আদি মাতা হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম তাশরীফ
নেন জেরুজালেমে।
শ্রীলঙ্কা
থেকে জেরুজালেমের দূরত্ব কয়েকশ হাজার বর্গ কি.মি.। মহান আল্লাহ পাকের কাছে অনেক দুয়া করেন তারপর
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ ,হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উছিলায়
আল্লাহ পাক দুয়া কবুল করেন তারপর উভয়ে মিলিত হন মধ্যপ্রাচ্যে। সেই থেকে শুরু করে বর্তমান অবধি
শ্রীলঙ্কার এই চূড়াকে কেন্দ্র করে রহস্য রয়ে গেছে। হযরত আদম সফিউল্লাহ আলাইহিস
সালাম এই চূড়ায় তাশরীফ নিয়েছিলেন বিধায় এই
চূড়াটিকে বলা হয় আদম চূড়া বা অ্যাডাম পিক্। এই চূড়ার উচ্চতা ৭৩৬২ ফুট বা ২২৪৩ মিটার।
চূড়াটিতে
হযরত আদম সফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার পা মুবারকের যে চিহ্ন রয়েছে তার পরিমাপ
হচ্ছে ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি,
দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ হচ্ছে ২ ফুট ৬ ইঞ্চি।
বৌদ্ধ ধর্ম মতে, খ্রিস্টপূর্ব ৩০০
অব্দে এই পদচিহ্ন আবিষ্কৃত হয়। আবিষ্কৃত হওয়ার পরে পদচিহ্নের চতুর্দিকে ঘেরাও দিয়ে রাখা
হয়েছে। যুগ যুগ ধরে শত শত পর্যটক পরিভ্রমণ করেছে চূড়াটিতে। বিশ্বের
চূড়াটিতে যারা পরিভ্রমণ করেছেন তারা এর চতুর্দিকে পরিদর্শন করা ছাড়াও স্পর্শ
করে দেখেছেন হযরত আদম সফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার পদচিহ্ন মুবারক।
বৌদ্ধ
ধর্মের অনুসারীরাই বেশি এই চূড়ায় যতায়াত করে। এ ধর্মের অনুসারীরা মনে করে এই চূড়াটি
তাদের অস্তিত্বের আদি প্রতীক। তবে চূড়াটিতে যাওয়া কোনো সহজ ব্যাপার নয়। প্রথমে নৌকা কিংবা
পানিতে চলে এমন ধরনের যানে আরোহণ, তারপর
পায়ে হেঁটে উঁচু পাহাড়ে উঠা, সেখান
থেকে অনেক কষ্টের মাধ্যমে চূড়ায় উঠতে হয়। তবে এরই মধ্যে ঘটতে পারে নানা ধরনের বিপত্তি। সাপ,
বিষাক্ত পোকা-মাকড়ের কামড়ে মৃত্যুও ঘটতে পারে
অনেকের। লাখ লাখ বছর ধরে চলে আসা যে রহস্য ভেদ আজও মানুষ জানতে পারেনি তা
হলো_ চূড়ার যে স্থানে হযরত
আদম সফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার পায়ের চিহ্ন সেই স্থানে জানুয়ারি থেকে
এপ্রিল পর্যন্ত সূর্যের আলো, আর
মে থেকে
নভেম্বর পর্যন্ত মেঘের ঘনঘটা বা বৃষ্টি পড়ে না। এমন আরও অনেক রহস্য আছে এই চূড়াটিকে
কেন্দ্র করে। অতি চমৎকার এই চূড়াটি বছরের পর বছর অবিকল রয়ে গেছে। এর সৌন্দর্য
এতটুকু হ্রাস পায়নি। এ কারণে চূড়াটি বিশ্বের মানুষের কাছে পবিত্র বলে পরিচিত।
No comments