কুরবানীর ফাযায়িল-ফযীলত এবং কুরবানী নিয়ে মিথ্যাচার, অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রমূলক বিতর্কিত কিছু বিষয়ের খণ্ডনমূলক জবাব
আল্লাহ পাক তিনি
ইরশাদ করেন, فصل لربك
وانحر
“আপনার যিনি রব তায়ালা উনার সন্তুষ্টির জন্য নামায আদায় করুন এবং কুরবানী করুন।” (সূরা কাউছার/২)
“আপনার যিনি রব তায়ালা উনার সন্তুষ্টির জন্য নামায আদায় করুন এবং কুরবানী করুন।” (সূরা কাউছার/২)
আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি কুরবানীর সামর্থ্য রাখে অথচ কুরবানী করে না সে
যেনো আমাদের ঈদগাহের কাছেও না আসে।’
অর্থাৎ সামর্থ্য
থাকার পরও যারা কুরবানী করে না, তাদের উপর মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা কঠিন অসন্তুষ্ট হন। নাউযুবিল্লাহ!
শরীয়তের ফায়ছালা হলো, জিলহজ্জ মাসের দশ, এগার, বারো অর্থাৎ দশ তারিখের সুবহে সাদিক হতে বারো তারিখের সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত সময়ের মধ্যে যদি কেউ মালিকে নিছাব হয় অর্থাৎ হাওয়ায়েজে আসলিয়াহ (নিত্যপ্রয়োজনীয় ধন-সম্পদ) বাদ দিয়ে সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রূপা বা তার সমপরিমাণ মূল্যের মালিক হয়, তাহলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব। যদি কারো নিকট প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ থাকে এবং তা যদি নিছাব পরিমাণ হয়, যেমন- কারো পাঁচটি ঘর আছে, একটির মধ্যে সে থাকে আর তিনটির ভাড়া দিয়ে সে সংসার চালায় আর একটি অতিরিক্ত, যার মূল্য নিছাব পরিমাণ। এ ক্ষেত্রে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে।
যারা মালিকে নিছাব অর্থাৎ যাদের উপর কুরবানী ওয়াজিব তাদেরকে তো অবশ্যই কুরবানীর দিন কুরবানী করতে হবে। আর যারা মালিকে নিছাব নয় অর্থাৎ যাদের উপর কুরবানী ওয়াজিব নয় তবে কুরবানী করার মতো সামর্থ্য রয়েছে তাদের জন্য কুরবানী করে দেয়াই আফযল এবং উত্তম।
যারা কুরবানী করবে তাদের জন্য দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো- ওয়াজিব কুরবানী আদায় করার পর যদি সম্ভব হয় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ থেকে উনার নাম মুবারক-এ কুরবানী করা। যা কুরবানীদাতার কুরবানী কবুল হওয়ার একটি অন্যতম উসীলা।
শরীয়তের ফায়ছালা হলো, জিলহজ্জ মাসের দশ, এগার, বারো অর্থাৎ দশ তারিখের সুবহে সাদিক হতে বারো তারিখের সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত সময়ের মধ্যে যদি কেউ মালিকে নিছাব হয় অর্থাৎ হাওয়ায়েজে আসলিয়াহ (নিত্যপ্রয়োজনীয় ধন-সম্পদ) বাদ দিয়ে সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন ভরি রূপা বা তার সমপরিমাণ মূল্যের মালিক হয়, তাহলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব। যদি কারো নিকট প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ থাকে এবং তা যদি নিছাব পরিমাণ হয়, যেমন- কারো পাঁচটি ঘর আছে, একটির মধ্যে সে থাকে আর তিনটির ভাড়া দিয়ে সে সংসার চালায় আর একটি অতিরিক্ত, যার মূল্য নিছাব পরিমাণ। এ ক্ষেত্রে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে।
যারা মালিকে নিছাব অর্থাৎ যাদের উপর কুরবানী ওয়াজিব তাদেরকে তো অবশ্যই কুরবানীর দিন কুরবানী করতে হবে। আর যারা মালিকে নিছাব নয় অর্থাৎ যাদের উপর কুরবানী ওয়াজিব নয় তবে কুরবানী করার মতো সামর্থ্য রয়েছে তাদের জন্য কুরবানী করে দেয়াই আফযল এবং উত্তম।
যারা কুরবানী করবে তাদের জন্য দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো- ওয়াজিব কুরবানী আদায় করার পর যদি সম্ভব হয় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ থেকে উনার নাম মুবারক-এ কুরবানী করা। যা কুরবানীদাতার কুরবানী কবুল হওয়ার একটি অন্যতম উসীলা।
কুরবানীর ফযীলত
হাদীছ শরীফ-এ উল্লেখ আছে,
عن عبد الله ابن عباس رضى الله عنهما قال : قال رسول الله صلى الله
عليه وسلم: ماأنفقت الورق في شيئ أحب إلى الله من نحر ينحر يوم عيد
(رواه
الطبراني(১১/১৭) والدارقطني )৪/২৮২( والشجري في الأمالي )২/৭৯-৮০( وفي إسناده إبراهيم بن يزيد الخوزي وهو
متروك ، انظر: فقه الأضحي)
‘ইয়াওমুন নহর অর্থাৎ কুরবানীর দিনসমূহে
আদম সন্তান যতো কাজ করে তন্মধ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে সবচেয়ে প্রিয় কাজ কুরবানীর পশুর রক্তপাত।’
হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে,
عن زيد بن أرقم قال قال أصحاب رسول الله: يارسول الله ماهذه الأضاحي؟ قال:))سنة أبيكم إبراهيم(( قالوا: فما لنا فيها؟ قال:))بكل شعرة حسنة((، قالوا: فالصوف يارسول الله؟! قال ))بكل شعرة من الصوف حسنة((
একদা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জিজ্ঞেস করেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম! ‘কুরবানী কি?’ নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি বললেন, ‘এটা আপনাদের পিতা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার সুন্নত
ও আদর্শ।’ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা আবার
জিজ্ঞাসা করলেন, ‘এতে আমাদের কী লাভ?’
নূরে মুজাসসাম
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
বললেন, ‘প্রত্যেক পশমের বদলে একটি করে নেকী আছে।’ (মুসনাদে আহমাদ, ইবনে মাযাহ, মিশকাত শরীফ)।
হাদীছ শরীফ-এ আরো ইরশাদ হয়েছে, একদা আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি আহলিল জান্নাহ হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে বললেন, কুরবানীর পশুর প্রত্যেক রক্ত বিন্দুর বদলে একটি করে গুনাহ মাফ হবে এবং ওই পশুটিকে তার রক্ত ও গোশতসহ দাঁড়িপাল্লায় সত্তরগুণ ভারী করে দেয়া হবে। একথাটি শুনে হযরত আবু সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি জিজ্ঞেস করেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ‘এই সমস্ত নেকী নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বংশের জন্য খাছ, না সর্বসাধারণ সবার জন্যও?’ নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, ‘এটা আমার বংশ এবং সকল মুসলমানের জন্য।’ (বায়হাকি, কানজুল উম্মাল পঞ্চম খ-, ১১৯ পৃষ্ঠা ও ৫১ পৃষ্ঠা, মুস্তাদরেকে হাকেম, চতুর্থ খ-, ২২২)।
عن علي رضى الله عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال لفاطمة: يا فاطمة فاشهدي أضحيتك أما إن لك بأول قطرة من دمها مغفرة لكل ذنب أما إنه يجاء بها يوم القيامة بلحومها ودمائها سبعين ضعفا حتى توضع في ميزانك
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ করেন, ঈদুল আযহার দিনে বান্দার কুরবানীর পশুর রক্ত মাটিতে পড়ার পূর্বেই আল্লাহ পাক তার সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেন।” সুবহানাল্লাহ!
হাদীছ শরীফ-এ আরো ইরশাদ হয়েছে, “যে সমস্ত পশু দ্বারা কুরবানী করা হবে ক্বিয়ামতের দিন সেই পশুগুলি কুরবানীদাতাকে পিঠে করে বিদ্যুৎবেগে পুলছিরাত পার করে বেহেশ্তে পৌঁছিয়ে দিবে।” সুবহানাল্লাহ!
প্রত্যেক উম্মতের উচিত স্বীয় নবী ও রসূল, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারকে কুরবানী
দেয়া
হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে- “উম্মতের দিশারী, নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী,
রসূল আলাইহিমুস
সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সকল উম্মতের তরফ থেকে কুরবানী করেছেন।” সুবহানাল্লাহ!
হাদীছ শরীফ-এর আরেক বর্ণনা মতে, “যেসব উম্মতের কুরবানী দেয়ার মত সামর্থ্য নেই বা ছিল না তাদের তরফ থেকে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কুরবানী দিয়েছেন।”
যদি তাই হয় তাহলে প্রত্যেক উম্মতেরও দায়িত্ব কর্তব্য হয়ে যায় যে, উম্মত হিসেবে প্রত্যেকেই যেন স্বীয় নবী ও রসূল, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারকে কুরবানী করে। এটা একদিক থেকে উম্মতের জন্য ওয়াজিবও বটে। কারণ হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে, আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দশ বছর মদীনা শরীফ-এ যমীনে অবস্থান করেছেন। উক্ত দশ বছরই তিনি কুরবানী করেছেন। এরপর তিনি বিছাল শরীফ-এর পূর্বে আহলে বাইত ও উম্মতের মধ্যে অন্যতম ব্যক্তিত্ব, খুলাফায়ে রাশিদার চতুর্থ খলীফা, আমীরুল মুমিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে নির্দেশ দিয়ে যান তিনি যেন প্রতি বছর নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারকে কুরবানী করেন। সে নির্দেশ মুবারক হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন।
মূলতঃ আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নির্দেশসমূহ তথা হাদীছ শরীফ-এর বর্ণনা যদিও খাছ তবে তার হুকুম কিন্তু আম অর্থাৎ কিয়ামত পর্যন্ত এ হুকুম বলবৎ থাকবে। যে কারণে যামানার মুজতাহিদ ও ইমাম, মুজাদ্দিদে আযম, আওলাদে রসূল ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি উনার এক তাজদীদী ক্বওল শরীফ প্রকাশ করেন যে, ‘প্রত্যেক উম্মতের জন্য ফরয-ওয়াজিব নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারকে কুরবানী দেয়া’
উল্লেখ্য, যাদের উপর কুরবানী ওয়াজিব তারা অনেকেই কিন্তু নিজেদের নামে কুরবানী করার সাথে সাথে স্বীয় মৃত পিতা-মাতার নামে কুরবানী করে থাকে। তাহলে তাদের কি উচিত না স্বীয় নবী ও রসূল, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক নামে কুরবানী করা। মূলতঃ এটাই তাদের প্রথম দায়িত্ব। আর যাদের উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়, তারা একাধিক জন মিলে নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারকে কুরবানী দিবে।
কেউ কেউ বলে থাকে যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ থেকে কুরবানী করলে তা ওয়াছীয়তকৃত কুরবানীর অন্তর্ভুক্ত হবে। কারণ তিনি হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে উনার পক্ষ থেকে কুরবানী করার জন্য ওয়াছীয়ত করেছেন। এর জবাবে বলতে হয় যে, হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে যে কুরবানী করার ওয়াছীয়ত করেছেন তা উনার জন্যই খাছ ছিলো। বর্তমানে কেউ যদি উনার পক্ষ থেকে কুরবানী করে তবে তা ওয়াছীয়তকৃত কুরবানীর অন্তর্ভুক্ত হবে না। আর উক্ত গোশত খাওয়াও জায়িয হবে।
হাদীছ শরীফ-এর আরেক বর্ণনা মতে, “যেসব উম্মতের কুরবানী দেয়ার মত সামর্থ্য নেই বা ছিল না তাদের তরফ থেকে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কুরবানী দিয়েছেন।”
যদি তাই হয় তাহলে প্রত্যেক উম্মতেরও দায়িত্ব কর্তব্য হয়ে যায় যে, উম্মত হিসেবে প্রত্যেকেই যেন স্বীয় নবী ও রসূল, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারকে কুরবানী করে। এটা একদিক থেকে উম্মতের জন্য ওয়াজিবও বটে। কারণ হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে, আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দশ বছর মদীনা শরীফ-এ যমীনে অবস্থান করেছেন। উক্ত দশ বছরই তিনি কুরবানী করেছেন। এরপর তিনি বিছাল শরীফ-এর পূর্বে আহলে বাইত ও উম্মতের মধ্যে অন্যতম ব্যক্তিত্ব, খুলাফায়ে রাশিদার চতুর্থ খলীফা, আমীরুল মুমিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে নির্দেশ দিয়ে যান তিনি যেন প্রতি বছর নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারকে কুরবানী করেন। সে নির্দেশ মুবারক হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন।
মূলতঃ আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নির্দেশসমূহ তথা হাদীছ শরীফ-এর বর্ণনা যদিও খাছ তবে তার হুকুম কিন্তু আম অর্থাৎ কিয়ামত পর্যন্ত এ হুকুম বলবৎ থাকবে। যে কারণে যামানার মুজতাহিদ ও ইমাম, মুজাদ্দিদে আযম, আওলাদে রসূল ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি উনার এক তাজদীদী ক্বওল শরীফ প্রকাশ করেন যে, ‘প্রত্যেক উম্মতের জন্য ফরয-ওয়াজিব নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারকে কুরবানী দেয়া’
উল্লেখ্য, যাদের উপর কুরবানী ওয়াজিব তারা অনেকেই কিন্তু নিজেদের নামে কুরবানী করার সাথে সাথে স্বীয় মৃত পিতা-মাতার নামে কুরবানী করে থাকে। তাহলে তাদের কি উচিত না স্বীয় নবী ও রসূল, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক নামে কুরবানী করা। মূলতঃ এটাই তাদের প্রথম দায়িত্ব। আর যাদের উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়, তারা একাধিক জন মিলে নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারকে কুরবানী দিবে।
কেউ কেউ বলে থাকে যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ থেকে কুরবানী করলে তা ওয়াছীয়তকৃত কুরবানীর অন্তর্ভুক্ত হবে। কারণ তিনি হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে উনার পক্ষ থেকে কুরবানী করার জন্য ওয়াছীয়ত করেছেন। এর জবাবে বলতে হয় যে, হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে যে কুরবানী করার ওয়াছীয়ত করেছেন তা উনার জন্যই খাছ ছিলো। বর্তমানে কেউ যদি উনার পক্ষ থেকে কুরবানী করে তবে তা ওয়াছীয়তকৃত কুরবানীর অন্তর্ভুক্ত হবে না। আর উক্ত গোশত খাওয়াও জায়িয হবে।
এককভাবে কুরবানী দিতে অক্ষম বা যাদের উপর কুরবানী ওয়াজিব নয় তারাও কুরবানীর
ফযীলত ও ছওয়াব লাভ করতে পারেন
এককভাবে কুরবানী দিতে অক্ষম বা যাদের উপর কুরবানী ওয়াজিব নয় তারাও কুরবানীর ফযীলত ও ছওয়াব লাভ করতে পারেন। যে
সকল লোক এককভাবে
কুরবানী দিতে অক্ষম বা যাদের
উপর কুরবানী
ওয়াজিব নয় অথচ তারা কুরবানীর দিনে কিছু লোক মিলে গরু, ছাগল ইত্যাদি কিনে গোশত বণ্টন করে অথবা হাটবাজার থেকে গোশত কিনে খেয়ে থাকে এ সকল লোকেরা যদি ইচ্ছে করে তবে
তারাও কুরবানীর
ফযীলত ও ছওয়াব লাভ করতে পারে।
যারা কুরবানী দেয় না অর্থাৎ সামর্থ্য নেই, তাদের জন্য করণীয় হচ্ছে- তারা হাটবাজার থেকে গোশত না কিনে বরং কিছু লোক মিলে গরু বা ছাগল ইত্যাদি কিনে এক বা একাধিক নামে কুরবানী করা। কুরবানীর পশু গরু, মহিষ ও উটে সাত নাম এবং দুম্বা, মেষ বা ভেড়া, বকরী, খাসিতে এক নাম দেয়ার হুকুম রয়েছে।
গরু, মহিষ, উটে সাত নামের বেশি দিলে কুরবানী দুরুস্ত হবে না। আর সাত নামের কমে কুরবানী করলে দুরুস্ত হবে। আর ছাগল, দুম্বা, ভেড়া এক নামের বেশি নামে কুরবানী করলে কারো কুরবানী দুরুস্ত হবে না। যেমন- যদি ৪০ জন ব্যক্তি ৪০০ টাকা করে ১৬০০০ টাকা দিয়ে একটা গরু কিনে সাত নামে বা তার থেকে কম নামে কুরবানী করে গোশত বণ্টন করে নেয়, তাতেও কুরবানী শুদ্ধ হবে। তদ্রুপ একটা খাসি তিনজনে মিলে পয়সা দিয়ে খরীদ করে যদি এক নামে কুরবানী করে গোশত বণ্টন করে নেয়, তবে সে কুরবানী শুদ্ধ হবে।
তবে স্মরণীয় যে, যারা শরীক হয়ে এ ধরনের কুরবানী দিবে তারা প্রত্যেকে চাইবে যে, নিজেদের নামে কুরবানী দিতে, তখন অবশ্যই ফিতনা ও সমস্যার সৃষ্টি হবে। সেজন্য নাম দেয়ার ক্ষেত্রে আফযল ও উত্তম তরীক্বা হচ্ছে এই যে, যদি ছাগল কিংবা গরু এক নামে কুরবানী করা হয়, তাহলে তা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক-এ কুরবানী করে সকল শরীক সমানভাবে গোশত বণ্টন করে নিবে। এতে যেমন তাদের কুরবানী নিশ্চিতরূপে মহান আল্লাহ পাক উনার দরবারে কবুল ও মঞ্জুর হবে, সাথে সাথে তা তাদের জন্য ফযীলত, বারাকাত, ফুয়ুজাত, নিয়ামত, রহমত, মাগফিরাত, নাযাত সর্বোপরি মহান আল্লাহ পাক ও উনার রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের খাছ সন্তুষ্টি লাভ করার উসীলাও হবে।
যারা কুরবানী দেয় না অর্থাৎ সামর্থ্য নেই, তাদের জন্য করণীয় হচ্ছে- তারা হাটবাজার থেকে গোশত না কিনে বরং কিছু লোক মিলে গরু বা ছাগল ইত্যাদি কিনে এক বা একাধিক নামে কুরবানী করা। কুরবানীর পশু গরু, মহিষ ও উটে সাত নাম এবং দুম্বা, মেষ বা ভেড়া, বকরী, খাসিতে এক নাম দেয়ার হুকুম রয়েছে।
গরু, মহিষ, উটে সাত নামের বেশি দিলে কুরবানী দুরুস্ত হবে না। আর সাত নামের কমে কুরবানী করলে দুরুস্ত হবে। আর ছাগল, দুম্বা, ভেড়া এক নামের বেশি নামে কুরবানী করলে কারো কুরবানী দুরুস্ত হবে না। যেমন- যদি ৪০ জন ব্যক্তি ৪০০ টাকা করে ১৬০০০ টাকা দিয়ে একটা গরু কিনে সাত নামে বা তার থেকে কম নামে কুরবানী করে গোশত বণ্টন করে নেয়, তাতেও কুরবানী শুদ্ধ হবে। তদ্রুপ একটা খাসি তিনজনে মিলে পয়সা দিয়ে খরীদ করে যদি এক নামে কুরবানী করে গোশত বণ্টন করে নেয়, তবে সে কুরবানী শুদ্ধ হবে।
তবে স্মরণীয় যে, যারা শরীক হয়ে এ ধরনের কুরবানী দিবে তারা প্রত্যেকে চাইবে যে, নিজেদের নামে কুরবানী দিতে, তখন অবশ্যই ফিতনা ও সমস্যার সৃষ্টি হবে। সেজন্য নাম দেয়ার ক্ষেত্রে আফযল ও উত্তম তরীক্বা হচ্ছে এই যে, যদি ছাগল কিংবা গরু এক নামে কুরবানী করা হয়, তাহলে তা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক-এ কুরবানী করে সকল শরীক সমানভাবে গোশত বণ্টন করে নিবে। এতে যেমন তাদের কুরবানী নিশ্চিতরূপে মহান আল্লাহ পাক উনার দরবারে কবুল ও মঞ্জুর হবে, সাথে সাথে তা তাদের জন্য ফযীলত, বারাকাত, ফুয়ুজাত, নিয়ামত, রহমত, মাগফিরাত, নাযাত সর্বোপরি মহান আল্লাহ পাক ও উনার রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের খাছ সন্তুষ্টি লাভ করার উসীলাও হবে।
হযরত ইসমাঈল যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকেই কুরবানী
করার জন্য যমীনে শোয়ানো হয়েছিলো এবং উনারই পরিবর্তে একটি দুম্বা কুরবানী করা হয়েছিলো। আর হযরত ইসহাক আলাইহিস সালাম উনার সম্পর্কিত বর্ণনাটিপ
ইসরাইলী তথা ইহুদীদের বর্ণনা, যা সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা ও
পরিত্যাজ্য
বিশুদ্ধ হাদীছ শরীফ-এর কিতাব ‘মুসতাদরাক লিল হাকিম’-এ বর্ণিত রয়েছে, হযরত মুআবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমরা একদা হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতে উপস্থিত ছিলাম। তখন এক গ্রাম্য আরবী লোক এসে বললেন, হে দুই যবীহ উনাদের সন্তান! এ সম্বোধন
শুনে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মুচকি হাসলেন।
হযরত মুআবিয়া
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি হাদীছ শরীফখানা বর্ণনা করার পর উপস্থিত জনতার মধ্য থেকে জনৈক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেন, যবীহদ্বয় কে কে? হযরত মুআবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
তিনি বলেন, এক যবীহ হলেন হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত পিতা হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম আর দ্বিতীয়জন হলেন উনার পূর্ব পিতা হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম।
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, ‘আমি দুই যবীহ উনাদের পুত্র’। এ হাদীছ শরীফখানার তাৎপর্য হচ্ছে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আপন পিতা হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে উনার পিতা হযরত আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম তিনি কুরবানীর জন্য মানত করেছিলেন। অতঃপর তৎকালীন জ্ঞানী-গুণীগণের পরামর্শক্রমে উনার প্রাণের বিনিময়ে একশত উট সদকা (কুরবানী) করেছিলেন। সুতরাং এক যবীহ পাওয়া গেল। আর অনিবার্যভাবেই অপর যবীহ হলেন হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম তিনি। কেননা হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম উনার বংশের অন্তর্ভুক্ত। ‘আমি দুই যবীহ উনাদের সন্তান’ হাদীছ শরীফখানাকে হযরত ইবনুল জাওযী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছহীহ তথা বিশুদ্ধ বলেছেন।
রঈসুল মুহাদ্দিছীন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই কুরবানী করা হয়েছিল হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম উনাকে।’ অনুরূপ রঈসুল মুফাসসিরীন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত রয়েছে। যেমনটি হাদীছ শরীফ-এর বিশুদ্ধ কিতাব ‘আল মুসতাদরাক লিল হাকিম’-এ উল্লেখ আছে। একইভাবে বিশিষ্ট তাবিয়ী হযরত ইমাম হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, এতে কোন সন্দেহ নেই যে, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম উনাকেই কুরবানী করতে নির্দেশ করেছিলেন।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, হযরত ইবরাহীম খলীল আলাইহিস সালাম তিনি উনার ছেলে (হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম) উনাকে বলেন, আমি স্বপ্নে দেখলাম আপনাকে যবেহ করতেছি, আপনি কি বলেন? তখন হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, হে আমার সম্মানিত পিতা! আপনি যা আদিষ্ট হয়েছেন তা করুন অর্থাৎ যবেহ করুন। অবশ্যই আমাকে ধৈর্য্যশীল পাবেন। এ প্রসঙ্গে ‘তাফসীরে মাযহারী’ কিতাবে উল্লেখ আছে, “এ কথা সুনিশ্চিত যে, সূরা ছফফাত-এর ১০১ নম্বর আয়াত শরীফ-এ উদ্ধৃত ‘ধৈর্যশীল পুত্র’ বলে বুঝানো হয়েছে- হযরত ইসমাঈল যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে। আর উনাকেই কুরবানী করার নির্দেশ পেয়েছিলেন হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম। অর্থাৎ তিনিই ছিলেন ‘যবীহ’ (উৎসর্গকৃত)। কিন্তু ইহুদী, খ্রিস্টানরা বলে, ‘যবীহ’ ছিলেন হযরত ইসহাক আলাইহিস সালাম। তাদের এ উক্তি যে অসত্য, তা বলাই বাহুল্য।
মূলত হযরত ইসহাক আলাইহিস সালাম উনার সম্পর্কিত যে বর্ণনা রয়েছে তা ইসরাইলী বা ইহুদীদের বর্ণনা। ইহুদীরা হিংসার বশবর্তী হয়েই এরূপ মিথ্যা তথ্য প্রচার করেছে ও করছে।
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, ‘আমি দুই যবীহ উনাদের পুত্র’। এ হাদীছ শরীফখানার তাৎপর্য হচ্ছে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আপন পিতা হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে উনার পিতা হযরত আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম তিনি কুরবানীর জন্য মানত করেছিলেন। অতঃপর তৎকালীন জ্ঞানী-গুণীগণের পরামর্শক্রমে উনার প্রাণের বিনিময়ে একশত উট সদকা (কুরবানী) করেছিলেন। সুতরাং এক যবীহ পাওয়া গেল। আর অনিবার্যভাবেই অপর যবীহ হলেন হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম তিনি। কেননা হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম উনার বংশের অন্তর্ভুক্ত। ‘আমি দুই যবীহ উনাদের সন্তান’ হাদীছ শরীফখানাকে হযরত ইবনুল জাওযী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছহীহ তথা বিশুদ্ধ বলেছেন।
রঈসুল মুহাদ্দিছীন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘নিশ্চয়ই কুরবানী করা হয়েছিল হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম উনাকে।’ অনুরূপ রঈসুল মুফাসসিরীন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত রয়েছে। যেমনটি হাদীছ শরীফ-এর বিশুদ্ধ কিতাব ‘আল মুসতাদরাক লিল হাকিম’-এ উল্লেখ আছে। একইভাবে বিশিষ্ট তাবিয়ী হযরত ইমাম হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, এতে কোন সন্দেহ নেই যে, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম উনাকেই কুরবানী করতে নির্দেশ করেছিলেন।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, হযরত ইবরাহীম খলীল আলাইহিস সালাম তিনি উনার ছেলে (হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম) উনাকে বলেন, আমি স্বপ্নে দেখলাম আপনাকে যবেহ করতেছি, আপনি কি বলেন? তখন হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, হে আমার সম্মানিত পিতা! আপনি যা আদিষ্ট হয়েছেন তা করুন অর্থাৎ যবেহ করুন। অবশ্যই আমাকে ধৈর্য্যশীল পাবেন। এ প্রসঙ্গে ‘তাফসীরে মাযহারী’ কিতাবে উল্লেখ আছে, “এ কথা সুনিশ্চিত যে, সূরা ছফফাত-এর ১০১ নম্বর আয়াত শরীফ-এ উদ্ধৃত ‘ধৈর্যশীল পুত্র’ বলে বুঝানো হয়েছে- হযরত ইসমাঈল যবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে। আর উনাকেই কুরবানী করার নির্দেশ পেয়েছিলেন হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম। অর্থাৎ তিনিই ছিলেন ‘যবীহ’ (উৎসর্গকৃত)। কিন্তু ইহুদী, খ্রিস্টানরা বলে, ‘যবীহ’ ছিলেন হযরত ইসহাক আলাইহিস সালাম। তাদের এ উক্তি যে অসত্য, তা বলাই বাহুল্য।
মূলত হযরত ইসহাক আলাইহিস সালাম উনার সম্পর্কিত যে বর্ণনা রয়েছে তা ইসরাইলী বা ইহুদীদের বর্ণনা। ইহুদীরা হিংসার বশবর্তী হয়েই এরূপ মিথ্যা তথ্য প্রচার করেছে ও করছে।
জরুরী মাসয়ালা
কুরবানী না করে ঘূর্ণিঝড়ে
আক্রান্ত বা দুঃস্থদেরকে কুরবানীর অর্থ দিলে কুরবানী তো হবেই না বরং ওয়াজিব তরকের
গুনাহ হবে।
ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, টর্নেডো ইত্যাদি এদেশের ধর্মব্যবসায়ী
মাওলানা এবং তাদের দ্বারা
বিভ্রান্ত শাসক ও
সাধারণ মানুষের হাতের কামাই। কারণ,
মহান আল্লাহ পাক
তিনি ইরশাদ করেন, “যমীনে পানিতে ফিতনা-ফাসাদ, আযাব-গযব,
বিপদাপদ এসে থাকে মানুষের (বদ) আমলের কারণে। যেন তারা তাদের (বদ) আমলের স্বাদ গ্রহণ করে। আশা করা যায় তারা ফিরে আসবে।” (সূরা রূম)
কিছু ধর্মব্যবসায়ী ও তাদের দ্বারা বিভ্রান্ত শাসক এবং সাধারণ মানুষ আর ইহুদী পোষ্য কিছু সাংবাদিক ও তথাকথিত বুদ্ধিজীবী অর্থনীতিবিদ গযব থেকে পানাহ চাওয়ার পরিবর্তে উল্টো ‘ইসলামকে’ নিয়ে খেলায় মেতে উঠেছে। তারা আজ কুরবানীর বিরুদ্ধে বলছে। কুরবানীর বিপরীতে মনগড়া পরামর্শ দিচ্ছে। এদের সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “অতঃপর আমি তাদেরকে অভাব, অনটন ও রোগব্যাধি দ্বারা পাকড়াও করেছিলাম। যাতে তারা আকুতি মিনতি করে। অতঃপর তাদের কাছে যখন আযাব-গযব আসলো তখন তারা আকুতি মিনতি করলো না। মূলতঃ তাদের অন্তর কঠোর হয়ে গিয়েছিলো এবং শয়তান তাদের কাছে আকর্ষণীয় করে দেখিয়েছিলো যে কাজ তারা করেছিলো।” (সূরা আনয়াম)
যাকাত এবং কুরবানী আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নির্দেশ। এ নির্দেশ পরিবর্তনের ক্ষমতা কোনো জ্বিন-ইনসানের নেই। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “তবে কি তোমরা ইসলাম ব্যতীত অন্য কোনো নিয়মনীতি তালাশ কর। যে ইসলাম ব্যতীত অন্য কোনো নিয়মনীতি তালাশ করে তার থেকে কখনই তা গ্রহণ করা হবে না এবং সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভুক্ত হবে।”
যাকাত ও কুরবানীর পরিবর্তে অন্য কোন নেক কাজ যে করা যাবে না এমনকি প্রতিকূল অবস্থায়ও যে তা বন্ধ রাখা যাবে না হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনারা তার দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। আফজালুন্ নাস বা’দাল আম্বিয়া হযরত আবু বকর ছিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেছেন, সাবধান! যাকাতের একটি রশিও দিতে যে অস্বীকার করবে আমি তার বিরুদ্ধে জিহাদ অব্যাহত রাখব। তদ্রুপ কুরবানীকে যারা অস্বীকার করবে তারাও মুসলমান হিসেবে থাকতে পারবে না।
যে কুরবানী করবে ইসলামের প্রতি অটল বিশ্বাসের কারণে সে আরো বেশি মুসলিম দরদী হবে তথা দুর্গতদের আরো বেশি সাহায্য করবে। আর যে কুরবানী না করে সে অর্থ দুর্গতদের দিবে তা হবে লোক দেখানো ও নাম ফুটানো। কাজেই যারা কুরবানীর অর্থ দুর্গতদের দিতে চায় তারা প্রকৃতপক্ষে লোক দেখানো আমলকারী বা রিয়াকার। তাদের কাজ আল্লাহ পাক উনার সাথে শিরক করার মতো। তাদের কাজ নেকীর ছূরতে ইবলিসের ধোঁকা।
মূলকথা হলো- সামর্থ্যবান প্রত্যেকের পক্ষ থেকেই কুরবানী করতে হবে এটা শরীয়তের নির্দেশ। কুরবানী না করে ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্ত বা দুঃস্থদেরকে কুরবানীর অর্থ দিলে কুরবানী তো হবেই না বরং ওয়াজিব তরকের গুনাহ হবে। পাশাপাশি শরীয়তের বিধান পরিবর্তন করার কারণে কাট্টা কুফরী হবে। কাজেই এরূপ কুফরী বক্তব্য ও আমল থেকে বিরত থাকা সকলের জন্যই ফরয-ওয়াজিব।
কিছু ধর্মব্যবসায়ী ও তাদের দ্বারা বিভ্রান্ত শাসক এবং সাধারণ মানুষ আর ইহুদী পোষ্য কিছু সাংবাদিক ও তথাকথিত বুদ্ধিজীবী অর্থনীতিবিদ গযব থেকে পানাহ চাওয়ার পরিবর্তে উল্টো ‘ইসলামকে’ নিয়ে খেলায় মেতে উঠেছে। তারা আজ কুরবানীর বিরুদ্ধে বলছে। কুরবানীর বিপরীতে মনগড়া পরামর্শ দিচ্ছে। এদের সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “অতঃপর আমি তাদেরকে অভাব, অনটন ও রোগব্যাধি দ্বারা পাকড়াও করেছিলাম। যাতে তারা আকুতি মিনতি করে। অতঃপর তাদের কাছে যখন আযাব-গযব আসলো তখন তারা আকুতি মিনতি করলো না। মূলতঃ তাদের অন্তর কঠোর হয়ে গিয়েছিলো এবং শয়তান তাদের কাছে আকর্ষণীয় করে দেখিয়েছিলো যে কাজ তারা করেছিলো।” (সূরা আনয়াম)
যাকাত এবং কুরবানী আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নির্দেশ। এ নির্দেশ পরিবর্তনের ক্ষমতা কোনো জ্বিন-ইনসানের নেই। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “তবে কি তোমরা ইসলাম ব্যতীত অন্য কোনো নিয়মনীতি তালাশ কর। যে ইসলাম ব্যতীত অন্য কোনো নিয়মনীতি তালাশ করে তার থেকে কখনই তা গ্রহণ করা হবে না এবং সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভুক্ত হবে।”
যাকাত ও কুরবানীর পরিবর্তে অন্য কোন নেক কাজ যে করা যাবে না এমনকি প্রতিকূল অবস্থায়ও যে তা বন্ধ রাখা যাবে না হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনারা তার দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। আফজালুন্ নাস বা’দাল আম্বিয়া হযরত আবু বকর ছিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেছেন, সাবধান! যাকাতের একটি রশিও দিতে যে অস্বীকার করবে আমি তার বিরুদ্ধে জিহাদ অব্যাহত রাখব। তদ্রুপ কুরবানীকে যারা অস্বীকার করবে তারাও মুসলমান হিসেবে থাকতে পারবে না।
যে কুরবানী করবে ইসলামের প্রতি অটল বিশ্বাসের কারণে সে আরো বেশি মুসলিম দরদী হবে তথা দুর্গতদের আরো বেশি সাহায্য করবে। আর যে কুরবানী না করে সে অর্থ দুর্গতদের দিবে তা হবে লোক দেখানো ও নাম ফুটানো। কাজেই যারা কুরবানীর অর্থ দুর্গতদের দিতে চায় তারা প্রকৃতপক্ষে লোক দেখানো আমলকারী বা রিয়াকার। তাদের কাজ আল্লাহ পাক উনার সাথে শিরক করার মতো। তাদের কাজ নেকীর ছূরতে ইবলিসের ধোঁকা।
মূলকথা হলো- সামর্থ্যবান প্রত্যেকের পক্ষ থেকেই কুরবানী করতে হবে এটা শরীয়তের নির্দেশ। কুরবানী না করে ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্ত বা দুঃস্থদেরকে কুরবানীর অর্থ দিলে কুরবানী তো হবেই না বরং ওয়াজিব তরকের গুনাহ হবে। পাশাপাশি শরীয়তের বিধান পরিবর্তন করার কারণে কাট্টা কুফরী হবে। কাজেই এরূপ কুফরী বক্তব্য ও আমল থেকে বিরত থাকা সকলের জন্যই ফরয-ওয়াজিব।
কুরবানী করার ছহীহ তরীক্বা বা
নিয়ম
কুরবানীর পশুর মাথা দক্ষিণ দিকে এবং পা পশ্চিম দিকে রেখে অর্থাৎ ক্বিবলামুখী করে শোয়ায়ে পূর্ব দিক থেকে চেপে ধরতে হবে, তারপর কুরবানী করতে হবে। আর কুরবানী করার সময় খেয়াল রাখতে হবে যে, সীনার উপরিভাগ এবং কন্ঠনালীর মাঝামাঝি স্থানে যেন যবেহ করা হয়।
আরো উল্লেখ্য যে, গলাতে চারটি রগ রয়েছে, তন্মধ্যে গলার সম্মুখভাগে দুটি- খাদ্যনালী ও শ্বাসনালী এবং দুপার্শ্বে দুটি রক্তনালী। এ চারটির মধ্যে খাদ্যনালী, শ্বাসনালী এবং দুটি রক্তনালীর মধ্যে একটি অবশ্যই কাটতে হবে। অর্থাৎ চারটি রগ বা নালীর মধ্যে তিনটি অবশ্যই কাটতে হবে, অন্যথায় কুরবানী হবে না।
যদি সম্ভব হয়, তবে ছুরি চালানোর সময় বেজোড় সংখ্যার প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে।
কুরবানীর নিয়ত: (যবেহ করার পূর্বে) “ইন্নী ওয়াজ্জাহ্তু ওয়াজ্হিয়া লিল্লাযী ফাত্বারাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্বা হানীফাঁও ওয়ামা আনা মিনাল মুশরিকীন। ইন্না ছলাতী ওয়া নুসুকী ওয়া মাহ্ইয়াইয়া ওয়া মামাতী লিল্লাহি রব্বিল আলামীন। লা শারীকালাহু ওয়া বি যালিকা উর্মিতু ওয়া আনা মিনাল মুসলিমীন। আল্লাহুম্মা মিন্কা ও লাকা।” এ দোয়া পড়ে ‘বিস্মিল্লাহি আল্লাহু আকবর বলে যবেহ করতে হবে। যবেহ করার পর এ দোয়া পড়বে- “আল্লাহুম্মা তাক্বাব্বাল মিন্নী কামা তাক্বাব্বালতা মিন্ হাবীবিকা সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদিন ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও খালীলিকা ইব্রাহীমা আলাইহিস সালাম।”
যদি নিজের কুরবানী হয়, তবে ‘মিন্নী বলতে হবে। আর যদি অন্যের কুরবানী হয়, তবে ‘মিন্ শব্দের পর যার বা যাদের কুরবানী, তার বা তাদের নাম উল্লেখ করতে হবে। আর যদি অন্যের সাথে শরীক হয় তাহলে ‘মিন্নীও বলবে অতঃপর ‘মিন্ বলে অন্যদের নাম বলতে হবে।
কেউ যদি উপরোক্ত নিয়ত না জানে, তাহলে যবেহ করার সময় শুধু ‘বিস্মিল্লাহি আল্লাহু আকবর বলে কুরবানী করলেও শুদ্ধ হয়ে যাবে। কারণ নিয়ত অন্তরের সাথে সম্পর্কযুক্ত। তবে অবশ্যই প্রত্যেক যবেহকারীর উচিৎ উপরোক্ত নিয়ত শিক্ষা করা। কেননা উপরোক্ত নিয়ত পাঠ করে কুরবানী করা সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত।
আরো উল্লেখ্য যে, গলাতে চারটি রগ রয়েছে, তন্মধ্যে গলার সম্মুখভাগে দুটি- খাদ্যনালী ও শ্বাসনালী এবং দুপার্শ্বে দুটি রক্তনালী। এ চারটির মধ্যে খাদ্যনালী, শ্বাসনালী এবং দুটি রক্তনালীর মধ্যে একটি অবশ্যই কাটতে হবে। অর্থাৎ চারটি রগ বা নালীর মধ্যে তিনটি অবশ্যই কাটতে হবে, অন্যথায় কুরবানী হবে না।
যদি সম্ভব হয়, তবে ছুরি চালানোর সময় বেজোড় সংখ্যার প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে।
কুরবানীর নিয়ত: (যবেহ করার পূর্বে) “ইন্নী ওয়াজ্জাহ্তু ওয়াজ্হিয়া লিল্লাযী ফাত্বারাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ্বা হানীফাঁও ওয়ামা আনা মিনাল মুশরিকীন। ইন্না ছলাতী ওয়া নুসুকী ওয়া মাহ্ইয়াইয়া ওয়া মামাতী লিল্লাহি রব্বিল আলামীন। লা শারীকালাহু ওয়া বি যালিকা উর্মিতু ওয়া আনা মিনাল মুসলিমীন। আল্লাহুম্মা মিন্কা ও লাকা।” এ দোয়া পড়ে ‘বিস্মিল্লাহি আল্লাহু আকবর বলে যবেহ করতে হবে। যবেহ করার পর এ দোয়া পড়বে- “আল্লাহুম্মা তাক্বাব্বাল মিন্নী কামা তাক্বাব্বালতা মিন্ হাবীবিকা সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদিন ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও খালীলিকা ইব্রাহীমা আলাইহিস সালাম।”
যদি নিজের কুরবানী হয়, তবে ‘মিন্নী বলতে হবে। আর যদি অন্যের কুরবানী হয়, তবে ‘মিন্ শব্দের পর যার বা যাদের কুরবানী, তার বা তাদের নাম উল্লেখ করতে হবে। আর যদি অন্যের সাথে শরীক হয় তাহলে ‘মিন্নীও বলবে অতঃপর ‘মিন্ বলে অন্যদের নাম বলতে হবে।
কেউ যদি উপরোক্ত নিয়ত না জানে, তাহলে যবেহ করার সময় শুধু ‘বিস্মিল্লাহি আল্লাহু আকবর বলে কুরবানী করলেও শুদ্ধ হয়ে যাবে। কারণ নিয়ত অন্তরের সাথে সম্পর্কযুক্ত। তবে অবশ্যই প্রত্যেক যবেহকারীর উচিৎ উপরোক্ত নিয়ত শিক্ষা করা। কেননা উপরোক্ত নিয়ত পাঠ করে কুরবানী করা সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত।
হারাম পন্থায় উপার্জিত অর্থ
দিয়ে কুরবানী করলে তা কবুল হবে না
হাদীছ শরীফ-এ
ইরশাদ হয়েছে, আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র ও হালাল ব্যতীত
কবুল করেন না।
যার উপর কুরবানী ওয়াজিব তার যে অর্থ দিয়ে কুরবানী করবে তার পবিত্রতার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। তার অর্থ হালাল হওয়া ফরয-ওয়াজিব। তার টাকা-পয়সা যদি হারাম পন্থায় অর্থাৎ চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, সুদ, ঘুষ, অপরের টাকা আত্মসাৎ ইত্যাদি উপায়ে উপার্জিত হয় তাহলে তার এই হারাম পন্থায় উপার্জিত অর্থ দিয়ে কুরবানী করলে তা কবুল হবে না। তাই তার উচিত তার মালের পবিত্রতার দিকে খেয়াল রাখা। হালাল অর্থ দিয়ে কুরবানী করলে তা আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টির জন্য হবে এবং সেই কুরবানী আল্লাহ পাক উনার কাছে মকবুল কুরবানী হবে।
যার উপর কুরবানী ওয়াজিব তার যে অর্থ দিয়ে কুরবানী করবে তার পবিত্রতার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। তার অর্থ হালাল হওয়া ফরয-ওয়াজিব। তার টাকা-পয়সা যদি হারাম পন্থায় অর্থাৎ চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, সুদ, ঘুষ, অপরের টাকা আত্মসাৎ ইত্যাদি উপায়ে উপার্জিত হয় তাহলে তার এই হারাম পন্থায় উপার্জিত অর্থ দিয়ে কুরবানী করলে তা কবুল হবে না। তাই তার উচিত তার মালের পবিত্রতার দিকে খেয়াল রাখা। হালাল অর্থ দিয়ে কুরবানী করলে তা আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টির জন্য হবে এবং সেই কুরবানী আল্লাহ পাক উনার কাছে মকবুল কুরবানী হবে।
কুরবানীর বা হালাল পশুর ৮টি
অংশ খাওয়া মাকরূহ ও হারাম
কুরবানীর পশুর গোশত খাওয়া হালাল ও সুন্নত। তারপরও ঐ পশুর ৮টি অংশ খাওয়া মাকরূহ ও হারাম। আর তা হলো- (১) দমে মাছফুহা বা যবেহ করার সময় প্রবাহিত রক্ত। (২) অ-কোষ। (৩) মূলনালী (৪) পিত্ত (৫) লিঙ্গ (৬) গুহ্যদ্বার (৭) গদুদ বা গুটলী মাকরূহে তাহরীমী (৮) শিরদাড়ার ভিতরের মগজ,
এটা কেউ মাকরূহ
তাহরীমী কেউ আবার মাকরূহে তানযিহী বলেছেন। তাই সকলকে
উপরোক্ত মাকরূহ ও হারাম বিষয় থেকে
পরহেয থাকতে হবে।
(দলীল : সমূহ ফিকাহের কিতাব)
কুরবানীর দিনসমূহে হাঁস, মুরগি, কবুতর ইত্যাদি যবেহ করা জায়িয নেই
মুসলমানদের আইয়ামে নহর বা কুরবানীর দিনসমূহে যারা মজুসী বা অগ্নিউপাসক তারা তাদের ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী হাঁস-মুরগি ইত্যাদি যবেহ করে থাকে। এখন যদি কোনো মুসলমান তাদের সাথে মুশাবাহ্্ বা সাদৃশ্য রেখে কুরবানীর দিন হাঁস-মুরগি ইত্যাদি যবেহ করে, তাহলে সেটা কুফরী হবে। কারণ মহান আল্লাহ
পাক উনার রসূল হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল রাখে,
সে ব্যক্তি তাদেরই
অন্তর্ভুক্ত হবে।” (মিশকাত শরীফ)
আর যদি কোনো মুসলমান সাধারণভাবে উক্ত সময়ে হাঁস-মুরগি ইত্যাদি যবেহ করে, তাহলে সেটা মাকরূহ্ তাহ্রীমী হবে, যেহেতু এটাও মুশাবাহ হয়ে যায়।
আর যদি কোনো মুসলমান খুব জরুরতে হাঁস-মুরগি ইত্যাদি যবেহ করে, তাহলে সেটাও মাকরূহ্ তানযীহী হবে।
অতএব, যাদের উপর কুরবানী ওয়াজিব অথবা ওয়াজিব নয়, তারা যদি কুরবানীর দিন হাঁস, মুরগি ইত্যাদি খেতে চায়, তাহলে তারা যেন ছুব্হে ছাদিকের পূর্বেই সেটা যবেহ্ করে কেটে পাক (রান্না) করে রেখে দেয় অথবা শুধু যবেহ্ করে কেটে রেখে দিবে পরে পাক (রান্না) করলেও চলবে।
আর যদি কোনো মুসলমান সাধারণভাবে উক্ত সময়ে হাঁস-মুরগি ইত্যাদি যবেহ করে, তাহলে সেটা মাকরূহ্ তাহ্রীমী হবে, যেহেতু এটাও মুশাবাহ হয়ে যায়।
আর যদি কোনো মুসলমান খুব জরুরতে হাঁস-মুরগি ইত্যাদি যবেহ করে, তাহলে সেটাও মাকরূহ্ তানযীহী হবে।
অতএব, যাদের উপর কুরবানী ওয়াজিব অথবা ওয়াজিব নয়, তারা যদি কুরবানীর দিন হাঁস, মুরগি ইত্যাদি খেতে চায়, তাহলে তারা যেন ছুব্হে ছাদিকের পূর্বেই সেটা যবেহ্ করে কেটে পাক (রান্না) করে রেখে দেয় অথবা শুধু যবেহ্ করে কেটে রেখে দিবে পরে পাক (রান্না) করলেও চলবে।
কুরবানীর দিন কুরবানীর গোশত
দিয়ে খাওয়া শুরু করা খাছ সুন্নত
হাদীছ শরীফ-এ
ইরশাদ হয়েছে,
كان رسول الله صلى الله عليه وسلم لا يخرج يوم الفطر حتى يطعم ولا يطعم يوم الاضحى حتى يصلى .
অর্থাৎ- “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঈদুল ফিতরের দিন কোনো কিছু না খেয়ে ঈদগাহে যেতেন না। আর ঈদুল আদ্বহার দিন নামাযের পূর্বে (কুরবানী করার পূর্বে) কোনো কিছু খেতেন না।
ঈদুল আদ্বহা বা কুরবানী ঈদের দিন ছুবহে ছাদিক থেকে কুরবানী করার আগ পর্যন্ত রোযার নিয়ত ব্যতীত পানাহার থেকে বিরত থাকা খাছ সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত। এতে একটি রোযার ফযীলত পাওয়া যায়।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঈদুল আদ্বহার দিন ছুবহে ছাদিক থেকে কুরবানী করার আগ পর্যন্ত কিছুই পাহানার করতেন না। তিনি কুরবানীর গোশত দিয়ে খাওয়া শুরু করতেন।
كان رسول الله صلى الله عليه وسلم لا يخرج يوم الفطر حتى يطعم ولا يطعم يوم الاضحى حتى يصلى .
অর্থাৎ- “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঈদুল ফিতরের দিন কোনো কিছু না খেয়ে ঈদগাহে যেতেন না। আর ঈদুল আদ্বহার দিন নামাযের পূর্বে (কুরবানী করার পূর্বে) কোনো কিছু খেতেন না।
ঈদুল আদ্বহা বা কুরবানী ঈদের দিন ছুবহে ছাদিক থেকে কুরবানী করার আগ পর্যন্ত রোযার নিয়ত ব্যতীত পানাহার থেকে বিরত থাকা খাছ সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত। এতে একটি রোযার ফযীলত পাওয়া যায়।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঈদুল আদ্বহার দিন ছুবহে ছাদিক থেকে কুরবানী করার আগ পর্যন্ত কিছুই পাহানার করতেন না। তিনি কুরবানীর গোশত দিয়ে খাওয়া শুরু করতেন।
কুরবানীর পশু নিয়ে কৌতুক ও
ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত
আক্বাইদের কিতাবে
উল্লেখ আছে,
اهانة السنة كفر.
অর্থাৎ “কোনো সুন্নত নিয়ে কৌতুক করা, ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।”
কোনো সুন্নত নিয়ে কৌতুক বা ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করা যদি কুফরী হয়, তবে ফরয-ওয়াজিব নিয়ে কৌতুক বা ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করলে কি হবে?
আমাদের হানাফী মাযহাব মুতাবিক পবিত্র কুরবানী একটি ওয়াজিব ইবাদত। অর্থাৎ যারা মালিকে নেছাব তাদের জন্য কুরবানী করা ওয়াজিব,
অতএব, কুরবানী বা কুরবানীর পশু নিয়ে যারা কৌতুক ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করবে তারা কুফরী করার কারণে ঈমান হারা হয়ে যাবে। নাউযুবিল্লাহ!
অথচ আজকাল কেউ কেউ পত্র পত্রিকায়, টিভি চ্যানেলে এই পবিত্র কুরবানী নিয়ে অনেক কৌতুক ও ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করে থাকে, আপত্তিকর অনেক মন্তব্য করে থাকে। নাউযুবিল্লাহ! যা মূলতঃ ঈমানহারা হওয়ার কারণ।
তাই সংশ্লিষ্ট সকলকেই এর থেকে খালিছ তওবা করতঃ কুরবানী নিয়ে কৌতুক বা ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
اهانة السنة كفر.
অর্থাৎ “কোনো সুন্নত নিয়ে কৌতুক করা, ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।”
কোনো সুন্নত নিয়ে কৌতুক বা ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করা যদি কুফরী হয়, তবে ফরয-ওয়াজিব নিয়ে কৌতুক বা ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করলে কি হবে?
আমাদের হানাফী মাযহাব মুতাবিক পবিত্র কুরবানী একটি ওয়াজিব ইবাদত। অর্থাৎ যারা মালিকে নেছাব তাদের জন্য কুরবানী করা ওয়াজিব,
অতএব, কুরবানী বা কুরবানীর পশু নিয়ে যারা কৌতুক ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করবে তারা কুফরী করার কারণে ঈমান হারা হয়ে যাবে। নাউযুবিল্লাহ!
অথচ আজকাল কেউ কেউ পত্র পত্রিকায়, টিভি চ্যানেলে এই পবিত্র কুরবানী নিয়ে অনেক কৌতুক ও ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করে থাকে, আপত্তিকর অনেক মন্তব্য করে থাকে। নাউযুবিল্লাহ! যা মূলতঃ ঈমানহারা হওয়ার কারণ।
তাই সংশ্লিষ্ট সকলকেই এর থেকে খালিছ তওবা করতঃ কুরবানী নিয়ে কৌতুক বা ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
কুরবানীর চামড়া দেয়ার উত্তম
স্থান হলো- রাজারবাগ দরবার শরীফ-এর ‘মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ’ মাদরাসা
ইসলামে মৌলবাদ, সন্ত্রাসবাদ হারাম। ইসলামের নামে ব্যবসা
করা হারাম। ইসলামের নামে গণতান্ত্রিক দল করা হারাম। ইসলামের নামে
নির্বাচন করা হারাম। ইসলামের নামে
ভোট চাওয়া হারাম।
“বর্তমানে অধিকাংশ মাদ্রাসাগুলোই হচ্ছে জামাতী,
ওহাবী, খারিজী মতাদর্শের তথা সন্ত্রাসবাদী ক্যাডার তৈরির সূতিকাগার। ইসলামের দোহাই দিয়ে, ইসলামের নামে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক
স্বার্থ ও প্রতিপত্তি হাছিলের
প্রকল্প। ইসলামের
নামে নির্বাচন করার ও ভোটের রাজনীতি করার পাঠশালা- যা ইসলামে সম্পূর্ণ হারাম।
কুরবানীর চামড়া কোথায় দেয়া হচ্ছে তা দেখে দিতে হবে। জামাতী, খারিজী, ওহাবী ও সন্ত্রাসবাদী-মৌলবাদী তথা ধর্মব্যবসায়ীদের মাদরাসাতে কুরবানীর চামড়া দিলে তাতে কুরবানী আদায় হবে না।
অনুরূপভাবে কোনো তথাকথিত জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনকেও কুরবানীর চামড়া দেয়া জায়িয হবে না। কারণ তারা তা আমভাবে খরচ করে থাকে। যেমন রাস্তা-ঘাট, পানির ব্যবস্থা, বেওয়ারিশ লাশ দাফন করার কাজে। অথচ কুরবানীর চামড়া গরিব মিসকীনদের হক্ব। তা গরিব মিসকিনদের মালিক করে দিতে হবে।
বর্তমানে যেহেতু দেশে খিলাফত কায়িম নেই। যাকাত বায়তুল মালেও জমা দেয়া হচ্ছে না এবং কুরআন শরীফ-এ উল্লিখিত সর্বপ্রকার খাতও পাওয়া যাচ্ছে না। আর অনেক যাকাতদাতার গরিব আত্মীয়-স্বজন ও গরিব প্রতিবেশী রয়েছে এবং অনেক মাদরাসা রয়েছে যেখানে ইয়াতীমখানাও রয়েছে। তাই যাকাত দেয়ার সহজ ও উত্তম পদ্ধতি হলো- যাকাতের মালকে তিনভাগ করে একভাগ গরিব আত্মীয়-স্বজন, একভাগ গরিব প্রতিবেশী ও একভাগ মাদরাসার ইয়াতীমখানায় প্রদান করা।
আর যদি গরিব আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশী না থাকে তবে সবটাই হক্ব মাদরাসার ইয়াতীমখানায় দেয়া আফযল ও উত্তম। এ সম্পর্কে আফযালুল আউলিয়া, কাইয়্যূমে আউয়াল হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, যাকাত-ফিতরা ইত্যাদি সর্ব প্রকার দান-সদকা অন্যান্য খাতে না দিয়ে কোন হক্ব মাদরাসার ইয়াতীম গরিব ছাত্রদেরকে দান করলে অন্যান্য খাতের চেয়ে লক্ষগুণ ছওয়াব বেশি হবে। কারণ, উহাতে তাদের ইলমে দ্বীন অর্জনে সহায়তা করা হয়।
তাই বলার অপেক্ষাই রাখে না যে, যাকাত দেয়ার সর্বোত্তম স্থান হচ্ছে মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ মাদরাসা ও ইয়াতিম খানা। কারণ ‘মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ’-এর অনন্য বৈশিষ্ট্যসমূহ হচ্ছে এই যে, একমাত্র অত্র প্রতিষ্ঠানেই ইলমে ফিক্বাহর পাশাপাশি ইলমে তাছাউফ শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে যা শিক্ষা করা প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য ফরয। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সম্পূর্ণ শরয়ী পর্দার সাথে বালক ও বালিকাদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বালক শাখার শিক্ষক, কর্মকর্তা ও আমীলগণ প্রত্যেকেই পুরুষ এবং বালিকা শাখার শিক্ষিক, কর্মকর্তা ও আমীলগণ প্রত্যেকেই মহিলা।
এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা- ইসলামের নামে অনৈসলামিক কর্মকা- যেমন, মৌলবাদ, সন্ত্রাসবাদ, বোমাবাজী, হরতাল, লংমার্চ, কুশপুত্তলিকা দাহ ইত্যাদি হারাম ও কুফরীমূলক কাজের সাথে এবং এ ধরনের কোন প্রকার অবাঞ্ছিত সংগঠন বা দলের সাথে সম্পৃক্ত নয়। বরং এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন আমল এবং মাথার তালু থেকে পায়ের তলা পর্যন্ত সব কিছুই সুন্নতের অলঙ্কারে অলঙ্কৃত। সর্বোপরি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদা ভিত্তিক। কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা এবং ক্বিয়াস-এর আলোকে ইলম শিক্ষা দেয়া হয় যার উদ্দেশ্য হচ্ছে বাস্তব জীবনে সুন্নতে নববীর আদর্শ প্রতিষ্ঠা তথা সঠিক ইসলাম কায়িমের মাধ্যমে আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি বা রেযামন্দী হাছিল করা। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সমাজের বিত্তবানদের পাশাপাশি ‘গরিব এবং ইয়াতীমদের’ শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ‘ইয়াতীমখানা এবং লিল্লাহ বোডিং’। সুতরাং কুরবানীর চামড়া বা তার মূল্য অত্র প্রতিষ্ঠানের লিল্লাহ বোডিংয়ে দান করাই হবে অধিক ফযীলতের কারণ অর্থাৎ হাক্বীক্বী ছদক্বায়ে জারিয়াহ।
কুরবানীর চামড়া কোথায় দেয়া হচ্ছে তা দেখে দিতে হবে। জামাতী, খারিজী, ওহাবী ও সন্ত্রাসবাদী-মৌলবাদী তথা ধর্মব্যবসায়ীদের মাদরাসাতে কুরবানীর চামড়া দিলে তাতে কুরবানী আদায় হবে না।
অনুরূপভাবে কোনো তথাকথিত জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনকেও কুরবানীর চামড়া দেয়া জায়িয হবে না। কারণ তারা তা আমভাবে খরচ করে থাকে। যেমন রাস্তা-ঘাট, পানির ব্যবস্থা, বেওয়ারিশ লাশ দাফন করার কাজে। অথচ কুরবানীর চামড়া গরিব মিসকীনদের হক্ব। তা গরিব মিসকিনদের মালিক করে দিতে হবে।
বর্তমানে যেহেতু দেশে খিলাফত কায়িম নেই। যাকাত বায়তুল মালেও জমা দেয়া হচ্ছে না এবং কুরআন শরীফ-এ উল্লিখিত সর্বপ্রকার খাতও পাওয়া যাচ্ছে না। আর অনেক যাকাতদাতার গরিব আত্মীয়-স্বজন ও গরিব প্রতিবেশী রয়েছে এবং অনেক মাদরাসা রয়েছে যেখানে ইয়াতীমখানাও রয়েছে। তাই যাকাত দেয়ার সহজ ও উত্তম পদ্ধতি হলো- যাকাতের মালকে তিনভাগ করে একভাগ গরিব আত্মীয়-স্বজন, একভাগ গরিব প্রতিবেশী ও একভাগ মাদরাসার ইয়াতীমখানায় প্রদান করা।
আর যদি গরিব আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশী না থাকে তবে সবটাই হক্ব মাদরাসার ইয়াতীমখানায় দেয়া আফযল ও উত্তম। এ সম্পর্কে আফযালুল আউলিয়া, কাইয়্যূমে আউয়াল হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, যাকাত-ফিতরা ইত্যাদি সর্ব প্রকার দান-সদকা অন্যান্য খাতে না দিয়ে কোন হক্ব মাদরাসার ইয়াতীম গরিব ছাত্রদেরকে দান করলে অন্যান্য খাতের চেয়ে লক্ষগুণ ছওয়াব বেশি হবে। কারণ, উহাতে তাদের ইলমে দ্বীন অর্জনে সহায়তা করা হয়।
তাই বলার অপেক্ষাই রাখে না যে, যাকাত দেয়ার সর্বোত্তম স্থান হচ্ছে মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ মাদরাসা ও ইয়াতিম খানা। কারণ ‘মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ’-এর অনন্য বৈশিষ্ট্যসমূহ হচ্ছে এই যে, একমাত্র অত্র প্রতিষ্ঠানেই ইলমে ফিক্বাহর পাশাপাশি ইলমে তাছাউফ শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে যা শিক্ষা করা প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য ফরয। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সম্পূর্ণ শরয়ী পর্দার সাথে বালক ও বালিকাদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বালক শাখার শিক্ষক, কর্মকর্তা ও আমীলগণ প্রত্যেকেই পুরুষ এবং বালিকা শাখার শিক্ষিক, কর্মকর্তা ও আমীলগণ প্রত্যেকেই মহিলা।
এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা- ইসলামের নামে অনৈসলামিক কর্মকা- যেমন, মৌলবাদ, সন্ত্রাসবাদ, বোমাবাজী, হরতাল, লংমার্চ, কুশপুত্তলিকা দাহ ইত্যাদি হারাম ও কুফরীমূলক কাজের সাথে এবং এ ধরনের কোন প্রকার অবাঞ্ছিত সংগঠন বা দলের সাথে সম্পৃক্ত নয়। বরং এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন আমল এবং মাথার তালু থেকে পায়ের তলা পর্যন্ত সব কিছুই সুন্নতের অলঙ্কারে অলঙ্কৃত। সর্বোপরি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদা ভিত্তিক। কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা এবং ক্বিয়াস-এর আলোকে ইলম শিক্ষা দেয়া হয় যার উদ্দেশ্য হচ্ছে বাস্তব জীবনে সুন্নতে নববীর আদর্শ প্রতিষ্ঠা তথা সঠিক ইসলাম কায়িমের মাধ্যমে আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি বা রেযামন্দী হাছিল করা। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সমাজের বিত্তবানদের পাশাপাশি ‘গরিব এবং ইয়াতীমদের’ শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ‘ইয়াতীমখানা এবং লিল্লাহ বোডিং’। সুতরাং কুরবানীর চামড়া বা তার মূল্য অত্র প্রতিষ্ঠানের লিল্লাহ বোডিংয়ে দান করাই হবে অধিক ফযীলতের কারণ অর্থাৎ হাক্বীক্বী ছদক্বায়ে জারিয়াহ।
ষড়যন্ত্র
কুরবানী একটা ঐতিহ্যবাহী মহাপবিত্র ইসলামী ইবাদত। তাই ইসলাম বিদ্বেষী গুমরাহরা এখন কুরবানীর বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে। তার সাথে যোগ দিয়েছে ধর্মব্যবসায়ী উলামায়ে ‘ছূ’ গং।
তথাকথিত মানবতাবাদীরা কুরবানী না করে তার অর্থ দুর্গত তথা দুঃখীদের মাঝে বিতরণের প্রপাগান্ডা করে থাকে। অথচ দুর্গাপূজা, ক্রিসমাস ডে এসব বিজাতীয় ও বিধর্মীদের উৎসব পালনের বিপরীতে তারা কথা বলে না। অথবা ওইসব অনুষ্ঠানের অর্থ দুর্গতদের মাঝে বিলিয়ে দিতে তারা প্রচারণা চালায় না।
এসব ইসলামবিদ্বেষীদের সাথে বর্তমানে যোগ দিয়েছে ধর্মব্যবসায়ী উলামায়ে ছূ’ গং। তারা কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ-এর বিকৃত ও অপব্যাখ্যা এবং সম্পূর্ণ মিথ্যাচার করে কুরবানীকে ওয়াজিব না বলে শুধু সুন্নত বলে এর গুরুত্ব সাধারণের মাঝে কমিয়ে দেয়ার পাঁয়তারা করছে। অথচ আমাদের হানাফী মাযহাব মুতাবিক মালিকে নিছাব প্রত্যেকের জন্যই কুরবানী করা ওয়াজিব।
কুরবানীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ব্যাপক হয়ে উঠছে। কুরবানী কোনো ব্যবসা নয়। অথচ হাটগুলোতে মাইক লাগিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে উচ্চস্বরে গান-বাজনা করানো হচ্ছে। যা কুরবানীর আদর্শ, ধারণা ও চেতনার চরম খিলাফ। দেখা যাচ্ছে, একটা ওয়াজিব পালন করতে গিয়ে মানুষ হাজার হাজার কবীরা গুনাহতে গুনাহগার হচ্ছে।
প্রিন্ট মিডিয়া ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় কুরবানী পশুকে নিয়ে অনেক ব্যঙ্গ চিত্র প্রদর্শন করা হয়। এমনকি অনেক তাচ্ছিল্য ও অবজ্ঞামূলক তথা উপহাসমূলক মন্তব্যও করা হয়। গাফিল মুসলমানরা সবকিছুকেই স্বাভাবিক হিসেবে নিচ্ছে। কিন্তু তারা উপলব্ধি করতে পারছে না যে, কুরবানী একটা ঐতিহ্যবাহী ইসলামী চেতনামন্ডিত বিশেষ ইবাদত। অতীতে হিন্দু রাজারা মুসলমান প্রজাদের কুরবানী করতে দেয়নি। এখনো মুসলমানরা ভারতে ঠিকমত কুরবানী করতে পারে না। তাই এ ষড়যন্ত্রকারী মহল কুরবানীর উপর নানাভাবে বিষোদগার লেপন করে থাকে। এরাই উদ্দেশ্যমূলকভাবে কুরবানীকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়।
প্রকৃতপক্ষে কুরবানী বিরোধীরা কুরবানীর নামে যেসব অপতৎপরতা চালচ্ছে তা প্রকৃতপক্ষে ইসলামকে বিকৃত করা তথা অবমাননা করার শামিল। যা এদেশসহ পৃথিবীর সব মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাতস্বরূপ। কাজেই ইসলামের অবমাননাকারী ও মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতকারী এসব অপতৎপরতাকারীদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের সাবধান থাকতে হবে এবং সোচ্চার হতে হবে।
তথাকথিত মানবতাবাদীরা কুরবানী না করে তার অর্থ দুর্গত তথা দুঃখীদের মাঝে বিতরণের প্রপাগান্ডা করে থাকে। অথচ দুর্গাপূজা, ক্রিসমাস ডে এসব বিজাতীয় ও বিধর্মীদের উৎসব পালনের বিপরীতে তারা কথা বলে না। অথবা ওইসব অনুষ্ঠানের অর্থ দুর্গতদের মাঝে বিলিয়ে দিতে তারা প্রচারণা চালায় না।
এসব ইসলামবিদ্বেষীদের সাথে বর্তমানে যোগ দিয়েছে ধর্মব্যবসায়ী উলামায়ে ছূ’ গং। তারা কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ-এর বিকৃত ও অপব্যাখ্যা এবং সম্পূর্ণ মিথ্যাচার করে কুরবানীকে ওয়াজিব না বলে শুধু সুন্নত বলে এর গুরুত্ব সাধারণের মাঝে কমিয়ে দেয়ার পাঁয়তারা করছে। অথচ আমাদের হানাফী মাযহাব মুতাবিক মালিকে নিছাব প্রত্যেকের জন্যই কুরবানী করা ওয়াজিব।
কুরবানীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ব্যাপক হয়ে উঠছে। কুরবানী কোনো ব্যবসা নয়। অথচ হাটগুলোতে মাইক লাগিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে উচ্চস্বরে গান-বাজনা করানো হচ্ছে। যা কুরবানীর আদর্শ, ধারণা ও চেতনার চরম খিলাফ। দেখা যাচ্ছে, একটা ওয়াজিব পালন করতে গিয়ে মানুষ হাজার হাজার কবীরা গুনাহতে গুনাহগার হচ্ছে।
প্রিন্ট মিডিয়া ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় কুরবানী পশুকে নিয়ে অনেক ব্যঙ্গ চিত্র প্রদর্শন করা হয়। এমনকি অনেক তাচ্ছিল্য ও অবজ্ঞামূলক তথা উপহাসমূলক মন্তব্যও করা হয়। গাফিল মুসলমানরা সবকিছুকেই স্বাভাবিক হিসেবে নিচ্ছে। কিন্তু তারা উপলব্ধি করতে পারছে না যে, কুরবানী একটা ঐতিহ্যবাহী ইসলামী চেতনামন্ডিত বিশেষ ইবাদত। অতীতে হিন্দু রাজারা মুসলমান প্রজাদের কুরবানী করতে দেয়নি। এখনো মুসলমানরা ভারতে ঠিকমত কুরবানী করতে পারে না। তাই এ ষড়যন্ত্রকারী মহল কুরবানীর উপর নানাভাবে বিষোদগার লেপন করে থাকে। এরাই উদ্দেশ্যমূলকভাবে কুরবানীকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়।
প্রকৃতপক্ষে কুরবানী বিরোধীরা কুরবানীর নামে যেসব অপতৎপরতা চালচ্ছে তা প্রকৃতপক্ষে ইসলামকে বিকৃত করা তথা অবমাননা করার শামিল। যা এদেশসহ পৃথিবীর সব মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাতস্বরূপ। কাজেই ইসলামের অবমাননাকারী ও মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতকারী এসব অপতৎপরতাকারীদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের সাবধান থাকতে হবে এবং সোচ্চার হতে হবে।
No comments