হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বরকতময় কতিপয় সুন্নতের অপূব মিল আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের সাথে
قل ان كنتم تحبون الله فاتبعونى.
অর্থঃ- “হে আমার হাবীব (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি বলুন, তোমরা যদি আল্লাহ্ পাক-এর ভালবাসা চাও তবে
আমাকে অনুসরণ কর।” (সূরা আলে ইমরান/৩১) আখিরী রসূল,
হাবীবুল্লাহ্
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অনুসরণের মধ্যে শুধু যে পারলৌকিক
কল্যাণ নিহিত তা নয় বরং তা কল্যাণকর ইহ্কালের নিমিত্তেও। কেননা তাঁর সুন্নতের অনুসরণ
এক দিক থেকে যেমন সমস্ত বালা-মুছিবত ধ্বংসকারী অন্যদিকে তাঁর সমস্ত সুন্নত সমূহ
বিজ্ঞানময় যা বিভিন্ন গবেষণার প্রেক্ষিতে বর্তমান চিকিৎসা বিজ্ঞান স্বীকার করতে
বাধ্য হয়েছে। যুগের চাহিদানুযায়ী মুসলিম বিজ্ঞানীগণ তাদের স্ব স্ব কিতাবে যে সমস্ত
সুন্নতের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা উপস্থাপন করেছেন তার কতিপয় বরকতময় সুন্নতের সাথে
বর্তমান চিকিৎসা বিজ্ঞানের অপূর্ব সমঝোতা উপস্থাপন করা হলো-
হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত নবী করিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম-এর নিকট একটি সুরমাদানী ছিলো। তা হতে তিনি প্রতি রাত্রে তিন শলাকা সুরমা
উভয় চোখ মুবারকে ব্যবহার করতেন।” (তিরমিযী)
বর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞানীগণ গবেষণা করে সুরমার অসাধারণ গুণের কথা স্বীকার
করেছেন। সুরমা ব্যবহারে সূর্যের প্রখর কিরণ চোখের রেটিনার ক্ষতি করতে পারে না।
পক্ষান্তরে সূরমা ব্যবহার না করলে আলট্রাভায়োলেট রশ্মি চোখের রেটিনার যথেষ্ট ক্ষতি
করে থাকে। এছাড়াও সুরমা ব্যবহারে চোখের উপর বিন্দু মাত্র লেড ইনফেকশন হয়না। এবং
এটা চোখের শক্তিশালী জীবানুনাশক। হাদীস
শরীফে ইরশাদ হয়েছে, হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সূতী সাদা পোশাক পছন্দ করতেন।” (উসওয়ায়ে রসূল)
পরবর্তীতে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছেন, সূতী সাদা বস্ত্র পরিহিত ব্যক্তিগণ চামড়া
সংক্রান্ত সকল ব্যাধি থেকে মুক্ত থাকেন। কেননা সাদা পোশাক পরিধানকারী ব্যক্তির
ঘামের ছিদ্র বন্ধ হয়ে যাবার এবং ছেতো রোগ-এর ন্যায় মারাত্মক ব্যাধি আক্রান্ত হবার
সম্ভাবনা থাকেনা।
চিকিৎসা বিজ্ঞানীগণ চর্ম এলার্জি এবং উচ্চ রক্তচাপ আক্রান্ত রোগীদের সর্বদা
সাদা বস্ত্র পরিধানের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ক্রোমোপ্যাথী নীতি অনুযায়ী সাদা কাপড়
মস্তিষ্ক, হৃদপিন্ড ও চর্মের
সংরক্ষক। (উসূলে ক্রোমোপ্যাথী)
আর সূতী কাপড় শরীরকে চর্মরোগ থেকে রক্ষা করে। কেননা পলিষ্টার ও নায়লন সূতার
পোশাক শরীরের ঘর্ষণে তীব্র গরম হয়ে যায়। ফলে এর তাপ শরীরের তাপের সাথে মিলে বৃদ্ধি
পেয়ে চর্ম রোগের সৃষ্টি হয়। এছাড়াও যারা সূতী পোশাক ব্যতীত অন্য পোশাক পরিধান করেন
তাদের চর্ম ক্যান্সার, মহিলাদের স্তন ক্যান্সার, চর্ম চুলকানী, একজিমা ইত্যাদি ব্যাধি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
মিশকাত শরীফে বর্ণিত রয়েছে, হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দায়িমীভাবে পাগড়ী ব্যবহার করতেন।
আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে পাগড়ী পরিধানকারীদের প্রলাপ ও উম্মাদনা রোগের
আশংকা কম থাকে। শুধু তাই নয়, পাগড়ী
পরিধানকারী ব্যক্তি লু-হাওয়া থেকে পূর্ণভাবে রক্ষা পায়।
দায়িমীভাবে পাগড়ী ব্যবহার মস্তিষ্ক শক্তিশালীকরণ ও স্মরণ শক্তি বৃদ্ধিতে খুবই
কার্যকর। জনৈক বিশেষজ্ঞের অনুসন্ধান ও গবেষণা অনুযায়ী যখন (Spinal cord)
সুরক্ষিত থাকবে তখন শরীরের স্নায়ু (Nervous
System) এবং গোশ্ত পেশী (Muscles
System) সঠিক, সুশৃঙ্খল থাকে। আর এটা
শুধুমাত্র পাগড়ী পড়ার দ্বারা সম্ভব।
আখিরী
রসূল, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম পুরুষের জন্য লাল রং এর পোশাক ব্যবহার অপছন্দ করেছেন।” (মিশকাত
শরীফ)
চিকিৎসা বিজ্ঞানীগণ বলেন, লাল রং এর পোশাক
(কোর্তা, রুমাল, লুঙ্গী) সূর্যের আলো থেকে অতিরিক্ত ভিটামিন
ডি টেনে পৌঁছে দেয় ফলে পুরুষের দেহে চরম আকারে চর্মরোগ দেখা দেয়। বিশেষজ্ঞগণ
গবেষণার পর আরো জানান, লাল রং এর পোশাক
পুরুষের Hormon System এর জন্য খুবই
ক্ষতিকারক। যার ফলে শরীরের হরমনের উপর খুবই খারাপ প্রভাব ফেলে। যার পরিপ্রেক্ষিতে
বিশেষ এক ধরণের রস নিঃসৃত হয়ে রক্তের সাথে যুক্ত হয়। মনস্তান্তিক ও ক্রোমোপ্যাথী
বিশেষজ্ঞগণের মতে, সেই নিঃসৃত রস
থেকে উচ্চ রক্তচাপ কামোত্তেজনা, চর্মরোগ, গোশ্ত গ্রন্থি ফোলা,
খিঁচুনী
ইত্যাদি ব্যাধি সৃষ্টি হয়।
শত শত বর্ষ পূর্বে আখিরী রসূল,
হাবীবুল্লাহ্
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা বলে গেছেন, নির্দেশ করেছেন আজকের বিজ্ঞান সেগুলো গবেষণা
করে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেছে।
আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য আল্লাহ্ পাক-এর সন্তুষ্টির নিমিত্তে সমস্ত সুন্নত
পালনের কোশেশ করা। আর সে উছীলায় মহান আল্লাহ্ পাক আমাদের সুন্নতের মধ্যকার রহমত, বরকত,
ফুয়ুজাত, নিয়ামত
নছীব করুন। (আমীন)
No comments