Header Ads

Islamic Quotes Urdu Facebook Cover. QuotesGram

ছবি তুলে ও বেপর্দা হয়ে হজ্জ করার ক্ষেত্রে শরীয়তের হুকুম ।



হজ্জ করা প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ্ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اتموا الحج والعمرة الله
অর্থ: আল্লাহ্ পাক উনার জন্যেই তোমরা হজ্জ ও উমরাহ আদায় কর বা পূর্ণ কর|”
(
সূরা বাক্বারা/১৯৬)

এ আয়াত শরীফে মহান আল্লাহ্ পাক তিনি বান্দাকে শুধুমাত্র আল্লাহ্ পাক উনার সন্তুষ্টি হাছিলের উদ্দেশ্যে হজ্জ ও উমারাহ করার জন্য আদেশ করেছেন| মহান আল্লাহ্ পাক উনার সন্তুষ্টি ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে যেমন- আনন্দ ভ্রমণ, ভিক্ষাবৃত্তি, ব্যবসা-বাণিজ্য, সুনাম-সুক্ষাতি, রিয়া বা লৌকিকতা এক কথায় গইরুল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্জ ও উমারাহ করতে নিষেধ করেছেন|

এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن حضرت انس رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه و سلم ياتى على الناس زمان يحج الاغنياء للنزاهة و او سطهم للتحارة وفقر ائهم للمسئلة و علما ئهم للسمعة و الرياء
অর্থ: হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, মানুষের উপর এমন একটা যামানা বা সময় আসবে সেসময় ধনী ব্যক্তিরা হজ্জ করবে আনন্দ ভ্রমনের জন্য, মধ্যবৃত্ত ব্যক্তিরা হজ্জ করবে ব্যবসা-বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে, দরিদ্ররা হজ্জ করবে ভিক্ষার উদ্দেশ্যে, এবং আলিম নামধারীরা হজ্জ করবে সুনাম অর্জন ও রিয়া বা লৌকিকতার উদ্দেশ্যে|”

মহান আল্লাহ্ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
ولله على الناس حج البيت من استطاع اليه سبيلا
অর্থ: আল্লাহ্ পাক উনার জন্যেই মানুষের প্রতি হজ্জ করা ফরয- যার পথের সামর্থ ও নিরাপত্তা রয়েছে|” (সূরা আল ইমরান/৯৭)

অর্থাৎ, যার পথের সামর্থ ও নিরাপত্তা নেই তার প্রতি হজ্জ করা ফরয নয়| যেমন এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن حضرت ابى امامة رضى الله تعالى عنه قال قال النبى صلى الله عليه وسلم من لم يمنعه من الحج حاجة ظاهرة او سلطان جابر او مرض حابس
অর্থ: হযরত আবূ উমামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, কোন ব্যক্তির হজ্জ ফরয হওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধকারী বিষয় হচ্ছে, প্রকাশ্য বাধা অথবা অত্যাচারী শাসক অথবা গুরুতর অসুখ|”
দলীল-
মাছাবীহুস সুন্নাহ,
দারিমী,
মিশকাত,
মিরকাত|

অর্থাৎ, কোন ব্যক্তির হজ্জ করার ক্ষেত্রে শরয়ী প্রকাশ্য কোন বাধা থাকলে অথবা অত্যাচারী শাসকের কারণে জান-মাল, ঈমান ও আমলের নিরাপত্তা না থাকলে অথবা কঠিন অসুস্থতা থাকলে তার উপর হজ্জ ফরয হওয়া সত্ত্বেও তা সাকিত বা রহিত হয়ে যাবে|

উল্লেখিত আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফ-এর ভিত্তিতে সাব্যস্ত হয়েছে যে, “প্রত্যেক স্বাধীন, বালেগ, সুস্থ, দৃষ্টি শক্তি সম্পন্ন মুসলমানের যদি সাংসারিক প্রয়োজনীয় ব্যয়ের পর হজ্জে যাওয়া ও ফিরে আসা পর্যন্ত পরিবারবর্গের ভরণ-পোষণের অতিরিক্ত সম্বল ও পাথেয় থাকে, যানবাহনের সুষ্ঠ ব্যবস্থা থাকে, তবে তার প্রতি জীবনে একবার হজ্জ করা ফরয| মহিলাদের জন্য স্বামী অথবা কোন সৎচরিত্রবান মাহরাম সঙ্গে থাকতে হবে|”

প্রতিভাত হলো, গোলাম, নাবালেগ, অসুস্থ, অন্ধ ও অমুসলমানের উপর হজ্জ ফরয নয়| আবার যাদের সাংসারিক প্রয়োজনীয় ব্যয়ের পর হজ্জে যাওয়া ও ফিরে আসা পর্যন্ত পরিবারবর্গের ভরণ-পোষণের অতিরিক্ত সম্বল ও পাথেও নেই, যানবাহনের সুষ্ঠ ব্যবস্থা নেই, তাদের উপরও হজ্জ ফরয নয়| একইভাবে যাদের হজ্জের পথে প্রাণ নাশের আশংকা রয়েছে, মাল ছিনাতাইয়ের ভয় রয়েছে, ঈমান ও আমল নষ্ট হওয়ার অর্থাৎ কোন কুফরী ও হারাম কাজ সংঘটিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাদের উপরও হজ্জ ফরয নয়| আর মহিলাদের যদি স্বামী অথবা কোন সৎচরিত্রবান মাহরাম না থাকে তবে তাদের উপর হজ্জ ফরয হবে না|

শরীয়ত যার উপর হজ্জ ফরয করেনি তারপরও যদি সে হজ্জ করে আর তা করতে গিয়ে হজ্জের শর্ত বা ফরয লঙ্ঘন করে তাহলে সে কবীরা গুণাহে গুণাহগার হবে|

যেমন কোন ব্যক্তির সাংসারিক প্রয়োজনীয় ব্যয়ের পর হজ্জে যাওয়া ও ফিরে আসা পর্যন্ত পরিবারবর্গের ভরণ-পোষণের অতিরিক্ত সম্বল ও পাথেও নেই অথচ হজ্জ করতে গেল| এদিকে পরিবারবর্গের ভরণ-পোষণের কষ্টের জন্য সে ব্যক্তির কবীরা গুণাহ হবে|

আবার যে ব্যক্তির প্রাণ নাশের আশঙ্কা রয়েছে এটা যানা সত্বেও সে যদি হজ্জে রওয়ানা করে এবং পথে তাকে হত্যা করা হয়, এজন্য সে আত্মহত্যার গুণাহে গুণাহগার হবে|

আবার যে ব্যক্তির মাল ছিনতাইয়ের ভয় রয়েছে এটা জানা সত্বেও সে যদি হজ্জে রওয়ানা করে এবং তার মাল ছিনতাই হয়ে যায়| এজন্য সেই উক্ত অপরাধের জন্য দায়ী হবে|

একইভাবে যাদের ঈমান ও আমল নষ্ট হওয়ার অর্থাৎ কোন কুফরী ও হারাম কাজ সংঘটিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এটা জানা সত্বেও তারা যদি হজ্জে রওয়ানা করে এবং তাদের দ্বারা কুফরী ও হারাম কাজ সংঘটিত হয় তাহলে এজন্য তাদের কুফরী ও কবীরা গুণাহ হবে|

অনুরূপ মহিলাদের সাথে স্বামী কিংবা কোন সৎচরিত্রবান মাহরাম পুরুষ সঙ্গে না নিয়ে তারা যদি হজ্জে রওয়ানা করে এবং পথে কোন অশালীন কাজ সংঘটিত হয়| এজন্য তারাই কঠিন গুণাহে গুণাহগার হবে|

তাই হজ্জ ফরয হওয়ার জন্য উল্লিখিত সকল প্রকার কবীরা ও কুফরী গুণাহ থেকে বেঁচে থাকা শর্ত করা হয়েছে| এ মর্মে মহান আল্লাহ্ পাক তিনি উনার কালাম পাক-এ ইরশাদ মুবারক করেছেন-

فمن فرض فيهن الحج فلا رفث ولا فسوق ولا جدال فى الحج وما تفعلوا من خير يعلمه الله وتزودوا فان خير الزاد التقوى واتقون ياولى.
অর্থঃ যে ব্যক্তির প্রতি হজ্জ ফরয সে যেন হজ্জ পালনের ক্ষেত্রে নির্জন অবস্থান ও তার সংশ্লিষ্ট কোন কাজ না করে এবং কোন প্রকার ফাসিকী বা নাফরমানীমূলক কাজ না করে এবং ঝগড়া-বিবাদ না করে| আর তোমরা যে নেক কাজ কর তা মহান আল্লাহ্ পাক জানেন| তোমরা পাথেয় সংগ্রহ কর| নিশ্চয়ই উত্তম পাথেও হচ্ছে তাক্বওয়া|” (সূরা বাক্বারা/১৯৭)

উল্লেখ্য, ছবি তোলা এবং পর্দা তরক করা মহান আল্লাহ্ পাক ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের প্রকাশ্য নাফরমানী|

এ সম্পর্কে বহু হাদীছ শরীফ ইরশাদ হয়েছে, তারমধ্যে জরুরত আন্দাজ কতিপয় হাদীছ শরীফ এখানে উল্লেখ করা হলো-

ﻗﺎﻝ ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺍﻻﻋﻤﺶ ﻋﻦ ﻣﺴﻠﻢ ﻗﺎﻝ ﻛﻨﺎ ﻣﻊ ﻣﺴﺮﻭﻕ ﻓﻰ ﺩﺍﺭ ﻳﺴﺎﺭ ﺑﻦ ﻧﻤﻴﺮ ﻓﺮﺍ ﻓﻰ ﺻﻔﺘﻪ ﺗﻤﺎﺛﻴﻞ ﻓﻘﺎﻝ ﺳﻤﻌﺖ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﻗﺎﻝ ﺳﻤﻌﺖ ﺍﻟﻨﺒﻰ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﻘﻮﻝ ﺍﻥ ﺍﺷﺪ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﻋﺬﺍﺑﺎ ﻋﻨﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﻤﺼﻮﺭﻭﻥ
অর্থঃ- হযরত আমাশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু মুসলিম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি মাসরুক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এর সঙ্গে ইয়াসার ইবনে নুমাইরের ঘরে ছিলাম, তিনি উনার ঘরের মধ্যে প্রাণীর ছবি দেখতে পেলেন, অতঃপর বললেন, আমি হযরত আব্দুল্লাহর নিকট শুনেছি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “নিশ্চয় মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তিকে আল্লাহ্ পাক কঠিন শাস্তি দেবেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তোলে বা আঁকে|”

দলীল-
বুখারী শরীফ ২য় জিঃ, পৃষ্ঠাঃ৮৮০|

عن عبد الله بن عمر رضى الله تعالى عنه اخبره ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ان الذين يصنعون هذه الصور يعذبون يوم القيمة يقال لهم احيوا ما خلقتم.
অর্থঃ- হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “যারা প্রাণীর ছবি তৈরী করবে, ক্বিয়ামতের দিন তাদের কঠিন শাস্তি দেয়া হবে| এবং তাদেরকে বলা হবে, যে ছবিগুলো তোমরা তৈরী করেছ, সেগুলোর মধ্যে প্রাণ দান কর|”

দলীল-
বুখারী শরীফ ২য় জিঃ, পৃঃ৮৮০,
মুসলিম শরীফ ২য় জিঃ, পৃঃ২০১|

عن عائشة عليها السلام حدثته ان النبى صلى الله عليه وسلم لم يكن يترك فى بيته شيئا فيه تصاليب الا نقضه.
অর্থঃ- উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা আলাইহাস সালাম তিনি বর্ণনা করেন যে, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘরে প্রাণীর ছবি বা ছবিযুক্ত সকল জিনিস (থাকলে) ধ্বংস করে ফেলতেন|

দলীল-
বুখারী শরীফ ২য় জিঃ পৃঃ৮৮০,
মিশকাত পৃঃ ৩৮৫|

عن حضرت ابى زرعة قال مع ابى هريرة دار مروان بن الحكم فراى فيها تصاوير وهى تبنى فقال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول يقول الله عز وجل ومن اظلم ممن ذهب يخلق خلقا كخلقى فليخلقوا ذرة او ليخلقوا حبة او ليخلقوا شعيرة.
অর্থঃ- হযরত আবু যুরয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমি হযরত আবু হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সঙ্গে মদীনা শরীফের এক ঘরে প্রবেশ করলাম, অতঃপর তিনি ঘরের উপরে এক ছবি অংকনকারীকে ছবি অঙ্কন করতে দেখতে পেলেন, এবং বললেন আমি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি তিনি বলেন, আল্লাহ্ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা তিনি ইরশাদ করেন, মানুষের মধ্যে ঐ ব্যক্তি অধিক অত্যাচারী, যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার সাদৃশ্য কোন প্রাণীর ছুরত সৃষ্টি করে| তাকে বলা হবে একটি শস্যদানা অথবা একটি পিপিলিকা অথবা একটি যবের দানা সৃষ্টি করোতো দেখি| কিন্তু সে সেটা করতে পারবে না|

দলীল-
বুখারী শরীফ ২য় জিঃ, পৃঃ ৮৮০|

عن ابى حجيفة رضى الله تعالى عنه عن ابيه ان النبى صلى الله عليه وسلم نهى عن ثمن الدم وثمن الكلب وكسب البغى ولعن اكل الربى وموكله والواشمة والمستوشمة والمصور.
অর্থঃ- হযরত আবু হুজায়ফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার পিতা হতে বর্ণনা করেন, “খতামুন্নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি রক্তের দাম, ও কুকুরের দাম নিতে এবং যেনাকারীনীর উপার্জন নিষেধ করেছেন, এবং যে ঘুষ খায়, যে ঘুষ দেয়, যে অঙ্গে উলকি আঁকে এবং যে আঁকায়, আর যে ছবি অংকন করে, এদের সবার ওপর হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি লানত দিয়েছেন|”

দলীল-
বুখারী শরীফ ২য় জিঃ পৃঃ ৮৮১|

عن ابى معاوية رضى الله تعالى عنه ان من اشد اهل النار يوم القيمة عذابا المصورون.
অর্থঃ- হযরত আবূ মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত, “নিশ্চয় ক্বিয়ামতের দিন দোযখবাসীদের মধ্যে ঐ ব্যক্তির কঠিন আজাব হবে, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি আঁকে বা তোলে|”

দলীল-
মুসলিম শরীফ ২য় জিঃ পৃঃ ২০১|

عن سعيد قال جاء رجل الى ابن عباس فقال انى رجل اصور هذه الصور فافتنى فيها فقال له ادن منى فدنا منه ثم قال ادن منى فدنا حتى وضع يده على راسه وقال انبئك بما سمعت من رسول الله صلى الله عليه وسلم وسمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول كل مصور فى النار يجعل له بكل صورة صورها نفسا فيعذبه فى جهنم وقال ان كنت لا بد فا علا فاصنع الشجر وما لا نفس له.
অর্থঃ- হযরত সাঈদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, এক ব্যক্তি হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নিকট এসে বলল, আমি এমন এক ব্যক্তি যে প্রাণীর ছবি অংকন করি, সুতরাং এ ব্যাপারে আমাকে ফতওয়া দিন| হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি তাকে বললেন, তুমি আমার নিকটবর্তী হও| সে ব্যক্তি উনার নিকটবর্তী হল| পুণরায় বললেন, তুমি আরো নিকটবর্তী হও| সে আরো নিকটবর্তী হলে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তার মাথায় হাত রেখে বললেন, আমি নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এ ব্যাপারে যা বলতে শুনেছি তোমাকে তা বলব| হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন, “প্রত্যেক প্রাণীর ছবি তৈরীকারীই জাহান্নামে যাবে| এবং মহান আল্লাহ্ পাক তিনি প্রত্যেকটি ছবিকে প্রাণ দিবেন এবং সেই ছবি গুলো তাদেরকে জাহান্নামে শাস্তি দিতে থাকবে|” এবং ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, তোমার যদি ছবি আঁকতেই হয় তবে, গাছ-পালা বা প্রাণহীন বস্তুর ছবি আঁক|

দলীল-
মুসলিম শরীফ ২য় জিঃ পৃঃ ২০২|

عن جابر رضى الله تعالى عنه ان النبى صلى الله عليه وسلم امر عمر بن الخطاب زمن الفتح وهو بالبطحاء ان ياتى الكعبة فيمحو كل صورة فيها فلم يدخلها النبى صلى الله عليه وسلم حتى محيت كل صورة فيها.
অর্থঃ- হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মক্কা বিজয়ের সময় হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে হুকুম করলেন- তিনি যেন পাথর দিয়ে ক্বাবা ঘরের সমস্ত মূর্তি বা চিত্রগুলি ধ্বংস করে দেন|
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ক্বাবা ঘরের মুর্তি বা চিত্রগুলো ধ্বংস না করা পর্যন্ত ক্বাবা ঘরে প্রবেশ করলেন না|

দলীল-
আবু দাউদ শরীফ ২য় জিঃ পৃঃ ২১৯|

عن عيسى بن حميد قال سال عقبة الحسن قال ان فى مسجدنا ساحة فيها تصاوير قال انحروها.
অর্থঃ- হযরত ঈসা ইবনে হুমাইদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত- তিনি বলেন, হযরত ওকবাতুল হাসান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, আমাদের মসজিদে প্রাণীর ছবিযুক্ত একখানা কাপড় রয়েছে| তখন হযরত ঈসা বিন হুমাঈদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, তুমি (মসজিদ থেকে) ওটা সরিয়ে ফেল|

দলীল-
মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বা ২য় জিঃ পৃঃ৪৬|

عن اسامة رضى الله تعالى عنه قال دخلت مع النبى صلى الله عليه وسلم الكعبة فرايت فى البيت صورة فامرنى فاتيته بدلو من الماء فجعل يضرب تلك الصورة ويقول قاتل الله قوما يصورون ما لا يخلقون.
অর্থঃ- হযরত উসামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত| তিনি বলেন, আমি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে পবিত্র ক্বাবা ঘরে প্রবেশ করলাম| আমি ক্বাবা ঘরের ভিতরে প্রাণীর ছবি দেখতে পেলাম| অতঃপর হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হুকুমে আমি পাত্রে করে পানি নিয়ে আসলাম|
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঐ ছবিগুলিতে পানি নিক্ষেপ করলেন এবং বললেন, “মহান আল্লাহ্ পাক তিনি ঐ গোত্রের সাথে জ্বিহাদ ঘোষণা করেছেন, যে গোত্র এরূপ প্রাণীর ছুরত তৈরী করে| যা সে তৈরী করতে অক্ষম অর্থাৎ জীবন দিতে পারেনা|”

দলীল-
মুছান্নেফ ইবনে আবী শায়বা ৮ম জিঃ পৃঃ২৯৬,
তাহাবী ২য় জিঃ পৃঃ৩৬৩|

অনুরূপ অসংখ্য অগণিত হাদীছ শরীফ রয়েছে, যার মাধ্যমে প্রাণীর ছবি তোলা, আঁকা, রাখা ইত্যাদিকে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে| আর মহান আল্লাহ্ পাক ও উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয় সাল্লাম উনাদের পক্ষ থেকে যা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ তাই শরীয়তে হারাম হিসেবে সাব্যস্ত হয়েছে| আর এ কারণেই অনুসরণীয় ইমাম-মুজতাহিদগণ উনারা উনাদের কিতাবে প্রাণীর ছবি আঁকা ও তোলা উভয়কে হারাম বলে ফতওয়া দিয়েছেন|

এ প্রসঙ্গে ফখরুল মুহাদ্দিছীন, আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিখ্যাত ব্যাখ্যা গ্রন্থ বুখারী শরীফের শরাহ- উমদাতুল ক্বারী”-এর ২২ খণ্ড ৭০ পৃষ্ঠায় লিখেন-

صورة الحيوان حرام اشد التحريم وهو من الكبائر وسواء صنعه لما يمتهن او بغيره فحر ام بكل حال.
প্রাণীর ছবি তৈরী করা শক্ত হারাম ও কবীরা গুনাহ| সম্মানের জন্য তৈরী করুক অথবা অন্য কারণে, সবটার একই হুকুম| অর্থাৎ প্রত্যেক অবস্থাতেই তা হারাম|”

অনুরূপভাবে পর্দা তরক করা যে স্বয়ং খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ্ পাক এবং ‍উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের প্রকাশ্য নাফরমানীর অন্তর্ভূক্ত এ সম্পর্কে বহু আয়াত শরীফ এবং হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে| সেসব আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফ থেকে কতিপয় এখানে উল্লেখ করা হলো-

قل للمؤمنين يغضوا من ابصارهم ويحفظوا فرو جهم ذلك ازكى لهم ان الله خبير بما يصنعون . وقل للمؤمنت يغضضن من ابصارهن ويحفظن فرو جهن ولا يبدين زينتهن.
“(
হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি মুমিন পুরুষদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে অবনত রাখে এবং তাদের ইজ্জত-আবরু হিফাযত করে| এটা তাদের জন্য পবিত্রতার কারণ| নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ্ পাক তারা যা করে তার খবর রাখেন| আর আপনি মুমিনা নারীদেরকে বলুন, তারাও যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং তাদের ইজ্জত-আবরু হিফাযত করে ও তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে|”
(
সূরা নূর/৩০, ৩১)

আর পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عن حضرت بريدة رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله علىه وسلم لعلى يا حضرت على رضى الله عليه لا تتبع النظرة النظرة فان لك الاولى وليست لك الا خرة.
অর্থঃ- হযরত বুরাইদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত| তিনি বলেন, আল্লাহ্ পাক উনার রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত আলী আলাইহিস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, হে হযরত আলী আলাইহিস সালাম! দৃষ্টিকে অনুসরণ করবেন না| প্রথম দৃষ্টি (যা অনিচ্ছা সত্ত্বে পতিত হয় তা) ক্ষমা করা হবে; কিন্তু পরবর্তী দৃষ্টি ক্ষমা করা হবে না|” অর্থাৎ প্রতি দৃষ্টিতে একটি কবীরা গুণাহ্ লেখা হয়ে থাকে|
দলীল-
আহমদ,
তিরমিযী শরীফ,
আবু দাউদ শরীফ,
দারিমী,
মিশকাত শরীফ|

পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عن الحسن مرسلا قال بلغنى ان رسول الله صلى الله علىه وسلم قال لعن الله الناظر والمنظور الىه
অর্থঃ-হযরত হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি মুরসাল সূত্রে বর্ণনা করেন, আমার নিকট এই হাদীছ শরীফ পৌছেছে, যে দেখে এবং দেখায় তার প্রতি আল্লাহ্ পাক উনার লানত|”
দলীল-
বায়হাক্বী,
মিশকাত|

অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার কালাম পাক এবং মহান আল্লাহ্ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা সরাসরি পর্দাকে ফরয করে দিয়েছেন| শুধু তাই নয় বরং চোখের দৃষ্টিসহ সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে হিফাযত করে পর্দা করতে বলেছেন|

গবেষণা করে দেখা গেছে যে, “প্রত্যেক মানুষ পুরুষ কিংবা মহিলা হোক, সে প্রতি দুসেকেন্ডে পাঁচটি করে চোখের পলক বা দৃষ্টি ফেলে থাকে| সে হিসেবে প্রতি মিনিটে ১৫০টি পলক বা দৃষ্টি করে থাকে| আর ঘন্টা হিসেবে প্রতি ঘন্টায় ৯০০০ (নয় হাজার) পলক বা দৃষ্টি করে থাকে| সে হিসেবে বেগানা পুরুষ ও মহিলা পরস্পর পরস্পরের প্রতি দৃষ্টি দেয়ার কারণে তাদের উভয়ের প্রতি এক মিনিটে তিনশটি এবং এক ঘন্টায় আঠারো হাজার কবীরা গুনাহ্ লিখা হয়| এ হিসাব একজন পুরুষ ও একজন মহিলার ক্ষেত্রে| আর যদি কোন জনসমাবেশে উপস্থিত মহিলা-পুরুষের পরস্পর পরস্পরের দৃষ্টির হিসাব করা হয় তাহলে গুনাহের পরিমাণ আরো বহুগুন বৃদ্ধি পাবে|

ধরা যাক, কোন জনসমাবেশের সময় ৩ ঘন্টা আর পুরুষ ও মহিলার সংখ্যা ১০০+১০০= ২০০ জন| এখন একজন পুরুষ ও একজন মহিলা পরস্পর পরস্পরের প্রতি দৃষ্টি করার কারণে এক ঘন্টায় আঠারো হাজার কবীরাহ গুনাহ হয় তাহলে একশজন পুরুশ ও একশজন মহিলা পরস্পর পরস্পরের প্রতি দৃষ্টি দেয়ার কারণে কবীরা গুনাহর পরিমাণ হবে ৩৬ লক্ষ এবং তিন ঘন্টায় হবে ১ কোটি ৮ লক্ষ কবীরা গুনাহ্|

অথচ একজন মানুষ যদি একশ বছর হায়াত পায়| মহান আল্লাহ্ পাক না করুন সে যদি নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত (ফরয হওয়া সত্ত্বেও) কিছুই না করে তারপরও ১ কোটি ৮ লক্ষ কবীরা গুনাহ হবেনা| যেমন, একশ বছরে অর্থাৎ জীবনে একবার হজ্জ করা ফরয| তা না করার কারণে ১টা কবীরা গুনাহ| যাকাত একশ বছরে একশটা ফরয| তা না দেয়ার কারণে ১০০টা কবীরা গুনাহ| রোযা ২৯ বা ৩০ টা| হিসাবের সুবিধার্থে ৩০টা ধরে নেয়া হয় তা না রাখার কারণে একশ বছরে ৩০০০ কবীরা গুনাহ| এরপর নামায দৈনন্দিন পাঁচ ওয়াক্ত ৫টা, এক ওয়াক্ত ওয়াজিব ১টা, সুন্নতে মুয়াক্কাদা- ফজরের ফরযের পূর্বে ১টা, যুহরের ফরযের আগে-পরে ২টা, মাগরিবের ফরযের পর ১টা, ইশার ফরযের পর ১টা, মোট ৫টা| তা আদায় না করার কারণে সবমিলে দৈনিক ১১টা কবীরা গুনাহ| বছরে ত্রিশ তারাবীহ (সু্ন্নতে মুয়াক্কাদা)| তা আদায় না করার কারণে ৩০টা এবং দুঈদ (ওয়াজিব) তা আদায় না করার কারণে ২টা| মোট ৩২টা কবীরা গুনাহ| এক বছরে নামায- ৪,০৪৭০০, যাকাত- ১০০, রোযা- ৩০০০, হজ্জ- ১টা, সর্বমোট ৪,০৭৮০১টা|

অর্থাৎ একশ বছর কোন ব্যক্তি নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত না করলে তার সর্বোচ্চ কবীরা গুনাহর পরিমাণ হলো মাত্র ৪ লাখ ৭ হাজার আটশ একটা|

আর একজন পুরুষ কিংবা মহিলা যদি এমন কোন জনসমাবেশে যোগ দেয় যে জনসমাবেশে পুরুষ বা মহিলার সংখ্যা কমপক্ষে একশজন এবং সেখানে একঘন্টা অবস্থান করে তাহলে শুধু চোখের দৃষ্টির কারণে তার কবীরা গুনাহর পরিমান হবে আঠারো লক্ষ| আর লোক সংখ্যা বেশী হলে এবং বেশী সময় অবস্থান করলে কত লক্ষ-কোটি কবীরা গুনাহ হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না| তাহলে পর্দার কত গুরুত্ব রয়েছে তা চিন্তা-ফিকিরের বিষয়|

কাজেই যারা হজ্জ করতে গিয়ে বেপর্দা হয়, তারা দৈনিক যে কত কোটি কোটি কবীরা গুনাহ করে থাকে তা মহান আল্লাহ্ পাক তিনিই বেহতর জানেন|

এটা তো শুধু চোখের গুণাহর কথা বলা হলো| তদ্রূপ প্রত্যেক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের দ্বারা গুনাহ হয়ে থাকে|
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে,
عن حضرت ابى هريرة رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم العينان زناهما النظر والاذنان زناهما الا ستماع واللسان زناها الكلام واليد زناها البطش والرجل زناها الخطى والقلب يهوى ويتمنى ويصدق ذلك الفرج ويكذ به.
অর্থঃ- হযরত আবু হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আল্লাহ্ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “চোখের ব্যভিচার হলো দৃষ্টি করা, কানের ব্যভিচার হলো শ্রবণ করা, মুখের ব্যভিচার হলো কথা বলা, হাতের ব্যভিচার হলো স্পর্শ করা, পায়ের ব্যভিচার হলো ধাবিত হওয়া, অন্তর চায় ও আকাঙ্খা করে এবং লজ্জাস্থান সেটাকে সত্য অথবা মিথ্যায় প্রতিপন্ন করে|”
দলীল-
বুখারী শরীফ,
মুসলিম শরীফ,
কানযুল উম্মাল|

অর্থাৎ যারা বেপর্দা হয়ে থাকে পবিত্র হাদীছ শরীফের বর্ণনা মুতাবিক তারা সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের দ্বারা অবৈধ কাজ তথা ব্যভিচারে মশগুল বা লিপ্ত হয়|

স্মরণীয় যে, হজ্জ করা যেমন মহান আল্লাহ্ পাক ও উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের আদেশ তদ্রুপ পর্দা করা এবং ছবি তোলা থেকে বিরত থাকাও মহান আল্লাহ্ পাক ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের আদেশ|

একটা আদেশ অমান্য করে আরেকটা মান্য করা জায়িয নেই| এ মর্মে মহান আল্লাহ্ পাক তিনি ইরশাদ করেন-

افتؤ منون ببعض الكتاب وتكفرون ببعض فما جزاء من يفعل ذلك منكم الا خزى فى الحيوة الدنيا ويوم القيامة يردون الى اشد العذاب وما الله بغافل عما تعملون.
অর্থ: তোমরা কিতাবের কিছু হুকুম মানবে আর কিছু হুকুম অমান্য করবে (তা আদৌ গ্রহণযোগ্য নয়)| যে ব্যক্তি এরূপ করবে তার পরিণাম হচ্ছে, সে পার্থিব জীবনে লাঞ্চিত হবে এবং পরকালে কঠিন আযাবে নিক্ষিপ্ত হবে| আর আল্লাহ্ পাক তোমাদের আমল সম্পর্কে খবর রাখেন|”
(
সূরা বাক্বারা/৮৫)

কাজেই, ছবি ও পর্দার আদেশ তরক করে যারা হজ্জ করবে তাদের সে হজ্জ কস্মিনকালেও আদায় হবে না| এটাই শরীয়ত তথা কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ-এর সঠিক ফতওয়া| যা প্রকাশ করেন, “হিজরী পঞ্চদশ শতাব্দীর মুজাদ্দীদ ও ইমাম, মুজাদ্দিদে আযম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি|”

তিনি বলেন, পর্দাহীনতা ও ছবির প্রচলন এটা মুসলমানের ঈমান-আমল নষ্ট করার ক্ষেত্রে ইহুদী-নাছারাদের একটা বড় ষড়যন্ত্র| ইহুদী-নাছারা তথা তাবৎ কাফির ও মুশরিকরা সদা তৎপর, মুসলমানদেরকে তাদের ঈমান-আক্বীদা, আমল-আখলাক্ব বিধ্বংসী কর্মকাণ্ডে মশগুল করে দিয়ে জাহান্নামী বানানো|

কাফির মুশরিকদের ষড়যন্ত্রের বিষয়টি মহান আল্লাহ্ পাক তিনি উনার কালাম পাক-এ ঘোষণা করে দেন যাতে মুসলমানরা সাবধান, সতর্ক হতে পারে| যেমন আল্লাহ্ পাক তিনি ইরশাদ করেন-

ود كثير من اهل الكتاب لو ير دو نكم من بعد ايمانكم كفارا حسدا من عند انفسهم
অর্থ: আহলে কিতাব তথা ইহুদী-নাছারাদের অনেকেই হিংসামূলক মনোভাবের কারণে আকঙ্খা করে যে, ঈমান আনার পর আবার তোমরা কাফির হও|”
(
সূরা বাক্বারা/১০৯)

মুসলমানদের ঈমান-আমল নষ্ট করে মুসলমানদেরকে জাহান্নামী বানানোর ষড়যন্ত্র হিসেবে কাফির-মুশরিকরা মুসলমান নামধারী মুনাফিক উলামায়ে ছূ ও গোমরাহ শাসকদের মাধ্যমে ছবি ও বেপর্দার প্রচলন ঘটিয়েছে| এমনকি মুসলমানদের ইবাদত-বন্দেগীগুলো যাতে বরবাদ হয় সেক্ষেত্রেও তারা তাদের ষড়যন্ত্রগুলো কাজে লাগিয়ে থাকে| বিশেষ করে ছবি ও বেপর্দা এ বিষয় দুটি এমন বিষয় যে বিষয় দুটি মুসলমানদেরকে জাহান্নামী করার জন্য যথেষ্ঠ| নাউযুবিল্লাহ্! কারণ হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, বেহেশতের দরজায় লেখা রয়েছে-

الديوث لا يدخل الجنة
অর্থ: দাইয়ূছ (অর্থাৎ যে পুরুষ কিংবা মহিলা নিজে পর্দা করে না এবং তার অধিনস্তদেরকে পর্দা করায় না) সে বেহেশতে প্রবেশ করবে না|”
মুসনাদে আহমদ

একইভাবে হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে-
كل مصور فى النار
অর্থ: প্রত্যেক ছবি তুলনেওয়ালা বা তোলানেওয়ালা জাহান্নামী|”
মুসলিম শরীফ

এখন মুসলমান নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত ইত্যাদি যত ইবাদত-বন্দেগী বা আমলই করুক তাকে যদি দাইয়ূছ ও মুছাওয়ির অর্থাৎ ছবি তুলনেওয়ালা বা তোলানেওয়ালা বানানো যায় তাহলে তার জন্য জাহান্নাম অবধারিত হয়ে গেল| অর্থাৎ এক্ষেত্রে ইবলিস শয়তান যেভাবে সফল একইভাবে ইবলীসের দোসর তাবৎ কাফির-মুশরিকরাও সফল| নাউযুবিল্লাহ্!

তাই মুসলমানকে জাহান্নামী করার জন্য কাফির-মুশরিকরা উল্লেখযোগ্য হাতিয়ার হিসেবে ছবি ও বেপর্দা এ বিষয় দুটিকে বেছে নিয়েছে আর মুসলমানরা তাদের সেই ষড়যন্ত্রের জালে পা দিয়ে জাহান্নামের দিকে ধাবিত হচ্ছে| নাউযুবিল্লাহ্!

এখন কেউ বলতে পারে, ছবি ও বেপর্দার কারণে তাহলে কি হজ্জ করা বন্ধ থাকবে? এর জাওয়াবে বলতে হয় যে, হ্যাঁ হজ্জ ফরয হলে তো অবশ্যই করতে হবে| সেজন্য যে দেশে হজ্জের জন্য ছবি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে সে দেশের সরকারকে বলতে হবে, তিনি যেন ছবি ব্যতীত হজ্জে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন| এবং বিশেষ করে সউদী সরকারকে বলতে হবে, তিনি যেন ছবি ব্যতীত এবং মহিলাদের পর্দার সহিত হজ্জ করার সুষ্ঠু ব্যবস্থা করে দেন| আর মক্কা শরীফ ও মদীনা শরীফে স্থাপিত সি সি ক্যামেরা ও টিভি সরিয়ে ফেলেন| কারণ এসব হজ্জ পালন করার ক্ষেত্রে সর্বোপরি হজ্জে মাবরূর (মক্ববুল) হওয়ার ক্ষেত্রে অন্তরায়|

যদি দেশের সরকার এবং সউদী সরকার ছবির ব্যবস্থা তুলে না নেন এবং পর্দার সাথে হজ্জ করার সুষ্ঠু ব্যবস্থা না করেন তাহলে তারা হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত সুলতানে জায়ির বা অত্যাচারী শাসক হিসেবে গণ্য হবেন| আর তাদের আমলটা হবে হাদীছ শরীফ অনুযায়ী হাজতে যাহিরা বা হজ্জের নিষেধকারী প্রকাশ্য বাধা যা বর্তমান থাকলে হজ্জের ফরয সাকিত বা রহিত হয়ে যায়| যেরূপ মহিলাদের হজ্জ ফরয হওয়ার সমস্ত শর্ত থাকার পরও শুধুমাত্র স্বামী কিংবা সৎচরিত্রবান কোন মাহরাম পুরুষ না থাকার কারণে তাদের উপর হজ্জের ফরয সাকিত বা রহিত হয়ে যায়|

প্রতিভাত হলো যে, শুধু টাকা-পয়সা থাকলেই হজ্জ ফরয হয় না| বরং হজ্জ ফরয হওয়ার জন্য যেমন যাতায়াতের সামর্থ থাকা শর্ত তেমনি শর্ত হচ্ছে জান-মাল, ইজ্জত, ঈমান ও আমলের নিরাপত্তার|

এখন কেউ যদি সত্যিই আল্লাহ্ পাক উনার সন্তুষ্টির জন্যেই হজ্জ করতে চায় তাহলে তাকে উল্লিখিত শর্ত মুতাবিক হজ্জ করতে হবে| আর যদি কেউ গাইরুল্লাহর উদ্দেশ্যে বা আলহাজ্জ ও হাজী খিতাব লাভের উদ্দেশ্যে হজ্জ করতে চায় তবে তার মাসয়ালা আলাদা|

উল্লেখ্য, হজ্জের জন্য যখন ছবি তুলতে বাধ্য হতে হয় এবং ছবি তোলার কারণে মহিলাদের পর্দা তরক হয় এছাড়া সউদী ওহাবী সরকারের মদদে হক্কা শরীফ ও মদীনা শরীফ-এ হজ্জের স্থানসমূহে শত শত সি সি টিভি ও ক্যামেরা স্থাপন করে কোটি কোটি ছবি তোলা হয় এবং পর্দার প্রতিকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে পুরুষ-মহিলা উভয়ের পর্দা নষ্ট করা হয় তখন এ অবস্থায় কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ-এর নির্দেশ মুতাবিক মুসলমানদের জন্য কি করণীয় তা ছহীহ মুসলিম শরীফ”-এ বর্ণিত হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, আল্লাহ্ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন-

من را منكم منكرا فليغيره بيده فان لم يستطع فبلسانه فان لم يستطع فبقلبه وذلك اضعف الايمان. وفى رواية ليس وراء ذلك من الايمان حبة خردل
অর্থ: তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি কোন অন্যায় বা হারাম কাজ সংঘটিত হতে দেখে সে যেনো তা হাত দ্বারা বাধা দেয়| যদি সে তা হাত দ্বারা বাধা দিতে না পারে তাহলে সে যেনো যবান দ্বারা বাধা দেয়| যদি যবানের দ্বারাও বাধা দিতে না পারে তাহলে যেনো অন্তরে ঘৃণা করে উক্ত অন্যায় বা হারাম কাজ থেকে দূরে সরে থাকে| আর এটা সবচেয়ে দুর্বল ঈমানের পরিচয়|”
অন্য বর্ণনায় এসেছে, এরপর ঈমানের আর সরিষা পরিমাণ অংশও অবশিষ্ট থাকে না |”

অর্থাৎ প্রথমতঃ হাতে বাধা দেয়ার ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও যারা বাধা দিবে না|
দ্বিতীয়তঃ মুখে বাধা দেয়ার ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও যারা মুখে বাধা দিবে না|
তৃতীয়তঃ অন্তরে খারাপ জেনে যারা দূরে সরেও থাকবে না| তাদের মূলত ঈমান নেই| অথচ হজ্জ ফরয হওয়ার জন্য ঈমান থাকা বা ঈমানদার হওয়া প্রথম ও পূর্ব শর্ত|

উপরন্তু ছবি ও বেপর্দার মতো কঠিন হারাম ও কবীরা গুনাহর মধ্যে ডুবে গিয়ে যারা হজ্জ পালনের ইচ্ছা করবে তাদের সে হজ্জ কবুল হওয়া তো দূরের কথা সে হজ্জই তাদের জন্য লানতগ্রস্ত ও জাহান্নামী হওয়ার কারণ হবে| কেননা ছহীহ হাদীছ শরীফ-এ সুস্পষ্টরূপে বর্ণিত রয়েছে, যে বেপর্দা হয় সে লানতগ্রস্ত, দাইয়ূছ ও জাহান্নামী| একইভাবে যে ছবি তোলে সেও জাহান্নামী ও গযবপ্রাপ্ত|

তাই হজ্জ ও উমরাহ করার পর যেখানে আমল আরো ভাল হওয়ার কথা সেখানে দেখা যায় সম্পূর্ণ বিপরীত| নাউযুবিল্লাহ্| এর মানে হলো- শরীয়তের হুকুম মুতাবিক হজ্জ ও উমরাহ পালিত হয়নি|

অতএব, শরীয়তের হুকুম মুতাবিক হজ্জ ও উমরাহ করার জন্য যামানার মহানতম ইমাম ও মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আযম, আওলাদে রসূল, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী উনার অনবদ্য তাজদীদ সউদী সরকারসহ প্রত্যেক সরকারের কাছে পৌছে দেয়া এবং তা মানতে বাধ্য করা|

উল্লেখ্য, শরীয়তের কোথাও এরূপ কোন বাদ্য বাধকতা নেই যে, শরীয়তের এক হুকুম অমান্য করে আরেক হুকুম মান্য করতে হবে| বরং রাহনুমায়ে হুজ্জাজকিতাবে উল্লেখ আছে-

لا يليق بالحكمة ايجاب فرض على وجه يفوته فرض اخر
অর্থাৎ এটা হিকমত ও শরীয়তবিরোধী যে, এক ফরয আদায় করতে গিয়ে অপর ফরয বাদ দেয়া|”

আরো উল্লেখ্য, কেউ কেউ বলে কিতাবে উল্লেখ রয়েছে-
الضرورة تبيح المحظورات
অর্থাৎ প্রয়োজনে হারাম বিষয়ও মুবাহ হয়ে যায়|”
অর্থাৎ তাদের বক্তব্য হলো হজ্জের জন্য ছবি তুললে কোন গুনাহ হবে না, কারণ তা প্রয়োজনবশত বা মাযূরের কারণে তোলা হয়|

এর জাওয়াবে বলতে হয় যে, তাদের উক্ত বক্তব্য বা যুক্তি মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়| কারণ এটা কখনই মাযূরের পর্যায়ে পড়ে না| কেননা হজ্জ করার জন্য সরকার বা অন্য কোন পক্ষ থেকে কাউকে বাধ্য করা হয়নি| তাছাড়া ঈমান-আমলের নিরাপত্তা না থাকার কারণে হজ্জই যেখানে ফরয নয় সেখানে সে কি করে মাযূর হলো| এখন কোন মহিলা যদি বলে যে, আমার সম্পদ রয়েছে কিন্তু মাহরাম নেই এক্ষেত্রে আমি মাযূর তাই মাহরাম ছাড়াই হজ্জ করবো; তার এটা গ্রহণযোগ্য বা শরীয়ত সম্মত হবে কি? কস্মিনকালেও না| কারণ মাহরাম না থাকলে হজ্জই ফরয হয় না| আর হজ্জই যদি ফরয না হয় তবে সে মাযূর হলো কিভাবে?

বরং সরকারের পক্ষ থেকে হজ্জের ক্ষেত্রে ছবি তোলাকে আবশ্যক করাটাই মূলত হজ্জ ফরয না হওয়ার একটি অন্যতম কারণ| কেননা শরীয়তের দৃষ্টিতে যারা নেক কাজে বাধা দেয় এবং হারাম কাজ করতে বাধ্য করে তারা যালিমের অন্তর্ভূক্ত| এ প্রসঙ্গে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে-

ومن اظلم ممن منع مساجد الله ان يذ كر فيها اسمه وسعى فى خرابها
অর্থ: ঐ ব্যক্তির চেয়ে বড় যালিম কে? যে মসজিদে আল্লাহ্ পাক উনার নাম মুবারক-এর যিকির করতে বাধা দেয় এবং তা বিনষ্ট করার কোশেশ করে |”
(
সূরা বাক্বারা/১১৪)
অর্থাৎ যারা নেক কাজে বাধা দেয় এবং হারাম কাজ করতে বাধ্য করে তারা সবচেয়ে বড় যালিম|
আর পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, হজ্জ ফরয হওয়ার শর্তসমূহের মধ্যে একটি শর্ত হলো- যালিম বাদশা কর্তৃক বাধাপ্রাপ্ত না হওয়া|

আর বর্তমানে হজ্জের জন্য ছবি তোলাকে আবশ্যক করা বা ছবি তুলতে বাধ্য করাটাই হচ্ছে যালিম বাদশার পক্ষ থেকে হজ্জ করার ক্ষেত্রে বাধা স্বরূপ| তাই এক্ষেত্রে সম্পদ থাকার পরও তার উপর হজ্জ ফরয হবে না|

মূল কথা হলো: হজ্জ ইসলামের একটি অন্যতম বুনিয়াদী ও ফযীলতপূর্ণ ফরয ইবাদত| যা অস্বীকার করা কাট্টা কুফরী| তবে হজ্জ অবশ্যই শর্ত সাপেক্ষে ফরয| বিশেষ করে হজ্জ করতে গিয়ে যদি হারাম-নাজায়িয বা শরীয়তবিরোধী কাজে মশগুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তবে সম্পদ থাকার পরও তার উপর হজ্জ ফরয থাকে না| কেননা হজ্জ ফরয হওয়ার জন্য সম্পদ থাকার পাশাপাশি ঈমান-আমলের নিরাপত্তা থাকাও শর্ত|

কাজেই ছবি তুলে, বেপর্দা হয়ে হজ্জ করা যাবে না বা ঈমান-আমলের নিরাপত্তা না থাকলে হজ্জ ফরয হবে না|” একথা বলার অর্থ কখনোই হজ্জকে অস্বীকার করা নয়|

যেমন কেউ যদি বলে যে, “সম্পদ না থাকলে হজ্জ ফরয হবে না|” তার এ কথা কি হজ্জ অস্বীকার করার শামিল হবে? কখনই নয়|

তা যদি না হয় তাহলে ঈমান-আমলের নিরাপত্তা না থাকলে হজ্জ ফরয হবে নাএ কথা বললে হজ্জকে অস্বীকার করা হবে কেন? প্রশ্নই উঠেনা|

অতএব, হজ্জের ব্যাপারে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের সঠিক আক্বিদা বা বক্তব্য হলো- হজ্জ ইসলামের একটি অন্যতম বুনিয়াদী ও ফরয আমল| যা শর্ত সাপেক্ষে ফরয হয়ে থাকে| হজ্জ ফরয হওয়ার শর্তসমূহের মধ্যে একটি অন্যতম শর্ত হলো ঈমান-আমলের নিরাপত্তা বা নিশ্চয়তা থাকা| বর্তমানে হজ্জ করতে গেলে যেহেতু ঈমান-আমলের নিরাপত্তা থাকে না অর্থাৎ ছবি তোলা ও বেপর্দা হওয়ার মত হাজারো হারাম-নাজায়িয কাজে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় মশগুল হতে হয় তাই সম্পদ থাকলেও হজ্জ ফরয হবে না| এটাই কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াসের ফায়ছালা|


No comments

ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য।

  ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য। ডাল খাওয়ার ফলে কলব প্রসারিত হয় এবং চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পায়। পূর্ববর্তী হযরত নবী-রসুল আলাইহিমুস সালাম উ...

Powered by Blogger.