Header Ads

Islamic Quotes Urdu Facebook Cover. QuotesGram

শা’বানের ১৫ তারিখ রাতকে শবে বরাত বা ভাগ্য রজনী নামে নামকরণ করা বিদয়াত নয় বরং তা শরীয়তসম্মত





অর্ধ শা’বানের রাতটিকে অর্থাৎ শবে বরাত বা ভাগ্য রজনী নামে নামকরণ করা বিদয়াত নয় | বরং তা সম্পূর্ণরূপে কুরআন শরীফ-সুন্নাহ শরীফ তথা শরীয়ত সম্মত | আর শরীয়ত সম্মত কোনো বিষয়কে বিদয়াত বলা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভূক্ত | মুসলমান হয়ে যে ব্যক্তি কুফরী করে সে মুরতাদ ও কাট্টা কাফিরে পরিণত হয় |

প্রকাশ থাকে যে, শা’বানের অর্ধ রাত্রি তথা শবে বরাতের বর্ণনায় মহান আল্লাহ্ পাক তিনি “সূরা দুখান”-এর ৪নং আয়াত শরীফ-এ ইরশাদ করেন-

فيها يفرق كل امر حكيم
অর্থ: “এটি এমন এক রাত যে রাতে সমস্ত প্রজ্ঞাসম্পন্ন বিষয়ের ফায়সালা করা হয় |”

উক্ত আয়াত শরীফ-এর ব্যাখ্যায় হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে-

فيها ان يكتب كل مو لود من بى ادم فى هذه السنة وفيها ان يكتب كل هالك من بنى ادم فى هذه السنة وفيها ترفع اعمالهم وفيها تترل ارزاقهم.
অর্থাৎবরাতের রাতে ফায়সালা করা হয় কতজন সন্তান এক বৎসরে জন্মগ্রহণ করবে এবং কতজন সন্তান মৃত্যু বরণ করবে | এ রাত্রিতে বান্দাদের আমল (আল্লাহ্ পাক উনার নিকট) পেশ করা হয় এবং এ রাত্রিতে বান্দাদের রিযিকের ফায়ছালা করা হয় |”
(
বাইহাক্বী শরীফ, মিশকাত শরীফ)

কাজেই আল্লাহ্ পাক তিনি যেহেতু বলেছেন, বরকতময় রজনীতে সকল কাজের ফায়ছালা করা হয় | আর আল্লাহ্ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও যেহেতু বলেছেন যে, বরাতের রাতেই সকল বিষয় যেমন- হায়াত, মউম, রিযিক ইত্যাদি যা কিছু মানুষের প্রয়োজন হয়ে থাকে তার ফায়ছালা করা হয় এবং আমলনামারও ফায়ছালা করা হয় | সেহেতু বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, নিঃসন্দেহে শা’বানের অর্ধ রাতটি
الليلة القسمة
তথা ‘ভাগ্য রজনী’ | যে প্রসঙ্গে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-

مون اسمائها ليلة القسمة للارزاق والتقدير ما يقضى الله تعالى فيها من امه الخطير. لما روى عن عطاء بن يسار فال اذا كان لنلة النصف من شعبان نسخ لملك الوت اسم كل من يموت من شعبان الى شعبان وان الر جل ليظلم ويفجر وينكح النسوان ويغرس الا شجار وقد نسخ اسمه من الاحياء الى الاموات وما من ليلة بعد ليلة القدر افضل منها.
وفى رواية عنه اذا كان ليلة النصف من شعبان دفع الى ملك الموت علم السلام صحيفة فيقال له اقبض من فى هذه الصحيفة فان العبد ليغرس الاغراس وينكح الازواج ويبنى البنيان وان اسمه قد نسخ فى الموت وما ينتظر به ملك الموت الا ان يؤمر به يقبضه.
وفى رواية تقطع الاجال من شعبان الى شعبان حتى ان الر جل لينكح ويولد له وقد خرج اسمه فى الموت وعن ابن عباس رضى الله تعالى عنه انه قال : ان الله يقضى الاقضية كلها ليلة النصف من شعبان ويسلمها الى ار بابها ليلة القدر.
অর্থ: “অর্ধ শা’বানের রাত তথা শবে বরাতের নামসমূহের মধ্যে একটি নাম হচ্ছে ‘লাইলাতুল ক্বিসমাতি বা ভাগ্য রজনী” | এ কারণে যে, এ রাত্রিতে রিযিকসমূহ ও তাক্বদীর বা ভাগ্য নির্ধারণ, বন্টন ও ফায়ছালা করা হয় যেমন আল্লাহ্ পাক তিনি উনার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ এ মুবারক রাত্রিতে ফায়ছালা করেন |
হযরত আতা ইবনে ইয়াসার রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত রয়েছে | তিনি বলেন, অর্ধ শা’বানের রাত্রিতে (শবে বরাতে) মালাকুত মউত হযরত আযরাইল আলাইহিস সালাম উনাকে ওই সকল ব্যক্তির নামের একটা অনুলিপি বা তালিকা প্রদান করা হয় যারা এক শা’বান থেকে আরেক শা’বানের মধ্যে ইন্তিকাল করবে | এরপরও সে ব্যক্তিরা যুলুম করে, পাপ করে, মেয়েদের বিবাহ করে, গাছ রোপন করে অথচ তাদের হায়াত থেকে মউতের তালিকা প্রদান করা হয়েছে | আর লাইলাতুল ক্বদরের পর এমন কোনো রাত নেই যে রাতটি শবে বরাতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ |
হযরত আতা ইবনে ইয়াসার রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে অপর এক রেওয়ায়েতে বর্ণিত রয়েছে, মধ্য শা’বানের রাত্রিতে (শবে বরাতে) মালাকুল মউত হযরত আযরাইল আলাইহিস সালাম উনাকে একখানা ছহীফা প্রদান করা হয় | অতঃপর উনাকে বলা হয় ওই সকল লোকের রূহ কবজ করুন যাদের নাম এ ছহীফার মধ্যে রয়েছে | আর নিশ্চিতভাবে সে বান্দারা গাছ রোপন করে, বিবাহ-শাদী করে, অট্টালিকা নির্মাণ করে অথচ তাদের নাম মউতের জন্য তালিকাভুক্ত হয়ে গেছে | আর মালাকুল মউত আদেশের অপেক্ষা করছেন, আদেশ হওয়া মাত্রই তিনি তাদের রূহ কবজ করবেন |
অপর বর্ণানায় রয়েছে, ইন্তিকালের মেয়াদ কর্তন করে দেয়া হয় এক শা’বান থেকে পরবর্তী শা’বান পর্যন্ত | তারপরও সে ব্যক্তি বিবাহ-শাদী করে এবং তার থেকে সন্তানাদি জন্মগ্রহণ করে অথচ তার নাম ইন্তিকালের খাতায় চলে গেছে |
হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা উনার থেকে বর্ণিত | তিনি বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পাক সমস্ত ফায়ছালাকৃত বিষয়সমূহ শা’বানের মধ্য রাতে ফায়ছালা করেন এবং তা বাস্তবায়নকারী ফেরেশতাদের প্রতি অর্পণ করেন ক্বদরের রাত্রিতে |

স্মরণীয়, শা’বানের মধ্য রাতটির বহু ফাযায়িল-ফযীলত, মর্যাদা-মর্তবার কথা বর্ণিত রয়েছে | যার পরিপ্রেক্ষিতে উক্ত রাতকে কেবল যে ‘ভাগ্য রজনী’ হিসেবেই নামকরণ করা হয়েছে তা নয় | বরং বেশ কিছু নামে রাতটির নামকরণ করা হয়েছে | যা কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, তাফসীর ও ফিক্বাহর কিতাবে উল্লেখ রয়েছে | নিম্নে কতিপয় নাম পেশ করা হলো-

(
১) الليلة المباركة (আললাইলাতুল মুবারকাতু) বরকতময় রজনী |

(
২) ليلة النصف من شعبان (লাইলাতুল্ নিছফি মিন শা’বানা) অর্ধ শা’বানের রজনী |

(
৩) ليلة القسمة (লাইলাতুল ক্বিসমাতি) ভাগ্য রজনী |

(
৪) ليلة التكفير (লাইলাতুত্ তাকফীরি) গুনাহখতা ক্ষমা বা কাফফারার রাত্রি |

(
৫) ليلة الاجابة (লাইলাতুল ইজাবাতি) দোয়া কবুলের রাত্রি |

(
৬) ليلة الحياة (লাইলাতুল হায়াতি) হায়াত বা আয়ু বৃদ্ধির রাত্রি |

(
৭) ليلة عيد الملائكة (লাইলাতু ঈদিল্ মালায়িকাতি) ফেরেশতাগণের ঈদের রাত্রি |

(
৮) ليلة البراءة (লাইলাতুল বারাআতি) মুক্তির রাত্রি বা ভাগ্য বন্টনের রাত |

(
৯) ليلة التجويز (লাইলাতুত্ তাজবীযি) বিধান সাব্যস্ত করার রাত্রি |

(
১০) ليلة الفيصلة (লাইলাতুল ফায়সালাতি) সিদ্ধান্ত নেয়ার রাত্রি |

(
১১) ليلة الصك (লাইলাতুছ্ ছক্কি) ক্ষমা স্বীকৃতি দানের রাত্রি |

(
১২) ليلة الجاءزة (লাইলাতুল জায়িযাতি) মহা পুরস্কারের রাত্রি |

(
১৩) ليلة الرجحان (লাইলাতুর্ রুজহানি) পরিপূর্ণ প্রতিদানের রাত্রি |

(
১৪) ليلة التعظيم (লাইলাতুত্ তা’যীমি) সম্মান হাছিলের রাত্রি |

(
১৫) ليلة التقدير (লাইলাতুত্ তাক্বদীরি) তক্বদীর নির্ধারণের রাত্রি বা ভাগ্য নির্ধারণের রাত |

(
১৬) ليلة الغفران (লাইলাতুল গুফরানি) ক্ষমাপ্রাপ্তির রাত্রি |

(
১৭) ليلة العتق من النار (লাইলাতুল ইতক্বি মিনান্ নীরানি) জাহান্নামের আগুন থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার রাত্রি |

(
১৮) ليلة العفو (লাইলাতুল আফবি) অতিশয় ক্ষমা লাভের রাত্রি |

(
১৯) ليلة الكرام (লাইলাতুল কারামি) অনুগ্রহ হাছিলের রাত্রি |

(
২০) ليلة التوبة (লাইলাতুত্ তাওবাতি) তওবা কবুরের রাত্রি |

(
২১) ليلة الندم (লাইলাতুন্ নাদামি) কৃত গুনাহ স্মরণে লজ্জিত হওয়ার রাত্রি |

(
২২) ليلة الذكر (লাইলাতুয্ যিকরি) যিকির-আযকার করার রাত্রি |

(
২৩) ليلة الصلوة (লাইলাতুছ্ ছলাতি) নামায আদায়ের রাত্রি |

(
২৪) ليلة الصدقة (লাইলাতুছ্ ছদাক্বাতি) দানের রাত্রি |

(
২৫) ليلة الخيرات (লাইলাতুল খইরাতি) নেক কাজ সম্পাদনের রাত্রি |

(
২৬) ليلة انزال الر حمة (লাইলাতু ইনযালির রহমাতি) রহমত নাযিলের রাত্রি |

(
২৭) ليلة صلوة وسلام على سيد المر سلين صلى الله عليه وسلم (লাইলাতু ছলাতিন ওয়া সালামিন আলা সাইয়্যিদিল মুরসালীন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাইয়্যিদুল মুরসালীন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি ছলাত ও সালাম পাঠের রাত্রি ইত্যাদি |
এছাড়াও ‘শবে বরাতের’ আরো অনেক নাম রয়েছে | যা এখানে উল্লেখ করা সম্ভব হয়নি |


No comments

ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য।

  ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য। ডাল খাওয়ার ফলে কলব প্রসারিত হয় এবং চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পায়। পূর্ববর্তী হযরত নবী-রসুল আলাইহিমুস সালাম উ...

Powered by Blogger.