Header Ads

Islamic Quotes Urdu Facebook Cover. QuotesGram

কাযযাবগং তথা উলামায়ে সূ’দের মিথ্যাচারিতার দাঁতভাঙ্গা জবাব ১২


« পূর্ব প্রকাশের পর
স্বপ্নে লক্বব প্রাপ্তি সম্পর্কিত মিথ্যাচারিতা
আশাদ্দুদ দরজার জাহিল কাযযাবুদ্দীন তার ভ্রান্ত মতবাদেআরো লিখেছে, “ ….. তিনি স্বপ্নের মাধ্যমে আল্লাহ কর্তৃক, রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক ও আউলিয়াগণ কর্তৃক এসব খেতাব লাভ করেছেন বলে দাবি করেন, অথচ স্বপ্ন শরীয়তে হুজ্জাত বা দলীল নয়।
মিথ্যাচারিতার খণ্ডনমূলক জবাব
কাযযাবুদ্দীনের উপরোক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণই মনগড়া, সাজানো ও মিথ্যা। কাযযাবুদ্দীন কোন দিনও প্রমাণ করতে পারবেনা যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি লক্বব মুবারক সম্পর্কে অনুরূপ বক্তব্য প্রদান করেছেন। কারণ রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি খুব ভাল করেই জানেন যে, স্বপ্নই শুধু লক্বব প্রাপ্তির মাধ্যম নয়। বরং স্বপ্ন ছাড়াও ইলহাম, ইলক্বা, ও কাশফের মাধ্যমেও লক্বব লাভ করা যায়। কাজেই শুধুমাত্র স্বপ্নের মাধ্যমেই এসব লক্বব লাভ করেছেনএরূপ কথা বলার প্রশ্নই উঠেনা। মূলতঃ আউলিয়ায়ে কিরামগণ উনারা মহান আল্লাহ পাক, উনার হাবীব ও ওলীগণ উনাদের থেকে যে লক্বব লাভ করে থাকেন তা শুধু স্বপ্নেই লাভ করেননা বরং এর সাথে সাথে ইলহাম, ইলক্বা ও কাশফের মাধ্যমেও লাভ করে থাকেন।
স্মর্তব্য যে, স্বপ্ন, ইলহাম, ইলক্বা ও কাশফ এগুলো যদিও শরীয়তের দলীল নয়; তবে যে সকল স্বপ্ন, ইলহাম, ইলক্বা ও কাশফের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস সম্মত বা কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াসের খিলাফ নয়, তা অবশ্যই গ্রহণযোগ্য ও অনুসরণীয়। একথা কাযযাবুদ্দীন নিজেও তার ভ্রান্ত মতবাদেলিখেছে, “…..তবে কুরআন, হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত বিষয়ের অনুকুলে কোন স্বপ্ন হলে সেটাকে সহযোগিতা হিসেবে গ্রহণ করা যায়।অর্থাৎ কাযযাবুদ্দীনের উক্ত বক্তব্য দ্বারা এটাই বুঝানো হয়েছে যে, যদি কোন স্বপ্ন শরীয়ত বিরোধী না হয়, তবে তা অনুসরণীয় ও গ্রহণযোগ্য।
কাযযাবুদ্দীন যেহেতু রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার লক্ববসমূহ, তা স্বপ্নের মাধ্যমে হোক অথবা ইলহাম, ইলক্বা ও কাশফের মাধ্যমেই হোক যেভাবেই লাভ হোকনা কেন অর্থাৎ সেগুলোর কোনটাই শরীয়ত বিরোধী প্রমাণ করতে সক্ষম হয়নি। তাই সেগুলো গ্রহণযোগ্য বলে প্রমাণিত হলো।
যদি কাযযাবুদ্দীন স্বপ্নের মাধ্যমে প্রাপ্ত বলে এবং স্বপ্ন শরীয়তে হুজ্জত নয় বলে রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার লক্বব সমূহকে অস্বীকার করতে চায়, তবে তাকে পূর্ববর্তী ইমাম-মুজতাহিদ ও আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ উনাদের স্বপ্নসহ অনেক কিছুই অস্বীকার করতে হবে। অস্বীকার করতে হবে দ্বীনের অর্ধেক ইলম, ইলমে তাছাউফ বা ইলমে বাতেনাকেও। কারণ তাছাউফের অধিকাংশ বিষয়গুলোই স্বপ্ন, ইলহাম, ইলক্বা, কাশফ ও রুহানিয়াতের সাথে সম্পর্কযুক্ত। অর্থাৎ যাদের রূহানিয়াত রয়েছে বা মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে রুহানী সম্পর্ক রয়েছে, তারা প্রতিনিয়ত মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব উনাদের পক্ষ থেকে ইলহাম ইলক্বা বা স্বপ্নের মাধ্যমে প্রভূত নিয়ামত লাভ করে থাকেন। বিশেষ করে আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বপ্নে এবং জাগ্রতবস্থায় হযরত আউলিয়ায়ে কিরামগণ উনাদের সাথে সাক্ষাৎ দান করেন এবং উনাদের সর্বপ্রকার আরজু পূর্ণ করেন। যেমন- অভাব-অনটন দূর করা, বিপদাপদ থেকে রক্ষা করা, রিযিকের ফায়সালা করা, অসূখ বা বিমারী থেকে শেফা দান করা, ঈমান বা হিদায়েত দান করা, কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, তাফসীর ফিক্বাহ ইত্যাদি যাবতীয় ইলম্ শিক্ষা দেয়া, পরকালে জান্নাতের সুসংবাদ দেয়া বিভিন্ন বদ আক্বীদা ও আমল থেকে সতর্ক করে দেয়া, কারো মাক্বাম বা মর্যাদা সম্পর্কে সুসংবাদ প্রদান করা, ওলীগণকে গাউছ, কুতুব, মুজাদ্দিদ ইত্যাদি লক্বব প্রদান করাসহ আরো বহু বিষয়ের ফায়সালাই তিনি স্বপ্নে করে থাকেন। এর বহু প্রমাণ নির্ভরযোগ্য বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য কিতাবাদিতে উল্লেখ রয়েছে।
বিশেষ করে ইমাম আবূ সাঈদ আব্দুল্লাহ মালিক ইবনে উছমান নিশাপূরী রহমতুল্লাহি আলাইহি, যিনি উস্তাদ হাকীম নিশাপূরীনামে খ্যাত, উনার বিখ্যাত নির্ভরযোগ্য ও বহুল প্রচারিত শরফুন নবীনামক গ্রন্থটি এ ব্যাপারে সবচেয়ে বড় প্রমাণ। কাযযাবুদ্দীনের গুরু মাহিউদ্দীন খান স্বপ্নযোগে রসূলুল্লাহনাম দিয়ে বাংলায় কিতাবটি প্রকাশ করেছে। কাযযাবুদ্দীনের প্রতি নছীহত সে যেন উক্ত কিতাবখানা ভালরূপে পড়ে নেয়। তবে এব্যাপারে তার আর কোন সন্দেহই থাকবেনা।
কারণ উক্ত কিতাবে বর্ণিত ঘটনাসমূহ প্রমাণ করে যে, (১) হযরত আউলিয়ায়ে কিরামগণ উনারা দায়িমীভাবেই রসূলে মকবূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যিয়ারত লাভ করে থাকেন। (২) মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব তিনি স্বপ্নের মাধ্যমে উম্মতের দ্বীনি ও দুনিয়াবী সকল বিষয়ের ফায়সালা করে থাকেন। (৩) লক্বব ও পদ মর্যাদাসহ অন্যান্য বাতিনী নিয়ামতও মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বপ্নে দান করে থাকেন। (৪) মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ওলীগণ উনাদেরকে স্বপ্নে যে নিয়ামত দান করেছেন, ওলীগণ উনারা তা প্রকাশ করেছেন। (৫) পরবর্তী অনুসরণীয় কোন ওলীগণই উল্লিখিত স্বপ্ন সম্পর্কে কোনরূপ চু-চেরা করেননি। স্বপ্ন শরীয়তে হুজ্জাত নয় বলে অস্বীকার বা তিরস্কারও করেননি। বরং সকলেই বিশ্বাস করেছেন এবং ইবরত ও নছীহতের জন্য কিতাবে দলীল হিসেবে সে সব উল্লেখ করেছেন। (৬) স্বপ্নে প্রাপ্ত হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ক্বওল মুবারককে উনারা দলীল হিসেবেও গ্রহণ করেছেন। যেমন, এটা হাদীছ শরীফ কিনা, অথবা ছহীহ না মওজু, তা সরাসরি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে স্বপ্নে জিজ্ঞাসা করে জেনে নিয়েছেন এবং তা হাদীছ শরীফ-এর সনদের ক্ষেত্রে দলীল হিসেবে পেশ করেছেন এবং আহলে হক্ব সকলেই তা মেনে নিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই স্বপ্ন শরীয়তে হুজ্জাত বা দলীল নয় একথা আমভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। বরং যে স্বপ্ন কুরআন শরীফ, সুন্নাহ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াসের খিলাফ সে স্বপ্ন শরীয়তে দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। আর যে স্বপ্ন শরীয়তের অনুকূলে, তা অবশ্যই শরীয়তে গ্রহণযোগ্য ও অনুসরণীয়।
কাজেই রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি যদি বলেও থাকেন যে, “এসব উপাধি আমাকে স্বপ্নে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রদান করেছেন”, তবে তা অবশ্যই সত্য ও গ্রহণযোগ্য। কারণ এতে শরীয়ত বিরোধী কিছু রয়েছে, কাযযাবুদ্দীন কখনোই তা প্রমাণ করতে পারবেনা।
কাযযাবুদ্দীন যদি রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার উপরোক্ত বক্তব্যকে মিথ্যা প্রমাণ করতে চায় ও অস্বীকার করতে চায় তবে তাকে প্রথমতঃ প্রমাণ করতে হবে যে, স্বপ্নে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কাউকে লক্বব দিতে পারেননা। অথবা লক্বব দিতে পারেন এধরনের দাবি করা শরীয়তের খিলাফ। দ্বিতীয়তঃ তাকে প্রমাণ করতে হবে ও স্বীকার করতে হবে যে, পূর্ববর্তী যে সকল ওলীগণ উনারা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বরাতে স্বপ্নের কথা প্রকাশ করেছেন, তা সবই মিথ্যা ও শরীয়ত বিরোধী। সেগুলোর একটাও গ্রহণযোগ্য নয়। তবেই কাযযাবুদ্দীনের উক্ত বক্তব্য সত্য বলে প্রমাণিত হবে।


No comments

ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য।

  ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য। ডাল খাওয়ার ফলে কলব প্রসারিত হয় এবং চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পায়। পূর্ববর্তী হযরত নবী-রসুল আলাইহিমুস সালাম উ...

Powered by Blogger.