শুধু কুরআন শরীফ ই না পবিত্র হাদিছ শরীফ ও হালাল হারাম নির্ধারক।সুবহানাল্লাহ!
মিরকাতুল মাফাতীহ শরহে মিশকাতুল
মাসাবীহ তে ১/২৪৯ পৃষ্ঠায় ১৬৪
নং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বলা হয়েছে-
وَعَنِ الْعِرْبَاضِ بْنِ سَارِيَةَ -
رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ - قَالَ: قَامَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ - فَقَالَ: " «أَيَحْسَبُ
أَحَدُكُمْ مُتَّكِئًا عَلَى أَرِيكَتِهِ يَظُنُّ أَنَّ اللَّهَ لَمْ يُحَرِّمْ شَيْئًا
إِلَّا مَا فِي هَذَا الْقُرْآنِ؟ ! أَلَا وَإِنِّي وَاللَّهِ قَدْ
أَمَرْتُ وَوَعَظْتُ وَنَهَيْتُ عَنَ أَشْيَاءَ إِنَّهَا لَمِثْلُ الْقُرْآنِ أَوْ
أَكْثَرُ
হযরত ইরবাদ্ব ইবনে সারিয়া
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন-
قَامَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - فَقَالَ: " «أَيَحْسَبُ
أَحَدُكُمْ مُتَّكِئًا عَلَى أَرِيكَتِهِ
একদিন নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ নবী আলাইহিমুস
সালাম উনাদের নবী, রসূল
আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
দাঁড়িয়ে খুতবা মুবারক দিলেন। খুতবা মুবারকে কি বললেন-
أَيَحْسَبُ أَحَدُكُمْ مُتَّكِئًا عَلَى أَرِيكَتِهِ
يَظُنُّ
তোমরা কি তোমাদের গদিতে বসে
বসে হেলান দিয়ে নিজের আমিত্ব প্রকাশ করে তোমরা একথা ধারণা করো-
أَنَّ اللَّهَ لَمْ يُحَرِّمْ شَيْئًا إِلَّا
مَا فِي هَذَا الْقُرْآنِ؟ !
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ ছাড়া আর
কোথাও কোন জিনিস হারাম করেননি। অর্থাৎ পবিত্র কুরআন শরীফ উনার দ্বারা যা হারাম
ঘোষণা করা হয়েছে, সেটাই হারাম
এটা কি তোমরা ধারণা করো? যে এর বাইরে হারাম কিছু নেই।
সেটা বলে স্বয়ং নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ,
নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী,
রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের
রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
أَلَا وَإِنِّي وَاللَّهِ
সাবধান হয়ে যাও! সমস্ত
আসমানবাসী, যমীনবাসী,
বদ-আক্বীদা বদ মাযহাবের
লোকগুলি-
وَإِنِّي وَاللَّهِ
নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক
উনার ক্বসম!
قَدْ أَمَرْتُ وَوَعَظْتُ وَنَهَيْتُ عَنَ
أَشْيَاءَ
নিশ্চয়ই আমি যা আদেশ মুবারক
করেছি, নছীহত
মুবারক করেছি, নিষেধ
করেছি-
إِنَّهَا لَمِثْلُ الْقُرْآنِ
নিশ্চয়ই তা পবিত্র কুরআন
শরীফ উনার মতো হুকুম রাখে। সুবহানাল্লাহ!
أَوْ أَكْثَرُ
বরং তার চাইতেও বেশি হুকুম
রাখে। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ,
নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী,
রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের
রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি শুনতে পেয়েছিলেন,
কিছু লোক বলাবলি করতেছিলো,
এই কুরআন শরীফ উনার মধ্যে যা
হারাম করা হয়েছে সেটাই হারাম হবে, যা হালাল করা হয়েছে সেটাই হালাল হবে। এটা শুনে নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ,
নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী,
রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের
রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খুতবা মুবারক দিলেন,
তোমরা কি ধারণা করো,
গদিতে হেলান দিয়ে ফখর করে,
অহঙ্কার করে বলো,
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র
কুরআন শরীফ উনার মধ্যে যা হারাম করেছেন শুধু তাই হারাম হবে। মহান আল্লাহ পাক উনার
হাবীব যিনি হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল,
যিনি নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হারাম করলে সেটা হারাম হবে না সেটা কি তোমরা ধারণা করো?
এরপর তিনি নিজেই বললেন-
أَلَا
সাবধান হয়ে যাও!
وَإِنِّي وَاللَّهِ
মহান আল্লাহ পাক উনার
ক্বসম! নিশ্চয়ই
قَدْ أَمَرْتُ وَوَعَظْتُ وَنَهَيْتُ عَنَ
أَشْيَاءَ
মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব,
নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী,
রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের
রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন,
মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম!
নিশ্চয়ই আমি যা আদেশ মুবারক করেছি, ওয়াজ মুবারক করেছি, নছীহত মুবারক করেছি, নিষেধ করেছি প্রত্যেকটাই
إِنَّهَا لَمِثْلُ الْقُرْآنِ
নিশ্চয়ই পবিত্র কুরআন শরীফ
উনার সমপরিমাণ হুকুম রাখে। সুবহানাল্লাহ!
أَوْ أَكْثَرُ
এরপরে তিনি বললেন,
তার চাইতেও বেশি হুকুম রাখে।
বেশি হলো কি করে। এখন অনেকে বলতে পারে, তাহলে কি কুরআন শরীফ উনার চাইতে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার
মর্যাদা বেশি। না, একথাটা তার
চিন্তা করাটা কখনও ঠিক হবে না। এটা হচ্ছে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার যে বিষয়টা বলা
হয়েছে, এখানে
পবিত্র কুরআন শরীফ উনার চাইতেও বেশি এর কারণ হলো আমরা মহান আল্লাহ পাক উনাকে
চিনতামও না, জানতামও না,
চিনিওনা জানিওনা। আমরা চিনেছি
বুঝেছি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ,
নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী,
রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের
রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে। তিনি বলেছেন,
এটা পবিত্র কুরআন শরীফ,
এটা পবিত্র হাদীছ শরীফ,
একজন মহান আল্লাহ পাক আছেন।
তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, আমরা সেটা বিশ্বাস করি।
এখন এই পবিত্র হাদীছ শরীফ
উনাকে যদি বিশ্বাস না করতাম তাহলে পবিত্র কুরআন শরীফ কি করে আমরা বিশ্বাস করবো?
কাজেই,
প্রথমে পবিত্র হাদীছ শরীফ,
মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বিশ্বাস
করতে হবে। উনাকে বিশ্বাস করলেই মহান আল্লাহ পাক উনাকে বিশ্বাস করা যাবে সেটাই-
أَوْ أَكْثَرُ
বরং পবিত্র কুরআন শরীফ উনার
চাইতে বেশি গুরুত্ব রয়েছে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বিশ্বাস করার। সুবহানাল্লাহ!
এই ইহুদী-নাছারা,
কুরাইশ,
কাফির-মুশরিক তারা ঈমান আনত
পারলোনা কেন? তারা মহান
আল্লাহ পাক উনাকে মেনেছিলো, মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাকে মানেনি যার জন্য ঈমানদার হতে পারেনি। চির জাহান্নামী হয়ে গেছে। সেটাই মহান
আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
তোমরা মনে করো পবিত্র কুরআন
শরীফ উনার মধ্যে শুধু হালাল-হারামের বিষয় রয়েছে বরং মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল,
নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যা হারাম করবেন,
হালাল করবেন সেটাও হালাল-হারাম
হিসেবে অবশ্যই এটা বিশ্বাস করতে হবে বরং সেই পবিত্র কুরআন শরীফ উনার হালাল-হারামের
চেয়েও নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ,
নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী,
রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের
রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদেশ নির্দেশ মুবারককে বেশি
গুরুত্ব দিতে হবে। সুবহানাল্লাহ! এ বিষয়টা খুব ফিকির করতে হবে। এখানে আক্বাইদের যে
বিষয়টা রয়েছে, তা অবশ্যই
বিশ্বাস করতে হবে। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে যা রয়েছে এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ
উনার মধ্যে যা রয়েছে উনাদের সবকিছুই বিশ্বাস করতে হবে। এর মধ্যে কোন চু-চেরা
ক্বীল-ক্বাল করা যাবে না। আক্বাইদের সূক্ষ্ম কতগুলো বিষয় রয়েছে। কোন অবস্থাতেই
মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাদের কোন বিষয়ে চু-চেরা, ক্বীল-ক্বাল করলে সে ঈমানদার থাকতে পারবে না। এখন যে কোন
বিষয় হোক, এটা
ওযূ-গোসল, নামায,
রোযা হোক,
হজ্জ-যাকাত হোক,
যাকাত-ফিতরা হোক,
ব্যবসা-বাণিজ্য হোক,
চাকরি-বাকরি হোক অথবা এখন
বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী বেপর্দার হুকুম হোক, গান-বাজনার হুকুম হোক, ছবির হুকুম হোক, টিভি চ্যানেলের হুকুম হোক, খেলাধুলা হোক, গণতন্ত্র, রাজতন্ত্র ইত্যাদি সবকিছু যেহেতু পবিত্র কুরআন শরীফ,
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে
নিষেধ করা হয়েছে এখন এই সবগুলি হারাম জানতে হবে। এখানে কিন্তু হালাল বলার কোন
সুযোগ নেই। এখন মহান আল্লাহ পাক তিনি বলে দিলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব,
নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা যা আদেশ করেছেন নির্দেশ করেছেন সেটা হুবহু
মানতে হবে; এর মধ্যে
কোন চু-চেরা, ক্বীল-ক্বাল
করা যাবে না। কেউ যদি করে সে ঈমানদার থাকতে পারবে না।
No comments