সুলতানুল হিন্দ, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ হযরত খাজা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মান ও মর্যাদা
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “মহান আল্লাহ পাক তিনি যাকে ইচ্ছা উনাকেই উনার খাছ বান্দা হিসেবে
মনোনীত করে থাকেন।” (পবিত্র সূরা শুরা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩)
উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে যাঁদের কথা বলা হয়েছে উনারা হচ্ছেন মনোনীত ওলীআল্লাহ
তথা মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট। হযরত খাজা ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি
তিনি সেই উচুঁ স্তরের ওলীআল্লাহ। উনাদের সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন
শরীফ উনার মধ্যে অন্যত্র ইরশাদ মুবারক করেন,
“সাবধান!
নিশ্চয়ই যারা মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী উনাদের কোনো ভয় নেই এবং চিন্তা-পেরেশানী নেই।”
(পবিত্র সূরা ইউনুস শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৬২)
অর্থাৎ যারা মহান আল্লাহ পাক উনার খালিছ ওলী হয়ে থাকেন মূলত উনাদের কোনো প্রকার
চিন্তা পেরেশানী থাকে না; উনারা কোনো মাখলুকাতকে
ভয় পান না, কোনো রাজা-বাদশা আমীর উমরাহকে
ভয় পান না; উনারা শুধুমাত্র মহান আল্লাহ পাক
উনাকেই ভয় করে থাকেন। হযরত খাজা ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পবিত্র জীবনী মুবারক
উনার মধ্যে অসংখ্য মেছাল রয়ে গেছে।
একবার তিনি এক এলাকা দিয়ে ছফর করছিলেন এমন সময় দেখতে পেলেন পথিমধ্যে একটি পবিত্র
হুজরা শরীফ দেখা যাচ্ছে। সেই পবিত্র হুজরা শরীফ উনার মুবারক দরজা খোলা রয়েছে। সেই ঘরের
ভিতরে মহান আল্লাহ পাক উনার একজন ওলী বসে রয়েছেন। হযরত গরীবে নেওয়াজ হাবীবুল্লাহ রহমতুল্লাহি
উনার দিকে সেই ওলীআল্লাহ তিনি তাকালেন এবং উনাকে হাত দিয়ে ইশারা করে ডাক দিলে হযরত
খাজা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হুজরা শরীফ উনার ভিতরে ঢুকার পূর্বে দেখতে পেলেন
পবিত্র হুজরা শরীফ উনার দু’দিকে দুটি বাঘ বসে রয়েছে। তিনি ফিকির করলেন, নিশ্চয়ই বাঘ দুটি মহান আল্লাহ পাক উনার ওলী উনার খাদিম হবে।
এরপর তিনি ঘরের ভিতরে প্রবেশ করলেন। যখন তিনি ভিতরে প্রবেশ করলেন তখন সেই মহান আল্লাহ
পাক উনার ওলী বললেন, হে বাবা! আপনাকে দেখে
মনে হচ্ছে আপনি মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাদের মুবারক সন্তুষ্টি হাছিলের লক্ষ্যে মশগুল রয়েছেন। তাহলে আপনি দুটি নছীহত সবসময়
মনে রাখবেন যা আপনার জীবনে কাজে লাগবে।
প্রথম নম্বর হচ্ছে, আপনি মহান আল্লাহ পাক
উনাকে ছাড়া কোনো মাখলুকাতকে ভয় করবেন না,
একমাত্র
মহান আল্লাহ পাক উনাকেই ভয় করবেন। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, মহান আল্লাহ পাক উনার কাছেই সমস্ত কিছু চাবেন বেশি বেশি আরজি ও দোয়া করবেন। পবিত্র
হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে রয়েছে “যে চায় সে পায়” আর যে চায় না সে কি করে নিয়ামত পেতে পারে।
হযরত গরীবে নেওয়াজ খাজা হাবীবুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পবিত্র জীবনী মুবারকে
বর্ণিত রয়েছে, তিনি যখন মহান আল্লাহ পাক উনার
হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
মুবারক নির্দেশক্রমে হিন্দুস্তানে তাশরীফ আনলেন তখন হিন্দুস্তানের রাজা ছিল পৃথ্বীরাজ।
ওই মুহূর্তে হিন্দুস্থানের প্রায় সমস্ত মানুষই ছিলো বিধর্মী। কিন্তু হযরত খাজা হাবীবুল্লাহ
রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ওই সমস্ত বিধর্মীদেরকে ভয় পাননি। একাই সমস্ত বাতিল, কুফরী, শিরকী সমূলে মূলোৎপাটন
করে গোটা হিন্দুস্তানে পবিত্র দ্বীন ইসলাম জারি করলেন এবং এক কোটিরও বেশি বিধর্মী উনার
মুবারক হাতে পবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করে খাঁটি মুসলমান হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!
স্মরণীয় যে, হযরত খাজা হাবীবুল্লাহ
রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ফাযায়িল-ফযীলত বেমেছাল। এমন ব্যক্তিত্ব যাকে মহান আল্লাহ পাক
তিনি উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা
স্বয়ং লক্বব মুবারক দিয়েছেন ‘কুতুবুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ’। উনার পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ উনার কপাল মুবারকে কুদরতীভাবে লিখা উঠেছিলো
“হাযা হাবীবুল্লাহ মাতা ফি হুব্বিল্লাহ” অর্থাৎ তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বতে পবিত্র বিছাল শরীফ গ্রহণ করেছেন।
সুবহানাল্লাহ!
No comments