ইমামুল আউওয়াল আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার সংক্ষিপ্ত সাওয়ানেহ উমরী মুবারক
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মর্যাদা সম্পর্কে পবিত্র কালামুল্লাহ
শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “(হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি জানিয়ে
দিন, আমি তোমাদের নিকট কোনো বিনিময়
চাচ্ছি না। আর চাওয়াটাও স্বাভাবিক নয়;
তোমাদের
পক্ষে দেয়াও কস্মিনকালে সম্ভব নয়। তবে তোমরা যদি ইহকাল ও পরকালে হাক্বীক্বী কামিয়াবী
হাছিল করতে চাও; তাহলে তোমাদের জন্য ফরয
হচ্ছে- আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা, তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, উনাদের খিদমত মুবারক উনার আনজাম দেয়া।”
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, রহমতুল্লিল আলামীন,
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
ইরশাদ মুবারক করেন, “আমি তোমাদের জন্য দুটি
মুবারক নিয়ামত রেখে যাচ্ছি। প্রথমটি হলো,
মহান আল্লাহ
পাক উনার কিতাব মুবারক। যার মধ্যে রয়েছে হিদায়েত ও নূর মুবারক। তোমরা কিতাবুল্লাহ শরীফ
উনাকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়িয়ে ধরো। তিনি কিতাবুল্লাহ শরীফ উনার প্রতি উৎসাহ প্রদান করলেন।
অতঃপর বললেন, দ্বিতীয়টি হলো, আমার হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম (আওলাদগণ) বংশধরগণ
উনারা। উনাদের ব্যাপারে তোমাদের সতর্ক করছি। উনাদের ব্যাপারে তোমাদের সতর্ক করছি।”
সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র ইসিম বা নাম মুবারক:
উল্লেখ্য, আমীরুল মু’মিনীন ইমামুল আউওয়াল
মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত আহলু বাইত শরীফ
আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্যতম। ইমামুল আউওয়াল মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মূল নাম মুবারক হযরত আলী আলাইহিস সালাম। উপনাম মুবারক-আবূল
হাসান (হাসান উনার পিতা) ও আবূ তুরাব (মাটির পিতা)। পিতার নাম: আবূ ত্বালিব, সম্মানিতা মাতা উনার নাম মুবারক: হযরত ফাতিমা বিনতে আসাদ রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহা। বিশেষ উপাধি মুবারক: আসাদুল্লাহ (মহান আল্লাহ পাক উনার সিংহ), হায়দার (বাঘ), মুরতাদ্বা (সন্তষ্টিপ্রাপ্ত)। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র নসব বা বংশ মুবারক:
তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
চাচাতো ভাই। কুরাইশ বংশের হাশিমী শাখায় উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ। পিতৃকুল
ও মাতৃকুল উভয় দিক থেকে তিনি কুরাইশ বংশোদ্ভূত। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ:
তিনি বিশুদ্ধ মতে পবিত্র রজবুল হারাম শরীফ মাস উনার ১৩ তারিখ পবিত্র বিলাদতী শান
মুবারক প্রকাশ করেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক প্রকাশের দশ বছর পূর্বে সাইয়্যিদুনা
হযরত ইমামুল আউওয়াল মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার পর
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনাকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি নিজে প্রতিপালনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং উনার ভাই হযরত জাফর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু উনাকে পিতৃব্য হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম উনার অভিভাবকত্বে সোপর্দ করেন। (তাফসীরে
তাবারী শরীফ)
পবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণ:
একদা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে
এবং উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনাদেরকে নামায
পড়তে দেখে হযরত ইমামুল আউওয়াল আলাইহিস সালাম তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, আপনারা কি করছেন?
উত্তরে নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক
করলেন, এটা মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র
দ্বীন। সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, আপনাকে আমরা সেই দায়িত্ব দিচ্ছি। তখনই তিনি পবিত্র দ্বীন ইসলাম
উনার প্রতি উদ্বুদ্ধ হয়ে পবিত্র কালিমা শরীফ পাঠ করেন। পবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণকালে
উনার বয়স মুবারক দশ বছর ছিলো। তিনি হলেন সর্বসম্মতিক্রমে বালক উনাদের মধ্যে সর্বপ্রথম
পবিত্র দ্বীন ইসলাম কবুলকারী। সুবহানাল্লাহ!
শি’বে আবী ত্বালিবে অবস্থান:
পবিত্র মক্কা শরীফ উনার মধ্যে হযরত ইমামুল আউওয়াল মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কঠিন সঙ্কট ও কঠিন অগ্নি পরীক্ষার তেরটি বৎসর নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক সাহচর্যে থেকে অতিবাহিত
করেন। এর মধ্যে আবূ ত্বালিব গিরিতে অর্থাৎ শি’বে আবী ত্বালিবের তিন বৎসরের জীবন ছিলো
সর্বাপেক্ষা রহস্যময়। সে সময় হযরত ইমামুল আউওয়াল মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ভ্রাতা হযরত জা’ফর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনি আহলিয়াসহ আবিসিনিয়ায়
হিজরত করেন। কিন্তু সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি এরূপ
কঠিন মুহূর্তেও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার সার্বক্ষণিক সঙ্গী হিসেবে পবিত্র মক্কা শরীফ উনার মধ্যে অবস্থান করেন, যতদিন না তিনি পবিত্র মক্কা শরীফ হতে পবিত্র মদীনা শরীফ হিজরত
মুবারক করার অনুমতি পেলেন। সুবহানাল্লাহ!
জিহাদে বীরত্বের পরিচয়:
দ্বিতীয় হিজরী সনের পবিত্র ১৭ রমাদ্বান শরীফ পবিত্র বদরের জিহাদে মুসলমান ও মুশরিক
উভয় বাহিনী পরস্পর মুখোমুখি হয়। তৎকালীন যুদ্ধরীতি অনুযায়ী পবিত্র মক্কা শরীফ থেকে
আগত মুশরিকদের পক্ষ হতে উতবা, শায়বা এবং ওলিদ নামক তিন
জন সদর্পে ময়দানে অবতরণ করে এবং প্রতিদ্বন্দ্বীকে যুদ্ধে আহবান জানালে তাদের মোকাবেলায়
সাইয়্যিদুশ শুহাদা হযরত হামজা আলাইহিস সালাম,
হযরত উবায়দা
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং আমীরুল মু’মিনীন, সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাদেরকে পাঠানো হয়। সাইয়্যিদুনা
হযরত হামজা আলাইহিস সালাম এবং হযরত ইমামুল আউওয়াল মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের হাতে উনাদের স্ব স্ব^ প্রতিদ্বন্দ্বী নিহত হয়। অতঃপর হযরত ইমামুল আউওয়াল মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত উবায়দা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সাহায্যার্থে
অগ্রসর হন এবং প্রতিপক্ষ শায়বা নিহত হয়। অতঃপর সর্বাত্মক জিহাদ শুরু হয়ে যায়। এই পবিত্র
জিহাদে হযরত ইমামুল আউওয়াল মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি বীরত্বের চরম পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করেন। সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে তাবারী শরীফ)
হিজরী তৃতীয় সালে সংঘটিত উহুদের জিহাদে মুশরিকরা মুসলমানদেরকে আক্রমণ করতে সর্বশক্তি
নিয়োগ করে। কিন্তু হযরত ইমামুল আউওয়াল মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি তাদের সমস্ত দুরভিসন্ধিই ব্যর্থ করে দেন। মুশরিক বাহিনীর পতাকাবাহী
আবূ সা’দ ইবনে আবি তালহাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আহবান জানালে হযরত ইমামুল আউওয়াল মিন
আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এক আঘাতেই তাকে ধরাশায়ী
করেন; কিন্তু তার অসহায়তা ও হতবিহ্বলতা
দেখে তিনি তাকে হত্যা করেননি। সুবহানাল্লাহ! (ইবনে হিশাম)
হিজরী ৭ম সনে খাইবরের পবিত্র জিহাদ সংঘটিত হয়। এই পবিত্র জিহাদে খাইবরের সর্বাধিক
সুদৃঢ় দুর্গ ‘কামুস’-এর অধিকর্তা মারহাব নামক এক ইহুদী বীরকে হত্যা করে তিনি অতুলনীয়
বীরত্ব ও সাহসিকতার পরিচয় দান করেন। অতঃপর কয়েকদিন অবরোধের পর তিনি দুর্গ অধিকারে সক্ষম
হন। এই পবিত্র জিহাদে হযরত ইমামুল আউওয়াল মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি সুদৃঢ় দুর্গ ‘কাছরে মারহাব’ জয় করে খ্যাতি লাভ করেছিলেন। (ইবনে হিশাম)
নিসবাতুল আযীম মুবারক:
একদিকে ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চাচাতো ভাই।
অপরদিকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
আদরের দুলালী, উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর
রবি’য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত যাওজাতুল মুকাররমাহ। দ্বিতীয় হিজরীতে উনাদের
বরকতময় নিসবাতুল আযীম মুবারক অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মানিত খিলাফত উনার দায়িত্ব গ্রহন:
সম্মানিত ইসলামী খিলাফত উনার দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বে তিনি আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা
হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম এবং আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে
আ’যম আলাইহিস সালাম এবং আমীরুল মু’মিনীন,
সাইয়্যিদুনা
হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাদের খিলাফত আমলে পরামর্শদাতা ছিলেন। আমীরুল মু’মিনীন, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি সুমহান পবিত্র
১৮ই যিলহজ্জ শরীফ শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করার পর হিজরী ৩৫ সনের ২৫শে যিলহজ্জ শরীফ
সম্মানিত খিলাফত উনার মহান দায়িত্ব গ্রহন করেন। প্রায় চার বছর পৌনে ৯ মাস যাবৎ এ দায়িত্ব
মুবারক যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে পালন করেন। সুবহানাল্লাহ!
অবদান:
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে হযরত ইমামুল আউওয়াল মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অবদান অপরিসীম। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যামানার সমস্ত পবিত্র জিহাদে অনেক বেশি সাহসিকতা
ও বীরত্বের পরিচয় তিনিই দেন। সুবহানাল্লাহ! এ কারণে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে ‘হায়দার’ লক্বব মুবারকসহ ‘যুলফিকার’
নামক একখানা তরবারি মুবারক হাদিয়া করেন। একমাত্র তাবুক অভিযান ছাড়া সমস্ত পবিত্র জিহাদেই
তিনি অংশগ্রহণ করেন। বদরে উনার সাদা পশমী রুমাল মুবারক উনার জন্য তিনি ছিলেন বিখ্যাত।
বদরসহ প্রতিটি পবিত্র জিহাদে তিনি ছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পতাকাবাহী। সুবহানাল্লাহ!
ফাযায়িল-ফযীলত:
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে
উদ্দেশ্য করে বলেন, “হযরত হারুন আলাইহিস সালাম
তিনি যেমন ছিলেন হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার নিকট, তেমনি আপনি হচ্ছেন আমার নিকট। অর্থাৎ খলীফা। তবে আমার পরে কোনো
নবী আলাইহিস সালাম নেই।’’ সুবহানাল্লাহ!
হযরত ইমামুল আউওয়াল মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি ছিলেন নবী খান্দানের সদস্য। তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে শিক্ষা মুবারক লাভ করেন। নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আমি ইলম উনার নগরী,
আর হযরত
ইমামুল আউওয়াল মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সেই
নগরীর প্রবেশদ্বার।’’ সুবহানাল্লাহ! তিনি ছিলেন, পবিত্র কুরআনে হাফিয, শ্রেষ্ঠ মুফাস্সির এবং
অসংখ্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের বর্ণনাকারী রাবী। সুবহানাল্লাহ!
তরীক্বতের সিলসিলা:
আমীরুল মু’মিনীন হযরত ইমামুল আউওয়াল মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি তরীক্বতপন্থী উনাদের ইমাম। তরীক্বতের অধিকাংশ সিলসিলা উনার মাধ্যমে
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে মিলিত
হয়েছে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রূহানী
তা’লীম তথা আধ্যাত্মিক শিক্ষা মুবারক উনার প্রচার-প্রসারে যে সকল হযরত ছাহাবায়ে কিরাম
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম বিশেষভাবে অবদান রাখেন হযরত ইমামুল আউওয়াল মিন আহলি বাইতি
রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাদের মধ্যে বিশিষ্টতম। আহলু সুন্নত
ওয়াল জামায়াত উনাদের অনেক তরীক্বতের সিলসিলা (যেমন ক্বাদিরিয়া, চিশ্তিয়া, সোহরাওয়ার্দিয়া ইত্যাদি)
অদ্যাবধি উনারই মাধ্যমে ফায়েয মুবারক হাছিল সাধনা করে আসছে। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র বিছালী বা শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ:
হিজরী ৪০ সনের ১৬ই রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুল জুমুয়াহ শরীফ ফযর নামাযে গমনকালে মুনাফিকদের
যড়যন্ত্রে ইবনে মুলজিম নামক খারিজী ঘাতকের তলোয়ারে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে পরের দিন ১৭ই রমাদ্বান
শরীফ ইয়াওমুস সাব্ত (শনিবার) পবিত্র শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। উনার জ্যোষ্ঠ
আওলাদ সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ হযরত ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার পবিত্র জানাযার নামায পড়ান। কূফার নাজফে
আশরাফে জামে মসজিদের পাশে উনার পবিত্র রওযা শরীফ অবস্থিত অর্থাৎ সেখানে তিনি মুবারক
অবস্থান গ্রহণ করেন। গ্রহণযোগ্য মতে, সম্মানিত শাহাদাতী শান
মুবারক প্রকাশকালে উনার বয়স মুবারক হয়েছিলো ৬৩ বছর। সুবহানাল্লাহ!
উপসংহার:
মূলকথা হচ্ছে- হযরত ইমামুল আউওয়াল মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি হলেন হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম, হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনাদের মধ্যে
বিশেষ মর্যাদার অধিকারী। তাই উনার পবিত্র সাওয়ানেহ উমরী মুবারক জেনে ও উনাকে মুহব্বত
করে এবং অনুরসণ-অনুকরণ করে মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনাদের খাছ রেযামন্দি মুবারক হাছিল করা আমাদের সকলের দায়িত্ব-কর্তব্য। বিশেষ
করে বাংলাদেশ সরকারসহ বিশ্বের সকল মুসলিম-অমুসলিম সরকারের জন্য দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে
উনার পবিত্র সাওয়ানেহ উমরী বা পবিত্র জীবনী মুবারক সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি
সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করা। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে সে তাওফীক দান করুন।
আমীন!
No comments