Header Ads

Islamic Quotes Urdu Facebook Cover. QuotesGram

হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ইয়েমেনের বাদশাহ হযরত আসআদ বিন কারব তুব্বা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ১৪০০ বৎসর আগের চিঠি।





هُوَ الَّذِي أَرْسَلَ رَسُولَهُ بِالْهُدى وَدِينِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَهُ عَلَى الدِّينِ كُلِّهِ ، وَكَفى بِاللَّهِ شَهِيداً

অর্থ: “সেই মহান আল্লাহ্ পাক যিনি পূর্ববর্তী ওহী মুবারক দ্বারা নাযিলকৃত সমস্ত দ্বীন এবং অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতে মানবরচিত সমস্ত মতবাদ রদ করে এবং তাদের উপর প্রাধান্য দিয়ে উনার রাসূল সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সত্য দ্বীন ও হেদায়েতসহ পাঠিয়েছেন, উনার স্বাক্ষী হিসেবে মহান আল্লাহ্ পাক তিনিই যথেষ্ট।” (সূরা তওবা শরীফ : আয়াত শরীফ- ৩৩)

তাফরিহুল আজকিয়া ফি আহ্ওয়ালিল আম্বিয়া” নামক কিতাব উনার ২য় খণ্ড ১১০ পৃষ্ঠায় বর্ণিত হয়েছে যে,
ইয়েমেনের বাদশাহ্ হযরত আসআদ বিন র্কাব তুব্বা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ইরাক ও সিরিয়া জয় করার উদ্দেশ্যে বের হলে পথিমধ্যে তিনি আমিয়া শহরে (যা বর্তমানে পবিত্র মদিনা শরীফ নামে পরিচিত) সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে সেটি দখল করে নেন এবং উনার পুত্রকে সেখানকার অধিকর্তা নিয়োগ করে দেশে ফিরে যান, কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই হযরত আসআদ বিন র্কাব তুব্বা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পুত্রকে কে বা কারা হত্য করে।

পুত্র হত্যার সংবাদে তিনি এতোই প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে উঠেন যে, আমিয়া নগরী উনাকে পৃথিবীর মানচিত্র থেকে সমূলে উচ্ছেদ তথা ধ্বংস করার অভিপ্রায় নিয়ে পুনরায় আমিয়াতে (পবিত্র মদীনা শরীফ) আসেন এবং উনার নিদের্শ মুতাবিক সেনাবাহিনী ধ্বংসলীলা শুরু করে, কিন্তু বিস্ময়ের ব্যাপার হলো উনার সেনাবাহিনী প্রত্যহ যেটুকু ধ্বংস করে, পরবর্তী দিন দেখা যায় তা পূনরায় পুর্বাবস্থায় ফিরে আসে।

ফলশ্রুতিতে হযরত আসআদ বিন র্কাব তুব্বা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ঘটনার মর্ম জানার জন্য উনার বন্দীকৃত লোকজনের মধ্যে যে সমস্ত তাওরাতপন্থী ইহুদী আলিম ছিলেন তাদের নিকট এই অত্যাশ্চর্য ঘটনার কারণ জিজ্ঞেস করায় তারা বাদশাহ্ হযরত আসআদ বিন র্কাব তুব্বা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বলেন যে, আপনি আপনার ইচ্ছানুযায়ী সবকিছু করতে পারলেও এই শহরের বিন্দুমাত্র ক্ষতি সাধন করতে পারবেন না। কেননা আখিরী যামানার প্রতিশ্রুত নবী সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ভবিষ্যতে এ শহরের আতিথ্য গ্রহণ করবেন।

তখন হযরত আসআদ বিন র্কাব তুব্বা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ইহুদীদের এ কথার সত্যতার প্রমাণ কোথায় রয়েছে তা জানতে চাইলে তারা তাদের প্রতি নাযিলকৃত পবিত্র তাওরাত কিতাবের কথা বলেন, এবং সত্যতা যাচাইয়ের প্রেক্ষিতে পবিত্র তাওরাত কিতাবসহ দু’জন পবিত্র তাওরাতপন্থীকে অগ্নিকু-ে প্রবেশ করার নির্দেশ দেয়া হলে দেখা গেল যে, তাওরাতপন্থী দু’ব্যক্তি কিতাবসহ সেই জ্বলন্ত অগ্নিকু- থেকে সম্পূর্ণ অক্ষত অবস্থায় বের হয়ে আসেন।

সুবহানাল্লাহ! অথচ হযরত আসআদ বিন র্কাব তুব্বা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি যখন উনার দুই অগ্নিপূজক অনুচরকে তাদের অগ্নিদেবের মূর্তিসহ অগ্নিকু-ে প্রবেশ করতে বললেন তখন দেখা গেলো যে, তারা অগ্নিকু-ে প্রবেশ করার পূর্বেই তাদের সমস্ত শরীর ঝলসে গেল। নাঊযুবিল্লাহ!

এসব ঘটনা অবলোকন করে হযরত আসআদ বিন র্কাব তুব্বা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সম্পূর্ণ অন্য মানুষে পরিণত হন এবং পবিত্র মদীনা শরীফ ধ্বংসের ব্যর্থ কোশেশের জন্যে তীব্র অনুশোচনায় পাপ খ-ানোর নিমিত্তে উনার বন্দিকৃতদের মধ্যে থেকে পবিত্র তাওরাত কিতাবের উপর পান্ডিত্যের অধিকারী চারশত ইহুদি আলিমকে মুক্তি দিয়ে তাদেরকে আমিয়া নগরী (পবিত্র মদীনা শরীফ)-এ স্থায়ীভাবে বসবাস করার বন্দোবস্ত করে দেন।

তাদের মধ্যকার প্রধান ব্যক্তিত্ব হযরত শাহাউল নামক আলেম উনার কাছে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারক-এ লেখা একটি চিঠি দেন এবং বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যদি উনার হায়াত মোবারকে এ শহরে আগমন করেন তবে তিনিই যেনো এই চিঠি উনার হাত মুবারক-এ দেন। যদি উনার হায়াত মুবারক-এ না আসেন তবে যেন চিঠিটি ইন্তেকালের পূর্বে উনার পুত্রের নিকট দিয়ে যান, এভাবে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমন না ঘটা পর্যন্ত যেন বংশ পরম্পরায় চলতে থাকে।

বাদশাহ্ হযরত আসআদ বিন র্কাব তুব্বা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো বলে দেন যে, তিনি যে বাড়িটি নির্মাণ করেছেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য, সে বাড়িতে আপাততঃ হযরত শাহাউল তিনি অবস্থান করবেন। পরবর্তীতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন এ শহরে তাশরীফ আনবেন তখন যেন তিনি ওই বাড়িতেই অবস্থান করেন এবং এজন্য তিনি যেন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অনুরোধ করেন।


৬২২ ঈসায়ী সনে হজ্জ মৌসূমে পবিত্র মদীনা শরীফ থেকে ৭৩ জন মুসলমানদের একটি কাফিলা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পবিত্র মদীনা শরীফ তাশরীফ মুবারক নেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়ে পবিত্র মদীনাবাসী উনাদের একটি আমন্ত্রণনামা পেশ করেন।

উক্ত প্রতিনিধি দলে হযরত আবু লাইল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু নামে এক যুবক ছিলেন, যিনি ছিলেন সেই হযরত শাহাউল যার নিকট সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে লিখিত বাদশাহ্ হযরত আসআদ বিন র্কাব তুব্বা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার চিঠিও অর্পিত ছিলো।


উনার বংশধর হযরত আবু আইয়ুব আনসারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার পুত্র হযরত আবু লাইল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি যখন উক্ত প্রতিনিধি দলের সাথে যাচ্ছিলেন তখন হযরত আবু আইয়ুব আনসারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি অত্যন্ত গোপনে উনার পুত্র উনার হাত মুবারক-এ চিঠিখানা দিয়ে বললেন যে, তিনি যেনো চিঠিখানার কথা গোপন রাখেন এবং যদি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি চিঠিখানার কথা জিজ্ঞেস না করেন তবে যেন এ ব্যাপারে কিছু বলা না হয় এবং চিঠিখানা ফেরত নিয়ে আসেন।

অথচ দেখা গেলো উক্ত প্রতিনিধি দলটি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে আসলে তিনি হযরত আবু লাইল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার দিকে আঙ্গুল মুবারক দিয়ে নিদের্শ করে বললেন, আপনার নামতো হযরত আবু লাইল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, আপনার কাছে বাদশাহ্ হযরত আসআদ বিন র্কাব তুব্বা রহমতুল্লাহি আলাইহি কর্তৃক আমার জন্য লিখিত পত্রখানি লুকায়িত আছে। উহা বের করুন। এ কথায় উপস্থিত সকলেই আশ্চর্যান্বিত হলেন।

অতঃপর হযরত আবু লাইল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি চিঠিখানা বের করে নিজেই উচ্চস্বরে জনসম্মুখে পড়ে শুনালেন। চিঠিখানা পড়ে সকলেই অবহিত হলেন যে, এটি প্রায় ১৪০০ বৎসর পূর্বে লেখা। (তাফরিহুল আজকিয়া ফি আহ্ওয়ালিল আম্বিয়া” নামক কিতাবের ২য় খন্ড ১১০ পৃষ্ঠা)

No comments

ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য।

  ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য। ডাল খাওয়ার ফলে কলব প্রসারিত হয় এবং চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পায়। পূর্ববর্তী হযরত নবী-রসুল আলাইহিমুস সালাম উ...

Powered by Blogger.