পবিত্র কুরবানী না দিয়ে কুরবানীর টাকা বন্যার্তদের দেয়া যাবে কি?

*********************************
এক শ্রেণীর গণ্ডমূর্খ মিডিয়াতে প্রচার করছে আগত কুরবানী উনার জন্য নির্ধারিত টাকা
ত্রাণ হিসাবে দান করে দেয়ার জন্য। নাউযুবিল্লাহ! এর মাধ্যমেই নাকি কুরবানী উনার ফযীলত
লাভ করা যাবে। নাউযুবিল্লাহ! অথচ পবিত্র কুরবানী হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার বিধান।
মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ মুবারক করেন,
لِكُلّ اُمَّةٍ
جَعَلْنَا مَنسَكًا لّيَذْكُرُوا اسْمَ اللهِ عَلـٰى مَا رَزَقَهُم مّن
بَـهِيْمَةِ الاَنْعَامِ
ۗ
অর্থ: “আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্য পবিত্র কুরবানী উনার বিধান দিয়েছি, যাতে তারা গৃহপালিত পশুর উপরে মহান আল্লাহ তায়ালা উনার নাম মুবারক
স্মরণ করে। অর্থাৎ মহান আল্লাহ তায়ালা উনার সন্তুষ্টি ও নির্দেশ মুতাবিক উনার নাম মুবারকে
পশু কুরবানী করে।” (পবিত্র সূরা হজ্জ শরীফ : ৩৪)
পবিত্র আয়াত শরীফ উনার থেকে প্রমাণ হলো,
পবিত্র কুরবানী
করা মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে প্রত্যেক উম্মতের জন্য বিধান। আর আল্লাহ পাক উনার
বিধান পালন করা বান্দার আবশ্যিক দায়িত্ব।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ
اَبِـي هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلَ اللهِ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ وَجَدَ سَعَةً فَلَمْ يُضَحِّ فَلَا
يَقْرَبَنَّ مُصَلَّانَا.
অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন,
ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি কুরবানী করবে না সে যেন পবিত্র
ঈদগাহের নিকটে না আসে।” (মুসনাদে আহমদ ২/ ৩২১: হাদীছ শরীফ ৮২৫৬, ফতহুল বারী ১০/৩,
তাফসীরে
ইবনে কাছীর ৫/৪৩২, শরহে যারকানী ৩/১০৪)
পবিত্র হাদীছ শরীফ থেকে যা বোঝা গেলো,
সামর্থ্যবান
ব্যক্তিকে অবশ্যই কুরবানী করতে হবে। কুরবানী না করলে সে মুসলমান উনাদের সাথে নামাযেও
আসতে পারবে না। অর্থাৎ মুসলামান জামায়াত থেকে সে বিতাড়িত হবে। তারমানে তার ঈমান থাকবে
না।
“পবিত্র কুরবানী করা হচ্ছে ঈদের
দিনের সর্বশ্রেষ্ঠ আমল। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে,
افضل العبادات
يوم العيد عراقة دم القربان
অর্থ: “ঈদের দিন রক্ত প্রবাহিত করা সর্বশ্রেষ্ঠ আমল।” (তুহফাতুল আহওয়াযী শরহে জামিউত
তিরমিযী ৪/১৪৫)
সুতরাং যার প্রতি কুরবানী ওয়াজিব হয়েছে এমন লোকের জন্য কুরবানী না করে এ টাকা ত্রাণহিসাবে
দেয়া হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ আমল ত্যাগ করার নামান্তর। নাউযুবিল্লাহ! কোনোভাবেই পবিত্র কুরবানী
বাদ দিয়ে এর টাকা কোথাও দান করা যাবে না। যেটা মহান আল্লাহ পাক উনার বিধান সেভাবেই
করতে হবে। কেউ যদি দান করতে চায়, তবে পবিত্র কুরবানী উনার
টাকা রেখে অন্য যে ফান্ড আছে সেখান থেকে দিতে হবে। এর অন্যথা করলে ঈমান থাকবে না। চরম
কুফরী হবে। নাউযুবিল্লাহ!
No comments