হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের কতিপয় আক্বীদা
১. আল্লাহ্
পাক সর্বপ্রথম নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সৃষ্টি করেন এবং
সেই নূরে মুহম্মদী হতে তামাম মাখলুকাত সৃষ্টি করেন।
২. খালিক্ব
বা স্রষ্টা হিসেবে আল্লাহ্ পাক হলেন একক,উনার সমকক্ষ কেউ নেই। আর মাখলুক বা সৃষ্টির মাঝে হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হলেন একক, উনার সমকক্ষ কোন সৃষ্টি নেই।
৩. হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নূরের তৈরী। অর্থাৎ তিনি নূরে মুজাস্সাম। তাঁর আপদমস্তক
নূর।
৪. হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মত নন। তিনি আল্লাহ্ পাক উনার মনোনীত রসূল এবং সকল নবী-রসূলগণের সাইয়্যিদ।
৫. হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দেহ মুবারক হতে নির্গত রক্ত, ইস্তিঞ্জা, থুথু মুবারক ইত্যাদি
সবকিছু পাক ও পবিত্র। এমনকি সে সমস্ত যাঁদের শরীরে প্রবেশ করেছে তাঁরা সকলেই
জান্নাতী হয়েছেন।
৬. হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দেহ মুবারকের ছায়া
ছিলো না।
৭. হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দেহ মুবারকে মশা-মাছি বসতো না।
৮. আল্লাহ্ পাক
উনাকে ইলমে গয়িব দান করেছেন। অর্থাৎ তিনি হলেন মুত্তালা’আলাল গয়িব।
৯. আল্লাহ্
পাক উনার প্রদত্ত ক্ষমতায় হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাযির ও
নাযির।
১১. হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সর্বমোট
চৌত্রিশ বার মি’রাজ শরীফ হয়েছে। তেত্রিশ বার হয়েছে রূহানী ভাবে। আর একবার
হয়েছে স্বশরীরে। আর মি’রাজ শরীফে তিনি আল্লাহ্ পাক উনার সরাসরি সাক্ষাৎ লাভ করেছিলেন।
১২. আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামসহ
সকল নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম ছিলেন সম্পূর্ণরূপে মা’ছূম বা নিষ্পাপ।
১৩. হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে সকল পিতা-মাতার মাধ্যম হয়ে যমীনে
তাশরীফ এনেছেন তাঁদের কেউই কাফির ও মুশরিক ছিলেন না। তাঁরা প্রত্যেকেই নিজ নিজ
যামানার সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ও মকবুল ব্যক্তি ছিলেন।
১৪. হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পিতা-মাতা খালিছ মুসলমান
ছিলেন এবং তাঁরা উভয়ই জান্নাতী।
১৫. হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শেষ নবী ও রসূল।
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কতিপয় সুন্নতঃ
১. চার টুকরা
বিশিষ্ট, গোল, সাদা সূতী কাপড়ের টুপি
পরিধান করা।
২. সাধারণতঃ
কালো, সাদা, সবুজ রং-এর তিন হাত (ঘরের ভিতর), সাত হাত (পাঁচ ওয়াক্ত নামায ও বাইরে চলার সময়), বার হাত (ঈদ, জুমুয়া ও বিশেষ
অনুষ্ঠানাদিতে) পাগড়ী পরিধান করা।
৩. টুপি ও
পাগড়ীর নীচে (মাথায় তৈল দেয়ার পর) কিনা
অর্থাৎ গোলাকৃত কাপড়ের টুকরা ব্যবহার করা।
৪. টুপি ও
পাগড়ীর উপর সাদা রুমাল পরিধান করা।
৫. গুটলীওয়ালা, কোনা বন্ধ, নিছফুসাক সূতী কাপড়ের
কোর্তা পরিধান করা।
৬. কোর্তার
উপর জুব্বা পরিধান করা।
৭. চাদর ব্যবহার করা।
৮. ফাঁড়া তথা
সিলাইবিহীন লুঙ্গী পরিধান করা।
৯. ক্রস
বেল্ট বিশিষ্ট চামড়ার চটি সেন্ডেল ব্যবহার করা।
১০. বাবরী চুল রাখা।
১১. মোঁছ ছোট ছোট করে রাখা।
১২. হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দাড়ি মুবারক ছিলো সিনা পোর লম্বা।
১৩. জুমুয়া ও ঈদের খুৎবা দানকালে লাঠি ব্যবহার করা।
১৪. পানাহারের সময় কাঠের পেয়ালা,
লবনদানী ও চামড়ার দস্তরখানা ব্যবহার করা।
১৫. হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর তাবলীগ ছিলো সৎ কাজের আদেশ করার পাশাপাশি অন্যায়-অসৎ কাজ থেকে বারণ করা।
অতএব, আল্লাহ্ পাক উনার হাবীব
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের যে
আক্বীদা সে মুতাবিক আক্বীদা পোষণ করে এবং সুন্নতের পরিপূর্ণ অনুসরণ করে আল্লাহ্ পাক
ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সন্তুষ্টি-রেযামন্দি হাছিল করা
উম্মতের একামাত্র দায়িত্ব। আল্লাহ্ পাক আমাদের সকলকে তাওফিক দান করুন।
No comments