মাশুকে মাওলা,নূরে মুজাসসাম,হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আহলু বাইতশরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারাই ঈমান,আমল ও নাযাতের মূল পর্ব ৩
শাফেয়ী মাযহাব উনার ইমাম হযরত ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছেন-
ﻳَﺎ ﺍَﻫْﻞَ ﺑَﻴْﺖِ ﺭَﺳُﻮْﻝِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺣُﺒُّﻜُﻢْ ..ﻓَﺮْﺽٌ ﻣّﻦَ ﺍﻟﻠﻪِ ﻓِـﻰ ﺍﻟْﻘُﺮْﺍٰﻥِ ﺍَﻧْﺰَﻟَﻪٗﻳَﻜْﻔِﻴْﻜُﻢْ ﻣّﻦْ ﻋَﻈِﻴْﻢِ ﺍﻟْﻔَﺨْﺮِ ﺍَﻧَّﻜُﻢْ …ﻣّﻦْ ﻟَّـﻢْ ﻳُﺼَﻞّ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﻟَﺎ ﺻَﻠَﺎﺓَ ﻟَﻪٗ
হযরত ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো বলেছেন-
ﺍِﻥْ ﻛَﺎﻥَ ﺭَﻓْﻀًﺎ ﺣُﺐُّ ﺍٰﻝِ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ … ﻓَﻠْﻴَﺸْﻬَﺪِ ﺍﻟﺜَّﻘَﻠَﺎﻥِ ﺍَﻧّـﻰْ ﺭَﺍﻓِﻀِـﻰٌّ
অর্থ: “যদি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করলে, রাফিযী হতে হয়, তাহলে জিন-ইনসান তারা সাক্ষী থাকুক যে, নিশ্চয়ই আমি রাফেযী।” সুবহানাল্লাহ! (দেওয়ানে শাফেয়ী ৮৯ পৃ., মুখতাছরুত তোহফাহ লিআব্দিলআযীয মুহাদ্দিছ দেহলভী ১/৮, ছব্বুল আযাব লিল আলূসী ১/৩২১)
তিনি আরো বলেছেন-
ﺍَﻟْﻌِﻠْﻢُ ﻭَﺍﻟﺘَّﻮْﺣِﻴْﺪُﻓِـﻰْ ﺟَﺎﻧِﺐٍ ..ﻭَّﺣُﺐُّ ﺍَﻫْﻞِ ﺍﻟْﺒَﻴْﺖِ ﻓِـﻰْ ﺟَﺎﻧِﺐٍ
অর্থ: “ইলম এবং তাওহীদ এক পাশে আর মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত মুবারক এক পাশে।” সুবহানাল্লাহ! (মুখতাছরুত তোহফাহ লিআব্দিল আযীয মুহাদ্দিছ দেহলভী ১/৭, ছব্বুল আযাব লিল আলূসী ১/৩২০)
আর সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
ﻭَﺍَﺣِﺒُّﻮْﺍ ﺍَﻫْﻞَ ﺑَــﻴْـﺘِـﻰْ ﻟِـﺤُﺒِّﻰْ .
অর্থ: “আর তোমরা আমার সম্মানিত মুহব্বত-মা’রিফাত মুবারক পেতে হলে আমার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করো।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযীশরীফ)
সুতরাংমহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকেমুহব্বতকরা ফরয। শুধু তাই নয়, উনাদেরকে মুহব্বত করা ফরয উনার উপর ফরয। কারণ, উনাদের উপর দুরূদ শরীফ পাঠ না করলে, ফরয ইবাদাত‘নামায’ কবূল হয় না। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে এখান থেকে স্পষ্ট হয়ে গেলো যে, উনাদেরকে সম্মানিত মুহব্বত মুবারক করার বিষয়টি নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত থেকে শুরু করে সমস্ত ফরয ইবাদাত উনাদের উপরে। আর এই কারণেই উনাদেরকে মুহব্বত করা সম্মানিত ফরয উনার উপরও ফরয। সুবহানাল্লাহ!
শুধু তাই নয়, উনাদের মুহব্বত মুবারক হচ্ছেন সমস্ত ফরয ইবাদাত কবূল হওয়ার পূর্ব শর্ত। সুবহানাল্লাহ!এই সম্পর্কে সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
ﻋَﻦْ ﺣَﻀْﺮَﺕْ ﺍَﺑِـﻰْ ﻣَﺴْﻌُﻮْﺩ ﺍﻟْﺎَﻧْﺼَﺎﺭِﻯّ ﻗَﺎﻝَ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮْﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻣَﻦْ ﺻَﻠّﻰ ﺻَﻠَﺎﺓً ﻟَّـﻢْ ﻳُﺼَﻞّ ﻓِﻴْﻬَﺎ ﻋَﻠَﻰَّ ﻭَﻟَﺎ ﻋَﻠـٰﻰ ﺍَﻫْﻞِ ﺑَﻴْﺘِـﻰْ ﻟَـﻢْ ﺗُﻘْﺒَﻞْ ﻣِﻨْﻪُ .
অর্থ: “হযরত আবূ মাস‘ঊদ আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি নামায পড়লো, কিন্তু নামাযে আমার এবং আমার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি দুরূদ শরীফ পাঠকরলো না, তার নামায কবূল হবে না।” (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৯, সুনানুদ দারাকুত্বনী ২/১৭১, শরহু সুনানি আবী দাঊদ লিল ‘আইনী ৪/২৬৬, আল বাদরুল মুনীর ৪/১৫, নাছবুর রাইয়াহ লিল যাইলা‘ঈ ১/৪২৭, আদ দিরায়াহ১/১৫৮, আল ‘ইলাল লিদ দারাকুত্বনী ৬/১৯৭, আন নাজমুল ওহহাজ ২/১৬৪ ইত্যাদি)
সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
ﻋَﻦْ ﺣَﻀْﺮَﺕْ ﺍِﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ﺭَﺿِﻰَ ﺍﻟﻠﻪ ﺗَﻌَﺎﻟـٰﻰ ﻋَﻨْﻪُ ﻗَﺎﻝَ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮْﻝُ ﺍﻟﻠﻪ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻟَﻮْ ﺍَﻥَّ ﺭَﺟُﻠًﺎ ﺻَﻒَّ ﺑَﻴْﻦَ ﺍﻟﺮُّﻛْﻦِ ﻭَﺍﻟْـﻤَﻘَﺎﻡِ ﻓَﺼَﻠّﻰ ﻭَﺻَﺎﻡَ ﺛُـﻢَّ ﻟَﻘِﻰَ ﺍﻟﻠﻪَ ﻭَﻫُﻮَ ﻣُﺒْﻐِﺾٌﻟِّﺎَﻫْﻞِ ﺑَﻴْﺖِ ﻣُﺤَﻤَّﺪٍ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺩَﺧَﻞَ ﺍﻟﻨَّﺎﺭَ .
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, কোন ব্যক্তি যদি সম্মানিত রুকন ইয়ামেন এবং মাক্বামে ইবরাহীম শরীফ উনাদের মধ্যবর্তী স্থানে সারিবদ্ধ হয়ে থাকে। অতঃপর নামায পড়ে এবং রোযা রাখে। কিন্তু এই অবস্থায় তার মৃত্যু হয় যে, সে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে। তাহলে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (যাখাইরুল ‘উক্ববাহ লিমুহিব্বে ত্ববারী ১/১৮, খ্বছায়িছুল কুবরা ২/৪৬৫)
আর মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করতে হলে অবশ্যই উনাদের সম্পর্কে জানতে হবে, উনাদের সাওয়ানেহে উমরী মুবারক জানতে হবে, উনাদের বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মানমুবারক জানতে হবে, অন্যথায় উনাদেরকে মুহব্বত করা আদৌ সম্ভব নয়।
আর উছূল হচ্ছে-
ﻣَﺎ ﻟَﺎ ﻳَﺘِﻢُّ ﺑِﻪِ ﺍﻟْﻔَﺮْﺽُ ﻓَﻬُﻮَ ﺍﻟْﻔَﺮْﺽُ
অর্থ: “যা ব্যতীত ফরয পূর্ণ হয় না, সেটাও ফরয।”
অতএব, মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্পর্কে জানা, উনাদের সম্মানিত সাওয়ানেহে উমরী মুবারক এবং বেমেছাল ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মানমুবারক সম্পর্কে জানা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরয উনার উপর ফরয। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত সাওয়ানেহে উমরী মুবারক এবং বেমেছাল ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মানমুবারক সম্পর্কে জানার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
No comments