সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে পুরুষের জন্য কমপক্ষে এক মুষ্টি পরিমাণ দাড়ি রাখা ফরয

মহান আল্লাহ পাক তিনি
ইরশাদ মুবারক করেন, ‘তোমাদেরকে যা আদেশ মুবারক করা হয়েছে তার উপর ইস্তিকামত
বা দৃঢ় থাকো।’ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘তোমরা মুশরিকদের বিপরীত করো।
(অর্থাৎ) দাড়ি লম্বা করো, মোচ ছোট করো।’
সম্মানিত
ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে পুরুষের জন্য কমপক্ষে এক মুষ্টি পরিমাণ দাড়ি
রাখা ফরয। এক মুষ্টি হওয়ার পূর্বে দাড়ি কাটা বা ছাটা সকলের ঐকমত্যে হারাম ও
কবীরা গুনাহ। আর দাড়ি কাটাকে জায়িয মনে করা কুফরী।
প্রত্যেক
মুসলমানকে মুসলমান হিসেবেই থাকতে হবে। সুতরাং দাড়ি কেটে
বেদ্বীন-বদদ্বীনদের ছূরত ধারণ করা কোনো মতেই জায়িয হবে না। বরং হারাম ও
কবীরা গুনাহ হবে।
যামানার
লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইউস
সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, ক্বইয়ূমুয যামান, জাব্বারিউল
আউওয়াল, ক্বউইয়্যূল আউওয়াল, সুলত্বানুন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, জামিউল
আলক্বাব, আওলাদে রসূল, মাওলানা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম
তিনি বলেন, মানুষের জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার দেয়া আকৃতি বিকৃত করা
সম্পূর্ণ হারাম। আর দাড়ি ও গোঁফ কেটে ফেলার কারণে যেহেতু পুরুষের আকৃতির
বিকৃতি ঘটে, সেহেতু পুরুষের জন্য তার দাড়ি এক মুষ্টি হওয়ার পূর্বে কাটা
সম্পূর্ণ হারাম।
মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা
হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক
করেন, “ওই সকল পুরুষের প্রতি লা’নত বা অভিসম্পাত যারা মহিলাদের আকৃতি ধারণ
করে, অনুরূপ যে সকল মহিলা পুরুষের আকৃতি ধারণ করে, তাদের প্রতিও লা’নত বা
অভিসম্পাত।”
মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত
ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক
করেন, “দশটি অপকর্মের কারণে হযরত লূত্ব আলাইহিস সালাম উনার ক্বওম ধ্বংস
হয়েছে, তন্মধ্যে দাড়ি কর্তন করা ও গোঁফ লম্বা করাও ছিল।”
মুজাদ্দিদে
আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হযরত
আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন- আখিরী
রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমরা মুশরিকদের বিপরীত কর। (অর্থাৎ)
দাড়ি লম্বা করো, মোচ ছোট কর।”
মুজাদ্দিদে আ’যম,
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, তাই সম্মানিত
ইসলামী শরীয়ত উনার হুকুম হলো- দাড়ি কমপক্ষে এক মুষ্টি পরিমাণ রাখা। এক
মুষ্টি হওয়ার পূর্বে দাড়ি কাটা, ছাঁটা সকলের ঐকমত্যে হারাম ও কবীরা গুনাহ।
মুজাদ্দিদে
আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হযরত ইমাম
ইবনে হাযম জাহিরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, “গোঁফ ছাঁটা ও দাড়ি
বৃদ্ধি করা ফরয। এ ব্যাপারে হযরত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা
একমত।”
মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল
উমাম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, দাড়ি সম্পর্কে বিশ্ববিখ্যাত আলিমে রব্বানী,
ফক্বীহুল উম্মত, রঈসূল মুনাজিরীন, বাহরুল উলূম, হাফিজুল হাদীছ শাহ সূফী
হযরত মাওলানা রুহুল আমীন বশিরহাটী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার
বিশ্ববিখ্যাত কিতাব ফতওয়ায়ে আমীনিয়াতে লিখেন- “এক মুষ্টি পরিমাণ দাড়ি রাখা
ফরয। কেননা ফরয তরক করা হারাম।”
মুজাদ্দিদে আ’যম,
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, সাধারণভাবে মানুষ
মনে করে থাকে, দাঁড়ি রাখা সুন্নত। হ্যাঁ, দাড়ি রাখা সুন্নত এ অর্থে- যেহেতু
সকল হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণ উনারা দাড়ি রেখেছেন। এদিক দিয়ে
সম্মানিত শরীয়ত উনার সব আমল-ই সুন্নত অর্থাৎ হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস
সালামগণ উনাদের তরীক্বা। যেমন- নামায পড়া, হজ্জ করা ইত্যাদিও সুন্নত উনার
অন্তর্ভুক্ত; যেহেতু হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণ উনারা নামায পড়েছেন ও
হজ্জ করেছেন। তবে আহকামের দিক থেকে এগুলো ফরয। অনুরূপভাবে হযরত নবী-রসূল
আলাইহিমুস সালামগণ উনারা যেহেতু দাড়ি মুবারক রেখেছেন, তাই আমভাবে তা
সুন্নত; কিন্তু আহকামের দিক দিয়ে পুরুষের জন্য কমপক্ষে এক মুষ্টি পরিমাণ
দাড়ি রাখা ফরয, কেউ কেউ ওয়াজিবও বলেছেন। তবে যাঁরা ওয়াজিব বলেছেন, উনারা
ফরয অর্থেই ওয়াজিব বলেছেন।
মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত
ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, এই উম্মতের ফিক্বাহ শাস্ত্রবিদগণ এ
মর্মে একমত যে, এক মুষ্টির কমে দাড়ি কাটা বা ছাঁটা জায়িয নয়, বরং হারাম।
মুজাদ্দিদে
আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি নীমদাড়ি সম্পর্কে
বলেন, নিচের ঠোঁট ও থুতনীর মধ্যবর্তী ছোট ছোট দাড়িকে নীমদাড়ি বলে।
সম্মানিত শরীয়ত উনার হুকুম মুতাবিক উক্ত নীমদাড়ি কাটাও বিদয়াত ও মাকরূহ
তাহরীমী।
মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত
ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি বুখারী শরীফ উনার শরাহ ‘ফয়জুল বারী’
কিতাবের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ঠোঁট ও থুতনীর মধ্যবর্তী কেশ অর্থাৎ নীম দাড়ির
অন্তর্ভুক্ত, তা কাটা ও ছাঁটা নিষেধ অর্থাৎ হারাম।
মুজাদ্দিদে
আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মূলকথা হলো-
সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে পুরুষের জন্য কমপক্ষে এক মুষ্টি
পরিমাণ দাড়ি রাখা ফরয। এক মুষ্টি হওয়ার পূর্বে দাড়ি কাটা বা ছাঁটা সকলের
ঐকমত্যে হারাম ও কবীরা গুনাহ। আর দাড়ি কাটাকে জায়িয মনে করা কুফরী। কাজেই
প্রত্যেক মুসলমানকে মুসলমান হিসেবেই থাকতে হবে। বেদ্বীন-বদদ্বীনদের ছূরত
ধারণ করা কোনমতেই জায়িয হবে না। বরং হারাম ও কবীরাহ গুনাহ হবে। তিনি সকলকে
মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ পাঠ করার মাধ্যমে দাড়ির শরয়ী আহকাম সঠিকভাবে জেনে
তার উপর আমল করার আহবান জনান। কারণ মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ উনার ৩০ থেকে
৩৪তম সংখ্যায় দাড়ি সম্পর্কে বিস্তারিত ফতওয়া প্রদান করা হয়েছে।
সুবহানাল্লাহ!
-০-
No comments