ওহাবী, খারেজী, সালাফী, দেওবন্দী, তাবলিগিরা বলে- “অর্ধ শা’বানের রাতে কবর যিয়ারত করা নাকি বিদয়াত?”
বাতিলপন্থী ওহাবী, সালাফী, খারেজী, দেওবন্দী, তাবলিগিদের উপরোক্ত গোমরাহী ও বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্যের সঠিক ও দলীলভিত্তিক জবাব হলো- না, অর্ধ শা’বানের রাতে কবর যিয়ারত বিদয়াত নয় বরং সুন্নত | সুন্নতকে বিদয়াত বলা কাট্টা কুফরী | কোন মুসলমান যদি কুফরী করে সে মুরতাদ ও কাফিরে পরিণত হয় | তার যিন্দিগীর সমস্ত আমল বরবাদ হয়ে যায় | বিবাহ করে থাকলে স্ত্রী তালাক হয়ে যায় | হজ্জ করে থাকলে তা বাতিল হয়ে যায় | তওবার জন্য তার সময় মাত্র তিনদিন | এর মধ্যে সে তওবা না করলে খিলাফতের পক্ষ হতে তার একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড | সে মারা যাবার পর তার জানাযা পড়ানো ও তাতে শরীক থাকা জায়িয নেই | তাকে কোন মুসলামান কবর স্থানে দাফন করা যাবেনা | বরং তাকে কুকুর শৃগালের মত কোন স্থানে পুঁতে রাখতে হবে |
উল্লেখ্য, অর্ধ শা’বানের রাতটি বিভিন্ন নামে নাম করণ করা হয়েছে | তন্মধ্যে একটি হচ্ছে-
ليلة الزيارة (লাইলাতুয্ যিয়ারত) অর্থাৎ কবর যিয়ারতের রাত |
মূলত অর্ধ শা’বানের রাতে যিয়ারত করা হয় বলেই এ রাতকে যিয়ারতের রাত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে | প্রকৃতপক্ষে এ রাতে যিয়ারত করা খাছ সুন্নতে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অন্তর্ভূক্ত | যেমন এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে-
عن ام المؤمنين حضرت عانشة حليها السلام قالت فقدت رسول الله صلى الله عليه وسلم ليلة فاذا هو بالبقيع فقال اكنت تخافين ان يحيف الله عليك ورسوله قلت يا رسول الله انى ظننت انك اتيت بعض نسائك فقال ان الله تعالى يترل ليلة النصف من شعبان الى السماء الدنيا فيغفر من اكثر من عدد شعر غنم كلب.
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়িশা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম থেকে বর্ণিত | তিনি বলেন, আমি আল্লাহ্ পাক-এর হাবীব, রসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে কোন এক রাত্রিতে রাত্রিযাপন করছিলাম | এক সময় উনাকে বিছানায় না পেয়ে আমি মনে করলাম যে, তিনি হয়তো অন্য কোন উম্মল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম-এর হুজরা শরীফ-এ তাশরীফ নিয়েছেন | অতঃপর আমি তালাশ করে উনাকে জান্নাতুল বাক্বীতে পেলাম | সেখানে তিনি উম্মাতের জন্য আল্লাহ্ পাক-এর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছেন | এ অবস্থা দেখে আমি স্বীয় হুজরা শরীফ-এ ফিরে আসলে তিনিও ফিরে এসে আমাকে বললেন, আপনি কি মনে করেছেন, আল্লাহ্ পাক ও উনার রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা আপনার সাথে আমানতের খিলাফ করেছেন ! আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি ধারণা করেছিলাম যে, আপনি হয়তো অপর কোন উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম উনার হুজরা শরীফ তাশরীফ নিয়েছেন | অতঃপর রসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পাক তিনি শা’বানের ১৫ই তারিখ রাত্রিতে পৃথিবীর আকাশে অবতরণ করেন | অর্থাৎ রহমতে খাছ নাযিল করেন | অতঃপর তিনি বনী ক্বালবের মেষের গায়ে যত পশম রয়েছে, তার চেয়ে অধিক সংখ্যক বান্দাকে ক্ষমা করে থাকেন |”
(তিরমিযী শরীফ, ইবনে মাজাহ শরীফ, রযীন, মিশকাত, মিরকাত, লুময়াত, আশয়াতুল লুময়াত)
উপরোক্ত হাদীছ শরীফ-এ স্বয়ং আল্লাহ্ পাক-এর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি শা’বানের অর্ধ রাতে অর্থাৎ শবে বরাতে জান্নাতুল বাক্বী কবরস্থানে গিয়ে উম্মতের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন | তাদের জন্য দোয়া করেছেন |
কাজেই অর্ধ শা’বানের রাতে কবর যিয়ারত করা খাছ সুন্নতে রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম |
No comments