প্রচলিত ছয় উছূলী চিল্লাওয়ালা তাবলীগ জামাত হচ্ছে শয়তানের প্ররোচনায় সৃষ্ট একটি দল
চিল্লাওয়ালা তাবলীগ কিন্তু পবিত্র কুরআন শরীফ
ও পবিত্র হাদীছ শরীফ সম্মত কোনো পথ নয়। এটা তাদের মুরুব্বী ইলিয়াসের বক্তব্য দ্বারাই
প্রমাণিত যে তাবলীগ হচ্ছে এস্তেদারাজের ফল। এস্তেদারাজ কি জিনিস জানেন?
এস্তেদারাজ হচ্ছে শয়তানের ওয়াসওয়াসা দ্বারা
কোনো মানুষের দস্বপ্নে অথবা আত্মিকভাবে তৈরি বিভ্রান্তি। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ভিতর
তিন প্রকারের স্বপ্নের কথা বলা হয়েছে, যার
একটি হচ্ছে শয়তান দ্বারা দৃশ্যমান। এটাই হচ্ছে এস্তেদারাজ। তাবলীগের প্রতিষ্ঠাতা মৌলবী
ইলিয়াস মেওয়াতীর মালফুজাত থেকে সম্পূর্ণ বিষয়টা আমি উপস্থাপন করছি, একটু মন দিয়ে পড়ুন:
তাবলীগ প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস এ প্রসঙ্গে নিজেই
বলেছে, “আমি আমার উপর এস্তেদারাজের ভয় করিতেছি।”
(মালফুজাত এর ৬৫নং মালফুজ, প্রকাশনা: তাবলীগ ফাউন্ডেশন,
৫০ বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০)
দেখুন ইলিয়াস কিন্তু নিজেই বলেছে যে, তার উপর এস্তেদারাজের ভয় ছিলো। অর্থাৎ সে কিছুটা হলেও বুঝতে
পেরেছিলো মনগড়া যে তাবলীগ সে আবিষ্কার করেছে
সেটা হচ্ছে এস্তেদারাজ। কারণ সেটা ইলিয়াস পেয়েছিলো স্বপ্নের ভিতরে। এ প্রসঙ্গে ইলিয়াস
নিজেই বলেছে-
“এই তাবলীগের তরীক্বা স্বপ্নের মাধ্যমেই আমার
উপর খোলা হইয়াছে।” (মালফুজাত, ৫০নং
মালফুজ।)
এই প্রচলিত তাবলীগ হচ্ছে একটা বিদয়াত পথ এবং
এস্তেদারাজ দ্বারা প্রাপ্ত একটি বিভ্রান্তিকর মতবাদ। এই তাবলীগ মোটেও পবিত্র কুরআন
শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের দ্বারা
পরিচালিত কোনো তরীক্বা নয়। এটা সম্পূর্ণ ওহাবীদের ফর্মূলা অনুযায়ী তৈরিকৃত এক বিকৃত
মতবাদ। প্রমাণ দেখুন ইলিয়াস নিজের মলফুজাতেই আছে। ইলিয়াস বলেছে- “(আশরাফ আলী) থানবী
বহুত বড় কাজ করিয়া গিয়াছেন, আমার
অন্তর চায় তালীম হইবে তাহার আর তাবলীগের তরীক্বা হইবে আমার।”(মালফুজাত, ৫৬ নং মালফুজ।)
দেখুন, তাবলীগ প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস নিজেই বলেছে- এই তাবলীগের তালীম
হবে থানবীর এবং তাবলীগের তরীক্বা হবে ইলিয়াসের নিজের। সে কিন্তু একথা কোথাও বলে নাই-
তাবলীগ হবে পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র সুন্নাহ শরীফ,
পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র কিয়াস শরীফ দ্বারা, সেই সাথে মাযহাবের আলোকে এবং ইলমে তাছাউফের তরীক্বায়। সে বলেছে,
তাবলীগের তরীক্বা হবে তার নিজের। অর্থাৎ তার স্বপ্নেপ্রাপ্ত শয়তানের
এস্তেদারাজ দ্বারা। নাউযুবিল্লাহ!
শুধু কি তাই? সে এমন এক এস্তেদারাজী তরীক্বা প্রবর্তন করেছিলো যে তার
নিজের মুরুব্বীরাও তার প্রতি অসন্তুষ্ট ছিলো। এবং তাকে এসব বিভ্রান্তি থেকে ফিরে আসতে
বলেছিলো। কিন্তু জবাবে সে নিজের ওস্তাদদের বিরোধিতা করে কি বলেছিলো দেখুন-
“আমার ঐ সকল বুযুর্গের খেয়াল হইলো আমার এই
চাল চলন ও তরীক্বা আমাদের হযরত মোরশেদ (রঃ)-এর তরীক্বার খিলাফ। কিন্তু আমার বক্তব্য
হইলো এই যে, যেই জিনিস দ্বীনের জন্য উপকারী এবং খুব
বেশি উপকারী হওয়া দলীল ও অভিজ্ঞতা দ্বারা সাব্যস্ত হইয়াছে, উহাকে শুধু এই জন্য পরিত্যাগ করা যে, আমাদের শায়েখ
করে নাই, ইহা বড় ভুল কথা। শায়েখতো শুধুমাত্র শায়েখ,
তিনিও আল্লাহর বান্দা।” (মালফুজাত, ১৬১নং
মালফুজ।)
দেখুন, শায়েখ কখন কোনো কিছু নিষেধ করেন? যখন বুঝতে পারেন তার মুরীদের দ্বারা কোনো ভুল হচ্ছে, বিভ্রান্তি হচ্ছে, বিদয়াত হচ্ছে, তখনি শায়েখ সেটা নিষেধ করেন মুরীদকে। কারণ শায়েখ পথপ্রদর্শক বলেই তিনি শায়েখ।
অথচ ইলিয়াস তার শায়েখকে অবজ্ঞা করে নিজের এস্তেদারাজ দ্বারা প্রাপ্ত বিদয়াত তাবলীগকে
প্রতিষ্ঠিত করতে কেমন দাম্ভিক উক্তি করেছে এবং শায়েখের আদেশকে অবজ্ঞা করেছে। যেটা তার
চরম বেয়াদবি এবং শয়তানের ধোঁকায় ঘুরপাক খাওয়ার প্রমাণ বহন করে।
সর্বোপরি, মানুষ নিজের গুমরাহী নিজেই কমবেশি বুঝতে পারে। ইলিয়াস প্রথম
থেকেই জানতো যে সে পথ আবিষ্কার করেছে সেটা স্বপ্নেপ্রাপ্ত শয়তানের এস্তেদারাজের ফল।
কিন্তু দুনিয়াবী কিছু স্বার্থের জন্য নিজের বানানো এই তরীক্বাকে সর্বসাধারণের কাছে
প্রচার করেছে। তাই পরিশেষে সে কিন্তু কৌশলে সবাইকে এই তাবলীগে না যাওয়ার জন্য সতর্কও
করেছে। এমনভাবে বলেছে যাতে কেউ গেলে নিজের জিম্মাদারীতে যাবে। কেউ এই বিভ্রান্ত পথে
গিয়ে বিভ্রান্ত হলে এর দায়ভার ইলিয়াস নিবে না- এটা পরিষ্কার করে গিয়েছে। দেখুন তার
বক্তব্য,
“আমার মর্যাদা একজন সাধারণ মোমেন হইতে উপরে
মনে করিবেন না। শুধু আমার কথার উপর আমল করা বদ দ্বীনী। আমি যাহা বলি উহাকে কিতাব ও
সুন্নাহর সহিত মিলাইয়া এবং নিজে চিন্তা ফিকির করিয়া নিজের জিম্মাদারীর উপর আমল আমল
কর। আমিত শুধু পরামর্শ দিয়া থাকি।” (মালফুজাত, ২১০নং মালফুজাত।)
দেখলেন তো পাঠক! ইলিয়াস কিন্তু মরার আগে বলে
গেছে এই তাবলীগ যারা করবে তারা যেন নিজ জিম্মাদারীতে বা নিজ রিস্কে আমল করে। কারণ এই
এস্তেদারাজ পথে পরিচালিত হয়ে কেউ যদি জাহান্নামী হয়, তবে সেটা যার যার নিজের রিস্কে হবে, ইলিয়াস দায়ী থাকবে না। সে কিন্তু টেকনিক্যালি নিজে দায় মুক্ত হওয়ার চেষ্টা
করে গেছে।
সম্মানিত পাঠক! আপনারা তো দেখলেন এই হলো তাবলীগের
সৃষ্টি এবং কর্মধারার ইতিহাস। যেটা স্বপ্নে পাওয়া শয়তানী এস্তেদারাজের ফল। যেটা পবিত্র
কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনার তরীকা বিহীন ইলিয়াসের সম্পূর্ণ নিজের তৈরী তরীক্বা
বা প্রোডাক্ট। পরিশেষে ইলিয়াস নিজেই বলে গিয়াছে এই প্রোডাক্ট যে খাবে সে তার নিজ দায়িত্বে¡ খাবে, কেউ খেয়ে মারা গেলে সে এর
জন্য দায়ী নয়!!
হে মুসলমান সমাজ! এখন সিদ্ধান্ত আপনার, আপনারা কি পবিত্র ইসলামী তরীক্বা পালন করবেন নাকি শয়তানের
পথ ইলিয়াসী তরীক্বা পালন করবেন?
২৮ মাহে যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৩৮ হিজরী
২২ রবি’, ১৩৮৫ শামসি
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ঈসায়ী
ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ঈসায়ী
ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)
No comments