নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান-মান নিয়ে সমালোচনাকারীদের জন্য শরীয়ত উনার দালীলিক বিধান
সমস্ত প্রশংসা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ
পাক যিনি উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাকে সম্মান, মুহব্বত ও খিদমত করা সমস্ত উম্মত উনাদের
উপর ফরয করেছেন। এমনকি যারা উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দিবে তাদের জন্য কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করেছেন। সুতরাং
যারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গালি
দেয়, উনার ব্যাপারে মানহানিকর কথা বলে ও কাজ করে এবং অপদস্ত
করার চেষ্টা করে, তাদের ব্যাপারে সম্মানিত শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে
ফায়সালা কি হবে, তা হযরত ইমাম মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের মতামতসহ নিম্নে দলীলভিত্তিক আলোচনা করা হলো-
হযরত ইমাম আহমদ রহমাতুল্লাহ উনার মত
قول الإمام أحمد رحمه الله من شتم النبي صلى
الله عليه وسلم قُتل، وذلك أنه إذا شتم فقد ارتد عن الإسلام، ولا يشتم مسلم النبي صلى
الله عليه وسلم.
অর্থ: যে ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গালি দিবে তাকে শাস্তিস্বরূপ ক্বতল
করতে হবে। কারণ যখন সে গালি দিলো, সে
মুরতাদ হয়ে গেলো, মুসলমান উনারা কখনো নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গালি দিতে পারে না। বলার অপেক্ষা রাখে
না, সকল হযরত উলামায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান-মান নিয়ে
আপত্তিকর কথা বলনেওয়ালাকে সম্মানিত শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে কাফির ফতওয়া দিয়েছেন। তার সপক্ষে
দলীলসহ মতামত পেশ করা হলো।
যেমন পবিত্র সূরা তাওবা শরীফ উনার ৬১নং পবিত্র
আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَالَّذِينَ يُؤْذُونَ رَسُولَ اللَّهِ لَهُمْ
عَذَابٌ أَلِيمٌ
অর্থ: “ঐ সমস্ত মানুষ যারা মহান আল্লাহ পাক
উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে
কষ্ট দেয়ার চেষ্টা করবে দিবে, তাদের
জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।”
পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ
মুবারক হয়েছে-
إِنَّ الَّذِينَ يُؤْذُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ
لَعَنَهُمُ اللَّهُ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ وَأَعَدَّ لَهُمْ عَذَاباً مُهِيناً
অর্থ: “নিশ্চয় ঐ সমস্ত লোক যারা মহান আল্লাহ
পাক উনাকে ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দিবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদেরকে লা’নত দেন। আর তাদের জন্য
দুনিয়া ও আখিরাতে অপমানজনক শাস্তি প্রস্তুত রেখেছেন।” (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ: পবিত্র
আয়াত শরীফ ৫৭)
কিতাবে বর্ণিত আছে,
شاتم النبي صلى الله عليه وسلم يقتل سواءٌ كان
مسلمًا أو كافرًا
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গালিদাতাকে শাস্তিস্বরূপ ক্বতল করতে হবে চাই
সে মুসলমান হোক বা কাফির হোক।
هذا مذهب عامة أهل العلم، قال ابن المنذر أجمع
عوام أهل العلم على أن حدّ من سب النبي صلى الله عليه وسلم القتل. وممن قاله مالك،
والليث، وأحمد، وإسحاق، وهو مذهب الشافعي..
অর্থ: “এটা সর্বসাধারণ সকল আলিম উনাদের মত
যে, গালিদাতাকে শাস্তিস্বরূপ ক্বতল করা হবে।
ইবনুল মুনযির তিনি বলেন, স্বাভাবিক দৃষ্টিতে সকল আলিম উনারা
একমত পোষণ করেন, যে ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে
গালি দিবে তার শাস্তি হলো তাকে শাস্তিস্বরূপ ক্বতল করা হবে। আর একই মতামত পেশ করেছেন
ইমাম মালিক, ইমাম আবু লাইস, ইমাম
আহমদ এবং ইমাম ইসহাক রহমাতুল্লাহি আলাইহিম। আর এটা ইমাম শাফিয়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি
উনারও মত।”
ومن شك في كفره وعذابه كفر
অর্থ: “আর যে কেউ ঐ ব্যক্তির কাফির হওয়া ও
তার শাস্তির ব্যাপারে সন্দেহ করবে সেও কুফরী করলো।”
এ ব্যাপারে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু
আনহু উনার একটি গুরুত্বপূর্ণ বর্ণনা পাওয়া যায়, তা হলো-
وقد ذكر ابن حزم في كتابه المحلى وبإسناده فقال:
حدثنا صمام نا عباس... عن عروة بن محمد عن رجل بن بلقين قال: ((كان رجل يشتم النبي
صلى الله عليه وسلم فقال النبي صلى الله عليه وسلم: من يكفيني عدواً لي؟ فقال خالد
بن الوليد: أنا. فبعثه النبي صلى الله عليه وسلم فقتله
অর্থ: “হযরত ইবনে হাযম রহমতুল্লাহি আলাইহি
উনার কিতাব “আল মুহাল্লা” উনার সনদে তিনি উল্লেখ করেন, হযরত ছম্মাম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত ইবনে আব্বাস রদিযাল্লাহু
তায়ালা আনহু উনার থেকে ....অপর একটি সনদ উরওয়া ইবনে মুহাম্মদ তিনি রিজলি ইবনে বলক্বীন
থেকে বর্ণিত। জনৈক ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনাকে গালমন্দ করতো, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই ওয়া সাল্লাম তিনি আদেশ মুবারক করেন, কে আমার শত্রুর ব্যাপারে যথোপযুক্ত ভুমিকা রাখবে? অতঃপর হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালিদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন,
অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি আমাকে প্রেরণ করলেন। অতঃপর হযরত খালিদ বিন ওয়ালিদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি
তাকে শাস্তিস্বরূপ ক্বতল করে ফেললেন।”
এখানে লক্ষনীয় বিষয় হলো, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার শান-মান নিয়ে সমালোচনা করা মানে সমস্ত মুসলমানের কলিজার স্পন্দন উনাকে
খাটো করা। তাই এদেরকে কঠিন থেকে কঠিনতর শাস্তি দিয়ে ক্বতল করা প্রতেক মুসলমানের জন্য
ফরয। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে সঠিক বুঝ দান করুন (আমীন)
২৮ মাহে যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৩৮ হিজরী
২২ রবি’, ১৩৮৫ শামসি
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ঈসায়ী
ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ঈসায়ী
ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)
No comments