আহমদ মুজতবা, মুহম্মদ মুস্তফা, রসূলু রব্বিল আলামীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার দোয়া
ربنا وابعث فيهم رسولا منهم يتلوا عليهم ايتك ويعلمهم الكتب والحكمة ويزكيهم انك انت العزيز الحكيم.
অর্থঃ- “হে পরওয়ারদিগার! তাঁদের মধ্য থেকেই তাঁদের নিকট একজন রসূল প্রেরণ করুন, যিনি তাঁদের কাছে আপনার আয়াত সমূহ তিলাওয়াত করবেন।
তাঁদেরকে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দিবেন এবং তাঁদেরকে পবিত্র করবেন। নিশ্চয়ই আপনি পরাক্রমশালী
হিকমত ওয়ালা।” (সূরা বাক্বারা/১২৯)
উপরোক্ত দোয়ায় হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্ সালাম স্বীয় সন্তান-সন্ততিকে অন্তর্ভুক্ত
করেছেন। তিনি সন্তানের প্রতি কতটুকু মুহব্বত ও ভালবাসা রাখেন আলোচ্য আয়াত শরীফ পাঠেই
অনুধাবন করা যায়। কিন্তু এই ভালবাসার দাবী সমূহ ক’জনই বা পূর্ণ করতে পারেন। সাধারণ লোক সন্তানদের শুধু শারীরিক
সুস্থতা ও আরামের দিকেই খেয়াল করে। তাদের যাবতীয় স্নেহ-মমতা এদিকটিকে কেন্দ্র করেই
আবর্তিত হয়। যার প্রেক্ষিতে বর্তমানে দেখতে পাই, মানুষ মৃত্যুর সময় সন্তানকে অঢেল ধন-সম্পদ দিয়ে যেতে চায়।
আল্লাহ্ পাক-এর রসূল হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্ সালাম স্বীয় বংশধর এবং সন্তানদের জন্য
আল্লাহ্ পাক-এর নিকট দোয়া করেছেন এভাবে,
“ইয়া
আল্লাহ্ পাক! আমার বংশধর হতে এমন একজন রসূল প্রেরণ করুন; যিনি আপনার আয়াত সমূহ তাদের নিকট তিলাওয়াত করে
শোনাবেন এবং কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দিবেন,
আর
বাহ্যিক ও আত্মিক অপবিত্রতা থেকে পবিত্র করবেন।”
উপরোক্ত দোয়ায় ৫টি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে,
(১)
স্বীয় বংশধরগণের মধ্যে রসূল প্রেরণ। (২) আয়াত শরীফ তিলাওয়াত। (৩) কিতাব। (৪) হিকমত
শিক্ষা দান ও (৫) তাযকিয়া (জাহির ও বাতিন) তথা আত্মশুদ্ধি। অর্থাৎ প্রত্যেক পিতার উচিৎ
মহান আল্লাহ্ পাক-এর নিকট দোয়া করা যেন স্বীয় বংশে একজন নায়েবে রসূল হাদীর আবির্ভাব
ঘটে।
(১) উদ্ধৃত দোয়া আল্লাহ্ পাক কবুল করেন এবং শেষ নবী হযরত মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লামকে প্রেরণ করেন।
(২) তিলাওয়াতের আসল অর্থ অনুসরণ করা,
তথা
আসমানি কিতাব কুরআন শরীফ আল্লাহ্ পাক-এর পক্ষ থেকে যেভাবে অবতীর্ণ হয়েছে হুবহু তেমনিভাবে
তিলাওয়াত করা।
(৩) কিতাবঃ এখানে কিতাব বলতে আল্লাহ্ পাক যা নাযিল করেছেন তা শিক্ষা দান।
(৪) হিকমত একাধিক অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে। যথা- সুন্নত, জ্ঞান ও প্রজ্ঞা।
(৫) তাযকিয়া অর্থাৎ সর্ব প্রকার অপবিত্রতা থেকে পবিত্র করা। পথভ্রষ্টদের পথ দেখানো এবং তাদের জাহিরী ও বাতিনী
উভয় দিক থেকে পবিত্র করা। এই দোয়া হাদীস শরীফেও
ইরশাদ হয়েছে। হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্ সালামকে আল্লাহ্ পাক-এর পক্ষ থেকে বলে দেয়া হয়েছে
যে, “আপনার দোয়া কবুল করা হয়েছে
এবং কাঙ্খিত রসূলকে শেষ যামানায় প্রেরণ করা হবে।” (ইবনে জরীর, ইবনে কাসীর)
আখিরী রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “আমি আমার পিতা হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্ সালাম-এর
দোয়া, হযরত ঈসা আলাইহিস্ সালাম-এর
সুসংবাদ এবং স্বীয় মাতা হযরত আমিনা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা-এর সত্য স্বপ্ন।”
১লা মাহে মুহররম শরীফ, ১৪৩৯ হিজরী
২৩ রবি’, ১৩৮৫ শামসি
২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ঈসায়ী
ইয়াওমুল জুমুয়া (শুক্রবার)
২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ঈসায়ী
ইয়াওমুল জুমুয়া (শুক্রবার)
No comments