Header Ads

Islamic Quotes Urdu Facebook Cover. QuotesGram

কারবালার হৃদয় বিদারক ইতিহাস-২


ইয়াযীদের মসনদ দখল
আমীরুল মুমিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বিছাল শরীফ-এর পর ইয়াযীদ সিংহাসনে আরোহন করলো এবং আরোহন করার সাথে সাথেই তার মনের মধ্যে সীমাহীন অহঙ্কার ও গর্ববোধের সৃষ্টি হলো। যার ফলে এমন কাজ-কর্ম শুরু করলো, যা মহান দ্বীনী শরীয়তের সম্পূর্ণ বিপরীত। প্রায় মানুষ-ই ক্ষমতার মোহে বিভোর হয়ে ধরাকে সরা জ্ঞান করে। যেমন; ফিরআউন প্রথমে গরীব ছিল, কিন্তু ভাগ্যক্রমে বাদ্শা হয়ে সিংহাসনে আরোহন করার সাথে সাথে এমন অহঙ্কারী হয়ে বসলো যে, শেষ পর্যন্ত নিজেকে খোদা বলে ঘোষণা করলো। (নাঊযুবিল্লাহ) সে বলতে লাগলো, ‘আমি তোমাদের সবচেয়ে বড় খোদাআমার পূজা, আরাধনা কর। সে-ই রক্ষা পাবে যে আমার পূজা করবে। আর যে আমার পূজা করতে অস্বীকার করবে, তাকে আমি খতম করবো। একমাত্র এ কারণেই সে অনেক লোকের গর্দান দ্বিখন্ডিত করেছিল। তাঁদের অপরাধ ছিলো, তাঁরা তার পূজা করতেন না এবং তাকে মাবূদ মানতে অস্বীকার করেছিলেন। তদ্রুপ ইয়াযীদও যখন সিংহাসনে বসলো, সে ক্ষমতায় আরোহন করার পর পরই হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম, হযরত আব্দুল্লাহ বিন যুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু প্রমুখ থেকে বাইয়াত তলব করলো। একেতো উনারা ছিলেন ছাহাবী, বিশেষ সম্মানিত ব্যক্তি এবং উনারা বিশেষ মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের বংশধর ছিলেন। তাই তাঁরা কিভাবে ফাসিক-ফাজির ইয়াযীদের হাতে বাইয়াত করতে পারেন? সুতরাং তাঁরা অস্বীকার করলেন এবং এটা তাঁদের মর্যাদাগত সদাচরণই ছিল। অস্বীকার করার পর হযরত আব্দুল্লাহ বিন উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আব্দুল্লাহ বিন যুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু মদীনা শরীফ থেকে মক্কা শরীফে চলে গেলেন।
হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম মদীনা শরীফ-এর গভর্নর ওয়ালীদের আহবানে তার দরবারে তাশরীফ নিয়ে গেলেন। তার সঙ্গে আলোচনা করলেন। মদীনা শরীফ-এর গভর্নর বললো, ইয়াযীদ আপনার বাইয়াত তলব করেছেন। তিনি বললেন, ‘আমি ইয়াযীদের হাতে বাইয়াত করতে পারি না। ইয়াযীদ হলো ফাসিক-ফাজির, এ ধরণের অনুপযুক্ত লোকের হাতে আমি বাইয়াত করতে পারি না। আমি কোন অবস্থাতেই তার হাতে বাইয়াত করতে রাজী নই।তিনি সুস্পষ্টভাবে অস্বীকার করলেন। এটা তাঁর মর্যাদাগত সদাচরণই ছিল।
উল্লেখ্য, তিনি যদি বাইয়াত করতেন, তাহলে নিজের প্রাণ বাঁচতো, পরিবার-পরিজন বাঁচতো, হয়তো এমনও হতো যে, অগাধ সম্পত্তির মালিকও তিনি হয়ে যেতেন। কিন্তু ইসলামের আইন-কানুন ছত্রভঙ্গ হয়ে যেত এবং কিয়ামত পর্যন্ত ফাসিক-ফাজিরের আনুগত্য বৈধ হয়ে যেত এবং তাদের কাছে হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার আনুগত্য প্রধান দলীল হিসেবে পরিগণিত হতো। লোকেরা বলতো, হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম যখন ফাসিক-ফাজিরের আনুগত্য স্বীকার করেছেন, তাহলে নিশ্চয়ই তা জায়িয।
কিন্তু ইমাম হুসাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু অস্বীকারের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর সামনে প্রমাণ করে দিলেন, হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম শত কষ্ট-যাতনা ভোগ করতে পারেন, অনেক বিপদ-আপদের মুকাবিলা করতে পারেন, এমন কী আপন পরিজনের সমস্ত লোকদের নির্দয়ভাবে শহীদ হওয়াটা অবলোকন করতে পারেন; নিজেও জালিমদের হাতে নির্মমভাবে শাহাদাত বরণ করতে পারেন, কিন্তু ইসলামের নিযাম বা বিধান ছত্রভঙ্গ হওয়া কিছুতেই সহ্য করতে পারেন না। নিজের নানাজান হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দ্বীন ধ্বংস হওয়াটা কিছুতেই মেনে নিতে পারেন না। হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম নিজের কাজ ও কর্মপন্থা দ্বারা তা প্রমাণ করেছেন এবং দুনিয়াবাসীকে এটা দেখিয়ে দিয়েছেন, আল্লাহ তায়ালার মনোনীত ও খাছ বান্দাগণের এটাই শান যে, বাতিলের সামনে বুক ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে যান এবং তীর তলোয়ারের সামনে বুক পেতে দেন, কিন্তু কখনও বাতিলের সামনে মাথা নত করেন না। হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম নিজের আমল দ্বারা তাঁর উচ্চ মর্যাদার পরিচয় দান করেছেন এবং জনগণের সামনে নিজের পদমর্যাদা তুলে ধরেছেন।
হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার মক্কা শরীফ-এর উদ্দেশ্যে মদীনা শরীফ ত্যাগ
হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম এভাবে মদীনা শরীফ-এর গভর্নর ওলীদের বেয়াদবীপূর্ণ প্রস্তাব অস্বীকার করে যখন তার দরবার থেকে নিজের আপনজনদের কাছে ফিরে আসলেন এবং সবাইকে একত্রিত করে বললেন, আমার প্রিয়জনেরা! যদি আমি পবিত্র মদীনা শহরে অবস্থান করি, এরা আমাকে ইয়াযীদের বাইয়াত করার জন্য বাধ্য করবে, কিন্তু আমি কখনও বাইয়াত গ্রহণ করতে পারবো না। তারা বাধ্য করলে নিশ্চয়ই যুদ্ধ হবে, ফাসাদ হবে; কিন্তু আমি চাইনা আমার কারণে মদীনা শরীফ-এ লড়াই বা ফাসাদ হোক। আমার মতে, এটাই সমীচীন হবে যে, এখান থেকে হিজরত করে মক্কা শরীফ-এ চলে যাওয়া। নিজের আপনজনেরা বললেন, ‘আপনি আমাদের অভিভাবক; আমাদেরকে যা হুকুম করবেন তাই মেনে নেব।অতঃপর তিনি মদীনা শরীফ থেকে হিজরত করার সিদ্ধান্ত নিলেন।
আহ! অবস্থা কেমন সঙ্গীন হয়ে গিয়েছিল যে, ইমাম হুসাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে সেই মদীনা শরীফ ত্যাগ করতে হচ্ছিল, যে মদীনা শরীফ-এ হযরত ইমাম হুসাইন রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার নানাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রওযা শরীফ অবস্থিত। তাঁর নানাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রওযা শরীফ যিয়ারত করার উদ্দেশ্যে হাজার হাজার টাকা পয়সা ব্যয় করে, আপনজনদের বিরহ-বেদনা সহ্য করে, ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করে দূর-দূরান্ত থেকে লোকেরা আসে এই পবিত্র মদীনা মুনাওওয়ারায়। কিন্তু আফসুস, আজ সেই মদীনা শরীফকে তিনি ত্যাগ করছেন, যেই মদীনা শরীফ ছিল উনারই। নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নয়নের মণি, আদরের দুলাল ছিলেন তিনি। ক্রন্দনরত অবস্থায় তিনি নানাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রওযা পাক-এ উপস্থিত হয়ে বিদায়ী সালাম পেশ করলেন এবং অশ্রুসজল নয়নে নানাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুমতি নিয়ে আত্মীয়-পরিজন সহকারে ৬০ হিজরী ৪ঠা শাবান তারিখে মদীনা শরীফ থেকে হিজরত করে মক্কা শরীফ-এ চলে গেলেন।
মক্কা শরীফ-এ গমনের কারণ
আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ ফরমান-
ومن دخله كان امنا
অর্থ: যে হেরেম শরীফ-এ প্রবেশ করলো, সে নিরাপদ আশ্রয়ে এসে গেল।’ (সূরা আলে ইমরান-৯৭) কেননা হেরেম শরীফ-এর অভ্যন্তরে ঝগড়া-বিবাদ, খুন-খারাবী নাজায়িয ও হারাম। এমনকি হেরেম শরীফ-এর সীমানায় উঁকুন মারা পর্যন্ত নিষেধ। তবে সাপ, বিচ্ছু ইত্যাদি মারতে পারে। কিন্তু যে সব পশু-পাখি মানুষের কোন ক্ষতি করে না সেগুলো মারা জায়িয নেই। আর মুমিনদের ইজ্জত-সম্মান তাঁদের শান-মান এটাতো অনেক ঊর্ধ্বের বিষয়। তাই হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম চিন্তা করলেন যে, হেরেম শরীফ-এর অভ্যন্তরে যেহেতু ঝগড়া-বিবাদ, খুন-খারাবী নিষেধ সেহেতু কেউ আমার সাথে এখানে ঝগড়া-বিবাদ করতে আসবে না। তাই হেরেম শরীফ-এর সীমানায় অবস্থান করে আল্লাহ তায়ালার ইবাদত বন্দেগীতে বাকী জীবন কাটিয়ে দেব। এ মনোভাব নিয়ে তিনি মদীনা শরীফ থেকে মক্কা শরীফ-এ চলে আসলেন।
হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার কাছে কূফাবাসীর চিঠি
মক্কা শরীফ আগমনের সাথে সাথে হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার কাছে কূফা থেকে লাগাতার চিঠিপত্র এবং সংবাদ-বাহক আসতে শুরু করলো। অল্প সময়ের মধ্যে হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার কাছে দেড়শত চিঠি এসে পৌঁছল। উলামায়ে কিরাম-এর কেউ কেউ তাঁদের কিতাবে বারশত চিঠির কথা উল্লেখ করেছেন। কিন্তু নির্ভরযোগ্য কিতাবে দেড়শত চিঠির কথা উল্লিখিত হয়েছে। দেড়শত চিঠিই বিশেষ নির্ভরযোগ্য। কারণ সেই যুগে ডাক আদান-প্রদান অত সহজ ছিল না। লোকেরা চিঠি-পত্র, পত্র-বাহকের মাধ্যমে প্রেরণ করতো এবং পত্র-বাহক পায়ে হেঁটে বা ঘোড়ায় চড়ে গন্তব্যস্থানে চিঠি পৌঁছিয়ে দিত। এমতাবস্থায় দেড়শত চিঠি পৌঁছাটা অতটা সহজ ব্যাপার ছিল না।
যা হোক, হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনার কাছে দেড়শত চিঠি পৌঁছেছিল। প্রত্যেক চিঠির বিষয়বস্তু খুবই আকর্ষণীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বিষয়বস্তুগুলো হচ্ছে এরকম, “হে হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম! আমরা আপনার সম্মানিত পিতা হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনারই অনুসারী এবং আহলে বাইত-এর ভক্ত। আমরাতো হযরত মুআবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে সমর্থন করিনি। তাঁর অনুপযুক্ত ছেলে ইয়াযীদকে মানার প্রশ্নই উঠতে পারে না। আমরা আপনার পিতা হযরত আলী র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহু রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও আপনার ভাই হযরত ইমাম হাসান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সমর্থনকারী। আমরা ইয়াযীদের অনুসারী নইইয়াযীদ এখন তখতারোহন করেছে, কিন্তু আমরা ইয়াযীদকে খলীফা বা ইমাম মানতে পারি না। আপনাকেই বরহক ইমাম, বরহক খলীফা মনে করি। আপনি মেহেরবানী করে কূফায় তাশরীফ আনুন। আমরা আপনার হাতে বাইয়াত করবো এবং আপনাকে খলীফা হিসেবে গ্রহণ করবো। আপনার জন্য আমাদের মাল-জান কুরবান করতে প্রস্তুত এবং আপনার হাতে বাইয়াত করে আপনার অনুসরণে জিন্দেগী অতিবাহিত করতে ইচ্ছুক। তাই আপনি আমাদের কাছে তাশরীফ আনুন। আমাদের প্রতি মেহেরবানী করুন এবং আমাদেরকে আপনার ছোহবতে রেখে আপনার ফয়েজ-বরকত দ্বারা আমাদেরকে উপকৃত করুন
সমস্ত কাবিলা খানদানের পক্ষ থেকে তাঁর কাছে এই ধরণের চিঠি এসেছিল। অনেকেই এই ধরণের চিঠিও লিখেছিল, “হে মহান ইমাম, আপনি যদি আমাদের কাছে না আসেন, আমাদেরকে বাধ্য হয়ে ইয়াযীদের হাতে বাইয়াত করতে হবে; কারণ সরকারের মোকাবেলা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। কাল কিয়ামতের মাঠে আল্লাহ্ তায়ালা যখন জিজ্ঞেস করবেন- কেন আমরা নালায়েক ইয়াযীদের হাতে বাইয়াত গ্রহণ করলাম, তখন আমরা পরিস্কার বলব, হে মওলা! আমরা আপনার পেয়ারা রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সল্লাম-এর দৌহিত্রের কাছে চিঠি লিখেছিলাম, সংবাদ পাঠিয়েছিলাম, মাল-জান কুরবানী করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলাম, কিন্তু তিনি তাশরীফ আনেননি এবং আমাদের দাওয়াত গ্রহণ করেননি। তিনি যখন অগ্রাহ্য করলেন, আমরা বাধ্য হয়ে ইয়াযীদের হাতে বাইয়াত করেছি। তাই হে ইমাম! আপনি স্মরণ রাখবেন, আমাদের এ বাইয়াতের জন্য আপনিই দায়ী হবেন।
হযরত ইমাম মুসলিম বিন আক্বীল রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর কূফা গমন
কূফাবাসীদের পক্ষ থেকে এ ধরনের চিঠি লিখার পরিপ্রেক্ষিতে শরীয়তের বিধান অনুযায়ী হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম চিন্তা করলেন যে, সেখানে তিনি যাবেন কি না। তিনি অনেকের সাথে এ বিষয়ে পরামর্শ করলেন এবং শেষ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন যে, প্রথমে একজন নির্ভরযোগ্য ব্যক্তিকে পাঠাবেন, যিনি সেখানে গিয়ে স্বচক্ষে অবস্থা যাচাই করে দেখবেন যে, ওরা বাস্তবিকই উনাকে চায় কি না? উনার প্রতি সত্যিই আন্তরিক মুহব্বত ও বিশ্বাস আছে কি না? সঠিক সংবাদ পাওয়ার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবেন, তিনি যাবেন কি যাবেন না।

অতঃপর তিনি তাঁর চাচাতো ভাই হযরত মুসলিম বিন আক্বীল রহমতুল্লাহি আলাইহিকে এ কাজের জন্য মনোনীত করলেন এবং ফরমালেন, প্রিয় মুসলিম! কূফা থেকে যেভাবে চিঠি আসছে তা যাচাই করে দেখার জন্য তোমাকে আমার প্রতিনিধি করে সেখানে পাঠানোর মনস্থ করেছি। তুমি সেখানে গিয়ে স্বচক্ষে অবস্থা উপলব্ধি এবং যাচাই করে যদি অবস্থা বাস্তবিকই সন্তোষজনক মনে কর, তাহলে আমার কাছে চিঠি লিখবে। চিঠি পাওয়ার পর আমি রওয়ানা হবো, অন্যথায় তুমি সেখান থেকে চলে আসবে। তাঁর চাচাতো ভাই হযরত মুসলিম বিন আক্বীল রহমতুল্লাহি আলাইহি যাবার জন্য তৈরি হয়ে গেলেন। হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম কূফাবাসীদের কাছে একটি চিঠি লিখলেন- ওহে কূফাবাসী! পরপর তোমাদের অনেক চিঠি আমার কাছে পৌঁছেছে। তাই আমি আমার চাচাতো ভাই হযরত মুসলিম বিন আক্বীল রহমতুল্লাহি আলাইহিকে আমার প্রতিনিধি করে তোমাদের কাছে পাঠালাম। তোমরা সবাই তাঁর হাতে বাইয়াত গ্রহণ করো এবং তাঁর খিদমত করো। তিনি তোমাদের মনোভাব যাচাই করে আমার কাছে চিঠি লিখবেন, যদি তোমাদের মনোভাব সন্তোষজনক হয়, তাঁর চিঠি আসার পর পরই আমিও তোমাদের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে যাব।এভাবে চিঠি লিখে সীল মোহর লাগিয়ে হযরত মুসলিম বিন আক্বীল রহমতুল্লাহি আলাইহিকে দিলেন এবং উনাকে বিদায় দিলেন। হযরত মুসলিম বিন আক্বীল রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর দুই ছেলে হযরত মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত ইব্রাহীম রহমতুল্লাহি আলাইহিও তৈরি হয়ে গেলেন। তাঁরা বলতে লাগলেন, আব্বাজান! আমাদেরকে ফেলে যাবেন না, আমাদেরকেও সাথে নিয়ে যান। হযরত মুসলিম বিন আক্বীল রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর ছেলেদের অন্তরে আঘাত দিতে চাইলেন না। তাই তাঁর ছেলেদ্বয়কেও সাথে নিয়ে নিলেন। অতঃপর তিনি মক্কা শরীফ থেকে মদীনা শরীফ গেলেন এবং আত্মীয় স্বজনের সাথে দেখা করার পর কূফার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন।
_______________________________________________________________________________________
৪ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৩৯ হিজরী
২৭ রবি’, ১৩৮৫ শামসি
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ঈসায়ী
ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)

No comments

ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য।

  ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য। ডাল খাওয়ার ফলে কলব প্রসারিত হয় এবং চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পায়। পূর্ববর্তী হযরত নবী-রসুল আলাইহিমুস সালাম উ...

Powered by Blogger.