Header Ads

Islamic Quotes Urdu Facebook Cover. QuotesGram

সরওয়ারে দো’জাহাঁ, হাবীবে কুওওয়াতে আজালান ওয়া আবাদান, রসূলে মক্ববুল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নূরানী হুলিয়া মুবারক


لو لاك لما خلقت الافلاك
হাদীসে কুদসীতে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর শানে মহান আল্লাহ্ পাক ইরশাদ করেন যে,  “আমি (আল্লাহ্ পাক) হযরত মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সৃষ্টি না করলে আসমান-যমীন কিছুই সৃষ্টি করতাম না।” (হাদীসে কুদসী)       

আরো ইরশাদ হয়েছে, “মহানবী হযরত মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সৃষ্টি না করলে আমি আল্লাহ্ নিজেই আত্মপ্রকাশ করতাম না।”         

যাঁর সৃষ্টিতে এত বড় মাহাত্ম, বেমেছাল সম্মান আর অপরিসীম গৌরব, তাঁর প্রকৃত সৌন্দর্য পেশ করার সাধ্য কার? এ নিতান্তই এক অনুভবের বিষয়। তাইতো প্রত্যক্ষদর্শী হযরত আলী ইবনে আবি তালিব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, “যাঁরা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দেখেছেন তাঁরা বর্ণনা করেন যে, “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর চেয়ে সুদর্শন কাউকে তাঁরা পূর্বেও কখনো দেখেননি এবং পরেও নয়।” (তিরমিযী শরীফ)     
    
তবু মানসপটে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পবিত্র সীরত-ছূরত এবং আকৃতি মুবারক পরিস্ফুটনের লক্ষ্যে হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ নিম্নরূপ উপমা সম্বলিত একটি চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।       
    
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নূরানী অবয়বঃ

হযরত হিন্দ ইবনে আবি হালাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেছেন যে, “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন স্বাভাবিক গড়নের তুলনায় ঈষৎ দীর্ঘ একজন সুঠামদেহী সু-পুরুষ। তাঁর মস্তক মুবারক মোটামুটিভাবে বড় হলেও তাঁর দেহ মুবারকের সঙ্গে ছিল চমৎকার মিল। সেই সঙ্গে সামান্য ঢেউ খেলানো কেশ বিন্যাসে আর চওড়া কপাল মুবারকে তিনি ছিলেন নজরকাড়া সুদর্শন। ভুরু মুবারক ছিলো পাতলা, ধনুকের ন্যায় বক্র এবং অসংযুক্ত। নাসিকা মুবারক ছিলো দীর্ঘ, যা থেকে এক ধরণের আভা ও দ্যূতি ছড়াতো। দাড়ি মুবারক ছিলো মনোরম। মুবারক গালগুলো ছিলো মসৃণ এবং হালকা পুর গোশত, যা তুলতুলে বা ঢলঢলে ছিল না। মুবারক চোখের মণি ছিলো ঘন কালো। মুবারক মুখমন্ডল মোটামুটিভাবে চওড়া। দাঁত মুবারক ছিলো ছোট যা সর্বদাই ছিল সফেদ-শুভ্র, সুমসৃন ও উজ্জ্বল। সম্মুখের দু’টি দাঁত মুবারকের মাঝে ঈষৎ ফাঁক ছিলো লক্ষ্যণীয়।         

তাঁর ঘাড় মুবারক ছিলো সরু ও সুন্দর। মুবারকময় হাত ও পা গুলো ছিলো পরিমিতভাবে পেশল। বুক ও পেট মুবারক ছিলো সমতল ও মসৃণ। কিন্তু তাঁর বক্ষ মুবারক ছিলো চওড়া এবং দু’বাহুর মাঝে দূরত্ব ছিলো কিছুটা বড়। যখন তিনি দেহ মুবারকের পোশাক খুলতেন, তখন তাঁর ত্বক মুবারক দেখাত উজ্জ্বল ও দ্যূতিময়। তাঁর বুক ও পেট মুবারকের মাঝে একটি সরু চুলের রেখা ছিলো লক্ষ্যণীয়। এছাড়া অন্য কোন চুল এস্থানে পরিলক্ষিত হয়নি। কিন্তু তাঁর মুবারক উভয় বাহু, হাত এবং বুকের উপরের অংশে চুলের উপস্থিতি ছিলো লক্ষ্যণীয়। তাঁর কব্জি এবং হাতের তালু মুবারক ছিলো চওড়া। হাত ও পা মুবারকের অঙ্গুলী মুবারক ছিলো সামঞ্জস্যভাবে দীর্ঘাকৃতির। তাঁর উভয় পা মুবারক ছিলো পুর গোশ্তযুক্ত ও মসৃণ এবং পায়ের তল মুবারক ছিলো ধনুকের ন্যায় বাঁকা।” (শামায়েলে তিরমিযী)
  
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দর্শন মুবারকঃ    
হযরত জাবির ইবনে সামুরাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেছেন যে, “আমি একদিন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জোৎনা রাতে দর্শন করি। তার পরিধানে ছিলো খয়েরী রং-এর একটি কোর্তা। আমি অপলক দৃষ্টিতে তাঁর দিকে তাকিয়ে রইলাম এবং লক্ষ্য করলাম, তিনি চাঁদের তুলনায় আরও আকর্ষণীয় ও সুদর্শন।” (সুবহানাল্লাহ্) (দারিমী)         
হযরত কা’ব ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন যে, যখনই হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সন্তুষ্ট হতেন তাঁর মুখমন্ডল মুবারক চাঁদের ন্যায় উজ্জ্বল রূপ ধারণ করতো। আর এভাবে আমরা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খুশীভাব বুঝতে পারতাম।” (বুখারী, মুসলিম)

হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া  সাল্লাম-এর মহরে নুবুওওয়াতঃ
হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন যে, “আমি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ঘাড় মুবারকের উপর কবুতরের ডিমের ন্যায় একখন্ড গোশ্ত দেখেছি, যার রং ছিলো হালকা লাল” এটিই ছিলো মহরে নুবুওওয়াত।” (শামায়েলে তিরমিযী) 

হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দাড়ি মুবারকঃ          
হযরত হিন্দ ইবনে আবি হালাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেছেন যে, “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দাড়ি মুবারক ছিলো অত্যন্ত ঘন ও মনোরম যা তাঁর বক্ষ মুবারকের একাংশ আবৃত করতো।” (শামায়েলে তিরমিযী)       
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর চুল মুবারকঃ
        
হযরত আনাছ ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেছেন যে, “আমি কখনও চৌদ্দটির বেশী সাদা চুল মুবারক হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পবিত্র মাথা ও দাড়ি মুবারকে পাইনি।” (শামায়েলে তিরমিযী)    

হযরত আনাছ ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আরোও বর্ণনা করেন, “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর চুল মুবারক কখনই একেবারে সরল অথবা বক্র ছিল না। বরং তা ছিলো ঢেউ খেলানো যা কানের নীচ পর্যন্ত দীর্ঘ ছিলো।” (শামায়েলে তিরমিযী) 
    
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাতের তালু মুবারকঃ
হযরত আনাছ ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন যে, “আমি কখনও এমন কোন মখমল বা রেশমী বস্তু স্পর্শ করিনি যা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর তালু মুবারক অপেক্ষা অধিকতর নরম।” (বুখারী, মুসলিম)

হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ঘাম মুবারকঃ
 হযরত উম্মে সোলায়মান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেছেন যে, “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রায়শঃই তাঁর বাড়ীতে সামান্য সময়ের দিবানিদ্রার জন্য যেতেন। তিনি এক খন্ড চামড়ার চাদর বিছিয়ে তাঁর বিশ্রামের ব্যবস্থা করে দিতেন। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন অত্যাধিক ঘামতেন, তখন তিনি সেই ঘাম মুবারকগুলো একটি শিশিতে সংগ্রহ করতেন। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলতেন, “আমরা আপনার ঘাম মুবারক সংগ্রহ করি। কারণ সকল সুগন্ধি দ্রব্যের চেয়েও এটি অধিকতর সূরভিত।” (সুবহানাল্লাহ্) (বুখারী, মুসলিম)         

হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মুসাফাহাঃ
 হযরত আনাছ ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেছেন যে, যখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কারো সাথে মুসাফাহা করতেন। তিনি কখনও তাঁর হাত মুবারক সরিয়ে নিতেন না যতক্ষণ পর্যন্ত অপর ব্যক্তি তাঁর হাত নিজ থেকে সরিয়ে না নিতেন।” (তিরমিযী শরীফ)

হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাসি-খুশী-
 হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বর্ণনা করেন যে, আমি কখনও তাঁকে অট্টহাস্যে ফেটে পড়তে  দেখিনি। তিনি শুধুই মুচ্কি হাসতেন। তাঁর হাসি সম্পর্কে হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে হারিছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন যে, আমি এমন কাউকে দেখিনি যিনি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর চেয়েও বেশী মুচকি হাসতেন।” (তিরমিযী শরীফ)

হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাঁটা মুবারক-
হযরত হিন্দ ইবনে আবি হালাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন যে, “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাটির উপর হালকা ভাবে পা মুবারক ফেলতেন এবং সম্মুখের দিকে ঝুঁকে এমনভাবে হাঁটতেন যেমন মনে হত তিনি পাহাড় থেকে নামছেন। কখনই ছোট ছোট পদক্ষেপে হাঁটতেন না।” (শামায়েলে তিরমিযী)

হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আলাপ মুবারক-
হযরত আনাছ ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেছেন যে, “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাধারণতঃ কোন একটি বক্তব্যকে তিনবার পুনরাবৃত্তি করতেন, ফলে উপস্থিত শ্রোতারা সহজেই তা বুঝে অনুধাবন করতে পারতেন। (তিরমিযী)    

হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বলেছেন, “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনও দ্রুতগতিতে কথা বলতেন না। এমনভাবে কথা বলতেন যে, কেউ চাইলে তাঁর পবিত্র জবানের সবগুলো শব্দ গুণতে পারতেন।” (বুখারী, মুসলিম)   


আল্লাহ্ পাক আমাদের সকলকে সুন্নতের পরিপূর্ণ অনুসরণ ও অনুকরণের মাধ্যমে আল্লাহ্ পাক এবং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খাছ সন্তুষ্টি এবং মুহব্বত দান করুন। (আমীন) 
____________________________________________________________________________________
২৯ মাহে যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৩৮ হিজরী
২৩ রবি’, ১৩৮৫ শামসি
২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ঈসায়ী
ইয়াওমুল খম্‌স (বৃহস্পতিবার)

No comments

ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য।

  ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য। ডাল খাওয়ার ফলে কলব প্রসারিত হয় এবং চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পায়। পূর্ববর্তী হযরত নবী-রসুল আলাইহিমুস সালাম উ...

Powered by Blogger.