Header Ads

Islamic Quotes Urdu Facebook Cover. QuotesGram

কাযযাবগং তথা উলামায়ে সূ’দের মিথ্যাচারিতার দাঁতভাঙ্গা জবাব ১৭



« পূর্ব প্রকাশের পর

স্বপ্ন সম্পর্কে কাযযাবুদ্দীনের মিথ্যাচারিতা
আশাদ্দুদ দরজার জাহিল হেমায়েত উদ্দীন ওরফে কাযযাবুদ্দীন তার কলঙ্কিত রেসালা ভ্রান্ত মতবাদেকয়েকটি স্বপ্নের কথা উল্লেখ করেছে। যেমন- “(১) কাঁচের ঘরে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ চারজন ওলীকে প্রবেশ করানো, (২) চার টুকরা বিশিষ্ট গোল টুপি খাছ সুন্নত হওয়া প্রসঙ্গে, (৩) স্বপ্নে আওলাদে রসূলহওয়ার সংবাদ পাওয়া।
মিথ্যাচারিতার খণ্ডনমূলক জবাব
কাযযাবুদ্দীনের উক্ত বক্তব্যের জবাবে প্রথমতঃ বলতে হয় যে, কাযযাবুদ্দীন স্বপ্নের ব্যাপারে উপরে যে তিনটি তথ্য উল্লেখ করেছে তন্মধ্যে দুটি সত্য, অর্থাৎ কাঁচের ঘরও চার টুকরা বিশিষ্ট গোল টুপিসম্পর্কিত স্বপ্ন দুটি অবশ্যই সত্য। আর তৃতীয় তথ্যটি, অর্থাৎ স্বপ্নে আওলাদে রসূলহওয়ার সংবাদ পাওয়ার তথ্যটি সম্পূর্ণই মিথ্যা ও বানোয়াট। কারণ আওলাদে রসূল সম্পর্কে রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি অনুরূপ কোন বক্তব্য প্রদান করেছেন তার একটি প্রমাণও কাযযাবুদ্দীন দেখাতে পারবেনা।
দ্বিতীয়তঃ বলতে হয় যে, স্বপ্ন শরীয়তেরই একটি অংশ। নুবুওওয়াতের ৪৬ ভাগের একভাগ হচ্ছে স্বপ্ন। হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামগণ উনাদের স্বপ্ন হচ্ছে ওহীর অন্তর্ভুক্ত। যা বিশ্বাস করা ও মানা সকলের জন্যেই ফরয। আর কামিল ও হক্কানী ওলীগণ উনাদের স্বপ্ন হচ্ছে ইল্হাম-ইল্ক্বা’-এর অন্তর্ভুক্ত, যদি তা কুরআন শরীফ-সুন্নাহ শরীফ-এর খিলাফ না হয়। এ ধরনের স্বপ্ন অবশ্যই শরীয়তে গ্রহণযোগ্য ও অনুসরণীয়। সুতরাং কুরআন শরীফ-সুন্নাহ্ শরীফ-এর খিলাফ স্বপ্ন যেরূপ দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়, তদ্রুপ কুরআন শরীফ-সুন্নাহ শরীফ সম্মত কোন স্বপ্নকে অস্বীকার বা অবজ্ঞা করার অধিকারও কারো নেই। কারণ স্বপ্ন শরীয়তে দলীল নয়এ ধরনের পাইকারী ফতওয়া দিয়ে যদি হক্ব স্বপ্নকেও অস্বীকার ও অবজ্ঞা করা হয়, তবে তো শরীয়তে স্বপ্নের কোন গুরুত্বই থাকেনা। অথচ শরীয়তে স্বপ্নের গুরুত্ব রয়েছে বলেই প্রায় সকল আউলিয়ায়ে কিরাম উনারাই স্বপ্ন বর্ণনা করেছেন এবং কিতাবেও লিপিবদ্ধ করেছেন। আর সকলেই সেগুলো সাদরে গ্রহণও করেছেন। শরফুন নবীবা স্বপ্নযোগে রসূলকিতাব দুখানাই এর দলীল হিসেবে যথেষ্ট। কাযযাবুদ্দীন যেন ভাল করে উক্ত কিতাব দুখানা অধ্যায়ন করে নেয়। শুধু তাই নয় বরং অনেক হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে স্বয়ং আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনাদের থেকে স্বপ্ন শুনেছেন ও তার ব্যখ্যাও করেছেন।
তৃতীয়তঃ বলতে হয় যে, কাযযাবুদ্দীন নিজেই স্বীকার করেছে যে, “কুরআন শরীফ-হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত বিষয়ের অনুকুলে কোন স্বপ্ন হলে সেটাকে সহযোগিতা হিসেবে গ্রহণ করা যায়।অর্থাৎ তার মতে যে স্বপ্ন কুরআন শরীফ-সুন্নাহ শরীফ-এর খিলাফ নয় তা অবশ্যই গ্রহণযোগ্য। আমরা চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি যে, উল্লিখিত স্বপ্নগুলো অবশ্যই কুরআন শরীফ-সুন্নাহ শরীফসম্মত। কুরআন শরীফ-সুন্নাহ শরীফ বিরোধী কোন বক্তব্য বা বিষয় উল্লিখিত স্বপ্নগুলোতে নেই। আর তাই খোদ কাযযাবুদ্দীনের পক্ষেও সম্ভব হয়নি উল্লিখিত স্বপ্ন বা স্বপ্নের কোন বক্তব্য বা বিষয়কে শরীয়ত বিরোধী প্রমাণ করা। আমরা যদি উল্লিখিত মুবারক স্বপ্নগুলোর ব্যাপারে একটু ব্যাখ্যামূলক আলোচনা করি তবে ব্যাপারটা আরো স্পষ্টভাবে ফুটে উঠবে।
প্রথম স্বপ্ন ও তার ব্যাখ্যামূলক জবাব
যেমন কাঁচের ঘর সম্পর্কিত স্বপ্নটি হলো- রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি স্বপ্নে দেখলেন একটি কাঁচের ঘর, যাতে কোন দরজা জানালা কিছুই ছিল না। সেই ঘরে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ৪ জন ওলী উনাদেরকে বসানোর জন্য ৪ কোণে ৪ খানা আসন রাখা হল। সারা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ আউলিয়া উনারা ঐ ঘরের চারপাশে ঘুরাঘুরি করছিলেন। সবাই বলাবলি করছিলেন এই ৪টি আসনে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ চারজন ওলী উনাদেরকে বসানো হবে। সকলে ভাবছেন কাকে কাকে বসানো হয়। এ অবস্থায় হযরত বড় পীর আব্দুল কাদির জীলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন চিশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা একে একে ৩টি আসনে বসে পড়লেন। এবার লক্ষ লক্ষ আউলিয়া উনাদের মধ্যে বলাবলি হচ্ছিল যে, চতুর্থ আসনটিতে চার তরীকার চারজন ইমামের অবশিষ্ট হযরত শায়খ বাহাউদ্দীন নকশবন্দ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এসে বসবেন। কিন্তু দেখা গেল একজন ফেরেশতা আলাইহিস সালাম তিনি এসে রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাকে নিয়ে ঐ আসনে বসিয়ে দিলেন। এ চারজন ছাড়া আর কাউকেই ভিতরে ঢুকতে দেয়া হয়নি।সুবহানাল্লাহ
এবার আপনারাই বলুন! উক্ত স্বপ্নে শরীয়ত বিরোধী কোন বক্তব্য বা বিষয় আছে কি? নেই। তবে হ্যাঁ, হযরত শায়খ বাহাউদ্দীন নক্শবন্দ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার প্রসঙ্গ টেনে এনে কেউ বলতে পারে যে, তবে কি রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মর্যাদা উনার চেয়ে বেশী?
তাদের এ বক্তব্যের জবাব দুভাবে দেয়া যেতে পারে। তন্মধ্যে প্রথমটি হলো, হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি যেহেতু হযরত খাজা বাহাউদ্দীন নকশ্বন্দ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার খাছ খলীফা এবং নকশ্বন্দিয়া মুজাদ্দিদিয়া তরীকার ইমাম। তাই হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সেখানে প্রবেশ করার অর্থ হলো হযরত খাজা বাহাউদ্দীন নক্শবন্দ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি প্রবেশ করা। কাজেই যাহেরীভাবে প্রবেশ না করার কারণে এটা কখনোই প্রমাণিত হয় না যে, উনার চেয়ে অন্য কাউকে বেশী মর্যাদা দেয়া হয়েছে।
দ্বিতীয় জবাব হলো, যদি কেউ সরাসরি এরূপ দাবিও করে যে, আমার মর্যাদা অমুকের চেয়ে বেশী। তবে সেটাও শরীয়তের খিলাফ নয়। কারণ কেউ প্রমাণ করতে পারবে না যে, শরীয়তের কোথাও উল্লেখ আছে যে, হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত খাজা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত বাহাউদ্দীন নকশবন্দ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদের চেয়ে কেউ বড় ওলী হতে পারবেন না অথবা উনাদের চেয়ে বড় ওলী পৃথিবীতে আর আসবেন না। মূলতঃ কেউ যদি এরূপ মনে করে যে, উনাদের চেয়ে বড় ওলী কেউ হতে পারবেন না  আসবেন না, তবে এটাই হবে শরীয়ত বিরোধী। কারণ যদি এটাই সত্য হয়, তবে হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম উনার সম্পর্কে তারা কি ফায়ছালা দিবে? ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম তিনি তো ওলী হিসেবেই পৃথিবীতে আসবেন। তবে কি উনাদের মর্যাদা হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম উনার চেয়েও বেশী? কাজেই কাযযাবুদ্দীন উক্ত স্বপ্নকে কোনভাবেই শরীয়ত বিরোধী প্রমাণ করতে পারবেনা ইনাশাআল্লাহ।
তাছাড়া উনাদের কারো চেয়ে কাউকে বড় মনে করা যদি শরীয়ত বিরোধী হয় তবে বলতে হবে যে, কাযযাবুদ্দীনের মুরুব্বী থানবীই শরীয়ত বিরোধী কাজ করেছে। কারণ থানবী তার নিজের লেখনীতে (থানবীর নির্বাচিত ঘটনাবলী -ক্বারী আবুল হাসান, দেওবন্দ) নিম্নোক্ত ঘটনা সংকলন করেছেঃ
হযরত সাইয়্যিদ আহমদ রেফায়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মর্যাদা
হযরত সাইয়্যিদ আহমদ রেফায়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বড় পীর আবদুল কাদির জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সমসাময়িক বুযূর্গ ছিলেন। উনার কাছে উনার এক মুরীদ জিজ্ঞাসা করল যে, “আপনার মর্যাদাও কি হযরত বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সমান? তিনি বলেন, তোমার শায়খ উনাকে হযরত বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার উর্ধ্বে মনে কর। মুরীদ বলল, তাহলে কি আপনি কুতুব? তিনি আবার বললেন, “তোমার পীর উনাকে কুতুবেরও উর্ধ্বে মনে কর। ….
থানবীর উক্ত বক্তব্য দ্বারা বুঝা যাচ্ছে যে, হযরত বড় পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার চেয়েও অন্য কাউকে বা স্বীয় পীর ছাহেব উনাকে বড় মনে করা জায়িয। আর থানবীর দাবী হচ্ছে তার মর্যাদা হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার চেয়েও বেশী! কাযযাবুদ্দীন এক্ষেত্রে কি জবাব দিবে?
দ্বিতীয় স্বপ্ন ও তার ব্যাখ্যামূলক জবাব
রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন উনার এক মুরীদ উনাকে বলেছেন তিনি রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্বপ্নে দেখেছেন। তিনি নবীজি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে চার তালিওয়ালা টুপি পরিহিত দেখে জিজ্ঞাসা করেছেন যে, “ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! টুপি নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব চলছে, কোন্টা আপনার খাছ সুন্নত?” উত্তরে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেনঃ টুপি, সুন্নত, মাসয়ালা-মাসায়িল যা কিছু জানতে হয় রাজারবাগ শরীফ-এর মুর্শিদ ক্বিবলা উনার কাছ  থেকে জেনে নিও।
উক্ত স্বপ্ন সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে কাযযাবুদ্দীন লিখেছে, “এখানেও তিনি স্বপ্নের মাধ্যমে টুপি সম্পর্কে …… দলীল দেয়ার চেষ্টা করেছেন।
কাযযাবুদ্দীনের এ মন্তব্যটিও সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। কারণ ইমামুল আইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ, মুজাদ্দিদে আযম রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি চার টুকরা বিশিষ্ট গোল টুপি খাছ সুন্নতহওয়ার ব্যাপারে উক্ত স্বপ্নকে মূল দলীল হিসেবে উল্লেখ করেননি। বরং সহযোগী দলীল হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অর্থাৎ উক্ত স্বপ্ন উল্লেখ করে তিনি এটাই বুঝাতে চেয়েছেন যে, “চার টুকরা বিশিষ্ট গোল টুপি খাছ সুন্নতএটা হাদীছ শরীফ-এর দলীল দ্বারা তো সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত রয়েছেই। উপরন্ত উক্ত স্বপ্নও প্রমাণ করে যে, আখিরী নবী হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি চার টুকরা বিশিষ্ট গোল টুপি পরিধান করতেন।সুতরাং উক্ত স্বপ্ন যেহেতু হাদীছ শরীফ-এর খিলাফ নয় বরং অনুকূলে, তাই উক্ত স্বপ্নকে হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত চার টুকরা বিশিষ্ট গোল টুপি খাছ সুন্নতহওয়ার স্বপক্ষে সহযোগী দলীল হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আর কাযযাবুদ্দীন নিজেই স্বীকার করেছে যে, “কুরআন শরীফ-হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত বিষয়ের অনুকূলে কোন স্বপ্ন হলে সেটাকে সহযোগী হিসেবে গ্রহণ করা যায়।
কাজেই কাযযাবুদ্দীন যদি উক্ত স্বপ্নকে শরীয়ত বিরোধী প্রমাণ করতে চায়, তবে তাকে প্রথমেই প্রমাণ করতে হবে যে, “চার টুকরা বিশিষ্ট গোল টুপি সুন্নত নয়, বরং পাঁচ কুল্লি বা পাঁচ তালীওয়ালা, কিস্তি বা নৌকার্মাকা অথবা অন্য কোন টুপি সুন্নত।
কিন্তু কাযযাবুদ্দীন তা কোন দিনও প্রমাণ করতে পারবেনা। যদি পারতো তবে ভ্রান্ত মতবাদেইসে তা উল্লেখ করতো। অথচ সে তার ভ্রান্ত মতবাদেচার টুকরা বিশিষ্ট গোল টুপি সম্পর্কে চু-চেরা করলেও একথা বলার সাহস তার হয়নি যে, “চার টুকরা বিশিষ্ট গোল টুপি সুন্নতহওয়ার প্রমাণ কুরআন শরীফ-হাদীছ শরীফ-এ নেই, অথবা অমুক টুপিটাই খাছ সুন্নত।এ ধরনের কোন দলীলই সে তার বক্তব্যে উল্লেখ করতে সক্ষম হয়নি।
স্মর্তব্য যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি মাসিক আল বাইয়্যিনাত-এর ৫৩-৫৯ তম সংখ্যাগুলোতে শতাধিক দলীল দ্বারা প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, “চার টুকরা বিশিষ্ট গোল টুপিই খাছ সুন্নত।অন্য কোন টুপিই খাছ সুন্নত নয়।
অতএব, কাযযাবুদ্দীনের বক্তব্য বা স্বীকারোক্তি মতেই উক্ত স্বপ্নটি সহযোগী দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য। যেহেতু উক্ত স্বপ্নটি হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত বিষয়ের অনুকূলে। তাই বলার অপেক্ষাই রাখেনা যে, উক্ত স্বপ্ন সম্পর্কে চুঁ-চেরা করার অর্থ হচ্ছে হাদীছ শরীফ বা খাছ সুন্নত সম্পর্কে চূঁ-চেরা করা, যা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।
মূল কথা হলো, কাযযাবুদ্দীন কর্তৃক উল্লিখিত স্বপ্ন দুটি সত্য, সঠিক ও শরীয়ত সম্মত। শরীয়ত বিরোধী কোন বক্তব্য বা বিষয়ই উক্ত স্বপ্নদ্বয়ে নেই। খোদ কাযযাবুদ্দীনের পক্ষেও সম্ভব হয়নি উক্ত স্বপ্ন দুটিকে শরীয়ত বিরোধী প্রমাণ করা। ইনশাআল্লাহ ক্বিয়ামত পর্যন্ত চেষ্টা করলেও সে তা প্রমাণ করতে পারবেনা। সুতরাং, উক্ত স্বপ্ন নিয়ে চুঁ-চেরা করা নিজ জিহালতী ও গোমরাহীর বহিঃপ্রকাশ বৈ কিছু নয়।
তৃতীয় স্বপ্ন ও তার ব্যাখ্যামূলক জবাব
কাযযাবুদ্দীন এরপর তৃতীয় স্বপ্নের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে লিখেছে, “স্বপ্নে স্বয়ং নবীজি নাকি উনাকে বলেছেন তিনি আওলাদে রসূল। এরপর থেকে তিনি নিজেকে আওলাদে রসূলপরিচয় দিয়ে থাকেন।অর্থাৎ এর পূর্বে তিনি জানতেন না যে, তিনি আওলাদে রসূল। নাঊযুবিল্লাহ
আশাদ্দদু দরজার জাহিল কাযযাবুদ্দীনের উক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণই মিথ্যা ও বানোয়াট। কারণ কাযযাবুদ্দীন উক্ত বক্তব্যের স্বপক্ষে একটি দলীলও পেশ করতে পারবেনা। সে সাধারণ লোকদেরকে বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে নিজ থেকে উক্ত মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রদান করেছে। কারণ বেশ কয়েক বছর পূর্বে শান্তিবাগের এক বিশাল ওয়াজ মাহফিলে শ্রোতাদের পক্ষ থেকে রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, “আপনার বংশ কি?” জবাবে হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, “আমাদের বংশ হচ্ছে সাইয়্যিদবংশ।এরপর তিনি উনার পূর্বপুরুষ উনাদের ইতিহাস তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আমাদের পূর্বপুরুষ হযরত সাইয়্যিদ আবূ বকর মুজাদ্দিদী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরব দেশ থেকে সুলতানুল হিন্দ, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ হযরত খাজা সাইয়্যিদ মুঈনুদ্দীন চিশতী আল হাসানী ওয়াল হুসাইনী ছুম্মা আজমিরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাথে প্রথমে আজমীর শরীফ তাশরীফ আনেন। অতঃপর সেখান থেকে উনার আওলাদগণ উনারা দিল্লী, সেখান থেকে চট্টগ্রাম হয়ে বর্তমান নারায়ণগঞ্জ জেলার ঐতিহাসিক ও ছূফী-সাধকদের কেন্দ্র সোনারগাঁয়ে তাশরীফ আনেন এবং ইলমে ফিক্বাহ ও ইলমে তাছাউফের তালীমে রত হন। সোনারগাঁয়ে এবং আড়াইহাজার থানার প্রভাকরদী গ্রামের মিয়াবাড়ীতেআমাদের পূর্বপুরুষ উনাদের মাযার শরীফ রয়েছে।
অতএব, আওলাদে রসূল, হযরত আবূ বকর মুজাদ্দিদী রহমতুল্লাহি আলাইহি যিনি আরব দেশ থেকে তাশরীফ এনেছেন, উনারই বংশধর হচ্ছেন, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম।
কাজেই স্বপ্নে নয় বরং তিনি পূর্ব থেকেই জানতেন যে, তিনি সাইয়্যিদ বংশের এবং তিনি আওলাদে রসূল। সুতরাং এটা অস্বীকার করা বা এ ব্যাপারে বিভ্রান্তি ছড়ানো জিহালতী ও গোমরাহী বৈ কিছুই নয়।
উল্লেখ্য যে, আওলাদে রসূল না হয়েও আওলাদে রসূল দাবি করা যেরূপ জাহান্নামী হওয়ার কারণ, তদ্রুপ কোন আওলাদে রসূল উনাকে অস্বীকার করা বা অবজ্ঞা করাও জাহান্নামী হওয়ার কারণ। কাজেই বিনা তাহক্বীকে ও বিনা দলীলে কোন কথা বলাও যাবেনা এবং কারো কোন কথা বিশ্বাসও করা যাবে না।
এছাড়াও কেউ যদি সত্যিই স্বপ্নে দেখেন যে, আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে সু-সংবাদ দিয়েছেন যে, তিনি আওলাদে রসূল বা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বংশধর”, তবে অবশ্যই সেটা সত্য। কারণ, হাদীছ শরীফ-এ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেছেন, “যে স্বপ্নে আমাকে দেখলো সে সত্যিই দেখলো।তাই অন্যান্যদের জন্যেও এটা বিশ্বাস করা ফরয/ওয়াজিব। তবে হ্যাঁ, কেউ যদি মিথ্যা বলে থাকে তবে সেজন্যে তাকে জবাবদিহী করতে হবে। কারণ, হাদীছ শরীফ-এ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় আমার নামে মিথ্যা বললো, সে যেন পৃথিবীতে থাকতেই তার স্থান জাহান্নামে নির্ধারণ করে নিল। (মিশকাত শরীফ)
অতএব, কেউ আওলাদে রসূলবলে নিজেকে প্রকাশ করলে বিনা চুঁ-চেরায় তা মেনে নেয়া উচিত। সে ব্যাপারে কোন দলীল-প্রমাণ তলব করা উচিৎ নয়। এ প্রসঙ্গে একটি ঘটনা উল্লেখ করলে বিষয়টি আরো ভালভাবে বোধগম্য হবে।
সমরকন্দের এক মহিলা যিনি আওলাদে রসূলছিলেন। তিনি একবার অভাব-অনটনের কারণে সে এলাকার কাজী ছাহেবের নিকট গিয়ে বললেন, “হে কাজী ছাহেব! আমি একজন আওলাদে রসূল। আমি অভাবে আছি, তাই আপনার নিকট এসেছি কিছু সাহায্যের জন্য। আপনি আমাকে কিছু সাহায্য করুন।কাজী ছাহেব বললো,“আপনি যে আওলাদে রসূলএর কোন প্রমাণ আপনার নিকট আছে কি?” মহিলা বললেন, “সত্যিই আমি আওলাদে রসূলকাজী ছাহেব বললো, “না, বিনা দলীলে আমি আপনাকে আওলাদে রসূলমেনে নিতে পারিনা। আর আমার পক্ষে আপনাকে সাহায্য করাও সম্ভব নয়।মহিলা কাঁদতে কাঁদতে সেখান থেকে চলে গেলেন। রাস্তায় সাক্ষাৎ হলো এক বিধর্মীর সাথে। লোকটি মহিলাকে কাঁদতে দেখে জিজ্ঞেস করলো, ‘আপনি কাঁদছেন কেন?’ মহিলা বললেন, ‘আমি অভাবের কারণে কাজী ছাহেবের নিকট গিয়ে বললাম, আমি আওলাদে রসূল আমাকে কিছু সাহায্য করুন। কাজী ছাহেব আমার নিকট আওলাদে রসূলহওয়ার প্রমাণ তলব করল। প্রমাণ না দিতে পারায় সে আমাকে ফিরিয়ে দিল।তখন লোকটি বললো, ‘আপনি চিন্তিত হবেন না। আমি যদিও বিধর্মী তবে আওলাদে রসূলগণ উনাদেরকেআমি মুহব্বত ও সম্মান করি। আপনার যতদিন ইচ্ছা আপনি এবং আপনার আওলাদগণ আমার এখানেই থাকবেন। আপনার সমস্ত ব্যয়ভার আমিই বহন করব।
এদিকে সেদিন রাত্রিবেলায় কাজী ছাহেব স্বপ্নে দেখে যে, আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অনেকগুলো বালাখানাসহ অপেক্ষায় আছেন। কাজী ছাহেব বললো, ‘বালাখানাগুলো কাদের জন্য।নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, ‘বালাখানাগুলো মুসলমানদের জন্য।কাজী ছাহেব বললো, ‘আমিও তো মুসলমান। দয়া করে আমাকে একটি বালাখানা দিন।নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, ‘তুমি যে মুসলমান তার কোন দলীল-প্রমাণ আছে কি? তুমি যদি বিনা দলীলে আমার আওলাদ উনাদেরকেমেনে নিতে ও বিশ্বাস করতে না পার তবে আমি তোমাকে বিনা দলীলে কিভাবে মুসলমানমেনে নিতে পারি?”
কাজেই কেউ যদি নিজেকে আওলাদে রসূলবলে প্রকাশ করে তবে সকলের উচিৎ তা বিনা চুঁ-চেরায় বিশ্বাস করা বা মেনে নেয়া। তবে হ্যাঁ, সে যদি মিথ্যা দাবি করে থাকে তবে তাকে কঠিন আযাব ভোগ করতে হবে। হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “যে নিজ বংশ পরিবর্তন করলো সে জাহান্নামী।
উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা সুস্পষ্ট ও অকাট্যভাবেই প্রমাণিত হলো যে, “আওলাদে রসূলসম্পকির্ত কাযযাবুদ্দীনের উক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা ও দলীলবিহীন।


No comments

ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য।

  ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য। ডাল খাওয়ার ফলে কলব প্রসারিত হয় এবং চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পায়। পূর্ববর্তী হযরত নবী-রসুল আলাইহিমুস সালাম উ...

Powered by Blogger.