Header Ads

Islamic Quotes Urdu Facebook Cover. QuotesGram

কাযযাবগং তথা উলামায়ে সূ’দের মিথ্যাচারিতার দাঁতভাঙ্গা জবাব ১৮


« পূর্ব প্রকাশের পর

আল বাইয়্যিনাতসম্পর্কে মিথ্যাচারিতা
আশাদ্দুদ দরজার জাহিল কাযযাবুদ্দীন তার ভ্রান্ত মতবাদেলিখেছে, “তিনি স্বপ্নে দেখেছেন ফুরফুরার হযরত মাওলানা আবূ বকর সিদ্দীকী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিশিষ্ট খলীফা মাওলানা রুহুল আমীন রহমতুল্লাহি আলাইহি  তিনি এক মাহফিলে ওয়াজ করছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি সমবেত জনতাকে উদ্দেশ্য করে বললেনঃ দেখ আমি আগে মাসিক আল বাইয়্যিনাত পড়তাম না। আমাকে সর্বপ্রথম এটা পড়তে বললেন হাদীছের বিখ্যাত ইমাম আল্লামা দাইলামী রহমতুল্লাহি আলাইহি। তারপর বললেন খাজা মুঈনুদ্দীন চিশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি। অতঃপর আমি এক বন্ধুসহ গেলাম মদীনায় প্রিয় নবীজি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যিয়ারতে, নবীজি তিনিও আমাকে বললেন আল বাইয়্যিনাতপড়তে। এরপর  থেকে আমি আল বাইয়্যিনাতপড়ে থাকি।
উক্ত স্বপ্ন সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে কাযযাবুদ্দীন লিখেছে, “মৃত্যুর পর আম্বিয়ায়ে কেরাম কবরে নামায পড়েন বলে হাদীছ শরীফ-এ প্রমাণ রয়েছে। এছাড়া কবরে কোন ব্যক্তি পত্র-পত্রিকা তো দূরের কথা কুরআন শরীফ-কিতাব পাঠ করে এমন কোন প্রমাণও কুরআন শরীফ-হাদীছ শরীফ-এর কোথাও নেই।
মিথ্যাচারিতার খণ্ডনমূলক জবাব
কাযযাবুদ্দীন মাসিক আল বাইয়্যিনাত সম্পর্কিত যে স্বপ্নটি উল্লেখ করেছে তা অবশ্যই সত্য। তবে কথা হলো কাযযাবুদ্দীনের উক্ত স্বপ্নের ব্যাপারে চুঁ-চেরা করার কি কারণ রয়েছে? কাযযাবুদ্দীন কি প্রমাণ করতে পারবে যে, উক্ত স্বপ্নের কোন বক্তব্য বা বিষয় শরীয়ত বিরোধী? কস্মিনকালেও সে তা পারবেনা। কারণ উক্ত স্বপ্নের কোন বক্তব্য বা বিষয় শরীয়ত বিরোধী নয়। মূলতঃ মাসিক আল বাইয়্যিনাত-এর গুরুত্ব বুঝানোর উদ্দেশ্যে এবং মাসিক আল বাইয়্যিনাত যে, মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট মকবুল, তা প্রকাশ করার উদ্দেশ্যেই উক্ত স্বপ্নটি উল্লেখ করা হয়েছে।
পূর্ববর্তী অনেক ইমাম-মুজতাহিদ বা আউলিয়ায়ে কিরামগণ উনারা নিজ কিতাবের গুরুত্ব বা ফযীলত বর্ণনা করার উদ্দেশ্যে স্বপ্ন বা কাশফের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য সমূহ প্রকাশ করেছেন। তার বহু নজীর পৃথিবীতে রয়েছে।
স্বপ্নে রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
তরফ থেকে কিতাব পাঠের নির্দেশ দেয়ার প্রমাণ
যেমন এ প্রসঙ্গে স্বপ্নযোগে রসূলুল্লাহনামক কিতাব-এর ৫৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে, “হযরত শায়খ মুহিউদ্দীন ইবনুল আরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হিজরী ৫৬০ সনে স্পেনে জন্মগ্রহণ করেন। উনার রচিত ফছুছুল হেকামইসলামী দর্শন শাস্ত্রের একখানা বিখ্যাত গ্রন্থ। শায়খ তিনি স্বয়ং নিজে বর্ণনা করেন, “৬২৭ হিজরী সনের মুহররম মাসের শেষ দশকে আমি দামেস্কে অবস্থান করছিলাম। স্বপ্নযোগে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাক্ষাত লাভ করলাম। দেখলাম, উনার পবিত্র হাত মুবারক-এ একখানা কিতাব রয়েছে। আমাকে লক্ষ্য করে তিনি ইরশাদ করছেন, এই কিতাবখানার নাম ফুছুছুল হেকাম। এটি নাও এবং প্রচার করে দাও, যাতে লোকজন উপকৃত হতে পারে।
স্বপ্নযোগে নির্দেশপ্রাপ্ত হয়েই শুধুমাত্র আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে আমি এ কিতাব লিখেছি। রসূলে মকবুল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কিতাবের যে রূপরেখা আমার সামনে তুলে ধরেছেন, আমি শুধুমাত্র সেটিই রূপায়িত করেছি। [মাশাহীরে ইসলাম, ১ম খণ্ড]
উক্ত কিতাবের ৬০ পৃষ্ঠায় আরো উল্লেখ আছে, “ইমাম ইয়াফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ‘শায়খ আবুল হাসান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পৌত্রগণ উনাদের মধ্য থেকে এক ব্যক্তি আমাকে বলেন, আমার দাদা তিনি হযরত ইমাম গাযযালী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ইহয়াউল উলুমকিতাবখানা হাদীছ শরীফ-এর খেলাফ বলে মনে করতেন। একবার তিনি উনার নিকট রক্ষিত ইহয়াউল উলুম’-এর একটি কপি জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন। সে দিনটি ছিল বৃহস্পতিবার। জুমুয়ার রাতেই তিনি স্বপ্নে দেখলেনঃ রসূলে মকবুল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বসে আছেন। সঙ্গে হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম এবং হযরত উমর ফারূক আলাইহিস সালাম সহ অনেকেই রয়েছেন। সে মজলিসে হযরত ইমাম গাযযালী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিও উপস্থিত। আমার দাদাকে দেখতে পেয়ে হযরত ইমাম গাযযালী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একখানা ইহয়াউল উলুমকিতাব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হাত মুবারক তুলে দিয়ে আরজ করলেন, “ইয়া রসুলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এ ব্যক্তি আমার কিতাবখানাকে হাদীছ শরীফ-এর খেলাফ বলে আখ্যায়িত করে এর একটি কপি জ্বালিয়ে দিয়েছে। আপনি ফায়ছালা দিন, যদি আমার এ কিতাবে হাদীছ শরীফ বিরোধী কিছু থেকে থাকে, তবে আমি আল্লাহ পাক উনার নিকট ক্ষমা চাইব। আর যদি আপনার বিবেচনায় আমার এই কিতাব ঠিক হয়ে থাকে, তবে আমি এ ব্যক্তির এহেন শত্রুতামূলক আচরণের বিচার চাই।
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কিতাবখানা আগাগোড়া নেড়েচেড়ে ও পড়ে দেখলেন এবং রায় দিলেন, “বেশ ভাল হয়েছে। এর মধ্যে হাদীছ শরীফ-এর খেলাফ কোন কিছু নেই। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার দাদার জামা খুললেন এবং উনার পিঠে পাঁচ ঘা বেত মারলেন। অতঃপর হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম তিনি অগ্রসর হয়ে আরয করলেন, “ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এ ব্যক্তি হাদীছ শরীফ-এর প্রতি মাত্রাতিরিক্ত মুহব্বতের কারণেই ইমাম গাযযালী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কিতাবের প্রতি বিরূপ হয়েছে; ব্যক্তিগত কোন শত্রুতার কারণে নয়। সুতরাং সে ক্ষমা পাওয়ার যোগ্য।হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম উনার এ বক্তব্য শোনার পর ইমাম গাযযালী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আমার দাদার অপরাধ ক্ষমা করে দিলেন। ……. [আদ দুররুল মানযুদ, আল্লামা শিবলী প্রণীত আল গাযযালী’]
হুজ্জাতুল ইসলাম হযরত ইমাম গাজ্জালী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার লিখিত বিশ্বখ্যাত ও মশহুর কিতাব মিনহাজুল আবেদীনসম্পর্কে বলেন, “আমি যখন এ কিতাবখানা লিখতে ছিলাম তখন দেখি আমার ঘরের চারদিকে ফেরেশতা আলাইহিমুস সালামগণ উনারা পাহারা দিচ্ছেন। যেন শয়তান আমার লেখায় কোন প্রকার ওয়াসওয়াসা দিতে না পারে।
অনুরূপ ক্বাইয়্যূমে আউয়াল, হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার লিখিত বিখ্যাত ও সর্বজনমান্য কিতাব মাকতুবাত শরীফ”-এর কোন এক মকতুব সম্পর্কে বলেন, “আমি যখন এ মকতুব খানা লিখছিলাম তখন দেখি যে, ফেরেশতাগণ আমার ঘরের চার দিকে পাহারা দিচ্ছেন, যেন ইবলীস কোন প্রকার ধোকা দিতে না পারে।অনুরূপ আরো বহু কিতাব সম্পর্কেই বর্ণিত আছে। কাযযাবুদ্দীন কি বলবে যে, এগুলো শরীয়ত বিরোধী বা উনারা নিজেদের বুযুর্গী প্রকাশ করার জন্যে এগুলো বলেছেন?
এরপর কাযযাবুদ্দীন উক্ত স্বপ্ন সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে যা লিখেছে, তা প্রমাণ করে যে, সে আসলেই একটা আশাদ্দুদ্ দরজার জাহিল। কারণ সে লিখেছে, “কবরে কেউ পত্র-পত্রিকা পাঠ করে এরূপ কোন প্রমাণ কুরআন শরীফ-হাদীছ শরীফ-এ নেই।
কাযযাবুদ্দীনের নিকট প্রশ্ন উক্ত স্বপ্নের কোথাও কি এ কথা উল্লেখ আছে যে, উনারা কবরে বসে বসে আল বাইয়্যিনাতপাঠ করেন? কোথাও একথা উল্লেখ নেই। তাছাড়া কাযযাবুদ্দীন কি কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণ করতে পারবে যে, কবরে কেউ পত্র-পত্রিকা পাঠ করতে পারেন না বা তাদের জন্য তা পাঠ করা নিষেধ?
হ্যাঁ, কবরবাসীদের জন্যে আমলের কোন শর্ত নেই। তবে তারা ইচ্ছে মত যে কোন আমলই করতে পারেন। যেমন কবরে নামায পড়া শর্ত নয়। তারপরও অনেকে নামায পড়েন। কুরআন শরীফ তিলাওয়াত শর্ত নয়। তারপরও অনেকে কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করেন বলে হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে। সুতরাং কাযযাবুদ্দীনের উক্ত মন্তব্য এক্ষেত্রে সম্পূর্ণই মূল্যহীন ও জিহালতপূর্ণ বলে প্রমাণিত হলো।
সাথে সাথে এটাও প্রমাণিত হলো, আল বাইয়্যিনাত সম্পর্কিত উল্লিখিত স্বপ্ন অবশ্যই সত্য ও শরীয়ত সম্মত। উক্ত স্বপ্নের কোন বক্তব্য বা বিষয়ই কুরআন শরীফ-হাদীছ শরীফ-এর খিলাফ নয় বরং সম্পূর্ণই কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ-এর অনুকূলে। তাই কাযযাবুদ্দীন তার ভ্রান্ত মতবাদেযে চারটি স্বপ্নের কথা উল্লেখ করেছে, তার একটিও সে কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ-এর দলীল দ্বারা শরীয়ত বিরোধী প্রমাণ করতে পারেনি। কোন দিন পারবেওনা। ইনশাআল্লাহ


No comments

ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য।

  ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য। ডাল খাওয়ার ফলে কলব প্রসারিত হয় এবং চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পায়। পূর্ববর্তী হযরত নবী-রসুল আলাইহিমুস সালাম উ...

Powered by Blogger.