খিলাফত ও খলীফা
খিলাফত কায়েমের জন্য মজলিসে শুরা করতে হবে। মজলিসে শুরার প্রধান তিনিই হবেন, যিনি সবচেয়ে বেশী তাক্ওয়াধারী হবেন। আল্লাহ্
পাক বলেন,
إِنَّ
أَكْرَمَكُمْ عِنْدَ اللَّهِ أَتْقَاكُمْ
অর্থঃ- “নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক-এর নিকট ঐ ব্যক্তি সব চাইতে সম্মানিত, যিনি তোমাদের মধ্যে তাক্ওয়াধারী বা পরহেযগার।”
(সূরা হুজুরাত শরীফঃ আয়াত শরীফ ১৩)
আর যিনি ইল্ম, আমল, ইখলাছ অর্থাৎ প্রতিটি বিষয়ে তাক্মীলে (পূর্ণতায়)
পৌঁছেছেন, তিনিই হাক্বীক্বী
তাক্ওয়াধারী।
অর্থাৎ খলীফা হতে হলে-
(১) মুসলমান হওয়া,
(২) আক্বেল হওয়া,
(৩) বালেগ হওয়া,
(৪) পুরুষ হওয়া,
(৫)স্বাধীন হওয়া,
(৬) বাকশক্তি সম্পন্ন
হওয়া,
(৭) শ্রবণ শক্তি সম্পন্ন
হওয়া,
(৮) দৃষ্টি শক্তি
সম্পন্ন হওয়া,
(৯) সাহসী ও শক্তি
সম্পন্ন হওয়া,
(১০) আদেল বা পরহেযগার
হওয়া,
(১১) মুজতাহিদ হওয়া,
(১২) কুরাঈশ হওয়া
ইত্যাদি শর্ত পুরা হওয়া আবশ্যক।
কেননা হাদীছ শরীফ ইরশাদ হয়েছে,
الائمة
من قر يش.
অর্থাৎ খলীফা হবেন কুরাঈশ বংশীয়। (মিশকাত)
সুতরাং যিনি উপরে বর্ণিত খলীফা হওয়ার সমস্ত শর্তের অধিকারী হবেন। তিনিই মূলত আওয়ামুন্নাছ
বা জনসাধারণকে খিলাফতের বিপরীতে যতসব মত-পথ,
নিয়ম-নীতি, তর্জ-তরীকা চালু রয়েছে তা থেকে সরিয়ে খিলাফতের
কার্যক্রমের দিকে ধাবিত ও চালিত করবেন।
স্মরণীয় যে, খিলাফতের প্রাথমিক
কার্যসমূহ হচ্ছে সাধারণ মানুষের আক্বীদা বিশুদ্ধ করা। তাদেরকে আমলের দ্বারা সূসজ্জিত
করা এবং ইখলাছের দ্বারা সৌন্দর্য মন্ডিত করা।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্ পাক বলেন,
وَعَدَ
اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا مِنْكُمْ وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَيَسْتَخْلِفَنَّهُمْ
فِي الْأَرْضِ كَمَا اسْتَخْلَفَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ وَلَيُمَكِّنَنَّ لَهُمْ
دِينَهُمُ الَّذِي ارْتَضَى لَهُمْ وَلَيُبَدِّلَنَّهُمْ مِنْ بَعْدِ خَوْفِهِمْ أَمْنًا
يَعْبُدُونَنِي لَا يُشْرِكُونَ بِي شَيْئًا وَمَنْ كَفَرَ بَعْدَ ذَلِكَ فَأُولَئِكَ
هُمُ الْفَاسِقُونَ وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ
لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ لَا تَحْسَبَنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا مُعْجِزِينَ فِي الْأَرْضِ
وَمَأْوَاهُمُ النَّارُ وَلَبِئْسَ الْمَصِيرُ
অর্থঃ “আল্লাহ্ পাক ওয়াদা দিয়েছেন যে,
তোমাদের
মধ্যে যারা ঈমান এনেছে এবং আমলে ছলেহ করেছে,
তাদেরকে
অবশ্যই পৃথিবীতে খিলাফত (শাসন কর্তৃত্ব) দান করবেন। যেমন তিনি তাদের পূর্ববর্তীদেরকে
খিলাফত দিয়েছিলেন এবং তিনি অবশ্যই সুদৃঢ় করবেন তাদের জন্য তাদের দ্বীনকে, যে দ্বীন তিনি তাদের জন্য পছন্দ করেছেন এবং নিশ্চয়ই
তিনি তাদের ভয়ভীতির পরিবর্তে আসান (নিরাপত্তা) দান করবেন এ শর্তে যে, তারা আমার ইবাদত বন্দেগী করবে এবং আমার সাথে
কাউকে শরীক করবে না। আর এর পর যারা অস্বীকার করবে, তারাই ফাসেক। তোমরা নামাজ কায়েম কর এবং যাকাত আদায় কর এবং রাসূল
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আনুগত্যতা প্রকাশ কর। আশা করা যায়, তোমরা (পূর্ণ) রহ্মত প্রাপ্ত হবে। তোমরা কাফিরদের
সম্পর্কে এটা ধারণা করোনা যে, তারা জমিনে পরাক্রমশীল, তাদের ঠিকানা হবে জাহান্নাম, আর নিশ্চয়ই তাদের প্রত্যাবর্তন স্থল অত্যন্ত
নিকৃষ্ট।” (সূরা নূর শরীফ আয়াত শরীফঃ আয়াত শরীফ ৫৫-৫৭)
No comments