Header Ads

Islamic Quotes Urdu Facebook Cover. QuotesGram

টেস্টটিউব বেবী কী ইসলামী শরীয়াহ মুতাবিক জায়িজ?আসুন জেনে নিই







টেষ্ট টিউব বেবীপ্রযুক্তি সম্পর্কে অনেকে দুটি বিষয় বলে থকেঃ

১) বিয়ে বহির্ভুত বেগানা পুরুষের মনি থেকে শুক্রাণু নিয়ে টেষ্ট টিউবে সন্তান লাভের প্রাথমিক কার্যক্রম  সম্পন্ন করা।
(২) স্বামীর মনি পরীক্ষা করে সেখান থেকে জীবিত শুক্রানু নিয়ে, স্ত্রীর জঠর থেকে ডিম্বানূ বের করে এনে বিশুদ্ধ ও জীবানুমুক্ত কাঁচের ছোট্ট পিরিচে সেটা নিষিক্ত করে ভ্রুণ তৈরী করা।

প্রথম বিষয়ে অর্থাৎ বিয়ে বহির্ভূত বেগানা পুরুষের মনি থেকে শুক্রাণু নিয়ে টেষ্ট টিউবে সন্তান লাভের সকল প্রচেষ্টা সর্বসম্মতিক্রমে শরীয়ত বহির্ভুত, হারাম এবং নাজায়িয। এই প্রচেষ্টায় আগত শিশু হবে অবৈধ। এতে যারা সংশ্লিষ্ট থাকবে তারা প্রত্যেকেই কঠিন গুণাহে গুণাহ্গার হবে।


দ্বিতীয়তঃ স্বামী ও স্ত্রীর যথাক্রমে শুক্রাণু ও ডিম্বাণু নিয়ে সন্তান লাভের প্রচেষ্টাও সঠিক ফতওয়া মুতাবিক সম্পূর্ণ হারাম, নাজায়িয এবং কঠিন গুনাহ্র কাজ। কিন্তু যেহেতু কেউ কেউ বিবাহিত দম্পত্তির ক্ষেত্রে তাদের শুক্রাণু ও ডিম্বাণু নিয়ে সন্তান জন্মের প্রচেষ্টাকে অর্থাৎ টেষ্ট টিউব পদ্ধতিকে জায়িয বলার চেষ্টা করছেন সেহেতু আমরা এখানে বিস্তারিত আলোচনা উপস্থাপন করছি।


টেষ্ট টিউব পদ্ধতি কি?

মহিলার শরীরের বাইরে স্ত্রী ডিম্বাণূ এবং শুক্রাণু নিষেকের (Fertilization) পর যে ভ্রুণ (Embryo) তৈরী হয় সেই ভ্রুণ  রেহেমে ধারণকে বলা হয় টেষ্ট টিউব পদ্ধতি।

টেষ্ট টিউব শব্দটি বিভ্রান্তিকর, কেননা কোন শিশুই  test tube  এ জন্মায় না। অর্থাৎ কোন মহিলার শরীরের বাইরে ভ্রুণ থেকে শিশুতে পরিণত হয় না।

সাধারণতঃ মহিলাদের মাসিক চক্রে একটি ডিম্ব প্রস্ফুটিত হয়, বিশেষ হরমোন প্রয়োগ করলে অনেকগুলো ডিম্ব এক সাথে পরিপক্ক হয়। ডিম্বগুলো নির্দিষ্ট বয়সসীমায় পৌঁছলে সরু একটি নলের সাহায্যে বের করে আনা হয়। একটি প্রেট্রিডিশে (কাঁচের এক ধরণের বাটি) ডিম্বাণুগুলো নিয়ে উপযুক্ত পরিবেশে রাখা হয় এবং এরই মধ্যে স্বামীর মনি সংগ্রহ করে বিশেষ পদ্ধতিতে ধুয়ে নেয়া হয়। এবার ডিম্বাণু ও শুক্রাণুগুলোকে ইনকিউবেটরের পরিবেশে কয়েকদিন রেখে দিলে নিষিক্ত ভ্রুণ তৈরী হয়।


পরবর্তীতে নিষিক্ত ভ্রুণ সরু নলের সাহায্যে জরায়ূতে সাবধানে প্রবেশ করানো হয় এবং সেখানে ভ্রুণ ধীরে ধীরে শিশু হিসেবে বেড়ে উঠে। তাহলে দেখা যাচ্ছে, মহিলার শরীরের বাইরে বিশেষ পরিবেশে শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর নিষেক ঘটিয়ে সে ভ্রুণ জরায়ুতে প্রবেশ করানোর পদ্ধতিকেই বলা হয় টেষ্ট টিউব পদ্ধতি। অবশ্য বর্তমানে একে বলা হয় ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (IVF) যার মানে শরীরের বাইরে নিষেক।


অনেকেই মত প্রকাশ করেন, টেষ্ট টিউব পদ্ধতিতে মহিলার শরীরের বাইরে নিষেকের এই পদ্ধতি জায়িয হবে, যদি সেক্ষেত্রে স্ত্রী ও স্বামীর যথাক্রমে ডিম্বানু ও শুক্রাণু ব্যবহার করা হয়। তাদের ধারণা কোন নিঃসন্তান দম্পত্তি যদি এ পদ্ধতি ব্যবহার করে সন্তান পেতে পারে, তবে এ রকম পদ্ধতি ব্যবহার করা শরীয়তে অবৈধ হবেনা বরং বৈধ।


শরীয়ত অনুযায়ী টেষ্ট টিউব পদ্ধতি জায়িয কিনা সেটা জানতে হলে আমাদের প্রথমেই বিস্তারিতভাবে জানতে হবে- টেষ্ট টিউব পদ্ধতিতে যতগুলো বিষয়ের অন্তর্ভুক্তি রয়েছে সে সবগুলো বিষয় শরীয়তের বিভিন্ন মাপকাঠিতে জায়িয কিনা। নাজায়িয হলে টেষ্ট টিউব পদ্ধতি হবে নাজায়িয বা হারাম। এবারে এর বিস্তারিত ব্যাখ্যায় আসা যাক।

পর্দা করা ফরয:

আমরা এখানে টেষ্ট টিউব পদ্ধতিতে ব্যবহৃত বিষয়গুলোকে যখন পর্দার খিলাফ কাজ বলছি তখন স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন আসে সন্তান জন্মের সময় ধাত্রী বা ডাক্তার একজন মহিলার গোপনীয় অংশগুলো দেখতে পান অথবা ব্রেষ্ট ক্যান্সারের রোগীর অপারেশনের সময় যখন ডাক্তারের ধরা বা কাটার বিষয়টি পর্দার খিলাফ না হয়, তাহলে নিঃসন্তান দম্পত্তির সন্তান পাওয়ার আশায় ডিম্বাণু ও শুক্রাণুকে দেখা এবং পরে তাদের সংগ্রহ এবং নিষেক সংঘটনের বিষয়টিকে কেন পর্দার খিলাফ  বলা হবে, এ বিষয়টি বুঝতে হলে পর্দার সীমারেখা কি বা পর্দার মাসয়ালা কি তা প্রথমে বুঝতে হবে। মানুষ হচ্ছে আশরাফুল মাখলুকাত অর্থাৎ সৃষ্টির মধ্যে সেরা। মানুষ ছাড়া অন্যান্য প্রাণীর মধ্যেও প্রজনন পদ্ধতি চালু আছে, মানুষের মধ্যেও আছে এবং এতে মানুষের আশরাফিয়াতের কোন সমস্যা নেই। আবার অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীরও বাচ্চা হয় এবং মানুষ থেকেও সন্তান জন্মগ্রহণ করে এতেও মানুষের আশরাফিয়াতের কোন সমস্যা নেই। আবার প্রাণী কুলের বিভিন্ন রোগের কারণে যেমনি চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতি হয়েছে তেমনি মানুষেরও বিভিন্ন রোগে চিকিৎসা শাস্ত্রের সাহায্য নেয়া সেটাই ফিতরাত অর্থাৎ স্বাভাবিক। এতে হতে পারে মহিলাদের জরায়ুর সমস্যা, ফেলোপিয়ান টিউবের সমস্যা, স্তনের সমস্যা ইত্যাদি। চিকিৎসা গ্রহণের সময় এইসব অঙ্গের প্রদর্শন মাজুর হিসেবে অবস্থাভেদে শরীয়ত মুবাহ করেছে, জায়িয করেছে এবং অবস্থাভেদে ফরযও করেছে অবস্থাভেদে হারামও করেছে এতেও মানুষ আশরাফই থাকছে। কিন্তু প্রজনন পদ্ধতিতে সন্তান জন্ম গ্রহণের বিষয়টি সব মাখলুকের মধ্যে থাকলেও মানুষের মধ্যে রয়েছে বিয়ের পদ্ধতি, যার মাধ্যমে শরীয়ত একজনকে অপরজনের জন্যে হালাল করেছে। এ বিষয়ে বলা হয়েছে, “মোহরানার বিনিময়ে স্ত্রীদেরকে তোমাদের জন্য হালাল করা হল।অর্থাৎ বিয়ে পদ্ধতি, মোহরানার বিনিময়, ইজাব-কবুল, একে অপরের জন্য হালাল হওয়া, এই সকল পদ্ধতি শুধুমাত্র জ্বিন ও মানুষের মধ্যেই রয়েছে অন্য কোন প্রাণীর মধ্যে নেই।  আর এ কারণে স্বামী ও স্ত্রী নিজেদের মধ্যে একে অপরের জন্য হালাল হওয়াতে এখানে কোন পর্দার বিধান নেই। তারপরেও স্বামী ও স্ত্রীর অনেক হালাল কাজ পর্দার কারণে  (এমনকি তাদের মাহরামদের সামনে) প্রকাশ্যে করাকে হারাম করা হয়েছে। এ বিষয়টিই  সূক্ষ্মভাবে অনুধাবণীয় যে, একমাত্র মানুষের মধ্যে (নারী-পুরুষের) একান্তবাস হয় পর্দার সাথে কিন্তু জ্বিন ও মানুষ ব্যতীত অন্য মাখলুকাতের মধ্যে একান্তবাসের ক্ষেত্রে  কোন গোপনীয়তা নেই, লজ্জা নেই, পর্দা নেই। প্রাণীদের একান্তবাস হতে পারে মানুষের উপস্থিতির বাইরে অথবা প্রকাশ্যে। কিন্তু মানুষের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর একান্তবাসের ক্ষেত্রেও তাক্বওয়ার  জন্যে বলা হয়েছে, ‘সম্পূর্ণ বিবস্ত্র না হয়ে নিজেদেরকে বড় কাপড়ে বা চাদরে আচ্ছাদিত করে নেয়া যাতে ফেরেশ্তাদের কাছে নিজেকে ঢেকে রাখা যায়।সীমারেখাটা এখানেই। টেষ্ট টিউব পদ্ধতির বিষয়টিকে পর্দার খিলাফ কাজ বলছি কেননা, এখানে ডিম্বাণু ও শুক্রাণু একত্রিকরণ বিষয়টি স্বামী-স্ত্রীর একান্তবাসের মত গোপনীয় বিষয় এবং এখানেই মানুষের আশরাফিয়াত। গবেষণাগারে হোক অথবা তার বাইরে হোক, ডাক্তারের মাধ্যমেই হোক অথবা মাহরাম ব্যক্তিদের মাধ্যমেই হোক স্বামী ও স্ত্রীর ডিম্বাণূ একত্রিকরণ বিষয়টি হবে অন্যান্য প্রাণীর একান্তবাসের মত, যেখানে তারা কারো উপস্থিতির বাছ-বিচার করেনা। সুতরাং চিকিৎসা বিজ্ঞানের নামে এমন কোন কাজ করা যাবে না যেখানে মানুষের আশরাফিয়াতের কোন একটি বিষয়ও প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে ওঠে বা পর্দার খিলাফ কাজ হয়ে যায়।

লজ্জা ঈমানের অঙ্গ:

আল্লাহ পাক কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ করেন,
انما يريد الله ليذهب عنكم الرجس.  

নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক চান আপনাদের থেকে নাপাকী, অপছন্দনীয়, অশ্লীলতা, বে-পর্দা, বেহায়া যা কিছু রয়েছে সেটা দূর  করে দিতে।” (সূরা আহযাব/৩৩)

আর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,

الحياء شعبة من الايمان.

লজ্জা ঈমানের একটি বিশেষ অঙ্গ।” (তিরমিযী শরীফ)

হাদীছ শরীফে আরো বলা হয়েছে,
 اذا لم تستحى فاصنع ماشئت.  “যখন তুমি নির্লজ্জ হও তখন যা ইচ্ছা তাই করতে পার।” (বুখারী শরীফ)

অর্থাৎ লজ্জা না থাকলে মানুষ যিনা, চুরি, অশ্লীলবাক্য, গালাগালী, বিবস্ত্র হওয়া, বেপর্দা ইত্যাদি সকল অপকর্ম, অন্যায় কাজ করতে পারে।

টেষ্ট টিউব পদ্ধতিতে পুরুষের মনি সংগ্রহ, নলের সাহায্যে যোনীপথে ডিম্বাণু বের করে আনা, আবার বাইরে পুরুষের শুক্রাণু ও মহিলার ডিম্বাণু নিষেক ঘটানো এবং পরিশেষে নমনীয় নলের সাহায্যে জরায়ুর অভ্যন্তরে প্রবেশ করানো এরকম প্রতিটি কাজেই রয়েছে পর্দার খিলাফ কাজ ছাড়াও লজ্জাশীলতার অভাব।

প্রশ্ন হতে পারে, চিকিৎসার জন্য মহিলাদের মল-মূত্র পরীক্ষা করানো বিভিন্ন লজ্জাশীল অঙ্গের অপারেশন করানোতে যদি লজ্জাশীলতার বিষয়টি এত প্রবল না হয় তাহলে শুধু টেষ্ট টিউব পদ্ধতিতে বিষয়গুলোকে কেন এতটা লজ্জার বিষয় বলা হচ্ছে।  অর্থাৎ  চরম নির্লজ্জতা।

যদিও পর্দার আলোচনায় আমরা বিস্তারিত সীমারেখার বিষয়টি আলোচনা করেছি তারপরেও এখানে বলছি, যেখানে প্রাণ নাশের হুমকি থাকে সেখানে চিকিৎসা করানো ফরয। রক্ত, মল-মুত্র পরীক্ষার বিষয়টি রোগ নিরাময়ের জন্যে করানো হয়ে থাকে। কেননা অনেক ক্ষেত্রেই পরীক্ষা না করে ভুল চিকিৎসা গ্রহণ বা চিকিৎসা গ্রহণ না করলে প্রাণ নাশের হুমকি থাকে। এসব ক্ষেত্রে সার্বিক বিবেচনায় চিকিৎসা গ্রহণের জন্য শরীয়ত নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু টেষ্ট টিউব পদ্ধতির মাধ্যমে সন্তান পাওয়ার বিষয়টি ফরয নয়। একজন মহিলার সন্তান ধারণে সমস্যা হলে পুরুষটি অন্য বিয়ের মাধ্যমে বাবা হতে পারেন (যদি পুরুষের অন্য কোন সমস্যা না থাকে) কিন্তু মহিলার বিশেষ কোন সমস্যা থাকলে সর্বোচ্চ চিকিৎসা গ্রহণের পরেও উন্নতি না হলে তার পক্ষে মা হওয়া কঠিন। তাই বলে সেক্ষেত্রে সব অবস্থাতেই টেষ্ট টিউব পদ্ধতিতে সন্তান পাওয়া যাবে ধারণাটি ভুল। কেননা মহিলাদের জরায়ুতেই সমস্যা থাকলে কোন পদ্ধতিতেই মা হওয়া সম্ভব নয়। অবশ্য জরায়ুর  সমস্যা না থাকলেও টেষ্ট টিউব পদ্ধতিতে সন্তান নেয়া জায়িয হবে না। এক্ষেত্রে সেই আয়াত শরীফ উল্লেখ যোগ্য যেখানে আল্লাহ পাক বলেন,
 ولنبلونكم بشىء من الخوف والجوع ونقص من الاموال والانفس والثمرت.
অর্থঃ- অবশ্যই আমি তোমাদেরকে পরীক্ষা করবো কিছুটা ভয়, ক্ষুধামাল  তথা ধন-সম্পদ ও জান তথা সন্তান-সন্তুটির ক্ষতি এবং ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে।”(সূরা বাক্বারা/ ১৫৫)

সুতরাং বুঝা যাচ্ছে, কেউ সন্তানের বাবা-মা হতে না পারলে তারা শরীয়তের সীমারেখায় থেকে সর্বোচ্চ চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারে কিন্তু তাই বলে টেষ্ট টিউব পদ্ধতি গ্রহণ করে বাবা-মা হবার বিষয়টি হবে সীমা অতিক্রমমূলক লজ্জাহীনতার একটি কাজ যা শরীয়ত কোনদিনই অনুমোদন  করেনা।

ফিতরাতের ধর্ম ইসলাম:

ইসলাম হচ্ছে ফিতরাত অর্থাৎ স্বাভাবিকতার ধর্ম। যেমন ইসলামে পুরুষদের দাড়ি চেঁছে ফেলাকে এবং মেয়েদের মত লম্বা চুল রাখাকে হারাম করা হয়েছে যদিও একইভাবে মহিলাদের পুরুষদের মত চুল ছাটাকে হারাম করা হয়েছে যদিও এর অনেক কারণ রয়েছে। তবে একটি কারণ হচ্ছে, ‘ফিতরাতঅর্থাৎ স্বাভাবিকতা। যেমন, পুরুষের থুতনিতে দাড়ি গজাবে এটাই স্বাভাবিক। সেটা কাটা, চাঁছা হারাম। সুতরাং সেটা ছেড়ে দিয়ে এক মুষ্ঠি পরিমাণ রাখা ফরয। এমনিভাবে পুরুষের চুল খুব লম্বা না হবার কারণে লম্বা না রাখাই ফিতরাত অর্থাৎ স্বাভাবিকতা এবং মেয়েদের মত চুল রাখা হারাম। পাশাপাশি মেয়েদের চুল লম্বা রাখাটাই তাদের জন্য স্বাভাবিকতা এবং কেটে ছোট করে রাখা হারাম। 

এবার দেখা যাক, সন্তান লাভের  বিষয়টি কি?

সাধারণ প্রজনন পদ্ধতিতে আমরা দেখতে পাই মহিলা ও পুরুষের যথাক্রমে ডিম্বাণু ও শুক্রাণু নিষেকের পর যে জাইগোট উৎপন্ন হয় তা মহিলার রেহেমে ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেয়ে একজন মানব শিশুতে পরিণত হয়। আর এ প্রজনন পদ্ধতি সামাজিকভাবে স্বীকৃতি লাভ করে একজন নারী ও  পুরুষের বিয়ের মাধ্যমে। সুতরাং এভাবে সন্তান লাভ করাই ফিতরাত। কিন্তু টেষ্ট টিউব পদ্ধতিতে দেখা যাচ্ছে-
(১) যে ওভাম মহিলাদের শরীরের ভেতরে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়, তাকে বাইরে বের করে আনা হয়।
 (২) যে শুক্রাণূ মহিলার শরীরের ভিতরে নিক্ষেপ করা হয়, তা বাইরে সংগ্রহ করা হয়।
(৩) যে শুক্রাণু ও ডিম্বাণূর নিষেক শরীরের ভিতরে সংঘটিত হবার কথা তা শরীরের বাইরে সংঘটিত  করা হয়।
(৪) নিষেকের পর যে ভ্রুণ এর বৃদ্ধি শরীরের ভেতরেই হবার কথা, টেষ্ট টিউব পদ্ধতির ক্ষেত্রে বাইরে নিষেকের পর তা জরায়ুতে দেয়া হয় বৃদ্ধির জন্য।
(৫) যে  শুক্রাণু পূর্ণ অবয়বে (লেজ, মাথা সহ) থাকে সেখানে ICSI  (Intra Cytoplasmic)  টেষ্ট টিউব পদ্ধতিতে শুক্রাণুর লেজ কেটে ডিম্বাণূ গাত্র ভেদ করে ভিতরে প্রবেশ করিয়ে দেয়া হয়।

উপরে বর্ণিত প্রতিটি বিষয়ে রয়েছে ফিতরাত অর্থাৎ স্বাভাবিকতার খিলাফ কাজ যা ইসলাম কখনই সমর্থন করেনা। এ দীর্ঘ আলোচনার প্রথমেই আমরা বলেছি যে, শরীয়তের কোন একটি মাপকাঠিতেও যদি প্রমাণ করা যায় টেষ্ট টিউব পদ্ধতিতে ব্যবহৃত বিষয়গুলো অথবা একটি বিষয় শরীয়ত সমর্থিত নয়, তবে সেক্ষেত্রে সন্তান পাবার জন্যে টেষ্ট টিউব পদ্ধতি গ্রহণ করা জায়িয নয়। আমরা পর্দা, লজ্জাশীলতা এবং ফিতরাতের দৃষ্টিভঙ্গিতে প্রমাণ করলাম যে, টেষ্ট টিউব পদ্ধতিতে যদিও স্বামী-স্ত্রীর শুক্রাণু ও ডিম্বাণু ব্যবহৃত হয়, তা সন্তান পাবার জন্য গ্রহণ করা জায়িয নয়। (প্রয়োজনে পরবর্তীতে আরো বিস্তারিত ফতওয়া দেয়া হবে। ইনশাআল্লাহ)

{দলীলসমূহঃ (১) আহকামুল কুরআন, (২) কুরতুবী, (৩) মাযহারী, (৪) খাযিন, (৫) বাগবী, (৬) ইবনে কাছীর, (৭) তাবারী, (৮) রুহুল মায়ানী, (৯) রুহুল বয়ান, (১০) কবীর, (১১) দুররে মানছূর, (১২) বুখারী শরীফ,  (১৩) মুসলিম শরীফ, (১৪) তিরমিযী শরীফ, (১৫) মিশকাত শরীফ, (১৬) ফতহুল বারী, (১৭) উমদাতুল ক্বারী, (১৮) ইরশাদুস্ সারী, (১৯) তাইসীরুল ক্বারী, (২০) ফতহুল মুলহিম, (২১) শরহে নববী, (২২) মিরকাত, (২৩) আশয়াতুল লুময়াত, (২৪) লুময়াত, (২৫) শরহুত্ ত্বীবী, (২৬) তালীকুছ্ ছবীহ, (২৭)Encarta Encyclopedia,  (২৮) Internet ইত্যাদি। }



No comments

ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য।

  ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য। ডাল খাওয়ার ফলে কলব প্রসারিত হয় এবং চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পায়। পূর্ববর্তী হযরত নবী-রসুল আলাইহিমুস সালাম উ...

Powered by Blogger.