Header Ads

Islamic Quotes Urdu Facebook Cover. QuotesGram

অনুসরণীয় ইমাম-মুজতাহিদ ও আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারাও সাইয়্যিদুল আ'ইয়াদ শরীফ/ঈদে মীলাদে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করেন



হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের পরবর্তী তাবিয়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের যুগে এবং তৎপরবর্তী প্রত্যেক যুগেই অনুসরনীয় ইমাম-মুজহাহিদ ও আওলিয়ায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা প্রত্যেকেই মীলাদ শরীফ পাঠের ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেছেন।যেমন এ প্রসঙ্গে বর্ণিত রয়েছে যে, বিশিষ্ট তাবিয়ী হযরত হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি যিনি শতাধিক ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সাক্ষাত পেয়েছিলেন, যিনি ইসলামের চতুর্থ খলীফা হযরত আলী র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহু রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার খলীফা ও ছাত্র ছিলেন তিনি বলেন-

وددت لو كان لى مثل جبل أحد ذهبا فانفقته على قرائة مولد النبى صلى الله عليه وسلم.

অর্থ: আমার একান্ত ইচ্ছা হয় যে, আমার যদি উহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণ থাকতো তাহলে আমি তা মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মীলাদ শরীফ পাঠ উপলক্ষে ব্যয় করতাম।” (সুবহানাল্লাহ) (আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম)

এরপরে মাযহাবের ইমামগণও মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মীলাদ শরীফ পাঠের ব্যাপারে গুরুত্ব প্রদান করেছেন।যেমন বর্ণিত রয়েছে-

قال الامام الشافعى رحمة الله عليه من جمع لمولد النبى صلى الله عليه وسلم اخوانا وهيأ طعاما واخلى مكانا وعمل احسانا وصار سببا لقرائته بعثه الله يوم القيامة مع الصديقين والشهداء والصالحين ويكون فى جنات النعيم.

অর্থ: “হযরত ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মীলাদ শরীফ উপলক্ষে লোকজন একত্রিত করবে এবং খাদ্য তৈরী করবে ও জায়গা নির্দিষ্ট করবে এবং উত্তমভাবে (তথা সুন্নহভিত্তিক) আমল করবে তাহলে উক্ত ব্যক্তিকে আল্লাহ পাক হাশরের দিন ছিদ্দীক্ব, শহীদ ও ছালিহীনগণ উনাদের সাথে উঠাবেন এবং উনার ঠিকানা হবে জান্নাতে নায়ীমে।” (সুবহানাল্লাহ) (আননি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম)

এরপরে মহান আল্লাহ পাক উনার বিশিষ্ট ওলী হযরত ইমাম মারূফ কারখী রহমতুল্লাহি আলাইহি মীলাদ শরীফ পাঠের ফযীলত বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেন-

من هيا طعاما لاجل قراءة مولد النبى صلى الله عليه وسلم وجمع اخوانا و اوقد سراجا و لبس جديدا و تبخرو تعطر تعظيما لمولد النبى صلى الله عليه وسلم حشره الله يوم القيامة مع الفرقة الاولى من النبيين وكان فى اعلى عليين.

অর্থ: “যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মীলাদ শরীফ উপলক্ষ্যে খাদ্য প্রস্তুত করবে এবং মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মীলাদ শরীফ-এর সম্মানার্থে মুসলমান ভাইদের একত্রিত করবে, (আলো দানের উদ্দেশ্যে) প্রদীপ বা বাতি জ্বালাবে, নতুন পোশাক পরিধান করবে, (সুগন্ধির উদ্দেশ্যে) ধুপ জ্বালাবে এবং আতর-গোলাপ মাখবে, ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ পাক তার হাশর-নশর করবেন নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম উনাদের প্রথম দলের সাথে এবং তিনি সে সুউচ্চ ইল্লীনে অবস্থান করবেন।”
(
সুবহানাল্লাহ) (আননি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম)

এরপর মুসলমানদের মধ্যে যিনি সবচেয়ে বেশি কিতাব লিখেছেন।যিনি হিজরী দশম শতাব্দীর মুজাদ্দিদ ও ইমাম, সুলতানুল আরিফীন হযরত ইমাম জালালুদ্দীন সূয়ূতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-

قال سلطان العارفين الامام جلال الدين السيوطى قدس الله سره ونور ضريحه فى كتابه المسمى بالوسائل فى شرح الشمائل ما من بيت أو مسجد أومحلة قرئ فيه مولد النبى صلى الله عليه وسلم الا حفت الملائكة ذلك البيت أو المسجد او المحلة وصلت الملئكة على أهل ذلك المكان وعمهم الله تعالى بالرحمة والرضوان وأما المطوقون بالنور يعنى جبرائيل وميكائيل واسرافيل وعزرائيل عليهم السلام فانهم يصلون على من كان سببا لقرائة مولد النبى صلى الله عليه وسلم.

অর্থ: “সুলতানুল আরিফীন হযরত ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার “ওসায়িল ফী শরহি শামায়িল” নামক কিতাবে বলেন, যে কোন ঘরে অথবা মসজিদে অথবা মহল্লায় মীলাদ শরীফ পাঠ তথা মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম করা হয় সেখানে অবশ্যই মহান আল্লাহ পাক উনার ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা বেষ্টন করে নেন।আর উনারা সে স্থানের অধিবাসীগণের উপর ছলাত-সালাম পাঠ করতে থাকেন।আর মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদেরকে স্বীয় রহমত ও সন্তুষ্টির আওতাভুক্ত করে নেন।আর নূর দ্বারা সজ্জিত প্রধান চার ফেরেশতা, অর্থাৎ হযরত জিবরাঈল, হযরত মীকাঈল, হযরত ইসরাফিল ও হযরত আজরাইল আলাইহিমুস সালাম উনারা মীলাদ শরীফ পাঠকারীর উপর ছলাত-সালাম পাঠ করেন।

এরপর এ উপমহাদেশে যিনি হাদীছ শাস্ত্রের প্রচার-প্রসার করেছেন, ইমামুল মুফাসসিরীন ওয়াল মুহাদ্দিছীন ওয়াল ফুক্বাহা হযরত শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,

من عظم ليلة مولده بما امكنه من التعطيم والاكرام كان من الفايزين بدار السلام.

অর্থ: যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ দিবসকে তা’যীম করবে এবং সে উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করবে সে চিরশান্তিময় জান্নাতের অধিকারী হবে।” (ইবনু নাবাতা, আল বাইয়্যিনাত ১৫৯/৩০)

হযরত শাহ আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ছেলে উল্লেখ করেছেন-

اخبرنى سيدى الوالد قال كنت اصنع فى ايام المولد طعاما صلة بالنبى صلى الله عليه وسلم فلم يفتح لى سنة من السنين شئى اصنع به طعاما فلم اجد الا حمصا مقليا فقسمته بين الناس فرايته صلى الله عليه وسلم بين يديه هذه الحمص مبتهجا بشاشا.

অর্থাৎ আমার শ্রদ্ধেয় পিতা আমার উদ্দেশ্যে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, আমি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উদযাপন উপলক্ষে প্রতিবছর বিশেষ তাবারুকের আয়োজন করতাম।কিন্তু এক বৎসর সামান্য ভাজাকৃত বুট ব্যতীত অন্য কিছুই আয়োজন করা আমার সামর্থে ছিলো না।তবুও আমি তা লোকজনের মধ্যে বিতরণ করে দিলাম।অতঃপর আমি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে (এমতাবস্থায়) দেখলাম যে, সেই বুটগুলো উনার সম্মুখে রয়েছে।আর তিনি (তাতে) অত্যন্ত উৎফুল্ল।” (আদ-দুররুস সামীন)

এ প্রসঙ্গে বিখ্যাত মুহাদ্দিছ ও মুহাক্কিক, হযরতুল আল্লামা শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিখ্যাত গ্রন্থআখবারুল আখইয়ার” কিতাবের ৬২৪ পৃষ্ঠায় লিখেন-

اے اللہ! میرا کوئی عمل ایسا نہیں ہے جسے آپکے دربار میں پیش کرنے کے لائق سمجھوں، میرے تمام اعمال میں فساد نیت موجود رہتی ہے، البتہ مجھ حقیر فقیر کا ایک عمل صرف تیری ذات پاک کی عنایت کیوجہ سے بہت شاندار ہے اور وہ یہ ہے کہ مجلس میلاد کے موقع پر میں کھڑے ہو کر سلام پڑھتاہوں اور نہایت ہی عاجزی وانکسار ی محبت وخلوص کے ساتھ تیری حبیب پاک صلی اللہ علیہ وسلم پر درود سلام بھیجتا رہا ہوں. اے اللہ! وہ کون سا مقام ہے جہاں میلاد مبارک سے زیادہ تیری خیر وبرکت کانزول ہوتا ہے! اس لئے اے ارحم الراحمین مجھے پکا یقین ہے کہ میرا یہ عمل کبھی بیکار نہ جائیگا بلکہ یقینا تیری بارگاہ میں قبول ہوگا اور جوکوئی درود وسلام پڑھے اور اس کےذریعہ دعا کرے وہ کبھی مسترد نہیں ہو سکتی.

অর্থ: আয় আল্লাহ পাক আমার এমন কোন আমল নেই, যা আপনার মুবারক দরবারে পেশ করার উপযুক্ত মনে করি।আমার সমস্ত আমলের নিয়তের মধ্যেই ত্রুটি রয়েছে।তবে আমি নগণ্যের শুধুমাত্র একটি আমল আপনার পবিত্র জাতের দয়ায় অনেক সম্মানিত বা মর্যাদাবান।আর সেটা হচ্ছে পবিত্র মীলাদ শরীফ-এর মজলিসে ক্বিয়ামের সময় দাড়িয়ে সালাম পাঠ করি।আর একান্ত আজীজী ইনকিসারী, মুহব্বত ইখলাছের সাথে আপনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ছলাত-সালাম পাঠ করি।

হে আল্লাহ পাক এমন কোন স্থান আছে কি যেখানে মীলাদ মুবারক-এর চেয়ে অধিক খায়ের বরকত নাযিল হয়? হে আরহামুর রহিমীন, আমর দৃঢ় বিশ্বাস যে আমার এ আমল কখনও বৃথা যাবে না।বরং অবশ্যই আপনার পবিত্র দরবারে কবুল হবে।এবং যে কেউ ছলাত-সালাম পাঠ করবে এবং উহাকে ওসীলা দিয়ে দুয়া করবে সে কখনও মাহরূম হতে পারে না।অর্থাৎ সে অবশ্যই কবুলযোগ্য।সুবহানাল্লাহ!

মাওলানা আশরাফ আলী থানবী ছাহেবসহ সকল উলামায়ে দেওবন্দের পীর ও মুর্শিদ, শায়খে আরব ওয়াল আ’যম, হযরতুল আল্লামা হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার হাফতে মাসায়িল কিতাবে উল্লেখ করেন,

مولود شر یف کو ذریعئہ برکات سمجھ کر ہر سال منعقد کرتا ہوں اور قیام کے وقت بے حد لطف ولذت پاتا ہوں.

অর্থ: মীলাদ শরীফ-এর মাহফিলকে বরকত লাভের ওসীলা মনে করে আমি প্রতি বৎসর মীলাদ শরীফ-এর মজলিশ করি এবং মীলাদ মাহফিলে ক্বিয়াম করার সময় আমি অশেষ আনন্দ ও স্বাদ উপভোগ করি।

এমনকি দেওবন্দী ব্যক্তিবর্গের পীর ও মুর্শিদ হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রহমতুল্লাহি আলাইহি অন্যত্র বলেছেন, “মওলেদ শরীফ (মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সমস্ত হেরমাঈন শরীফাঈনবাসীই উদযাপন করেন।”

অতএব, প্রমাণিত হলো যে, সকল ঈদের সেরা ঈদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, ঈদে আকবর, পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করার জন্য যেরূপ স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেছেন, এবং নিজে করেছেন।আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও করেছেন ও বলেছেন, খুলাফায়ে রাশিদীন, ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা পালন করেছেন ও পালন করতে বলেছেন, তেমনি অনুসরনীয় ইমাম, মুজতাহিদ ও আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারাও মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করেছেন এবং পালন করার জন্য উম্মাহকে উৎসাহ প্রদান করেছেন।

No comments

ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য।

  ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য। ডাল খাওয়ার ফলে কলব প্রসারিত হয় এবং চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পায়। পূর্ববর্তী হযরত নবী-রসুল আলাইহিমুস সালাম উ...

Powered by Blogger.