Header Ads

Islamic Quotes Urdu Facebook Cover. QuotesGram

ঈদে মীলাদে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করার অসংখ্য ফযীলতের মধ্যে ১৭ টি গুরুত্ব ও ফযীলত


১।বান্দা যা কিছু সঞ্চয় করে(ঈমান , আমল, দান, ছদকা...) সমস্ত আমল থেকে উত্তমঃ

يَا أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَتْكُم مَّوْعِظَةٌ مِّنرَّبِّكُمْ وَشِفَاءٌ لِّمَا فِي الصُّدُورِ وَهُدًى وَرَحْمَةٌلِّلْمُؤْمِنِينَ
قُلْ بِفَضْلِاللَّهِ وَبِرَحْمَتِهِ فَبِذَٰلِكَ فَلْيَفْرَحُوا هُوَ خَيْرٌ مِّمَّايَجْمَعُونَ

অর্থ: হে মানবজাতি! অবশ্যই মহান আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকেতোমাদের নিকট এসেছেন নসিহতকারী, অন্তরের পরিশুদ্ধতাদানকারী, হিদায়েত দানকারী ও ঈমানদারদের জন্য রহমতদানকারী

হে রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলে দিন, তারা যে মহানআল্লাহ তায়ালার পক্ষ হতে ফযল ও রহমতপেয়েছে সে জন্য তারা যেনো খুশি প্রকাশ করে।নিশ্চয় তাদের এ খুশি প্রকাশ করাটা তাদের সমস্ত সঞ্চয়ের থেকে উত্তম।
(সূরা ইউনুস
শরীফ : ৫৭-৫৮)

আল্লাহ পাক উনার সমস্ত রহমতের দরজা উন্মুক্ত করেন, সমস্ত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালামগণ ক্ষমা প্রর্থনা করেন এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত যে কেউ এরূপ কাজ করবে, নাযাত (ফযীলত) লাভ করবেঃ
হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে-
عن ابى الدرداء رضى الله تعالى عنه انه مر مع النبى صلى الله عليه وسلم الى بيت عامر الانصارى رضى الله تعالى عنه وكان يعلم وقائع ولادته صلى الله عليه وسلم لابنائه وعشيرته ويقول هذا اليوم هذا اليوم فقال عليه الصلوة والسلام ان الله فتح لك ابواب الرحمة والملائكة كلهم يستغفرون لك من فعل فعلك نجى نجتك.

অর্থ: “হযরত আবু দারদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত আছে যে, একদা তিনি রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আমির আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার গৃহে উপস্থিত হয়ে দেখতে পেলেন যে, তিনি উনার সন্তানাদি এবং আত্মীয়-স্বজন, জ্ঞাতী-গোষ্ঠী, পাড়া-প্রতিবেশীদেরকে নিয়ে রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ-এর ঘটনাসমূহ শুনাচ্ছেন এবং বলেছেন, এই সেই দিবস এই সেই দিবস (অর্থাৎ এই দিবসে রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যমীনে তাশরীফ এসেছেন।এই দিবসে ইহা সংঘটিত হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি) এতদ্বশ্রবণে রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক উনার সমস্ত রহমতের দরজা তোমাদের জন্য উন্মুক্ত করেছেন এবং সমস্ত ফেরেশতাগণ তোমাদের জন্য ক্ষমা প্রর্থনা করছেন এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত যে কেউ তোমার মত এরূপ কাজ করবে, তোমাদের মত সেও নাযাত (ফযীলত) লাভ করবে।” (কিতাবুত তানবীর ফী মাওলিদিল বাশীর ওয়ান্ নাযীর, ছুবুলুল হুদা ফী মাওলিদে মুস্তফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আল্লাহ পাক সন্তুষ্ট হোন ও রহমত নাজিল করেন, ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম মাহফিল বেষ্টন করে ছলাত-সালাম পেশ করেনঃ
মুসলমানদের মধ্যে যিনি সবচেয়ে বেশি কিতাব লিখেছেনযিনি হিজরী দশম শতাব্দীর মুজাদ্দিদ ও ইমাম, সুলতানুল আরিফীন হযরত ইমাম জালালুদ্দীন সূয়ূতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-

قال سلطان العارفين الامام جلال الدين السيوطى قدس الله سره ونور ضريحه فى كتابه المسمى بالوسائل فى شرح الشمائل ما من بيت أو مسجد أومحلة قرئ فيه مولد النبى صلى الله عليه وسلم الا حفت الملائكة ذلك البيت أو المسجد او المحلة وصلت الملئكة على أهل ذلك المكان وعمهم الله تعالى بالرحمة والرضوان وأما المطوقون بالنور يعنى جبرائيل وميكائيل واسرافيل وعزرائيل عليهم السلام فانهم يصلون على من كان سببا لقرائة مولد النبى صلى الله عليه وسلم.

অর্থ: “সুলতানুল আরিফীন হযরত ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার “ওসায়িল ফী শরহি শামায়িল” নামক কিতাবে বলেন, যে কোন ঘরে অথবা মসজিদে অথবা মহল্লায় মীলাদ শরীফ পাঠ তথা মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম করা হয় সেখানে অবশ্যই মহান আল্লাহ পাক উনার ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা বেষ্টন করে নেনআর উনারা সে স্থানের অধিবাসীগণের উপর ছলাত-সালাম পাঠ করতে থাকেনআর মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদেরকে স্বীয় রহমত ও সন্তুষ্টির আওতাভুক্ত করে নেনআর নূর দ্বারা সজ্জিত প্রধান চার ফেরেশতা, অর্থাৎ হযরত জিবরাঈল, হযরত মীকাঈল, হযরত ইসরাফিল ও হযরত আজরাইল আলাইহিমুস সালাম উনারা মীলাদ শরীফ পাঠকারীর উপর ছলাত-সালাম পাঠ করেন

ক্বিয়ামতের দিনে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সবথেকে নিকটে থাকবেঃ
যেমন হাদীছ শলীফ-এ ইরশাদ হয়েছে-
عن ابن مسعود رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اولى الناس بى يوم القيامة اكثرهم على الصلوات.

অর্থ: হযরত ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “ঐ ব্যক্তিই ক্বিয়ামতের দিন আমার সবচেয়ে নিকটে থাকবে, যে ব্যক্তি আমার প্রতি অধিক মাত্রায় ছলাত পাঠ করবে” (তিরমিযী, মেশকাত, মায়ারেফুস্ সুনান, উরফুশ্ শাযী, তোহফাতুল আহওয়াযী, মেরকাত, লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, তা’লীকুছ্ ছবীহ মোযাহেরে হক্ব)
হাশরের হবে ছিদ্দীক্ব, শহীদ ও ছালিহীনগণ উনাদের সাথে এবং ঠিকানা হবে জান্নাতে নায়ীমেঃ
قال الامام الشافعى رحمة الله عليه من جمع لمولد النبى صلى الله عليه وسلم اخوانا وهيأ طعاما واخلى مكانا وعمل احسانا وصار سببا لقرائته بعثه الله يوم القيامة مع الصديقين والشهداء والصالحين ويكون فى جنات النعيم.

অর্থ: “হযরত ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মীলাদ শরীফ উপলক্ষে লোকজন একত্রিত করবে এবং খাদ্য তৈরী করবে ও জায়গা নির্দিষ্ট করবে এবং উত্তমভাবে (তথা সুন্নহভিত্তিক) আমল করবে তাহলে উক্ত ব্যক্তিকে আল্লাহ পাক হাশরের দিন ছিদ্দীক্ব, শহীদ ও ছালিহীনগণ উনাদের সাথে উঠাবেন এবং উনার ঠিকানা হবে জান্নাতে নায়ীমে।” (সুবহানাল্লাহ) (আননি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম)
হাশর নাশর হবে নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম উনাদের প্রথম দলের সাথে ও অবস্থান হবে ইল্লিনেঃ
মহান আল্লাহ পাক উনার বিশিষ্ট ওলী হযরত ইমাম মারূফ কারখী রহমতুল্লাহি আলাইহি মীলাদ শরীফ পাঠের ফযীলত বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেন-

من هيا طعاما لاجل قراءة مولد النبى صلى الله عليه وسلم وجمع اخوانا و اوقد سراجا و لبس جديدا و تبخر و تعطر تعظيما لمولد النبى صلى الله عليه وسلم حشره الله يوم القيامة مع الفرقة الاولى من النبيين وكان فى اعلى عليين.
অর্থ: “যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মীলাদ শরীফ উপলক্ষ্যে খাদ্য প্রস্তুত করবে এবং মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মীলাদ শরীফ-এর সম্মানার্থে মুসলমান ভাইদের একত্রিত করবে, (আলো দানের উদ্দেশ্যে) প্রদীপ বা বাতি জ্বালাবে, নতুন পোশাক পরিধান করবে, (সুগন্ধির উদ্দেশ্যে) ধুপ জ্বালাবে এবং আতর-গোলাপ মাখবে, ক্বিয়ামতের দিন আল্লাহ পাক তার হাশর-নশর করবেন নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম উনাদের প্রথম দলের সাথে এবং তিনি সে সুউচ্চ ইল্লীনে অবস্থান করবেন।” (সুবহানাল্লাহ) (আননি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম)
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শাফায়াত ওয়াজিবঃ
হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে-

عن ابن عباس رضى الله تعالى عنهما انه كان يحدث ذات يوم فى بيته وقائع ولادته صلى الله عليه وسلم لقوم فيستبشرون ويحمدون الله ويصلون عليه صلى الله عليه وسلم فاذا جاء النبى صلى الله عليه وسلم قال حلت لكم شفاعتى.

অর্থ:- “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি একদা উনার নিজগৃহে সমবেত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ-এর ঘটনাসমূহ শুনাচ্ছিলেনএতে শ্রবণকারীগণ আনন্দ ও খুশি প্রকাশ করছিলেন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার প্রশংসা তথা তাছবীহ্-তাহলীল পাঠ করছিলেন এবং আল্লাহ্ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর (ছলাত ও সালাম) দুরূদ শরীফ পাঠ করছিলেনএমন সময় রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথায় উপস্থিত হলেন এবং (মীলাদ শরীফ পাঠের অনুষ্ঠান দেখে) বললেন, তোমাদের জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব” (কিতাবুত তানবীর ফী মাওলিদিল বাশীর ওয়ান্ নাযীর, ছুবুলুল হুদা ফী মাওলিদে মুস্তফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আফাদালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া হযরত সিদ্দিকে আকবর আবু বকর সিদ্দিক আলাইহিস সালাম উনার সাথে জান্নাতে বন্ধু হিসেবে থাকবেঃ
আল্লামা শিহাবুদ্দীন ইবনে হাজার হাইছামী রহমুতল্লাহি আলাইহি উনার বিশ্ব সমাদৃত ও সুপ্রসিদ্ধ কিতাব “আন্ নি’য়ামাতুল কুবরা আলাল আলাম”-এর মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-

قال ابو بكر الصديق رضى الله تعالى عنه من أنفق درهما على قراءة مولد النبى صلى الله عليه وسلم كان رفيقى فى الجنة.

অর্থ: হযরত আবু বকর ছিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, যে ব্যক্তি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মীলাদ শরীফ পাঠ (মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উপলক্ষ্যে এক দিরহাম ব্যয় করবে সে জান্নাতে আমার বন্ধু হয়ে থাকবে” (সুবহানাল্লাহ)
অবশ্যই ঈমান নিয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নিবে এবং বিনা হিসেবে জান্নাতে প্রবেশ করবেঃ
وقال على رضى الله تعالى عنه وكرم الله وجهه من عظم مولد النبى صلى الله عليه وسلم وكان سببا لقرائته لايخرج من الدنيا الا بالايمان ويدخل الجنة بغير حساب.

অর্থঃ “হযরত আলী র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহু রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, যে ব্যক্তি মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি বিশেষ মর্যাদা প্রদান করলো সে ব্যক্তি অবশ্যই ঈমান নিয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নিবে এবং বিনা হিসেবে জান্নাতে প্রবেশ করবে” (সুবহানাল্লাহ)

১০যে খুশি প্রকাশ করবে সে নিশ্চিত জান্নাতীঃ  
উপমহাদেশে যিনি হাদীছ শাস্ত্রের প্রচার-প্রসার করেছেন, ইমামুল মুফাসসিরীন ওয়াল মুহাদ্দিছীন ওয়াল ফুক্বাহা হযরত শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,

من عظم ليلة مولده بما امكنه من التعطيم والاكرام كان من الفايزين بدار السلام.

অর্থ: যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ দিবসকে তা’যীম করবে এবং সে উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করবে সে চিরশান্তিময় জান্নাতের অধিকারী হবে” (ইবনু নাবাতা, আল বাইয়্যিনাত ১৫৯/৩০)
১১দ্বীন ইসলাম উনাকে পুর্নরুজ্জীবিত করার ফযীলত হাছিলঃ
وقال عمر رضى الله تعالى عنه من عظم مولد النبى صلى الله عليه وسلم فقد احيا الاسلام.

অর্থ: হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, যে ব্যক্তি মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মাহফিলকে (বিলাদত শরীফ দিবসকে) বিশেষ মর্যাদা দিল সে মূলতঃ ইসলামকেই পুর্নরুজ্জীবিত করলো” (সুবহানাল্লাহ)
১২বদর ও হুনাইন যুদ্ধে শরীক থাকার সওয়াব পাবেঃ
وقال عثمان رضى الله تعالى عنه من أنفق درهما على قراءة مولد النبى صلى الله عليه وسلم فكانما شهد غزوة بدر وحنين.

অর্থ: হযরত উছমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, যে ব্যক্তি মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষ্যে এক দিরহাম খরচ করল সে যেন বদর ও হুনাইন যুদ্ধে শরীক থাকলো” (সুবহানাল্লাহ)
১৩যে মাহফিল উনার তাবারুকে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সন্তুষ্টঃ
হযরত শাহ আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ছেলে উল্লেখ করেছেন-

اخبرنى سيدى الوالد قال كنت اصنع فى ايام المولد طعاما صلة بالنبى صلى الله عليه وسلم فلم يفتح لى سنة من السنين شئى اصنع به طعاما فلم اجد الا حمصا مقليا فقسمته بين الناس فرايته صلى الله عليه وسلم بين يديه هذه الحمص مبتهجا بشاشا.

অর্থাৎ আমার শ্রদ্ধেয় পিতা আমার উদ্দেশ্যে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন, আমি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উদযাপন উপলক্ষে প্রতিবছর বিশেষ তাবারুকের আয়োজন করতামকিন্তু এক বৎসর সামান্য ভাজাকৃত বুট ব্যতীত অন্য কিছুই আয়োজন করা আমার সামর্থে ছিলো নাতবুও আমি তা লোকজনের মধ্যে বিতরণ করে দিলামঅতঃপর আমি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে (এমতাবস্থায়) দেখলাম যে, সেই বুটগুলো উনার সম্মুখে রয়েছেআর তিনি (তাতে) অত্যন্ত উৎফুল্ল” (আদ-দুররুস সামীন)
১৪নিঃসন্দেহে কবুলযোগ্য আমল যা কখনো বৃথা যাবে নাঃ
বিখ্যাত মুহাদ্দিছ ও মুহাক্কিক, হযরতুল আল্লামা শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিখ্যাত গ্রন্থ “আখবারুল আখইয়ার” কিতাবের ৬২৪ পৃষ্ঠায় লিখেন-

اے اللہ! میرا کوئی عمل ایسا نہیں ہے جسے آپکے دربار میں پیش کرنے کے لائق سمجھوں، میرے تمام اعمال میں فساد نیت موجود رہتی ہے، البتہ مجھ حقیر فقیر کا ایک عمل صرف تیری ذات پاک کی عنایت کیوجہ سے بہت شاندار ہے اور وہ یہ ہے کہ مجلس میلاد کے موقع پر میں کھڑے ہو کر سلام پڑھتاہوں اور نہایت ہی عاجزی وانکسار ی محبت وخلوص کے ساتھ تیری حبیب پاک صلی اللہ علیہ وسلم پر درود سلام بھیجتا رہا ہوں. اے اللہ! وہ کون سا مقام ہے جہاں میلاد مبارک سے زیادہ تیری خیر وبرکت کانزول ہوتا ہے! اس لئے اے ارحم الراحمین مجھے پکا یقین ہے کہ میرا یہ عمل کبھی بیکار نہ جائیگا بلکہ یقینا تیری بارگاہ میں قبول ہوگا اور جوکوئی درود وسلام پڑھے اور اس کےذریعہ دعا کرے وہ کبھی مسترد نہیں ہو سکتی.

অর্থ: আয় আল্লাহ পাক আমার এমন কোন আমল নেই, যা আপনার মুবারক দরবারে পেশ করার উপযুক্ত মনে করিআমার সমস্ত আমলের নিয়তের মধ্যেই ত্রুটি রয়েছেতবে আমি নগণ্যের শুধুমাত্র একটি আমল আপনার পবিত্র জাতের দয়ায় অনেক সম্মানিত বা মর্যাদাবানআর সেটা হচ্ছে পবিত্র মীলাদ শরীফ-এর মজলিসে ক্বিয়ামের সময় দাড়িয়ে সালাম পাঠ করিআর একান্ত আজীজী ইনকিসারী, মুহব্বত ইখলাছের সাথে আপনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ছলাত-সালাম পাঠ করি
হে আল্লাহ পাক এমন কোন স্থান আছে কি যেখানে মীলাদ মুবারক উনার চেয়ে অধিক খায়ের বরকত নাযিল হয়? হে আরহামুর রহিমীন, আমর দৃঢ় বিশ্বাস যে আমার এ আমল কখনও বৃথা যাবে নাবরং অবশ্যই আপনার পবিত্র দরবারে কবুল হবেএবং যে কেউ ছলাত-সালাম পাঠ করবে এবং উহাকে ওসীলা দিয়ে দুয়া করবে সে কখনও মাহরূম হতে পারে নাঅর্থাৎ সে অবশ্যই কবুলযোগ্যসুবহানাল্লাহ!

১৫হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট ছলাত-সালাম পৌঁছেঃ
হাদীছ শরীফ-এ আরো ইরশাদ হয়েছে-

عن ابن مسعود رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ان لله ملئكة سياحين فى الارض يبلغونى من امتى السلام.

অর্থ: হযরত ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “মহান আল্লাহ্ পাক রব্বুল আলামীনের কিছু সংখ্যক ফেরেশ্তা রয়েছেন, যারা পৃথিবীতে ভ্রমণ করে বেড়ান এবং আমার উম্মতের পাঠকৃত সালাম আমার নিকট পৌঁছিয়ে দেন (নাসাঈ, দারেমী, মেশকাত, মেরকাত, আশয়াতুল লুতয়াত, শরহুত্ ত্বীবী, তা’লীকুছ্ ছবীহ, মোযাহেরে হক্ব)
অতএব, সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, মীলাদ শরীফ পাঠ করা অর্থাৎ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা-ছিফত করা ও উনার প্রতি ছলাত ও সালাম পাঠ করা কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ উনারই নির্দেশ বা আমল
অতএব, মীলাদ শব্দের পারিভাষিক অর্থ যেহেতু সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছানা-ছিফত করা ও উনার প্রতি ছলাত-সালাম পাঠ করা, সেহেতু তা স্বয়ং মহান আল্লাহ্ পাক ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সহ সকলেরই সুন্নতের অন্তর্ভূক্ত

এ মহান সুন্নতটি আদায় করার যে পদ্ধতি বা নিয়ম বর্তমানে জারী রয়েছে তা পরবর্তীতে কারো মনগড়া তৈরীকৃত কোন পদ্ধতি বা নিয়ম নয়বরং এ নিয়ম স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- উনার যামানাতেই জারী ছিল এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা পালন করেছেনঅতঃপর সেখান থেকে পর্যায়ক্রমে এ নিয়ম পালিত হয়ে আসছে
১৬বরকত লাভের ওসীলাঃ
মাওলানা আশরাফ আলী থানবী ছাহেবসহ সকল উলামায়ে দেওবন্দের পীর ও মুর্শিদ, শায়খে আরব ওয়াল আ’যম, হযরতুল আল্লামা হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার হাফতে মাসায়িল কিতাবে উল্লেখ করেন,

مولود شر یف کو ذریعئہ برکات سمجھ کر ہر سال منعقد کرتا ہوں اور قیام کے وقت بے حد لطف ولذت پاتا ہوں.

অর্থ: মীলাদ শরীফ উনার মাহফিলকে বরকত লাভের ওসীলা মনে করে আমি প্রতি বৎসর মীলাদ শরীফ-এর মজলিশ করি এবং মীলাদ মাহফিলে ক্বিয়াম করার সময় আমি অশেষ আনন্দ ও স্বাদ উপভোগ করি সুবহানাল্লাহ!
১৭কাট্টা কাফির চির জাহান্নামীর শাস্তি হ্রাস ও জান্নাতের নিয়ামত লাভঃ
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আবির্ভাবের পর আবূ লাহাবের ক্রীতদাসী হযরত সুয়াইবাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা আবূ লাহাবকে সুসংবাদ দিলেন, তোমার ভ্রাতা হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মুবারক ঘরে একজন পুত্র সন্তান নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আগমণ করেছেনতা শুনে আবূ লাহাব অত্যন্ত আনন্দিত হলো এবং সে আঙ্গুলের ইঙ্গিত সহকারে বললো, সুয়াইবাহ যাও তুমি আজ থেকে মুক্ত
সমস্ত মুসলমান জানে যে, আবূ লাহাব ছিলো কাট্টা কাফির চির জাহান্নামীপবিত্র কুরআন শরীফ-এ মহান আল্লাহ পাক একটা পূর্ণ সূরাتبت يدا ابى لهب وتب الخতারই দুষ্কৃতকর্ম ও অশুভ পরিণতির বর্ণনায় নাযিল করেছেনকিন্তু তবুও মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ-এ আনন্দ প্রকাশের কারণে সে কি পরিমাণ উপকৃত হয়েছে তা হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত হয়েছেআল্লামা হাফিজ ইবনে হাজার আসক্বালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উল্লেখ করেছেন-

ذكر السهيلى ان العباس رضى الله تعالى عنه قال لما مات ابو لهب رايته فى منامى بعد حول فى شر حال فقال مالقيت بعدكم راحة الا ان العذاب يخفف عنى فى كل يوم الا ثنين وذلك ان النبى صلى الله عليه وسلم ولد يوم الاثنين وكانت ثويبة بشرت ابالهب بمولده فاعتقها.

অর্থ: ইমাম সুহাইলি রহমতুল্লাহি আলাইহি উল্লেখ করেছেন, হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেছেনআবূ লাহাবের মৃত্যুর এক বছর পর আমি তাকে স্বপ্নে দেখেছি, সে অত্যন্ত শোচনীয় অবস্থায় রয়েছেআর সে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলতে লাগলো, তোমাদের নিকট থেকে আসার পর থেকে আমি কোন শান্তি পাইনিতবে প্রতি সোমবার আমার শাস্তি হ্রাস করা হয়”হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছেন, তা এ জন্যেই যে, আখিরী নবী, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সোমবার শরীফ পৃথিবীতে আগমন করেছিলেনআর সেই সময় হযরত সুয়াইবা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তাশরীফের সুসংবাদ দিলে আবু লাহাব খুশি হয়ে উনাকে আযাদ করে দিয়েছিলো (বুখারী শরীফ, ফতহুল বারী, ৯ম খণ্ড, ১১৮ পৃ: ওমদাতুল ক্বারী, শরহে বুখারী ২য় খণ্ড ৯৫ পৃষ্ঠা) 

এখন ফিকিরের বিষয় আবু লাহাব কাট্টা কাফির চির জাহান্নামীআর আমরা হলাম মু’মিনসে ছিলো মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শত্রু; আর আমরা প্রিয় হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার গোলামআবু লাহাব স্বীয় ভ্রাতুস্পুত্রের তাশরীফ-এ খুশি প্রকাশ করেছিলো; রসূল হিসেবে নয়কিন্তু আমরা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে রসূল হিসেবে পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করে উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষ্যে খুশি প্রকাশ করে পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করে থাকিএকজন দুশমন কাফির (মীলাদ শরীফে) আনন্দিত হয়ে যদি এরূপ উপকৃত হয়, তাহলে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মতগণ পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করলে, খুশি প্রকাশ করলে কি পরিমাণ উপকৃত হবেতা চিন্তা ফিকিরের বিষয়

এত ফযীলতময় আমল কোন মুসলমান অস্বীকার করাতো দূরে থাক  অবহেলায় ও পালন করা থেকে বিরত থাকতে পারে না। আল্লাহ পাক আমাদেরকে সহীহ সমঝ দান করুন। আমীন।


No comments

ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য।

  ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য। ডাল খাওয়ার ফলে কলব প্রসারিত হয় এবং চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পায়। পূর্ববর্তী হযরত নবী-রসুল আলাইহিমুস সালাম উ...

Powered by Blogger.