নারী জাতির মুক্তির দিশারী , সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার শান-মান, বুযূর্গী-সম্মান
মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তিনি
ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاللّٰهُ
وَ رَسُوْلُه اَحَقُّ اَنْ يُّرْضُوْهُ اِنْ كَانُوْا مُؤمِنِيْنَ
অর্থ: “যদি তারা মু’মিন হয়ে থাকে, তবে তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো, তারা যেন মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সন্তুষ্ট করে। কেননা উনারাই সন্তুষ্টি মুবারক পাওয়ার সমধিক হক্বদার।” (পবিত্র সূরা তওবা
শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৬২)
এই মুবারক আয়াত শরীফ উনার অনেক
ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ রয়েছে। যার মূল বক্তব্য হচ্ছে- প্রথমতঃ মহান আল্লাহ পাক
তিনি আমাদের খলিক্ব মালিক
রব্বুল আলামীন। কুল-কায়িনাত, জান্নাত-জাহান্নাম, জিন-ইনসান, ইহকাল-পরকাল সব কিছুরই তিনি একচ্ছত্র মালিক। দি¦তীয়তঃ মহান আল্লাহ পাক তিনি এই কুল-কায়িনাতের কোনো কিছুই সৃষ্টি করতেন না- মহান আল্লাহ
পাক উনার পেয়ারা হাবীব
সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাকে সৃষ্টি না করলে।
পবিত্র হাদীছে কুদসী শরীফ উনার মধ্যে
ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
كُنْتُ
كَنْزًا
مُخْفِيًّا
فَاَحْبَبْتُ
اَنْ اُعْرَفَ فَخَلَقْتُ الْخَلْقَ لِاُعْرَفَ
অর্থ: “আমি গুপ্ত ছিলাম। যখন আমার মুহব্বত হলো যে, আমি প্রকাশিত হই, তখনই আমি প্রকাশ হওয়ার জন্য সৃষ্টি করলাম মহানতম সৃষ্টি অর্থাৎ আমার হাবীব, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাকে।”
পবিত্র হাদীছে কুদসী শরীফ উনার মধ্যে
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
لَوْلاَكَ
مَا خَلَقْتُ الْجَنَّةَ وَ لَوْلاَكَ ماَ خَلَقْتُ النَّارَ لَوْلَاكَ مَا خَلَقْتُ لْاَفْلَاكَ
অর্থ: “যদি আপনাকে সৃষ্টি না করতাম তবে আমি জান্নাত সৃষ্টি করতাম
না। আপনাকে সৃষ্টি না করলে
জাহান্নাম সৃষ্টি করতাম না। আপনাকে সৃষ্টি না করলে আসমানও সৃষ্টি করতাম না অর্থাৎ কোনো কিছুই সৃষ্টি করতাম না।”
এমনকি মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন উনার এবং উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মুবারক কথোপকথোন
হয়েছে এভাবে যে- মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন:
يَا مُحَمَّدٌ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَنَا وَاَنْتَ وَمَا سِوَاكَ خَلَقْتُ لِاَجْلِكَ
অর্থ: “হে আমার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি এবং আপনি। আপনি ছাড়া যা কিছু রয়েছে সমস্ত
কিছুই আপনার সন্তুষ্টি
মুবারক উনার জন্যই সৃষ্টি করেছি।”
জবাবে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
ইরশাদ মুবারক করেন-
يَا رَبِّ اَنْتَ وَ مَا اَنَا
وَ مَا سِوَاكَ تَرَكْتُ
لِاَجْلِكَ
অর্থ: “হে আমার রব তায়ালা। কেবল আপনিই; আমিও না। আপনি ছাড়া যা কিছু রয়েছে সমস্ত
কিছুই আপনার সন্তুষ্টি মুবারক উনার জন্যই
আমি ছেড়ে দিয়েছি।” সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং একদিকে আমরা মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টি বান্দা। আরেকদিকে
হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম
উনাদের নবী, হযরত রসূল
আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
উম্মত অর্থাৎ উম্মতে হাবীবী
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
অতএব, কুল-কায়িনাতের জন্য, সমস্ত উম্মতের জন্য বিশেষ করে মুসলমানদের জন্য
ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক তিনি
এবং আমাদের প্রিয় নবী ও রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনারা যা আমাদের জন্য হাদীয়া করেছেন (কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ তথা পবিত্র দ্বীন ইসলাম) এবং যে মুবারক বাণী যেভাবে ইরশাদ মুবারক করেছেন
সেটার উপরই সেভাবে বিশ্বাস স্থাপন করা এবং বিনা চু-চেরায় তা মেনে নেয়া এবং
পালন করা। তাহলেই আমরা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সন্তুষ্টি
মুবারক অর্জন করতে পারবো।
ইনশাআল্লাহ্!
আর তাই বলার অপেক্ষাই রাখে না যে, সম্মানিত শরীয়ত উনার বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে মূল এবং প্রধান
যে বিষয় সেটা হচ্ছে- হযরত
আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা, উনাদের প্রতি সুধারণা পোষণ করা ও উনাদের প্রতি সদাচরণ করা এবং
উনাদের তা’যীম-তাকরীম
মুবারক ও খিদমত মুবারক করা। এটা মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার সন্তুষ্টি ও মুহব্বত মুবারক
লাভের ক্ষেত্রে প্রধানতম ও একমাত্র উসীলা।
এ প্রসঙ্গে মহান রব্বুল আলামীন তিনি
ইরশাদ মুবারক করেন-
قُلْ لَّا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ
أَجْرًا
إِلَّا
الْمَوَدَّةَ
فِي الْقُرْبٰى.
অর্থ: “(হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি জানিয়ে
দিন,
আমি তোমাদের নিকট কোনো বিনিময় চাচ্ছি না। আর চাওয়াটাও স্বাভাবিক
নয়;
তোমাদের পক্ষে দেয়াও কস্মিনকালে সম্ভব নয়। তবে তোমরা যদি ইহকাল ও
পরকালে হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল করতে চাও; তাহলে তোমাদের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে- আমার হযরত
আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে
মুহব্বত করা, তা’যীম-তাকরীম
মুবারক করা, উনাদের খিদমত মুবারক উনার আনজাম দেয়া।” (পবিত্র সূরা শূরা
শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২৩)
এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায়
বর্ণিত রয়েছে-
لَا اَسْئَلُكُمْ اَجْرًا اِلَّا اَنْ تُوَدُّوْا اَقْرَبَائِيْ وَاَهْلَ
بَيْتِيْ
وَعِتْرَتِيْ
অর্থ: “আমি তোমাদের নিকট প্রতিদান চাই না তবে তোমরা আমার
নিকটাত্মীয়, হযরত আহলে
বাইত শরীফ ও বংশধরগণ উনাদের (যথাযথ
সম্মান প্রদর্শনপূর্বক) হক্ব আদায় করবে।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ
মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ
اللّٰهُ
تَعَالى
عَنْهُ
قَالَ
قَالَ
رَسُوْلُ
اللّٰهُ
صلَّى
اللّهُ
عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
اَحِبُّوْا
اللّٰهَ
لِمَا
يَغْذُوْكُمْ
مِّنْ
نِعْمَةٍ
وَاَحِبُّوْنِىْ لِحُبِّ
اللّٰهِ
وَاَحِبُّوْا
اَهْلَ
بَيْتِىْ
لِحُبِّىْ
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
উনার থেকে বর্ণিত। নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন,
“তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনাকে মুহব্বত
করো। কেননা তিনি তোমাদের প্রতি রিযিক
দানের মাধ্যমে অনুগ্রহ করে থাকেন। আর আমাকে মুহব্বত করো মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বতে, যেহেতু আমি মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব। আর আমার আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম
উনাদেরকে মুহব্বত করো আমার মুহব্বতে।”
অতএব, উম্মতের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে- মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার সন্তুষ্টি মুবারক লাভের উসীলা হিসেবে হযরত আহলে বাইত শরীফ উনাদেরকে মুহব্বত করা, তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা ও সাধ্য মুতাবেক
উনাদের খিদমত মুবারক করা।
আর সেজন্যই সাইয়্যিদাতুন নিসা, নূরে জাহান, ক্বায়িম-মাক্বামে উম্মুল মু’মিনীন, আমাদের প্রাণের আক্বা, যাওজাতু মুজাদ্দিদে আ’যম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম
উনাকে মুহব্বত করা, তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, খিদমত মুবারক করা, ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করা আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব-কর্তব্য। কেননা তিনিও হযরত
আহলে বাইতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত ও বিশেষ
সম্মানিতা ব্যক্তিত্ব।
তাছাড়া আমরা আগেই উল্লেখ করেছি যে, তিনি যামানার খাছ লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আমাদের শায়েখ মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার পবিত্রতমা
যাওজাতুম মুকাররমাহ। আর
সে কারণেই অজস্র গুণাবলী ও বৈশিষ্ট্যসম্পন্না এবং যোগ্যতাসম্পন্না করেই মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাকে দুনিয়ার
বুকে প্রেরণ করেছেন
যা কায়িনাতবাসীর জন্য মহান আল্লাহ পাক
উনার তরফ থেকে খাছ রহমত এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার তরফ থেকে খাছ ইহ্সান। আর
তাই খালিছ লক্ষ্যস্থল ওলী উনাদের মধ্যে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস
সালাম তিনি অবশ্যই অন্যতম এবং শ্রেষ্ঠা।
মহান আল্লাহ পাক তিনি কালামুল্লাহ শরীফ
উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
اَلَا
اِنَّ
اَوْلِيَاءَ
اللّٰهِ
لَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَ لَاهُمْ يَحْزَنُوْنَ
.
اَلَّذِيْنَ
اٰمَنُوْا
وَكَانُوْا
يَثَّقُوْنَ
لَهُمُ
الْبُشْرٰى
فٍىْ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَ فِىْ
الاٰخِرَةِ
لاَ تَبْدِيْلَ لِكَلِمَاتِ اللّٰهِ ذٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُالْعَظِيْمُ
অর্থ: “তোমরা সকলেই সতর্ক হয়ে যাও। নিশ্চয়ই যারা মহান আল্লাহ পাক
উনার ওলী উনাদের কোনো ভয়
নেই,
চিন্তা-পেরেশানী নেই। যারা ঈমান এনেছেন, মু’মিনে কামিল হয়েছেন এবং যারা দায়েমীভাবে তাক্বওয়ার উপর রয়েছেন। উনাদের
জন্য ইহকাল-পরকালে
সুসংবাদ রয়েছে। মহান আল্লাহ পাক উনার বাণীর কোনো পরিবর্তন নেই। এটা হচ্ছে বিরাট সফলতা, বিরাট কামিয়াবী।” (পবিত্র সূরা ইউনুস শরীফ:
পবিত্র আয়াত শরীফ ৬২, ৬৩, ৬৪)
অন্য পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ
মুবারক হয়েছে-
وَلَا
تَهِنُوْا
وَلَا
تَحْزَنُوْا
وَاَنْتُمُ
الْاَعْلَوْنَ اِنْ كُنْتُمْ مُّؤْمِنِيِنَ
অর্থ: “আপনারা চিন্তিত হবেন না, পেরেশানী হবেন না। আপনারাই কামিয়াবী হাছিল
করবেন। উচ্চ মর্যাদায় পৌঁছতে পারবেন যদি
মু’মিন হতে পারেন।” (পবিত্র সূরা আল-ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ-১৩৯)
উক্ত মুবারক আয়াত শরীফগুলো
উনাদের খাছ মিছদাক হচ্ছেন আমাদের
প্রাণপ্রিয়া উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি। তিনি অবশ্যই-
(ক) পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা-কিয়াস শরীফ উনাদের অনুসারে আমল করেন।
(খ) ফরয, ওয়াজিব, সুন্নত, মুস্তাহাব, নফল ইত্যাদি সর্ব প্রকার ইবাদত বন্দেগী করেন।
(গ) সুন্নত উনার সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম পায়রবী করেন।
(ঘ) আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের বিশুদ্ধ আক্বীদায় তিনি
বিশ্বাস স্থাপন করেন।
(ঙ) হালাল রিযিক গ্রহণ করেন।
(চ) হারাম এবং যেকোনো সন্দেহজনক বস্তু বা খাবার ও জিনিসপত্র
এবং দ্রব্যাদি থেকে বেঁচে থাকেন।
(ছ) দায়েমীভাবে তাক্বওয়ার উপর রয়েছেন।
(জ) মু’মিনে কামিল হয়েছেন।
(ঝ) ইহকাল ও পরকালের সুসংবাদ লাভ করেছেন। সুবহানাল্লাহ্!
সুতরাং সাইয়্যিদাতুন নিসা, উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম
উনার বেমেছাল মর্যাদা-মর্তবা, গুণাবলী-বৈশিষ্ট্য লিখনীর মাধ্যমে বহিঃপ্রকাশ
ঘটানো আমাদের পক্ষে খুবই কঠিন দুঃসাধ্য।
তবে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে যেহেতু ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
اِنَّ
الذِّكْرَ
الصَّالِحِيْنَ تَنْزِيْلُ
الرَّحْمَةُ
অর্থ: “ওলীআল্লাহগণ উনাদের আলোচনায় রহমত
নাযিল হয়ে থাকে।” সুবহানাল্লাহ্!
তাই এলক্ষ্যেই শ্রদ্ধেয়া, সম্মানিতা, প্রাণের আক্বা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা
আলাইহাস সালাম উনার শান-মান সম্পর্কে
আলোকপাতের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَنْ يُّطْعِ اللّٰهَ وَ رَسُوْلَه فَقَدْ
فَازَ
فَوْزًا
عَظِيْمًا
অর্থ: “যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
অনুসরণ করবে, সে বিরাট সফলতা
অর্জন করবে।” (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৭১)
আমাদের প্রাণের আক্বা মাখযানুল মা’রিফা, ছহিবাতুল ইল্ম ওয়াল হিকাম, উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম যেহেতু
মহান আল্লাহ পাক উনার
খাছ লক্ষ্যস্থল মাহবুবা ওলী। সেহেতু তিনি তো অবশ্যই মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মতে মত রয়েছেন এবং থাকবেন। ইনশাআল্লাহ্! সুতরাং নিশ্চয়ই ইহকালে ও পরকালে উনার সফলতা
অনিবার্য। শ্রদ্ধেয়া
ইমামাতুন নিসা, উম্মুল উমাম
হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি সর্বক্ষণ সুন্নত উনার ইত্তেবা করে থাকেন এবং
আমাদেরও তা শিক্ষা দিয়ে থাকেন। ঘরে-বাইরে, শিক্ষা ক্ষেত্রে, প্রতিষ্ঠানে, যার যার সংসারে প্রতিটা কাজের মধ্যেই সুন্নত উনার আমল কিভাবে করতে হবে তা
উনার মুরিদানদের শিখিয়ে দিচ্ছেন এবং জানিয়ে দিচ্ছেন। একজন গৃহিনীর
ঘর-সংসারের রান্না-বান্নার
কাজ থেকে শুরু করে সন্তান-সন্ততি লালন-পালন পর্যন্ত কিভাবে সুন্নত মুতাবিক করতে হবে তা তিনি জানিয়ে দিচ্ছেন। স্বামীর
প্রতি স্ত্রীর হক্ব, স্ত্রীর প্রতি স্বামীর হক্ব, পিতা-মাতার হক্ব, সন্তানের প্রতি পিতা-মাতার দায়িত্ব-কর্তব্য, পরিবারের অন্যান্যদের প্রতি একজন মহিলা কিভাবে
দায়িত্ব পালন করবে ইত্যাদি বিষয়েও তিনি
মুবারক নছিহত করেন। মহিলাদের সুন্নতী পোশাক এবং বোরকা তৈরি করা শেখানো উনার মুবারক
তাজদীদসমূহ উনাদের অন্যতম অনবদ্য একখানা তাজদীদ মুবারক। শ্রদ্ধেয়া হাদীউন নিসা, উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি মহিলা
মুরীদানদের হাতে ধরে ধরে সুন্নতী জামা-সেলোয়ার কাটা এবং সেলাই করা শিখিয়েছেন।
যার ফলশ্রুতিতে এখন হাজারো হাজারো মহিলারা খাছ সুন্নতী জামা পছন্দ করছেন
এবং পরছেন। কোণাফাড়া, বিদয়াতী পোশাক বাদ দিয়ে সুন্নতী জামা-সেলোয়ার পরিধান করছেন।
এমনকি বর্তমানে মায়েরা শিশুদের জন্মের পর
থেকেই বিদয়াত অর্থাৎ বেদ্বীন-বদ্দ্বীনদের পোশাক না পরিয়ে সুন্নতী
সেলোয়ার-ক্বামিছ পরাচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ!
রাহবারে সাইয়্যিদাহ, মাশুকায়ে ইলাহী, উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার মুবারক পোশাক
পরিধান, উনার
মুবারক চাল-চলন, উনার মুবারক কথা-বার্তা সবসময়ের জন্য সুন্নতী সাজে সজ্জিত।
সুবহানাল্লাহ!
নূরে জাহান, বাহরুল আ’লিমা, উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি নিজে যেমন শরীয়ত
মুতাবিক খাছ পর্দা করেছেন এবং করছেন তেমনি উনার স্বীয় আওলাদ আলাইহিমুস সালাম
অর্থাৎ হযরত শাহযাদা ক্বিবলা আলাইহিস সালাম, হযরত শাহযাদী ক্বিবলাদ্বয় আলাইহিমাস সালাম, হযরত শাহনাওয়াসী ক্বিবলাতুন আলাইহিমুস সালাম, হযরত শাহদামাদ ক্বিবলাদ্বয় আলাইহিমাস সালাম উনাদের প্রত্যেককেও সেই খাছ পর্দার মধ্যেই
রেখেছেন। এবং সকল
মুরীদানদেরকে মহান আল্লাহ পাক উনার ফরয হুকুম পালন করার জন্য নছিহত
মুবারক করছেন। সুবহানাল্লাহ্!
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ
মুবারক হয়েছে-
الْحَلَالُ
بَيِّنٌ
وَالْحَرَامُ
بَيِّنٌ
অর্থ: “হালালও স্পষ্ট, হারামও স্পষ্ট।”
আর তাই হালালকে হালাল জেনে সেভাবে পালন
করার নির্দেশ দিচ্ছেন। হারামকে হারাম জানা এবং তা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ
দিচ্ছেন।
“সাইয়্যিদাতুন নিসা, নূরে জাহান, উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম
পর্দা পালনের ক্ষেত্রে শরীয়তের সঠিক
ফায়সালা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের আলোকে আমাদের শিক্ষা দিয়ে থাকেন।”
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ
শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
وَقَرْنَ
فِيْ بُيُوْتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْاُوْلي
অর্থ: “তোমরা তোমাদের ঘরের মধ্যে ও
পর্দার সাথে অবস্থান করবে। আইয়্যামে জাহিলিয়াতের মতো সৌন্দর্য
প্রদর্শন করে রাস্তায় ঘুরে বের হয়ো না।”
(পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৩)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ
মুবারক হয়েছে-
اَلْمَرْأَةُ
عَوْرَةٌ
فَاِذَا
خَرَجَتْ
اِسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ
অর্থ: “মহিলারা পর্দায় থাকবে। যখন তারা
বেপর্দা হয়, তখন শয়তান তার
দিকে উঁকিঝুঁকি
দেয় কী করে গুনাহ করানো যায়।”
সুতরাং পর্দা করা মানেই হচ্ছে ঘরে অবস্থান করা। আর যদি শরয়ী
প্রয়োজনে বের হতে হয় তবে আপাদমস্তক অর্থাৎ মাথা থেকে পা পর্যন্ত ঢেকেই ঘর থেকে বের হতে হবে। এ
সম্পর্কে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার
মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেÑ
يَاَيُّهَا
النَّبِيُّ
قُلْ لِّاَزْوَاجِكَ وَ بَنتِكَ وَ نِسَاءِ الْمُؤْمِنِيْنَ يُدْنِيْنَ عَلَيْهِنَّ مِنْ جَلَا بِيْبِهِنَّ
ذلِكَ
اَدْني
اَنْ يُّعْرَفْنَ فَلَا يُؤْذَيْنَ وَ
كَانَ
اللّهُ
غَفُوْرًا
رَّحِيْمًا
অর্থ: “হে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম! আপনি আপনার নিসা
অর্থাৎ উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে, বানাত উনাদেরকে এবং মু’মিনগণ উনাদের আহলিয়াগণ উনাদেরকে বলুন, উনারা যেন উনাদের চাদরের কিয়দাংশ নিজেদের মুখমন্ডলের উপর ঝুলিয়ে
রাখেন। এতে উনাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে উনাদেরকে উত্ত্যক্ত করা হবে না। মহান
আল্লাহ পাক তিনি ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।” (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : পবিত্র
আয়াত শরীফ ৫৯)
অতএব, উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের আলোকে হযরত
সাইয়্যিদাতুন নিসা উম্মুল উমাম হযরত
আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি ‘স্বাধীনা’ মহিলা এবং পরাধীন মহিলা বা দাসীদের মধ্যে
পার্থক্য বুঝিয়ে দিচ্ছেন। পবিত্র আয়াত শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ মুতাবিক
যারা পর্দা করবে, পর্দার মধ্যে
ঘরে অবস্থান করবে, এমনকি প্রয়োজনে
ঘর থেকে বাইরে বের হবে পর্দার সাথে, তারাই মূলত ‘স্বাধীন’ মহিলা। এমন পর্দানশীন মহিলা যখন ঘর
থেকে বের হন, তখন তাকে কেউ উত্ত্যক্ত করে না; বরং প্রত্যেকে উনাকে সম্মান করে। আর যারা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদেশ অমান্য
করে বেপর্দা অবস্থায় থাকে
অথবা ঘর থেকে বের হয়, তারাই মূলত
‘পরাধীন’ মহিলা। এমন বেপর্দা মহিলা যখন ঘরে-বাইরে, রাস্তা-ঘাটে, অফিস-আদালতে অর্থাৎ যার যার কর্মক্ষেত্রে অবস্থান করে তখনই তারা বেপর্দার কারণে
উত্ত্যক্ত হয় অর্থাৎ শয়তানের উঁকিঝুঁকি দেয়ার ফলেই তারা নিজেদের অবমাননা নিজেরাই
ডেকে আনে। নাউযুবিল্লাহ্!
উদাহরণস¦রূপ পেশ করা যায় যে, রাস্তার খোলা খাবার অথবা মিষ্টির দোকানের খোলা মিষ্টি সুরচিপূর্ণ ব্যক্তিরা
কিনতে চান না বা খেতেও চান না। তার একটাই কারণ এসব খোলা খাবারের উপর মশা
মাছি এবং ধুলোবালি পড়ে থাকে। আর সেটাই যদি হয়ে থাকে, তাহলে স্পষ্টভাবেই প্রমাণিত হয় যে, যেসব মহিলা পর্দা করে না বা হাত, মুখ, পা খোলা অবস্থায় ঘরের বাইরে বের হয়, তারা অবশ্যই পরাধীন মহিলা অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং বেপর্দার মধ্যে
‘নারীর স্বাধীনতা’ নয়; বরং নারী পরাধীনতার পরিচয় স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়। শুধু তাই নয়; সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম
তিনি ‘নারীদের সমান অধিকারের’
বিষয় তথা সমধিকার সম্পর্কে সজাগ করে দিচ্ছেন। তথাকথিত নারীবাদীরা মনে করে, সমধিকার বলতে একজন পুরুষ যে কাজ করতে পারে একজন নারী
তাদের পাশে থেকে সে কাজই করবে।
নাউযুবিল্লাহ্! বরং তাদের এ ধারণাই ভুল, মিথ্যা এবং ধোঁকাপূর্ণ। ‘সমধিকার’ বলতে এটাই বুঝানো হয়, যার যা অধিকার রয়েছে সেটা পরিবারেরই হোক আর সমাজেরই হোক না কেন; তার অধিকারগুলোরই তার নিজস্ব গুণাবলীতে বা বৈশিষ্ট্যে বাস্তবায়ন করা। তার মানে এই
নয় যে, নারী-পুরুষ
একসাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একত্রে কাজ করবে। তাদের এ কথার দাবির
ফলশ্রুতিতে যা হয়-
প্রথমত, বেপর্দা হতে হয়। আর যখনই বেপর্দা হয়, পবিত্র হাদীছ শরীফ মুতাবিক তখন শয়তান পাপ কাজে লিপ্ত করার
জন্য উঁকিঝুঁকি দিতে থাকে। দ্বিতীয়ত, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
لَا يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِاِمْرَأَةٍ اِلَّا كَانَ ثَالِثُهُمَا الشَّيْطَانُ
অর্থ: “যখন কোনো পুরুষ কোনো (বেগানা)
মহিলার সাথে একাকী বা নিরিবিলিতে মিলিত হয় তখন তাদের তৃতীয় সঙ্গী হয় শয়তান।”
অর্থাৎ তখন শয়তান তাদেরকে পাপ কাজে উদ্বুদ্ধ করে, এমনকি পাপ কাজে লিপ্ত করে দেয়। ফলে শুরু হয় ফিতনা-ফাসাদ। ফলে একজন নারী নিজেই শুধু পাপে
লিপ্ত হয় না অন্যকেও তার
সাথে পাপিষ্ঠ করে। নিজেই পরিবারে, সমাজে হেয় ঘৃণিত হয় আবার অপরজনকেও একই অবস্থার সম্মুখীন করে। নিজেরা এই অপকর্মের
মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকে এবং সাথে সাথে অন্যদেরকেও এই নোংরা পথে আসার জন্য
প্রলুব্ধ করে ও সহায়তা করে। মাঝখান থেকে ফায়দাটা হয় কার? ফায়দা হয় খোদ ইবলিস শয়তানের এবং তার চেলা ইসলামবিদ্বেষী কাফির-মুশরিক, ইহুদী-নাছারা তথা বিধর্মী লম্পটদের। এরা বিভিন্নভাবে খুশি প্রকাশ করতে থাকে। নারীদের অধঃপতিত
অন্ধকারাচ্ছন্ন জীবন দেখে শয়তান এবং বিধর্মীরা আত্মতৃপ্তি লাভ করে। কলুষিত
জীবন নারীকে দুনিয়ায় যেমন
লাঞ্ছিত করে পরকালেও নিজেকে এবং তার সাথে সম্পৃক্ত পুরুষ, স্বামী, মা-বাবা সবাইকে জাহান্নামী করে। আর সেজন্যই সাইয়্যিদাতুন
নিসা, উম্মুল উমাম
হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি কালের বিভীষিকায়
অন্ধকারাচ্ছন্ন সমধিকারের উক্ত
ধ্যান-ধারণাই সকলকে ত্যাগ করতে বলছেন।
মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক
করেন, “পুরুষ
তত্ত্বাবধায়ক তার পরিবারের। আর মহিলা তত্ত্বাবধায়ক তার স্বামীর ঘরের ও তার সন্তানের।” (বুখারী
শরীফ)
মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি পুরুষ জাতির
কর্মপরিধিকে মহিলা জাতির কর্মপরিধি থেকে পৃথক করে দিয়েছেন। সে
মুতাবিক মহিলাগণ বাড়ির ভেতরের জন্য
দায়িত্বশীল। তবে শরীয়তের ফায়সালা এমন নয় যে- বিশেষ শরয়ী প্রয়োজন হলে নারীরা ঘর থেকে বের হতে পারবে
না। অবশ্যই প্রয়োজনে
আপাদমস্তক ঢেকে পর্দাসহ বের হতে পারবে। কাজেই পুরুষ এবং নারী উভয়ই
যার যার অবস্থানে অত্যন্ত সম্মানিত ও
মর্যাদাবান। সুবহানাল্লাহ্!
অথচ কাফির-মুশরিক, ইহুদী-নাছারা দ্বীন ইসলাম প্রদত্ত নারীদের এত
সম্মান-মর্যাদা দেখে হিংসাবশত তথাকথিত
সমাজে প্রচলিত ‘নারী স্বাধীনতা’, ‘নারী অধিকার’, ‘সমধিকার’ প্রভৃতি শরীয়ত বিরোধী ধোঁকাপূর্ণ এবং মিথ্যা
দাবিতে তথাকথিত নারীবাদীদের উস্কিয়ে দিয়ে
তাদের পরিবারে, সমাজে ক্ষতিসাধন
করছে। সুতরাং বির্ধমীদের এই পাতানো ফাঁদ
থেকে অর্থাৎ তাদের হিংসাবশত
ষড়যন্ত্র থেকে নারী সমাজ যাতে মুক্তি লাভ
করে সেটারই বলিষ্ঠ আহবান জানাচ্ছেন আমাদের প্রাণ-প্রিয়া সাইয়্যিদাতুন নিসা, উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ্!
সাইয়্যিদাতুন নিসা, ফক্বীহাতুন নিসা, উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস
সালাম তিনি যেহেতু খাছ মুয়াল্লিমা, তাই উনার দ্বীনী শিক্ষার ব্যাপকতা সর্বত্রময়। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক
হয়েছে-
اَلْعِلْمُ
نُوْرٌ
অর্থ: “ইল্ম হচ্ছে নূর বা আলো।”
সুতরাং এই ইল্মের আলো তিনি চারিদিকে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ!
উনার প্রতিষ্ঠিত
আদর্শ বিদ্যাপিঠ ‘মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ বালিকা মাদরাসা’ একটি
আদর্শ দ্বীনী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। উক্ত
মাদরাসায় দ্বীনী ইল্ম অর্থাৎ (পবিত্র
কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা-কিয়াস শরীফ সম্বলিত বিধান)
অর্থাৎ ইল্মে ফিক্বাহ, ইল্মে তাছাউফসহ সমস্ত শিক্ষাই প্রদান করে থাকেন।
আরবী, ইংরেজি, বাংলা, উর্দু, বিজ্ঞান, আক্বাইদ, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয়ও এই মাদরাসায় পঠিত হয়ে থাকে।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ
মুবারক হয়েছে-
اَلدِّيْنُ
كُلُّه
اَدَبٌ
অর্থ: “দ্বীন পুরোটাই হচ্ছে আদব ও
শিষ্টাচারের সমন্বয়।”
আর তাই এই পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার আলোকে শ্রদ্ধেয়া উম্মুল উমাম
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা
হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি এই মাদরাসার ছাত্র-ছাত্রীসহ
আরো যত মহিলা মুরীদান রয়েছেন প্রত্যেককে
আদব,
শরাফত, ভদ্রতা, শিষ্টাচার শিক্ষা প্রদান করে থাকেন। তাছাউফশূন্য মহিলাদের তাছাউফ
শিক্ষা দিয়ে থাকেন। মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত মা’রিফত অর্জন করার জন্য
যিকির-ফিকির উনাদের তর্য-তরীক্বা শিক্ষা দিয়ে থাকেন। যে যিকিরের কথা স্বয়ং
রব্বুল আলামীন মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
فَاذْكُرُونِي أَذْكُرْكُمْ
অর্থ: “তোমরা আমাকে স্মরণ করো। আমিও
তোমাদের রহমত দিয়ে স্মরণ করবো।”
অন্যত্র ইরশাদ মুবারক করেন-
مَنْ يَّعْشُ عَنْ ذِكْرِ الرَّحْمٰنِ
نُقَيِّضْ
لَه شَيْطَانًا فَهُوَ لَه قَرِينٌ
অর্থ: “যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ্ পাক উনার যিকির থেকে বিরত থাকে আমি
তার জন্য একটি শয়তান
নির্দিষ্ট করে দেই অর্থাৎ নির্দিষ্ট হয়ে যায়। যা তার বন্ধু বা
সঙ্গি হয়।” (পবিত্র সূরা যুখরুফ শরীফ:
পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৬)
যিকির সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার
মধ্যে উল্লেখ মুবারক রয়েছে-
اَلشَّيْطَانُ خَاثِمٌ
عَلٰى
قَلْبِ
اِبْنِ
اٰدَمَ
فَاِذَا
ذَكَرَ
اللّٰهَ
خَنَسَ
وَ اِذَا غَفَلَ وَسْوَسَ
অর্থ: “শয়তান আদম সন্তানের ক্বলবে আসন পেতে বসে থাকে। যখন সে যিকির
করে,
তখন শয়তান পালিয়ে যায়। আর যখন সে যিকির থেকে গাফিল হয়, তখন শয়তান ওয়াসওয়াসা দেয়।” নাউযুবিল্লাহ! (বুখারী শরীফ)
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
أَلاَ
بِذِكْرِ
اللّٰهِ
تَطْمَئِنُّ
الْقُلُوبُ
অর্থ: “সাবধান! মহান আল্লাহ পাক
উনার যিকিরের দ্বারাই ক্বলব (অন্তর)
ইতমিনান লাভ করে।” (পবিত্র সূরা রাদ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২৮)
সুতরাং অন্তর পরিশুদ্ধ করতে অর্থাৎ অন্তর থেকে শয়তান দূর করার উক্ত শিক্ষাই উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি
দিয়ে থাকেন। খলিক্ব মালিক রব
মহান আল্লাহ পাক তিনি অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব উনাদের কথা পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ করেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ اٰمَنُواْ اتَّقُواْ اللّٰهَ وَكُونُواْ مَعَ الصَّادِقِينَ
অর্থ: “হে ঈমানদারগণ! তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করো এবং
ছদিক্বীন বা সত্যবাদীগণ
উনাদের ছোহবত ইখতিয়ার করো।” (পবিত্র সূরা তওবা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১১৯)
আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ اٰمَنُواْ أَطِيعُواْ اللّٰهَ وَأَطِيعُواْ الرَّسُولَ وَأُوْلِي الأَمْرِ مِنكُمْ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক উনার অনুসরণ করো, উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার অনুসরণ করো
এবং উলীল আমর উনাদের অনুসরণ
করো।” (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৯)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ
মুবারক হয়েছে-
اَلشَّيْخُ
لٍقَوْمِه
كَالنَّبِىِّ
فِىْ اُمَّتِه
অর্থ: “শায়েখ উনার ক্বওমের মধ্যে তদ্রুপ, যেরূপ নবী আলাইহিস সালাম উনার উম্মতের মধ্যে।” (দায়লামীশরীফ, মকতুবাত শরীফ)
যেহেতু কিতাব মুতাবেক-
اَلْوُصُوْلُ
لَا يَحْصِلُ اِلِّا بِالْوَسِيْلَةِ وَ هِىَ الْعُلَمَاءُ
الْحَقِيْقَتُ وَ مَشَائِخُ الطَّرِيْقَةُ
অর্থ: “উসীলা ব্যতীত মহান আল্লাহ পাক উনার নৈকট্য পাওয়া যায় না। আর
উক্ত উসীলা হচ্ছেন
হাক্বীক্বী আলিম বা তরীক্বত পন্থী কামিল মুর্শিদগণ।” (তাফসীরে
রুহুলবয়ান)
সেহেতু সাইয়্যিদাতুন নিসা, হাবীবাতুল্লাহ, উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি পবিত্র
আয়াত শরীফ, পবিত্র হাদীছ
শরীফ, ফিক্বাহ শরীফ
উনার কিতাব মুতাবিকই হযরত শায়েখ আলাইহিস সালাম উনার সাথে মুরীদ-মুরীদানদের কেমন সম্পর্ক হওয়া উচিত, কতখানি আদব বজায় রাখা উচিত এবং হযরত শায়েখ আলাইহিস সালাম উনার সাথে বেয়াদবি
করলে বা বিরোধিতা করলে
ইহকাল-পরকালে কতখানি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ইত্যাদি বিষয়ে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্মভাবে জানিয়ে দিচ্ছেন, বুঝিয়ে দিচ্ছেন। শধু তাই নয়; বাতিল ফিরক্বা সম্পর্কে যেমন জানিয়ে দিচ্ছেন তেমনি
অন্যদেরকে সজাগ করে দিচ্ছেন যাতে করে ঈমান-আক্বীদার কোনো ত্রুটি না হয়।
হক্ব, নাহক্বের
বিষয়গুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বুঝিয়ে এবং
শিখিয়ে দিচ্ছেন।
جَاءَ
الْحَقُّ
وَ زهَقَ الْبَاطِلُ اِنَّ الْبَاطِلَ كَانَ زَهُوْقًا
¬
অর্থ: “সত্য এসেছে মিথ্যা দূরীভূত হয়েছে, নিশ্চয়ই মিথ্যা দূরীভূত হওয়ারই উপযুক্ত।” (পবিত্র সূরা বনী ইসরাঈল শরীফ: পবিত্র আয়াত
শরীফ-৮১)
অতএব, এই পবিত্র আয়াত শরীফ মুবারক উনার পুনরাবৃত্তি আমরা নিজেরাই
উনার জীবন মুবারকে পরিলক্ষিত হতে দেখছি। সুবহানাল্লাহ!
শুধু তাই নয়, আজ এই ভয়াবহ ফিতনার যুগে তথাকথিত মহিলারা
বেহায়া-বেলাল্লাপনার নগ্ন জীবন থেকে সাইয়্যিদাতুন নিসা, নূরে জাহান, উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার মুবারক নছিহত, দলিলসমৃদ্ধ আলোচনা শ্রবণ করে ফিরে আসছে দ্বীন ইসলাম উনার ছায়াতলে। যেসব নারী নিজেদের
দ্বীন, নিজেদের
অস্তিত্ব ভুলে হোঁচট খেয়ে মুখ থুবড়ে
পড়েছিল- সেই পথহারা নারী সমাজকে সত্যপথের দিকে আহ্বান করে যাচ্ছেন আমাদের প্রাণের আক্বা, নূরে জাহান, উম্মুল খয়ের সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা
আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
মূলত, বান্দাদের জানানোর জন্যই রব্বুল আলামীন মহান
আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মুবারক ইরশাদ ফরমান-
فَاسْتَقِمْ
كَمَا
أُمِرْتَ
وَمَنْ
تَابَ
مَعَكَ
وَلاَ
تَطْغَوْاْ
إِنَّهُ
بِمَا
تَعْمَلُونَ
بَصِيرٌ
অর্থ: “যা আদেশ করা হয়েছে তার মধ্যে ইস্তিকামত থাকতে বলুন এবং যারা
তওবা করেছে তাদেরকেও বলুন-
তারাও যেন ইস্তিকামত থাকে এবং তারা কেউ যেন কোনো অবস্থাতেই সীমালঙ্ঘন না করে। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদের
আমলগুলো দেখেন, জানেন, বুঝেন।” (পবিত্র সূরা হূদ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১১২)
আর সত্যিই আমাদের প্রাণের আক্বা, নূরে মদীনা, গুলে মুবীনা, উম্মুল উমাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা
আলাইহাস সালাম তিনি-
اَمَرَ
بِالْمَعْرُوْفِ وَ نَهٰى عَنِ الْمُنْكَرِ
অর্থ: “সৎ কাজের আদেশ আর অসৎ কাজে নিষেধ করে থাকেন।”
উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ মুতাবেক যারা ভুল করেছে তাদেরকে সতর্ক করে
দেন এবং তওবা করে হক্ব
মত-পথের উপর ইস্তেকামত থাকতে বলেন। আর মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয়
করার নির্দেশ দিয়ে থাকেন। শুধু তাই নয়, সাইয়্যিদাতুন নিসা, বাহরুল আলিমা, উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম
গাইরুল্লাহর মোহ অর্থাৎ দুনিয়ার লোভ-লালসা বা দুনিয়াবী টাকা-পয়সায় মত্ত থাকা, দুনিয়াবী ধ্যান-খেয়ালের দিকে ঝুকে যাওয়া, দুনিয়ার মান-সম্মান তালাশ করা, দুনিয়াবী কারণে আত্বীয়-পরিবার পরিজনের সাথে আত্ম কোলাহলে নিমজ্জিত
থাকা, পাড়া-প্রতিবেশী
এবং সঙ্গী-সাথীদের সাথে দ্বীনী আলোচনা বাদ দিয়ে দুনিয়াবী খেল-তামাশায় মশগুল থাকা ইত্যাদি অপছন্দনীয় খারাপ কাজ করা
থেকেও দূরে থাকতে বলেন। কারণ এ সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ
মুবারক হয়েছে-
حُبُّ
الدُّنْيَا
رَأْسُ
كُلِّ
خَطَيْئَةٍ
¬
অর্থ: “দুনিয়ার মুহব্বত সকল গুনাহ্র
মূল।”
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ
মুবারক হয়েছে-
اَلدُّنْيَا
مَلْعُوْنٌ
وَ مَا فِيْهَا مَلْعُوْنَةٌ
অর্থ: “নিশ্চয়ই দুনিয়া হচ্ছে লা’নত
প্রাপ্ত এবং দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু আছে সবকিছুই লা’নত প্রাপ্ত।”
সুতরাং উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার আলোকে তিনি সকল মুরিদানদের
মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভুলে, উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনাকে ভুলে ‘দুনিয়ার মুহব্বতে গরক্ব থাকা’ থেকে সর্বদা
সতর্ক থাকতে বলেন। যেহেতু দুনিয়া লা’নত
প্রাপ্ত, অভিশপ্ত। সেহেতু
দুনিয়ার মুহব্বতে যারা
মোহগ্রস্থ থাকবে তারা লা’নত প্রাপ্ত হয়ে যাবে। আর তাই লা’নত প্রাপ্ত দুনিয়া থেকে ইবরত নছিহত গ্রহণ করে সাবধানতা অবলম্বন
করতে বলেছেন। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদেশ-নিষেধ
যথাযথভাবে পালন করতে নির্দেশ দিচ্ছেন। মহান আল্লাহ পাক উনার হযরত নবী-রসূল
আলাইহিমুস সালাম উনারা যেমন ওহী মুবারক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিলেন। ঠিক তেমনি
মহান আল্লাহ পাক উনার মনোনীত
ওলীআল্লাহগণ উনারা ইলহাম-ইলক্বা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ঠিক তেমনি আমাদের প্রাণের আক্বা, ছহিবাতুল কোরআন, ইমামাত্স্ ুসিদ্দীকা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম
তিনিও ইলহাম-ইলক্বা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। যা বাস্তবে, স্বপ্নে সর্বাবস্থায় পরিলক্ষিত হয়ে থাকে।
অথচ তা উপলব্ধি করা বা জানা আমাদের
ধারণারও বাইরে তার একমাত্র কারণ, মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র হাদীসে কুদসী শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ
মুবারক করেছেন-
اِنَّ
اَوْلِيَاءَ
تَحْتَ
قَبَائِىْ
لَايَعْرِفُهُمْ اِلَّا
غَيْرِىْ
অর্থ: “নিশ্চয়ই আমার ওলীগণ আমার কুদরতী
জুব্বা মুবারক উনার মধ্যে অবস্থান করেন। আমি ব্যতীত উনাদেরকে কেউ হাক্বীক্বীভাবে
চিনে না।”
সুতরাং এক্ষেত্রে আমাদের উচিত হবে বিশুদ্ধ আক্বীদা পোষণ করা এই যে-
‘সাইয়্যিদাতুন নিসা, উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি
মহান আল্লাহ পাক উনার
খাছ লক্ষ্যস্থল ওলী।’ এটাই আমাদের মনে-প্রাণে বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। উনার শান-মান, মর্যাদা-মর্তবা ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা হাক্বীক্বীভাবে উপলব্ধি করতে পারবো না, যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা উনার প্রতি হুসনেযন, ছোহবত, খিদমতের মাধ্যম দিয়ে উনার তরফ থেকে ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ, রহমত-বরকত অর্জন করতে না পারবো। পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ
উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন-
إِنَّ
رَحْمَتَ
اللّٰهِ
قَرِيبٌ
مِّنَ
الْمُحْسِنِينَ
অর্থ: “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার
রহমত মহান আল্লাহ পাক উনার ওলীগণ উনাদের নিকট রয়েছে।”
সুতরাং খাছ রহমত পেতে হলে অবশ্যই আমাদের মহিলাদের সাইয়্যিদাতুন
নিসা, নূরে জাহান, উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার
মুবারক সোহবতে আসতে হবে। তবেই
খাছ রহমত প্রাপ্তির সাথে সাথে ঈমানী কুওয়্যাত যেমন বাড়বে, তেমনি ওলী আল্লাহগণ উনাদের প্রতি মুহব্বতও তেমনি বাড়বে।
যুগে যুগে ওলী আল্লাহগণ এসেছেন, আছেন এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত থাকবেন এই বুঝও সবার পয়দা হবে। শুধু তাই নয়, সর্বোপরি ‘আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত’ উনার সমস্ত
বিশুদ্ধ আক্বীদা সম্পর্কে সবাই জানতে
পারবে, বুঝতে পারবে।
রব্বুল আলামীন মহান আল্লাহ পাক
তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اِنَّ
الَّذِيْنَ
قَالُوْا
رَبُّنَا
اللّٰهَ
ثُمَّ
اسْتَقَامُوْا تَّتَنَزَّلُ
عَلَيْهِمُ
الْمَلٰئِكَةُ
অর্থ: “নিশ্চয়ই যারা মহান আল্লাহ পাক উনাকে স্বীকার করে অর্থাৎ মেনে ইস্তিকামত থাকবে। উনাদের উপর হযরত ফেরেস্তা আলাইহিমুস সালাম উনারা
নাযিল হবেন অর্থাৎ উনাদের জন্য রয়েছে গায়েবী মদদ।”
উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফখানা উনার
খাছ আমল করেছেন এবং করছেন আমাদের প্রাণের
আক্বা, মাশুকায়ে ইলাহী, রাহবারে সাইয়্যিদাহ, উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনি।
সুবহানাল্লাহ্! যেহেতু তিনি পবিত্র দ্বীন
ইসলাম উনার উপর কায়িম রয়েছেন, হক্ব মত-পথের উপর ইস্তেকামত রয়েছেন, ন্যায়ের উপর দৃঢ়চিত্ত রয়েছেন, মিথ্যা অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন এবং এখন পর্যন্ত করছেন। সুতরাং
উনার একাগ্রভাবে ইস্তেকামত থাকার ফলেই সব সময়ই তিনি গায়েবী মদদ পাচ্ছেনÑ যা মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে খাছভাবে নির্ধারিত। সুবহানাল্লাহ্! মহান
আল্লাহ পাক তিনি কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
اَللَّهُ
يَجْتَبِيْ
إِلَيْهِ
مَن يَشَاءُ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি যাকে ইচ্ছা
উনার নৈকট্যশীল বান্দা হিসেবে মনোনীত করেন।”
যেহেতু আমাদের প্রাণের আক্বা নূরে মদীনা, গুলে মুবীনা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম তিনিও মহান আল্লাহ পাক উনার
এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার তরফ থেকে খাছভাবে মনোনীত হয়েছেন। সেহেতু উনাকে মুহব্বত করা, তাযীম-তাকরীম করার সাথে সাথে উনাকে হাক্বীক্বীভাবে অনুসরণ করা প্রত্যেক
মু’মিনা মহিলাদের জন্য ফরজ-ওয়াজিব। শুধু তাই নয়, মহান আল্লাহ পাক তিনি অন্যত্র ইরশাদ মুবারক
করেন-
اُذْكُرُواْ
نِعْمَةَ
اللّٰهِ
عَلَيْكُمْ
অর্থ: “তোমাদেরকে যে নিয়ামত মুবারক দেয়া হয়েছে, তোমরা সে নিয়ামত মুবারক উনাকে স্মরণ করো।” (পবিত্র সূরা আল ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ
১০৩)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক
করেন-
لَئِنْ
شَكَرْتُمْ
لَا زَيْدَنَّكُمْ
অর্থ: “তোমরা যদি নিয়ামত মুবারক উনার
শুকরিয়া আদায় করো তাহলে তোমাদের প্রতি নিয়ামত মুবারক বৃদ্ধি করে দেয়া হবে।”
সুতরাং আমরা সাইয়্যদুল আসইয়াদ সাইয়িদুশ শুহূর শাহরুল আ’যম
মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ উনার পরম রহমতপূর্ণ-নিয়ামতপূর্ণ ৭ তারিখ যেমন স্মরণ
রাখবো এবং সাথে সাথে পালন করবো; ঠিক তেমনি সাইয়িদাতুন নিসা, উম্মুল উমাম হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনাকে যে আমাদের মাঝে এত মহান
নিয়ামতস্বরূপ পাঠনো হলো, সেই নিয়ামতের ক্বদর করে উনার মুবারক ছোহবত ইখতিয়ারের
মাধ্যমে হাক্বীক্বী
দ্বীনী শিক্ষা অর্জনের মধ্য দিয়ে নেক্কার পরহেযগার মু’মিনা হওয়ার চেষ্টা করবো। ইনশাআল্লাহ্! তাহলে মহান আল্লাহ পাক
তিনি আমাদের নিয়ামত আরো বৃদ্ধি করে দিবেন। অর্থাৎ আমরা প্রত্যেক মহিলারা সবসময় খাছ নিয়ামত, রহমত, বরকত, সাকীনার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারবো। ইনশাআল্লাহ্!
No comments