শরীয়তের দৃষ্টিতে গান-বাজনা সম্পূর্ণ হারাম!
************************************************************
হোক তা জাতীয়
সংগীত, নবী তত্ত্ব, মুর্শীদি, জারী, কাওয়ালী, পল্লীগীতি, ভাওয়ালী, ভক্তিমূলক ইত্যাদি
যে কোন গান
সম্মানিত ইসলামী
শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে গান-বাজনা করা হারাম ও কবীরা গুণাহের অন্তর্ভূক্ত। তা যে কোন গানই
হোক না কেন। যেমন- জাতীয় সংগীত, নবী তত্ত্ব, মুর্শীদি, জারী, কাওয়ালী, পল্লীগীতি, ভাওয়ালী, ভক্তিমূলক ইত্যাদি
যে কোন প্রকার গানেই হোক না কেন। তবে বাজনা বা বাদ্য-যন্ত্র ব্যতীত পবিত্র হামদ শরীফ, না’ত শরীফ, ক¦ছীদা শরীফ, গজল ইত্যাদি পাঠ করা ও শোনা জায়েয রয়েছে। তাই কিতাবে
উল্লেখ আছে, ইলম দু’প্রকার।
(১) “ইলমে আরজী”
অর্থাৎ ছন্দ প্রকরণ যেমন- “বালাগাল উলা বিকামালিহী ও পবিত্র মীলাদ শরীফ উনার মধ্যে
পাঠকৃত ক্বাছীদাসমূহ, যা গানের সুরে পাঠ করা হয় না।
(২) “ইলমে মুসীক্বী”
অর্থাৎ রাগ-রাগীনী বা গানের সুর। কাজেই বাদ্য-যন্ত্র যা সম্মানিত শরীয়তে সম্পূর্ণই
নাজায়েয। সাথে সাথে বাদ্যবিহীন ইলমে মুসীক্বীও নাজায়েয।
মূলত গান-বাজনা
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ
শরীফ, পবিত্র ইজমা ও ক্বিয়াস শরীফ উনাদের অকাট্য
ও কিতয়ী দলীল দ্বারা সুস্পষ্টভাবে হারাম সাব্যস্ত হয়েছে। যিনি খলিক্ব যিনি মালিক মহান আল্লাহ্ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার অসংখ্য স্থানে গান-বাজনা করতে ও শুনতে নিষেধ
করেছেন। যেমন পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার
মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمِنَ النَّاسِ مَن يَشْتَرِي لَهْوَ
الْحَدِيثِ لِيُضِلَّ عَن سَبِيلِ اللَّهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَيَتَّخِذَهَا هُزُوًا
أُولَئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ مُّهِينٌ
অর্থ: “লোকদের
মধ্যে কিছু এরূপ আছে যে, যারা لهو الحديث
“লাহওয়াল হাদীছ” অবলম্বন করে, এ জন্য যে, (লোকদেরকে) বিনা ইলমে মহান আল্লাহ পাক
উনার পথ হতে বিভ্রান্ত করবে এবং পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে হাসী ঠাট্টাস্বরূপ গ্রহণ
করে। তাদের জন্য অপমান জনক লাঞ্চিত শাস্তি রয়েছে।” (পবিত্র সূরা লুকমান: আয়াত শরীফ-
৬)
এ আয়াত শরীফ-এ
বলা হয়েছে যে, যে ব্যক্তি ‘লাহওয়াল হাদীছ’ অবলম্বন করবে, সে দোজখের কঠিন
শাস্তি প্রাপ্ত হবে, কাজেই তা হারাম। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে ‘লাহওয়াল হাদীছ’
কি?
لهو الحديث “লাহওয়াল হাদীছ” অর্থ গান
- বাদ্য
لهو الحديث “লাহওয়াল হাদীছ” অর্থ “গান
বাদ্য” এই তাফসীর যাঁরা করেছেন উনারা হচ্ছেন-
১) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু
২) হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
৩) হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু,
৪) হযরত ইকরামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু,
৫) হযরত সাইদ ইবনে যুবায়ের রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু,
৬) হযরত মুজাহিদ মাকতুল রহমতুল্লাহি আলাইহি,
৭) হযরত আমর ইবনে শুয়াইব রহমতুল্লাহি আলাইহি
৮) হযরত
আলী ইবনে খোজায়মা রহমতুল্লাহি আলাইহি
৯) হযরত হাসান বসরী রহমতুল্লাহি আলাইহি। (তাফসীরে
ইবনে কাছীর ৮ম খন্ড, ৩/৪ পৃষ্ঠা)
অতএব, আমাদের উচিত সব ধরনের গান বাদ্য থেকে বিরত থাকা। বিশেষ
করে বর্তমানে মাদরাসায় যে জাতীয় সঙ্গীত পাঠ করা বাধ্য করা হয়েছে তা থেকে বিরত থাকা
এবং এর বিরুদ্ধে বলা ও লিখালিখি করা। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে সেই তাওফীক দান
করুন। আমীন
No comments