Header Ads

Islamic Quotes Urdu Facebook Cover. QuotesGram

নূরে মুজাসসাম,হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জিসিম মুবারক উনার ছায়া মুবারক না থাকার কারনই হচ্ছেন তিনি হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম এ সংক্রান্ত হাদীছ শরীফ উনার সনদ তথা বর্ননাকারীদের প্রতি বাত্বিল ফির্কা ওহাবী দেওবন্দীদের মিথ্যা অভিযোগের জাওয়াব।




প্রকাশ থা‌কে‌ যে ,ইমামুল মুহাদ্দিছীন  আল্লামা জালালুদ্দীন সূযূতী রহমতুল্লা‌হি আলাইহি তি‌নিও উনার "খাছা‌য়িছুল কুবরা "নামক কিতা‌বে উক্ত হাদীছ শরীফখানা উ‌ল্লেখ ক‌রে এ মতের সমর্থন ক‌রে‌ন। অথচ বা‌তিল ফিরকা ওহাবী দেওবন্দীরা উক্ত প‌বিত্র হাদীছ শরীফ উনার বি‌রোধীতা ক‌রে থা‌কে, এ বর্ণনা‌টি জাল ও ভি‌ত্তিহীন। নাউযু‌বিল্লাহ!

তারা ব‌লে ,এই হাদীছ শরীফ উনার সূত্রে র‌য়েছেন আব্দুর রহমান বিন কাইছ যাফরানী ,যার সম্প‌র্কে মুহা‌দ্দিছী‌নে কিরাম উনা‌দের ক‌ঠোর মন্তব্য র‌য়ে‌ছে। এছাড়া তারা ব‌লে থা‌কে উক্ত রাবী সম্প‌র্কে ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল রহমতুল্লা‌হি আলা‌ই‌হি,ইমাম নাসায়ী রহমতুল্লা‌হি আলাই‌হি প্রমুখ প্রখ্যাত ইমাম উনা‌দের ক‌ঠোর উ‌ক্তি র‌য়ে‌ছ... ইত্যা‌দি।

ত‌র্কের খা‌তি‌রে য‌দি ধ‌রেও নেই উক্ত প‌বিত্র হাদীছ শরীফ উনার সনদ ছহীহ নয় , তারপরও উছুল অনুযায়ী প‌বিত্র হাদীছ শরীফখানা ছহীহ। কারণ কো‌ন প‌বিত্র হাদীছ য‌দি সনদগতভা‌বে ছহীহ নাও হয় , কিন্তু উলামা‌য়ে কিরামগন য‌দি গ্রহন ক‌রেন ত‌বে ছহীহ ব‌লে সাব্যস্ত হ‌বে এ বিষ‌য়ে আ‌লোচনা কর‌তে গি‌য়ে বিখ্যাত আ‌লি‌মে দ্বীন হযরত খতীব বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাই‌হি ক‌য়েকটা প‌বিত্র হাদীস শরীফ উ‌ল্লেখ ক‌রেন যা সনদগতভা‌বে দুর্বল কিন্তু সকল আ‌লিম এই পবিত্র হাদীস শরীফ গুলো আমল ক‌রে আস‌ছেন আর তি‌নি তাই ব‌লেন , , , ,


لما احتجوا به جميعا غنوا عن صلب الا سناد له

অর্থঃ আম‌লের মাধ্য‌মে যুগযুগ ধ‌রে এগু‌লো ছহীহ হিসে‌বে অনুসরণ ক‌রে একথার প্রমাণ ক‌রে‌ছেন যে , এগু‌লোর সনদ তালাশ করার প্র‌য়োজন নেই (আল ফক্বীহ ওয়াল মুতাফাক‌কিহ ১\৪৭১, ইবনুল কাই‌য়্যিম এর ই'লামু মুওয়াকুকঈন ১\৪৭১)

বিখ্যাত মুহা‌দ্দিছ হযরত জালালুদ্দীন সূয়ূ‌তি রহমতুল্লা‌হি আলাই‌হি এ বিষ‌য়ে ব‌লেন –

حيكم للحديث با لصحة اذا تلقاه الناس با لقبو ل وان لم يكن له اسناد صحيح

অর্থঃ কোন হাদীছ শরীফ উনার প‌বিত্র ছহীহ সনদ না পাওয়া গে‌লেও য‌দি সক‌লের আম‌লের মাধ্য‌মে হাদীছ শরীফ উনারে বক্তব্য অনুসৃত হয় তাহ‌লে সে হাদীছ শরীফখানা সহীহ ব‌লে গন্য হ‌বে। (তাদরীবুর রাবী ১/৬৬)

হাফীজুল হাদীছ,বুখারী শরীফ উনার অন্যতম ব্যাখাকারক হযরত ইব‌নে হাজ‌ার আসক্বালানী রহমতুল্লা‌হি আলাই‌হি তি‌নি ব‌লেন , "‌যে বৈ‌শিষ্ট্যের কার‌ণে হাদীছ শরীফ গ্রহন‌যোগ্য ব‌লে বি‌বে‌চিত হয় তার ম‌ধ্যে এক‌টি হ‌লো কোন হাদীছ শরী‌ফেরে বক্তব্য অনুযায়ী আমল করার ব্যাপা‌রে সকল আ‌লিম। ঐকবদ্ধ হওয়া। তাহ‌লে সে হাদীছ শরীফ‌টি গ্রহন‌যোগ্য ও তার বক্তব্য অনুযায়ী আমল করা আবশ্যক হ‌য়ে প‌ড়ে উছূ‌লে হাদীছ শরীফ উনার অ‌নেক ইমাম এই নীতি সুস্পষ্ট বণর্না ক‌রেন এর এক‌টি উদাহারণ হ‌চ্ছে হযরেত ইমাম শা‌য়িয়ী রহমতুল্লা‌হি আলাইহি উনার বক্তব্য , "‌কোন পা‌নির য‌দি স্বাদ ,গন্ধ, রং প‌রিবর্তন হ‌য়ে যায় তাহ‌লে তা ব্যবহার যোগ্য নয়। '' এ প‌বিত্র হাদীছ শরীফখানা উনারে সনদ কে য‌দিও হাদীছ,শরীফ বিশারদগন ছহীহ ম‌নে ক‌রেন না , তথা‌পি এটাই সক‌লের বক্তব্য ,এ ব্যাপা‌রে কা‌রো দ্বিমত নেই। "ওয়া‌রিছ‌দের জন্য অ‌ছিয়ত প্র‌যোজ্য নয় " এ প‌বিত্র হাদীছ শরীফ খানাও উলামা‌য়ে কিরামগন (সনদগতভা‌বে) প্রমা‌ণিত ম‌নে ক‌রেন না , কিন্তু সক‌লের আম‌লের মাধ্য‌মে এ‌টি অনুসৃত হয়ে‌ছে (তাউযীহুল আফকার ১/২৫৭, সহীহ ইব‌নে খুযায়মা :হাদীছ শরীফ ১৬৪৩)

সুতরাং বা‌হ্যিকভা‌বে য‌দিও কোন হাদীছ শরীফ উনার সনদ ছহীহ ব‌লে ম‌নে না হলেও য‌দি সে হাদীছ শরীফখানা উলামা‌য়ে কিরামগন গ্রহন ক‌রেন ,তাহ‌লে উক্ত হাদীছ শরীফখানা ছহীহ হ‌য়ে যায় হযরত হাকীম তিরমীযী রহমতুল্লা‌হি আলাই‌হি উনার হাদীছ শরীফখানাও তেম‌নি এক‌টি হাদীছ শরীফ। উক্ত হাদীছ শরীফখানা সকল মুহা‌দ্দিছগন গ্রহন ক‌রে‌ছেন এবং স্ব স্ব কিতা‌বে বর্ণনা ক‌রে‌ছেন।

এখা‌নে মূল বিষয় হ‌চ্ছে কোন ইমাম হাদীছ শরীফ উনার একজন রাবী সম্পর্কে মন্তব্য ক‌রে‌ছেন অর্থাৎ সনদ নি‌য়ে কথা বল‌ছেন কিন্তু মতন নি‌য়ে কা‌রো কোন আপ‌ত্তি নাই এই হাদীছ শরীফ উনার মতন নি‌য়ে কেউ আপ‌ত্তি কর‌ছেন এমন দলীল কেউ কেয়ামত পর্যন্ত দেখা‌তে পার‌বেন না আর উক্ত হাদীছ শরীফ উনার ব্যাপা‌রে‌ কেউ কোন বিরুপ মন্তব্যও ক‌রেন নি বরং সকল ও মুহাদ্দীছগন একমত হ‌য়ে‌ছেন হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম উনার জি‌সিম মুবারক উনার‌ কোন ছায়া ছিলনা।আর শুধু এই একটা সন‌দই নয় , আরো অ‌নেক সনদ এই প‌বিত্র হাদীছ শরীফ ব‌র্ণিত হ‌য়ে‌ছে।
ছহীহ সন‌দে হাদীছ শরীফ উনার ম‌ধ্যে উ‌ল্লেখ আ‌ছে হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্ল‌াহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম উনার জি‌সিম মুবারক উনার ছায়া মুবারক ছি‌লোনা। যা ইমাম বুখারী রহমতুল্লা‌হি আলাই‌হি ও ইমাম মুসলিম রহতুল্লা‌হি আলাই‌হি উনা‌দের দাদা উস্তাদ হা‌ফি‌জে হাদীছ ইমাম আব্দির রাজ্জাক রহমতুল্লা‌হি আলাই‌হি , মুসনা‌দে আব্দির রাজ্জাক কিতা‌বের ম‌ধ্যে হাদীছ শরীফখানা বর্ণনা ক‌রে‌ছেন-

عن عبد الرزاق رحمة الله عليه عن ابن جريج رحمةالله عليه قال اخبرني حضرت نافع رحمة الله عليه ان حضرت ابن عباس رضى الله تعالى عنه قال لم بكن لرسول الله صلى الله عليه و سلم ظل و لم يقع مع الشمس قط الا غلب ضوءه ضوء الشمس و لم يقع مع سر اج قط الا غلب ضوءه ضوء السراج

অর্থঃ "হযরেত আ‌ব্দির রাজ্জাক রহমতুল্লা‌হি আলিাই‌হি তি‌নি হযরত জুরাইজ রহমতুল্লা‌হি আলাই‌হি থে‌কে , তি‌নি হযরত না'ফে রহমতুল্লা‌হি আলাই‌হি থে‌কে , তি‌নি হযরত ইব‌নে আব্বাস রহমতুল্লা‌হি আলাই‌হি থে‌কে বর্ণনা ক‌রেন। তি‌নি ব‌লেন , হাবীবুল্ল‌াহ হুযুর পাক ছল্লাল্ল‌াহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম উনার কো‌নো ছায়া মুবারক ছিলোনা এবং সূর্যের আ‌লো‌তে কখনও উনার ছায়া মুবারক পড়‌তোনা সুবহানাল্লাহ! আর বা‌তির আ‌লো‌তেও কখ‌নো ছায়া মুবারক পড়‌তোনা। কেননা উনার নূর মুবারক বা‌তির আ‌লোকে ছা‌ড়ি‌য়ে যেত " (আয যুযউল মাফক্বুদ মিনাল যুযউল আউয়াল , মুছ‌ন্নাফে আ‌ব্দির রাজ্জাক ,‌কিতাবুল ঈমান অধ্যা‌য়ের ১ম খন্ড ৫৬ পৃষ্ঠার ৪ নম্বর হাদীছ শরীফ, জা‌মিউল ওয়া‌সিল ফি শরহে শামা‌য়েল লি মোল্লা ক্বারী রহমতুল্লা‌হি আলাই‌হি ২১৭ পৃষ্ঠা, আল মাওয়া‌হিবুল লাদু‌ন্নিয়া আলা শামা‌য়ি‌লে মুহম্ম‌দিয়া ১০৫ পৃষ্ঠা ) 

উক্ত প‌বিত্র হাদীছ শরীফে ব‌র্ণিত সকল রাবী ছিকাহ বা নির্ভর‌যোগ্য হযরত ইমাম আব্দুর রাজ্জাক রহমতুল্লা‌হি আলাই‌হি , হযরত না'‌ফে রহমতুল্লা‌হি আলাই‌হি উনারা প্র‌ত্যে‌কে ছি‌লেন উচুঁ স্ত‌রের ছিকাহ রাবী (তাহযীবুত তাহযীব ,‌মিযানুল '‌তিদাল)

আর মূল বর্ণনাকারী ইব‌নে আব্বাস র‌দ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তি‌নি ছি‌লেন বি‌শিষ্ট ছাহাবী। এ হাদীছ শরীফ বিখ্যাত মুহা‌দ্দিছ মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লা‌হি আলাই‌হি ,হা‌ফিজে হাদীছ হযরত ইমাস যাওজী রহমতুল্লা‌হি আলাই‌হি, ইমাম যুরকানী রহমতুল্লা‌হি আলাই‌হি সব স্ব স্ব কিতা‌বে উ‌ল্লেখ ক‌রে‌ছেন।এই হাদীছ শরীফ থেকে যে বিষয়টি স্পষ্ট হ‌চ্ছে তা হ‌লো হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়াসাল্লাম উনার জি‌সিম মুবারক উনার ছায়া মুবারক ছি‌লো না।এই ছহীহ হা‌দিস শরীফ উনা‌কে গ্রহন ক‌রে নি‌য়ে‌ছেন পৃ‌থিবীর সকল ইমাম ও মুহা‌দ্দিছগন পৃ‌থিবীর কোনো ইমাম ও মুহা‌দ্দিছগন , এই হাদীছ শরীফ উনার ব্যাপা‌রে কোন আপ‌ত্তি ক‌রেন নি বরং বিনা দ্বিধায় উক্ত হাদীছ শরীফ গ্রহন ক‌রে নি‌য়ে‌ছেন এবং এই আক্বীদাই পোষণ কর‌ছেন।

এছাড়া  অসংখ্য মুহা‌দ্দিছগন স্ব স্ব কিতা‌বে বর্ণনাও ক‌রেছেন। হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম উনার জি‌সিম মুবার‌কের ছায়া মুবার‌ক না থাকার কারণে তি‌নি ছি‌লেন নূরে মুজাস্সাম সবহানাল্লাহ ! যে বিষয়টা সকল ইমাম ও মুহাদ্দিছগন একমত হ‌য়ে‌ছেন কেউই দ্বিমত পোষণ ক‌রেন নি। এমন‌কি দেওবন্দী কওমীরা যে ছায়া মুবারক ছি‌লো ব‌লে মিথ্যা অপবাদ দেয় তা‌তের মুরুব্বীরাও একবা‌ক্যে ব‌লে গে‌ছেন ,হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছিলোনা

ওহাবী দেওবন্দীরা ছায়া মুবারক ছি‌লো ব‌লে যে প‌বিত্র হাদীছ শরীফ উ‌ল্লেখ ক‌রে তা কি উপ‌রোক্ত ইমাম ,মুহাদ্দিছগন উনা‌ওদর জানা ছিল না ? অবশ্যই জানা ছিল। শুধু জানাই ছি‌লো না উনানা এক একজন ছি‌লেন যুগ‌শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দীছ ও হা‌ফি‌জে হাদীছ অ‌নেকে হুজ্জা‌ত ও ছি‌লেন। সুবহানাল্লাহ ! বি‌রোধীতা কারীরা যেন উছূ‌লে হাদীছ শরীফ উনার কিতাব খু‌লে মুহা‌দ্দিছ ,হা‌ফি‌জে হাদীছ ও হুজ্জাতের সংজ্ঞ‌াপি‌গে নেয়। কিন্ত‌ু যেহেতু ঐ সকল হাদীছ শরীফ দ্বারা ছায়া মুবারক থাক‌া প্রমা‌ণিত হয়না বরং ঐ হাদীছ শরীফ উনার ব্যাখা মূলক অর্থ নি‌তে হ‌বে এ বিষয়ে উনারা পূর্ণ অবগত ছি‌লেন। তাই উনারা একবা‌ক্যে উ‌ল্লেখ ক‌রে‌ছেন হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম উনার জি‌সিম মুবারক উনার ছায়া মুবারক ছি‌লোনা।

নূরে মুজাসসাম,হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জি‌সিম মুবারক উনার ছায়া মুবারক থাকার মিথ্যা দাবীর স্বপ‌ক্ষে বা‌তি‌ল ফিরক্বা ওহাবী দেওবন্দী‌দের লি‌খিত বিভ্রান্তিকর 'প্রচ‌লিত জাল হাদীছ নামক' বই‌তে মুস্তাদ‌রে‌কে হা‌কিম কিতাবের ৫ম খন্ড ৬৪৮ পৃষ্ঠার ৮৪৫৬ নম্বর হাদীছ শরীফ এবং মুসনাদে আহমদ শরীফের ৭ম খ‌ন্ডের ৪৭৪ পৃষ্ঠার ২৬৩২৫ নম্বর হাদীছ শরীফ দু‌টির ভুল ব্যাখা খন্ডনঃ


নূরে মুজাসসাম,হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তি‌নি ইরশাদ মুবারক ক‌রেন,

অর্থঃ "আ‌খিরী যামানায় বহু সংখ্যক মিথ্যাবদী দাজ্জাল‌ বের হ‌বে। তারা তোমা‌দের নিকট এমন সব(‌মিথ্য, মনগড়া, বিভ্রা‌ন্তিকর) কথা উপস্থাপন কর‌বে ,যা তোমরা শুন‌নি এবং তোমা‌দের বাপ দাদারাও শো‌নেননি সাবধান! তোমরা তা‌দের কাছ থে‌কে দূ‌রে থা‌কো এবং তাদের‌কে তোমা‌দের খেকে দূ‌রে রাখো তাহ‌লে তারা তোমা‌দের‌কে গুমরাহ কর‌তে পার‌বেনা এবং ফিতনায় ফেল‌তে;পার‌বেনা।" (মুস‌লিম শরীফ ,‌মিশকাত শরীফ কিতাবুল ঈমান বাবুল '‌তিছাম বিল কিতা‌বি ওয়াস সুন্নাহ-১ম প‌রি‌চ্ছেদ হাদীছ শরীফ নং ১৪৬) 

আমরা এখন আ‌খেরী যামানায় বাস কর‌ছি এই সম‌য়ে উলা‌য়ে ছূ রা এমন কথা বল‌ছে যা মানুষ‌দের ঈমান আক্বীদার জন্য ভয়াবহ ক্ষ‌তির কারণ সাধারণ মানুষদের বিভ্রান্ত করার জন্য ,কুরআন শরীফ ,হাদীছ শরীফ উনার ভুল ব্যখা কর‌ছে।

এই ধর্মব্যবসায়ীরা নূরে মুজাসসাম,হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারক কিভা‌বে ইহানত করা যায় সেই ফি‌কিরেই থা‌কে। নাউযু‌বিল্লাহ ! তারা তা‌দের পুস্তক, প‌ত্রিকার ম‌ধ্যে একটা কথা ব‌লে ," নূরে মুজাসসাম,হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তি‌নি নূ‌রে মুজাস্সাম নন তাই উনার ছায়া মুবারক ছি‌লো। "নাউযু‌বিল্লাহ ! নাউযু‌বিল্লাহ ! নাউযু­‌বিল্লাহ! তা‌তের এই ভ্রান্ত দা‌বির প‌ক্ষে তারা কিছু দলীল ও দি‌য়ে থাকে।

দুটা হাদীছ শরীফ উপস্থাপন ক‌রে তারা ব‌লে ‌যে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম তি‌নি নূ‌রে মুজাস্সাম নন তাই উনার ছায়া মুবারক ছি‌লো। নাউযু‌বিল্লাহ !
১ম হাদীছ শরীফঃ

عن حضرت انس بن ملك رضى الله تعالى عنه قال:بينما النبى صلى الله عليه و سلم واله و سلم يصلى ذات ليلة صلاةاذ مد يده ثم أخرها فقلنا:يا رسول الله صلى الله عليه و سلم رأيناك صنعت فى هذه الصلاة سيئا لم تكن تصنعه فيما قبله قال: أ جل إنه عر ضت على الجنة فرأيت فيها دالية قطو فها دانية فأ ردت أن أتناول منهم شيئا فأ و حى إلى أن استأ خرفا ستأ خرت و عر ضت على النار فيما بيني و بينكم حى و أيت ظلى و ظلكم فيما

অর্থঃ হযরত আনাস র‌দ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তি‌নি বর্ণনা ক‌রেন, কোন এক রা‌তে নূরে মুজাসসাম,হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামায পড়া‌চ্ছি‌লেন তি‌নি সহসা হাত মুবারক সাম‌নের দি‌কে বাড়ান এবং ‌পিছন দি‌কে টে‌নে নেন।আমরা বললাম ,‌হে আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম,হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এই নামা‌যে আপনা‌কে এমন কাজ কর‌তে দে‌খে‌ছি,যা ই‌তিপূ‌র্বে কখ‌নো ক‌রেন নি।‌তি‌নি ইরশাদ মুবারক ক‌রেন, হ্যাঁ আমার কা‌ছে জান্নাত উনা‌কে উপস্থাপন করা হ‌য়ে‌ছিল তা‌তে বিশাল বৃক্ষরাজী দেখ‌তে পাই যেগু‌লো‌তে ছড়া ঝুকা‌নো ছিল তা থে‌কে কিছু নি‌তে চাইলে আমার প্র‌তি ওহী মুবারক হ‌লো, আপ‌নি পেছ‌নে স‌রে দাড়‌ান।আ‌মি পেছ‌নে স‌রে দাড়ালাম।তারপর আমার নিকট জাহ‌ান্নাম উপ‌স্থিত করা হ‌লো যা আমার ও আপনা‌দে‌র সাম‌নে ‌ছি‌লো। এমন‌কি সেখা‌নে আপনা‌দের ও আমা‌কে দেখ‌ওত পেলাম এমনভা‌বে ‌যেমনভা‌বে আয়নায় দেখা যায়। সে হি‌সে‌বে '‌যিল্লুন' শব্দ মুবারক ব্যবহার করা হ‌য়ে‌ছে।(মুসতাদ‌রা‌কে হাকিম,৫/৬৪৮, ৮৪৫৬ নং হাদীছ)

এই হাদীছ শরীফ দ্বারা হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক প্রমা‌ণিত হয়না। (উ‌ল্লেখ্য ছায়া বিপরীত দি‌কে দেখা যায়। কারজই এটা ছায়া মুবারক নয়।বরং আয়নার মত দেখা গি‌য়ে‌ছে।) মূল বিষয় হ‌চ্ছে চন্দ্র,সূর্য,অথবা বা‌তির আ‌লো‌তে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক পড়‌তো না। অথচ বা‌তিল ফিরকার লো‌কেরা দলীল দি‌লো ,জাহান্না‌মে উনার ছায়া মুবারক দেখা গে‌ছে। উক্ত হাদীছ শরী‌ফে জাহান্না‌মের আগু‌নের আলো‌তে ছায়া মুবারক দেখার কথা মো‌টেও উ‌ল্লেখ নাই। যে '‌যিল্লুন' এর কথ‌া বলা হ‌য়ে‌ছে সেটা দ্বারা আয়নায় যেমন দেখা যায় তদ্রুপ দেখার কথা বলা হ‌য়ে‌ছে। সাধারণভা‌বে আমরা যে ছায়া মুবারক বু‌ঝি তা বোঝা‌নো হয়নি। বরং এই প‌বিত্র হাদীছ শরীফ উনার অর্থ হ‌চ্ছে জান্নাতে হুযুর পাক ছল্লাল্ল‌াহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম তি‌নি উনা‌কে এবং হযরত ছাহাবা‌য়ে কিরামগন উনা‌দেরকে আয়নায় দেখার মত দেখ‌তে পা‌চ্ছি‌লেন হাস্যকর কথা হ‌চ্ছে , পৃথিবীর যমী‌নে ছায়া মুবারক পড়‌ছি‌লো, এই বিষ‌য়ে স্পষ্ট দলীল দি‌তে না পে‌রে মানুষ‌কে বিভ্রান্ত কর‌তে তারা এমন দলীল পেশ ক‌র‌লো যা হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম উনার হা‌যির না‌যির এবং ইল‌মের গই‌বের দলীলই সাব্যস্ত হ‌লো কারণ জান্নাত ও জ‌াহান্নাম গই‌বের বিষয় এই সকল বা‌তিল ফিরকা কেন তাহ‌লে ইল‌মে গইব ও হা‌যির না‌যির বিশ্বাস ক‌রেনা?

২য় হাদীছ শরীফঃ
ﻭﻳﺌﺴﺖ ﻣﻨﻪ ﻓﻠﻤﺎ ﻛﺎﻥ ﺷﻬﺮ ﺭﺑﻴﻊ ﺍﻷﻭﻝ ﺩﺧﻞ ﻋﻠﻴﻬﺎ ﻓﺮﺃﺕ ﻇﻠﻪ ﻓﻘﺎﻟﺖ ﺇﻥ ﻫﺬﺍ ﻟﻈﻞ ﺭﺟﻞ ﻭﻣﺎ ﻳﺪﺧﻞ ﻋﻠﻲ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓﻤﻦ ﻫﺬﺍ ﻓﺪﺧﻞ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ
 

অর্থঃ প‌বিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মা‌সে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম তি‌নি হযরত উম্মুল মু'মিনীন আছছা‌নিয়া আলাইহিাস সালাম উনার নি‌ক‌টে ‌গে‌লেন। হুজরা শরী‌ফে তাশরীফ মুবারক গ্রহন করার প্রাক্কা‌লে হযরত উম্মুল মু'‌মিনীন আছ'ছা‌মিনাহ আলাইহ‌াস সালাম তি‌নি হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম তি‌নি উনার '‌যিল্লুন' মুবারক দেখ‌তে পান। তখন বল‌লেন, এ‌তে‌া কো‌নো পুরু‌ষের '‌যিল্লুন' মুবার‌কে ব‌লে ম‌নে হয়। হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম তি‌নি তো আমার নিকট তাশরীফ মুবারক রা‌খেন না। রাখার কথা নয়। তাহ‌লে এ ব্য‌ক্তি তি‌নি কে?ইত্যবস‌রে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম তি‌নি তাশরী‌ফ মুবারক রা‌খেন (মুসনা‌দে আহমদ ৭/৪৭৪)

এই প‌বিত্র হাদীছ শরীফ ওহাবী‌দের কা‌ছে আ‌রে‌া এক‌টি দলীল এই হাদীছ শরীফে যে  ظل যিল্লু শ‌ব্দের কথা বলা হ‌য়ে‌ছে তা দ্বার‌া ছায়া মুবারক বুঝা‌নো হয়‌নি। এই ظل যিল্লু হ‌চ্ছে নিছবত, নৈকট্য ,প্রশা‌ন্তি ,রহমত মুবারক বুঝা‌নো হ‌য়ে‌ছে। অ‌নেক‌দিন হুযুর পাক ছল্লাল্ল‌াহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম উনার সা‌থে হযরত আছছা‌মিনাহ আলাইহিাস সালাম উনার সম্মা‌নিত ছোহবত মুবারক ইখ‌তেয়ার হয়‌নি দীর্ঘ সময় ছোহবত মুবার‌ক থে‌কে দূ‌রে থাক‌া সকল ছাহাবা‌য়ে কিরাম র‌দ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুহ সহ সক‌লের জন্য ক‌ষ্টের বিষয়। তাই ,দীর্ঘ সময় পর হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম উনার আগমন হযরত আছছা‌মিনাহ আলাইহাস সালাম উনার জন্য ছি‌লো অপরীসীম প্রশা‌ন্তি ও আন‌ন্দের আর 'যিল্লু' শ‌ব্দের অর্থ যে‌হেতু শুধু ছায়া মুবার‌কের অর্থই প্রকাশ ক‌রে না। বরং রহমত, প্রশা‌ন্তি ,আশ্রয়, নৈকট্য ইত্যা‌দিও বুঝায়। (মিছবাহুল লুগাত,‌ফি‌রোজুল লুগাত, কামুস)

তাই এই প‌বিত্র হাদীছ শরীফ উনার দ্বারা হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম উনার ছায়া মুবারক ছি‌লো তা প্রমা‌ণিত হয় হাদীছ শরীফ উনার ম‌ধ্যে বলা হ‌য়ে‌ছে ,"এতো কো‌নো পুরু‌ষের ظل যিল্লু ব‌লে ম‌নে হয়। " হযরত উম্মাহাতুল মু'‌মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম তি‌নি বুঝ‌তে পে‌রে‌ছি‌লেন হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম তি‌নি আগমন কর‌ছেন। আর দীর্ঘ সময় পর এ মুবারক আগমন ছি‌লো ‌বেশুমার আনন্দের ও প্রশান্তির। তাই তি‌নি সেই বিষয়টা প্রকাশ ক‌রে‌ছেন। যেটা বা‌তিল ফিরকার‌ লো‌কেরা তা‌দের বই‌তেও প‌রোক্ষভা‌বে স্বীকার কর‌ছে তারা এই হাদীছ শরীফও উ‌ল্লেখ ক‌রে‌ছে , হযরত আছছা‌মিনাহ আলাইহাস সালাম তি‌নি ব‌লেন, "এমন‌কি এক সময় দি‌নের শেষা‌র্ধে, নি‌জে‌কে উনার  ظل  যিল্লু মুবারক উনার ম‌ধ্যে পাই তি‌নি আমার দি‌কে এ‌গি‌য়ে আস‌ছি‌লেন ''(মুসনা‌দে আহমদ,৬/১৬৪- ১৮২, আত ত্বাবাকাত আল্ কুবরা ,৮ /১০০)

ظل যিল্লু মুবারক উনার ম‌ধ্যে পাই অর্থ এম‌নি‌তেই বোঝা যা‌চ্ছে উনার নৈক‌ট্যের মা‌ঝে নি‌জে‌কে পাই। যেমন ,আমরা অনেকে বলে থা‌কি, "আব্দুর রহমান সা‌হেব তার প‌রিবারের জন্য ছায়া " এই ছায়া দ্বারা আব্দুর র‌হিম সা‌হে‌বের ছায়া বোঝা‌নো হ‌চ্ছে না বরং প‌রিবা‌রের জন্য আব্দুর র‌হিম সাহে‌বের গুরুত্ব বোঝা‌নো হ‌চ্ছে।
ব্যাখামূলক এমন হাদীছ শরীফসমূহ থে‌কে বা‌তিল ফিরকার লো‌কেরা বল‌তে চায় হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম উনার জি‌সিম মুবারক উনার ছায়া মুবারক ছি‌লো নাউযু‌বিল্লাহ! যা তা‌দের অজ্ঞতা ও মূর্খতাই বারংবার প্রকাশ ক‌রে হাদী‌সে শরী‌ফে ‌যিল্লু শব্দ লেখা থাকলেই তার অর্থ সরাস‌রি ছায়া করা যায়না। কর‌লে সেটা ক্ষেত্র বি‌শে‌ষে কুফরী পর্যন্ত হ‌য়ে যায়। আহ‌লে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত উনার আ‌ক্বিদা অনুযায়ী অর্থ কর‌তে হবে। যেমন, হাদীছ শরীফ উনার ম‌ধ্যে সরাস‌রি আল্লাহ পাক উনার শা‌নে যিল্লু ব্যবহার করা হ‌য়ে‌ছে। তাই কি বলা যা‌বে আল্লাহ পাক উনার ছায়া মুবারক আ‌ছে ?নাউযু‌বিল্লাহ !

ছহীহ হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়ে‌ছে –

عن حضرت ابى هريرة رضى الله تعالى عنه عن النبى صلى الله عليه و سلم قال: سبعة يظلهم الله فى ظله يوم لا ضل الا ظله

অর্থঃ হযরত আবু র‌দ্বিয়াল্ল‌াহু তায়ালা আনহু হ‌তে ব‌র্ণিত ,হুযুর পাক ছল্লাল্ল‌াহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম তি‌নি ইরশাদ মুবারক ক‌রেন, সাত ব্য‌ক্তি‌কে মহান আল্ল‌াহ পাক নি‌জের ছায়া মুবার‌কে আশ্রয় দান কর‌বেন , যে‌দিন মহান আল্লাহ পাক উনার ছায়া মুবারক ব্যতীত কোন ছায়া থাক‌বেনা (বুখারী শরীফ, কিতাবুল হুদুদ, বাবু ফাদ্ব‌লি মান তারাকাল ফাওয়া‌হিশ ,মুস‌লিম শরীফ ,‌কিতাবুয যাকাত বাবু ফাদ্ব‌লি ইখফা‌হিছ ছদাকাহ তিরমিযী শরীফ,‌কিতাবুয যুহুদ)

উক্ত হাদীছ শরী‌ফে মহান আল্লাহ পাক উনার ক্ষে‌ত্রে ছায়া মুবারক শব্দ‌টি ব্যবহার করা হ‌য়ে‌ছে। প্রশ্ন হ‌চ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার ছায়া মুবারক আ‌ছে ? নাউযু‌বিল্লাহ ! এখা‌নে ছায়া মুবারক বল‌তে যা বুঝায় তা অর্থ করা যা‌বেনা। এখা‌নে ছায়া মুবারক হ‌চ্ছে রহমত, করুনা ,দয়া সরাস‌রি অর্থ কর‌লে সেটা শি‌রিক হ‌বে, কুফরী হ‌বে। উক্ত হাদীছ শরীফখানা হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লা‌হি আলাই‌হি উনার কিতা‌বে উ‌ল্লেখ ক‌রেন –

عن حضرت ابى هريرة رضى الله تعالى عنه عن النبى صلى الله عليه و سلم قال: سبعة يظلهم الله فى ظله يوم لا ضل الا ظله

অর্থঃ হযরত আবু হুরায়রা র‌দ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হ‌তে ব‌র্ণিত , হুযুর পাক ছল্লাল্লাহ‌ু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম তি‌নি ইরশাদ মুবারক ক‌রেন, সাত ব্যক্তি‌কে মহান আল্লাহ পাক তি‌নি নি‌জের ছায়া মুবার‌কে আশ্রয় দানকর‌বেন,‌যে‌দিন মহান আল্লাহ পাক উনার ছায়া মুবারক ব্যতীত কোন ছায়া মুবারক থাক‌বেনা (মুসনা‌দে আহমদ বিন হাম্বল হাদীছ শরীফ নম্বর, ৯৪৯১)

বিখ্যাত ইমাম ও মুহা‌দ্দিছ হযরত তাবরানী রহমতুল্লা‌হি আলাই‌হি একটা হাদীছ শরীফ উ‌ল্লেখ ক‌রে‌ছেন,

و من كقل يتيما أو أرملة أظله الله فى ظله وأد خله جنته

অর্থঃ যে ব্যক্তি কোন ইয়াতীম অথবা কোন বিধবার ভরণ পোষনের ভার নেয় মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে উনার ছায়া মুবারকে আশ্রয় দান করবেন এবং তাকে উনার জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। (মু'জামুল আওসাত লি তাবরানী, হাদীছ শরীফ ৯২৯২)

এই প‌বিত্র হ‌াদীছ শরী‌ফেও "‌যিল্লু " শব্দ‌টির সরাস‌রি অর্থ করা যা‌বেনা। তাবীলী অর্থ গ্রহন কর‌তে হ‌বে। ছায়া মুবারক উনার অর্থ হ‌বে রহমত মুবারক। এরপর আ‌রো একটা হাদীছ শরীফ যা বিখ্যাত মুজতাহিদ ,হাম্বলী মাযহা‌বের ইমাম হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাই‌হি তি‌নি উ‌ল্লেখ ক‌রে‌ছেন,

عن ام المؤمنين حضوت عائشة عليها السلام عن رسول الله صلى الله عليه و سلم قال: أتدرون من السابقون إلى ظل الله عز وجل يوم القيامة؟ قالوا: الله و رسوله أعلم قال: الذين إذا أعطوا الحق قبلوه وإذا سئلؤه بذلوه و حكموا للناس كحكمهم لا نفسهم

অর্থঃ উম্মুল মু'‌মিনীন হয‌রত ছিদ্দীকা আলাইহ‌াস সালাম উনার থে‌কে ব‌র্ণিত হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল‌াম তি‌নি ছাহাবা‌য়ে কিরাম র‌দ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনা‌দের জিজ্ঞাসা কর‌লেন, কিয়ামতের দি‌নে কারা মহান আল্লাহ পাক আল্লাহ পাক উনার ছায়া মুবারকে আশ্রয় গ্রহ‌নে অগ্রগামী হ‌বেন ? হযরত ছাহাবা‌য়ে কিরাম র‌দ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগন ব‌ললেন , মহান আল্লাহ পাক এবং উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম ভাল জা‌নেন। অতঃপর‌ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্ল‌াম তি‌নি ইরশাদ মুবারক কর‌লেন, ঐসব ব্য‌ক্তি যা‌দের সাম‌নে হক্ব কোন বিষয় পেশ করা হ‌লে গ্রহন ক‌রে নেয় যা‌দের কাছে কিছু চাওয়া হ‌লে দান ক‌রে এবং অন্য‌দের ব্যাপা‌রেও নি‌জের মত ফায়সালা ক‌রে থা‌কে। (মুসনা‌দে আহমদ বিন হাম্বল ২৩৮২২ , শুয়াইবুল ঈমান বায়হাক্বী ১০৩৭৮)

ইমামুল মুহা‌দ্দিসীন মোল্লা আলী ক্বারী হানাফী রহমতুল্লা‌হি আলাই‌হি মিশকাত শরী‌ফের শরাহ‌তে একখানা প‌বিত্র হাদীছ শরীফ উ‌ল্লেখ ক‌রেন –

عن أبي رجاء العطا ردى رضى الله تعا لى عنه قال: سمعت حضرت أبا بكر عليه السلام،وهو علی المنبر، يقول: سمعت رسول الله صلى الله عليه و سلم، يقوك: "الوالي العادل المتو اضم ظل الله و ر محه في الا رض،"
অর্থঃ হযরত আবু র'জা উতুরিদী র‌দ্বিয়াল্লাহ তায়ালা আনহু উনার হ‌তে ব‌র্ণিত ,আ‌মি হযরত ছিদ্দী‌ক্বে আকবর আলাই‌হিস সালাম উনা‌কে মিম্বর দাঁ‌ড়ি‌য়ে খুতবা দানকা‌লে ইরশাদ মুবারক ক‌রতে শু‌নে‌ছি, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম তি‌নি ইরশাদ মুবারক ক‌রেন , ইনসাফগার ও‌ বিনয়ী শাসক পৃ‌থিবী‌তে মহান আল্লাহ পাক উনার ছায়া মুবারক ও বর্শা বা যুদ্ধাস্ত্র। (মিরকাত শরীফ ,‌মিশকাত শরীফ ,কিতাবুল ইমরায়াত ওয়াল কাজী )

হাফী‌জে হাদীছ ,মুজাদ্দি‌দে যামান হযরত জালালুদ্দীন সূয়ূ‌তি রহমতুল্লা‌হি আলাই‌হি তি‌নি উনার কিতা‌বে উ‌ল্লেখ ক‌রেন ,

ادبوا أولا دكم على ثلاث خصال: حب نبيكم وحب أهل بيته، و قرا ءة القران، فإن حملة القر آن في ظل الله يوم لا ظل إلا ظله مع أنبيا ئه و أصفيا ئه

অর্থঃ সাই‌য়্যিদুল মুরসালীন ,নূ‌রে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম তি‌নি ইরশাদ মুবারক ক‌রেন, তোমরা তোমা‌দের সন্তান‌কে ‌তিন‌টি গুন শিক্ষা দাও হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বত মুবারক ,আহ‌লে বাইত শরীফ আলাই‌হিমুস সালাম উনা‌দের মুহব্বত মুবারক ,প‌বিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত। কারণ কুরআন শরীফ তিলাওয়াতকারী ব্যক্তি হযরত নবী-রসূল আলাই‌হিমুস সালাম ও সূফীয়া‌নে কিরাম রহমতুল্লা‌হি আলাই‌হি উনা‌দের সা‌থে আল্লাহ পাক উনার ছায়া মুবার‌কে থাক‌বেন, সে‌দিন এই ছায়া মুবারক ব্যতীত আর কোন ছায়া মুবারক থাক‌বেনা। (জা‌মিউছ ছগীর লি ইমাম জালালুদ্দীন সূয়ূ‌তি রহমতুল্লাহি আলাই‌হি , হাদীছ শরীফ নম্বর, ৩১০)

হাদীছ শরী‌ফে ইরশাদ মুবারক হ‌য়ে‌ছে ,

 إغا السلطان ظل الله في الا رض، ورمحه في الا ر ض


অর্থঃ নিশ্চয়ই নেককার সুলতান যমী‌নে আল্লাহ পাক উনার ছায়া মুবারক ও উনার বর্শার সরুপ। (সুনা‌নে কুবরা বায়হাকী ,হাদীছ শরীফ নং ১৫৩০৪,শুয়াইবুল ঈমান বায়হাক্বীঃ হাদীছ শরীফ ৬৮৭২)

উপ‌রিউক্ত '‌জিল্লুল্লাহ' দ্বারা কোনটা‌তেই সরাস‌রি মহান মহান আল্লাহ পাক উনার ছায়া মুবারক বোঝা‌নো হয় নি ,বরং রহমত, করুনা, নৈকট্য, দয়া ,ইহসান বোঝা‌নো হ‌য়ে‌ছে এবং সকল ইমাম মুহাদ্দীসগন উনারা এই ব্যাখাই ক‌রে‌ছেন প্র‌তিটা শ‌ব্দের শা‌ব্দিক অর্থ কর‌লে সেটা‌তো গ্রহন করা যাবেই না বরং ঈমানহ‌নীর কারণ হ‌বে এ বিষ‌য়ে ক‌তিপয় দৃষ্টান্ত উ‌ল্লেখ করা হ‌লো –

و كلوا و اشربوا حتى يتبين لكم الخيط الا بيض من الخيط الا سود

"
এই আয়াত শরীফে ব‌র্ণিত  خيط  'খইতুন' শ‌ব্দের শা‌ব্দিক অর্থ সুতা। তৎকালীন আর‌বে শব্দটি এই অ‌র্থেই ব্যবহৃত হত।এখন خيط 'খইতুন' শ‌ব্দের অর্থ অনুযায়ী আয়াত শরীফ উনার অর্থ দাঁড়ায় , তোমরা সাহরী খাও যতক্ষন না তোমা‌তের জন্য সাদ‌া সুতা কা‌লো সুতা থে‌কে পার্থক্য হয়।"
উ‌ল্লে‌খিত আয়াত শরী‌ফ না‌যিল হ‌লে বিখ্যাত সাহাবী হয‌রত আদী ইব‌নে হা‌তিম র‌দ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ব‌লেন, আ‌মি একটা সাদা সুতা ও কা‌লো সুতা নি‌য়ে আমার বা‌লি‌শের নিচে রাখলাম ,সকাল পর্যন্ত উভয়টার মা‌ঝে কোন পার্থক্য কর‌তে পারলাম না। প‌রে এ সম্প‌র্কে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম উনা‌কে জিজ্ঞাসা করা হ‌লে তি‌নি বল‌লেন, অত্র আয়াত শরীফে الخيط الا سود" আল খইতুল আস‌ওয়াদু" দ্বারা ছুব‌হি কা‌যিব এবং الخيط الا بيض "আল খইতুল আবইয়াদু" দ্বারা ছুব‌হি ছা‌দিক কে বোঝা‌নো হ‌য়ে‌ছে অর্থাৎ আয়াত শরীফ উনার মূল অর্থ হ‌লো "তোমরা সাহরী খাও রা‌তের অন্ধকার হ‌তে সুব‌হি সা‌দিক উ‌দিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত" (বুখারী শরীফ কিতাবুছ‌ ছিয়াম,‌তিরমিযী শরীফ ২য় জি;১২০ পৃষ্ঠা ,ইব‌নে কাসীর ১ম জিঃ২৯০ পৃষ্ঠা )
এখা‌নে য‌দি সাদা স‌ুতা ও কা‌লো সুতা অর্থ করে সাহরী খাওয়া চল‌তে থা‌কে তাহ‌লে এক‌টি রোযাও কি হ‌বে ? সর্ব‌ক্ষে‌ত্রেই শাব্দিক অর্থ নেও
যায় না। তদ্রুপ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়া সাল্ল‌াম উনার শা‌নে '‌যিল্লু' লেখা থাক‌লেই উনার ছায়া মুবারক আ‌ছে সেটা‌ প্রমা‌ণিত হয় না। বরং এখা‌নে তাবীলী অর্থ প্রদান কর‌তে হ‌বে কেননা ছহীহ হাদীছ শরীফ , এবং অসংখ্য ইমাম মুজতা‌হিদ উনাদের বক্ত‌ব্যে প্রমা‌ণিত হয় হুযুর পাক ছল্লাল্ল‌াহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম উনার জি‌সিম মুবারক উনার ছায়া মুবারক ছি‌লো না।
প‌বিত্র কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ উনার অ‌নেক স্থা‌নে শা‌ব্দিক অর্থ না নি‌য়ে তাবীলী তথ‌া ব্যাখামূলক অর্থ গ্রহন কর‌তে হ‌বে কারণ যে সকল শ‌ব্দের সরাস‌রি অর্থ কর‌লে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম উনার শা‌নের খিলাফ হ‌য় সে সকল শব্দ ব্যবহার কর‌লে কুফরী হ‌বে।

উদাহরনসরুপ উ‌ল্লেখ করা যায় যে ,মহান আল্লাহ পাক সূরা বাক্বারা শরীফ উনার মধ্যে ৫৪ নং আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক ক‌রেন,
وَمَكَرُوا وَمَكَرَ اللَّهُ وَاللَّهُ خَيْرُ الْمَاكِرِينَ
এ প‌বিত্র আয়াত শরীফ উনার প্রকৃত বা সরাস‌রি অর্থ হ‌লো -" আর কা‌ফি‌রেরা ধোকাবাজী কর‌লো ,মহান আল্লাহ পাক তিনি‌ে ধোকাবাজী কর‌লেন ,আর মহান আল্লাহ পাক তি‌নিও উত্তম ধোকাবাজ (নাউযু‌বিল্ল‌াহ!নাযি­ু‌বিল্ল‌াহ!নাউযু‌বিল­্লাহ)
এরুপ অর্থ যে কুফরীর অন্তর্ভুক্ত এ ব্যাপা‌রে কা‌রোর দ্বিমত নেই আহ‌লে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত উনার আক্বীদা মতে মহান আল্লাহ পাকمَكَرُ "মকর " বা ধোক‌বাজী হ‌তে সম্পূর্ণই প‌বিত্র। অথচ দু‌নিয়ার সকল লুগাত বা অ‌ভিধান সমূ‌হেইمَكَرُ "মকর" শ‌ব্দের অর্থ "‌ধোকাব‌াজী "  ব‌লে উ‌ল্লেখ আ‌ছে। ইমামুল লুগাবী , আবুল ফাইজ সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুরতাজ‌া আল হুসাইনী আল ওয়া‌সেত্বী আল যা‌বেদী আল হানাফী রহমতুল্লা‌হি আলাই‌হি উনার বিখ্যাত আরবী লুগাত "তাজ‌লি আরু মি জাওয়া‌হিরিল কামুস" এর ৩য় জিঃ ৫৪৮ পৃষ্ঠায় উ‌ল্লেখ ক‌রে‌ন-
(المكر)الخديعة والا حتيال و قال الليث احتيا فى خفية ......... و قال ابن الا ثير مكر الله ايقا ع بلا ئه با عد ائه دون اوليائه

অর্থঃ مَكَرُ'মকর 'শ‌ব্দের অর্থ হ‌চ্ছে - ধোক‌বাজী, ঠগবাজী ,প্রতারণা হযরত আবু লাইছ রহমতুল্লা‌হি আলাই‌হি ব‌লেন গোপন প্রতারণা। , , , ,হযরত ইবনুল আছী রহমতুল্লা‌হি আলাই‌হি ব‌লেন, মহান আল্ল‌াহ পাক মকর ক‌রে‌ছেন ,একথার অর্থ হ‌লো ,উনা‌র শত্রু‌দের শা‌স্তি প্রদান ক‌রে‌ছেন, বন্ধু‌দের নয় "
সকল ইমাম মুহা‌দ্দিছগন একমত 'মকর 'শ‌ব্দের সরাস‌রি অর্থ আল্ল‌াহ পাক উনার শা‌নে ব্যবহার করা যা‌বেনা। তা'বীলী বা ব্যাখামূলক অর্থ ব্যবহা কর‌তে হ‌বে।
এখা‌নে অর্থ হ‌বে তারা ধোকাবাজী কর‌লো আর মহান আল্লাহ পাক হিকমত অবলম্বন কর‌লেন। তি‌নি উত্তম হিকমতওয়ালা

মহান আল্লাহ পাক "সূরা দূহা " উনার ৭ নং আয়াত শরী‌ফে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম উনা‌কে লক্ষ্য ক‌রে ইরশাদ মুবারক ক‌রেন~
وَوَجَدَكَ ضَالًّا فَهَدَى
আয়াত শরীফ উনার সরাস‌রি অর্থ কর‌লে দাঁড়ায় , -
মহান আল্লাহ পাক আপনা‌কে গোমরাহ,পথভ্রষ্ট, বিভ্রান্ত পে‌য়ে‌ছেন অতঃপর হিদা‌য়েত দি‌য়ে‌ছেন। (নাউযু‌বিল্লাহ)
অথচ আহ‌লে সুন্নাত ওয়াল জামায়া‌তের আক্বীদা মোতাবেক এ অর্থ ‌যে কুফরীর অন্তর্ভুক্ত তা‌তে বিন্দুমাত্র ও স‌ন্দেহের অবকাশ নেই কুফরী তো হ‌বেই সাথেসাথে অন্য আয়াত শরীফ উনা‌কেও অস্বীকার করা হ‌বে। কারণ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম উনারে সম্প‌র্কে আল্লাহ পাক তি‌নি ইরশাদ মুবারক ক‌রেন-
مَا ضَلَّ صَاحِبُكُمْ وَمَا غَوَى
অর্থঃ ‌তে‌ামা‌দের ছা‌হিব হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তি‌নি কখ‌নো গোমরাহ হননি এবং কখ‌নো বিপথগামী হন‌নি। (সূরা নজম শরীফঃ আয়াত শরীফ ২)
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামে পাক উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
لَيْسَ بِي ضَلَالَةٌ وَلَكِنِّي رَسُولٌ مِنْ رَبِّ الْعَالَمِينَ
অর্থঃহে আমার  ক্বওমা! আমার নিকট গোমরাহী বলতে কিছুই নেই বরং আমি মহান আল্লাহ পাক উনারপ্রেরিত রসূল“(পবিত্র সূরা আরাফ শরীফঃপবিত্র আয়াত শরীফ ৬১)

উপ‌রিউক্ত বর্ণনা দ্বারা এটাই প্রমা‌ণিত হয় যে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম ‌তি‌নি সর্বদাই হিদা‌য়ে‌তের উপর ছি‌লেন অর্থাৎ তি‌নি হিদা‌য়েত সহ প্রে‌রিত হ‌য়ে‌ছেন এবং তি‌নিই হচ্ছেন হিদা‌য়ে‌ত উনার মূল অর্থাৎ হিদা‌য়েত দানকারী।

অথচ সমস্ত লুগাত বা আরবী অ‌ভিধা‌নে ‌"দল্লু" শ‌ব্দের অর্থ ‌গোমরাহ , পথভ্রষ্ট ইত্যা‌দি ব‌লে উ‌ল্লেখ আ‌ছে যেমন ,‌বিশ্ববিখ্যাত আরবী লুগাত "তাজুল আরুস" এর ৭ম খ‌ন্ডের ৪১০ পৃষ্ঠায় উ‌ল্লেখ আ‌ছে,
(والضلل محركة قد الهدى) و الر شاد وضال الر اغب هو العدو عن الطر يق المستقيم و تضا د هد اية

অথঃ 'দল্লু' বলা হয় হিদায়ে‌তের বিপরীত বিষয়কে অর্থ‌াৎ গোমরাহী ,পথভ্রষ্ঠ ও বিভ্রা‌ন্তি‌কে।
সূরা দুহায় বর্নিতদল্লুশব্দের প্রকৃত বা লুগাতী অর্থ হল-গোমরাহ,পথভ্রষ্ট,বিভ্রান্ত ইত্যাদি

এখন প্রশ্ন হ‌লো -হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে 'দল্লু' শ‌ব্দের শা‌ব্দিক অর্থ গ্রহন করা জা‌য়িজ হ‌বে কি ?
মূলতঃ ক‌শ্মিনকা‌লেও তা জা‌য়েজ হ‌বে না এবং এরুপ অর্থ গ্রহন কর‌লে‌ও কাট্টা কুফরী ও চিরজাহান্নামী হ‌বে।


তাই অনুসরণীয় সকল মুফাস্সিরী‌নে কিরামগন উক্ত আয়াত শরীফ উনার সরাস‌রি বা শা‌ব্দিক অর্থ গ্রহন না ক‌রে তা'বীলী অর্থ গ্রহন করছেন বি‌ভিন্ন মুফাস্সিরী‌ন বি‌ভিন্নভা‌বে উক্ত আয়াত শরীফ উনার তা'বীল ক‌রে‌ছেন তন্ম‌ধ্যে –

 وَوَجَدَكَ ضَالًّا فَهَدَى

এ প‌বিত্র আয়াত শরীফ উনার সুন্দরতম তা'বীলী অর্থ হ‌লো , হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়া সাল্ল‌াম!আপনা‌কে মহান আল্লাহ পাক কিতাবহীন পে‌য়ে‌ছেন ,অতঃপর আপনা‌কে কিতাব হা‌দিয়া মুবারক ক‌রে‌ছেন।" এখা‌নে "দল্লু " শব্দ‌টি কিতাবহীন অ‌র্থে গ্রহন করা হ‌য়ে‌ছে।
উপ‌রোক্ত দলীলসমূহ দ্বারা প্রমা‌ণিত হ‌লো সব‌ক্ষে‌ত্রে শা‌ব্দিক অর্থ গ্রহন করা যা‌বেনা। যেমন মহান আল্লাহ পাক উনার মুবারক শা‌নে "মকর" এবং হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শা‌নে "দল্লু " শব্দ ব্যবহার করা যা‌বেনা। কারণ এই শব্দ উনা‌দের শান মুবারক উনার খিলাফ। এখা‌নে তা'বীলী বা ব্যাখামূলক অর্থ গ্রহন কর‌তে হ‌বে। যা উপ‌রে আ‌লোচনা করা হ‌য়ে‌ছে।

শুধু তাই নয় ,দেওবন্দী তাবলিগী‌দের মুরুব্বী মালানা যাকা‌রিয়া সা‌হেব‌কেও ত‌ার মেয়েও একটা চি‌ঠি লে‌খে চি‌ঠির শুরু‌তে যে ভাষায় স‌ম্বোধন ক‌রে,

মুহতারাম,মুকাররম!
"
আল্লাহ আমা‌দের উপর আপনার ছায়া মুবারক কে দীর্ঘা‌য়িত করুন। "(শায়খুল হা‌দিস এর পাঁচ কণ্যা ,পৃষ্ঠ‌া ৬২। লেখক: শা‌হেদ সাহানপুরী , প্রকাশনাঃ আ‌কিক পাব‌লি‌কেশন্স,১১/১ বাংলাবাজার ১১০০ )
এখা‌নে "ছায়া মুবারক" মা‌নে কি বোঝা‌নো হ‌য়ে‌ছে ? নিশ্চয়ই শরী‌রের ছায়া কে বোঝা‌নো হয়‌নি? নি‌জে‌দের ব্যাপা‌রে ছায়া য‌দি আশ্রয় বোঝা‌নো হয় ত‌বে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়া সাল্ল‌াম উনার শান মুবার‌কে এমন পা‌রিভা‌ষিক অর্থ বুঝ‌তে তা‌দের কষ্ট হয় কেন?
এরপরও য‌দি কেউ ছহীহ হাদীছ শরীফ ও ইমাম মুজতা‌হিদ উনা‌দের মতামত‌কে উপেক্ষা ক‌রে, তা‌দের ফয়সালা সম্প‌র্কে মহান আল্ল‌াহ পাক তি‌নি ইরশাদ মুবারক ক‌রেন –
وَمَنْ يُشَاقِقِ الرَّسُولَ مِنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ الْهُدَى وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيلِ الْمُؤْمِنِينَ نُوَلِّهِ مَا تَوَلَّى وَنُصْلِهِ جَهَنَّمَ
অর্থঃ "যে কা‌রো নিকট হিদা‌য়েত বিক‌শিত হওয়‌ার পর হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরুদ্ধাচারণ কর‌বে, আর মু'‌মিন উনা‌দের পথ ছে‌ড়ে ভিন্ন প‌থে চলে, আ‌মি তা‌কে সে দি‌কেই ফিরা‌বো যে‌দি‌কে সে ফিরেছে এবং তা‌কে জাহান্না‌মে প্র‌বেশ করা‌বো। "
(
সূরা নিসা শরীফঃ আয়াত শরীফ ১১৫ )
যেখা‌নে হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমা‌ণিত হুযুর পাক ছল্লাল্ল‌াহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম উনার জি‌সিম মুবার‌ক উনার ছায়া মুবারক ছি‌লো না আর এই বিষয়টাই সকল ইমামগন বিনা স‌ন্দে‌হে মে‌নে নি‌য়ে‌ছেন তাই এই ম‌তের বিরোধীতাই হ‌চ্ছে নি‌জে‌কে জাহান্নামী সাব্যস্ত করা।
যে‌হেতু আমরা দেখ‌তে পেলাম সকল মুহাদ্দীসগন একমত যে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়া সাল্ল‌াম উনার ছায়া মুবারক ছি‌লো না। তাই এই ম‌তের বি‌রোধীতা করা উম্ম‌তের ঐক্যম‌তের বি‌রোধীতা করার নামান্তর। যার ফল নি‌শ্চিত জাহান্নাম।
আর এ প্রস‌ঙ্গে প‌বিত্র হাদীছ শরীফ উনার ম‌ধ্যে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়া সাল্লাম তি‌নি ইরশাদ মুবারক ক‌রেন ,

لا حيمع الله أمتى على الضلالة يد الله على الجما عة فإنه من شذ سذ فى النار

অর্থঃ মহান আল্লাহ পাক ‌তি‌নি আমার উম্মত‌কে কখ‌নো গোমরাহীর মধ্যে একমত কর‌বেন না। আহ‌লে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনার উপর মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরতী হাত মুবারক র‌য়ে‌ছে। যারা এই জামায়াত থে‌কে বি‌চ্ছিন্ন হ‌বে তারা জাহান্না‌মে প্র‌বেশ কর‌বে। (তির‌মিযী শরীফ-‌কিতাবুল ফিতান, মুস্তাদরা‌কে হা‌কিম ৩৫৯ )
অন্য হাদীছ শরীফ উনা‌র ম‌ধ্যে ইরশাদ মুবারক হ‌য়ে‌ছে -

من فارق الجما عة شبرا فقد خلع ربقة الإ سلا م من عنقه

অর্থঃ যে আহ‌লে সুন্নত জামায়াত থে‌কে নি‌জে‌কে বি‌চ্ছিন্ন কর‌লো সে যেন নি‌জের গলা থে‌কে প‌বিত্র ইসলাম উনার বন্ধন‌কে খু‌লে ফেললো। (সুনা‌নে আবু দাউদ -‌কিতাবুস সুন্নাহ)
প‌বিত্র হাদীছ শরীফ উনার ম‌ধ্যে আ‌রো ইরশাদ মুবারক হয়ে‌ছে -
قال رسول اللهزصلى الله عليه و سلم اتبعوا السواد الا عظم فانه من شذ فى النار
অর্থঃ হুযুর পাক ছল্লাল্ল‌াহু আলাই‌হিস সালাম তি‌নি ইরশাদ মুবারক ক‌রেন ,‌তোমরা বড় দ‌লের অনুসরন ক‌রে‌া! কারণ যে জামাত (আহ‌লে সুন্নাহ) হ‌তে বি‌চ্ছিন্ন হ‌য়ে গে‌ছে তা‌কে পৃথকভা‌বে অগ্নী‌তে নি‌ক্ষেপ করা হ‌বে !(মিশকাত শরীফ-‌কিতাবুল ঈমান -বাবুল ই'‌তিসাম বিল কিতাব ওয়াস সুন্নাহ-হাদীছ শরীফ ১৬৪)
সুতরাং হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাই‌হি ওয়া সাল্ল‌াম উনার জি‌সিম মুবারক উনার ছায়া ছি‌লো ন‌া এটাই আহ‌লে স‌ুন্নত ওয়াল জামায়াত উনার আক্বীদা এ বিষ‌য়ে সক‌লে একমত উপ‌রোক্ত আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফ থে‌কে প্রমা‌ণিত হ‌লো এই বিষয়‌কে যারা অস্বীকার কর‌বে তারা ইসলাম থে‌কে খা‌রিজ , আহ‌লে সুন্নত ওয়াল জামায়াত থে‌কে বি‌চ্ছিন্ন ,সম্মা‌নিত দ্বীন ইসলাম উনার বন্ধন থে‌কে নি‌জে‌কে মুক্ত বা জুদাকারী, যা‌দের শেষ প‌রিণ‌তি জাহান্না‌মের ভয়াবহ আযাব। নাউযু‌বিল্লাহ !

মহান আল্ল‌াহ পাক তি‌নি পৃ‌থিবীর সকল মুসলমা‌নের আক্বীদা বিশুদ্ধ করার সা‌থে সা‌থে স‌র্বোচ্চ হুস‌নে যন হা‌ছিল ক‌রে ইখলাছ উনার সা‌থে আমল করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন (সমাপ্ত)

No comments

ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য।

  ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য। ডাল খাওয়ার ফলে কলব প্রসারিত হয় এবং চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পায়। পূর্ববর্তী হযরত নবী-রসুল আলাইহিমুস সালাম উ...

Powered by Blogger.