Header Ads

Islamic Quotes Urdu Facebook Cover. QuotesGram

পবিত্র মি’রাজ শরীফ উনার বর্ণনা




عن انس ابن مالك رضى الله تعالى عنه قال كان ابو ذريحدث ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال فرج عن سقف بيتى وانا بمكة فنزل جبرئيل عليه السلام فقرج صدرى ثم غسله بماء زمزم ثم جاء بطست من ذهب ممتلئ حكمة رايمانا فافرغه فى صدرى ثم اطبقه ثم اخذ بيدى فعرج بى الى السماء- (بخارى شريف(
তরজমা : হযরত আনাছ ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত- তিনি বলেন, হযরত আবূ যর গিফারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এ মর্মে পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেন যে, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, “আমি মক্কা শরীফে অবস্থান করা কালিন সময়ে একদা আমার ঘরের ছাদ উন্মুক্ত হলো এবং তা দিয়ে হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম অবতরণ করলেন। অতঃপর আমার সীনা মুবারক চাক (বক্ষ বিদীর্ণ) করে আমার ক্বলবকে বের করে ফেললেন। তারপর ঈমান ও হিক্বমতে পরিপূর্ণ স্বর্ণ নির্মিত একটি পাত্র নিয়ে আসলেন এবং আমার ক্বলবকে তার মধ্যে রেখে জমজমের পবিত্র পানি দ্বারা গোসল করালেন। অতঃপর তা পুণরায় আমার সীনা মুবারক উনার মধ্যে রেখে দিয়ে বক্ষ মুবারককে সংযুক্ত করে দিলেন। অতঃপর তিনি আমার হাত ধরলেন এবং আমাকে সঙ্গে নিয়ে আকাশের দিকে গমন করলেন।” (বোখারী শরীফ)
তাশরীহ : মহান আল্লাহ পাক আখেরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে উনার কুদরতের অফুরন্ত নিদর্শন সমূহকে সরেজমিনে প্রত্যক্ষ করানোর জন্য (যা প্রত্যক্ষ করার মত), আর শুনানোর জন্য (যা শুনার মত) মহান আল্লাহ পাক উনার সাক্ষাতে নিয়ে যান, তাকে মি’রাজ শরীফ বলা হয়।
এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে পবিত্র সূরা বণী ইস্রাঈল শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
لنريه من اياتنا
অর্থ : “যাতে আমি উনাকে আমার কুদরতের নিদর্শনসমূহ দেখিয়ে দেই।”
ঘটনার বিবরণে মহান আল্লাহ পাক আখেরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “আমি মক্কা শরীফে অবস্থান করার সময় একদা আমার ঘরের ছাদ উন্মুক্ত হলো এবং তা দিয়ে হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম আগমন করেন।” অপর এক বর্ণনায় আছে যে, “আমি কা’বা শরীফ উনার হাতীমে শায়িত ছিলাম।”
এ দ্বিবিধ মতের ব্যাখ্যায় মুহাদ্দিসে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, মূলত নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত উম্মে হানী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার ঘরেই শায়িত ছিলেন, পরে সেখান থেকে কা’বা শরীফ উনার হাতিমে নিয়ে আসা হয়। অর্থাৎ কোন কোন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে হযরত উম্মে হানী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার ঘর থেকে বর্ণনা শুরু করা হয়েছে। আর কোন কোন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে হাতিম থেকে বর্ণনা শুরু করা হয়েছে।

বক্ষ মুবারক বিদীর্ণ
মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শ্রেষ্ঠত্বের বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে- শরহে ছুদুর বা সীনা মুবারক বিদীর্ণ। কেননা কোন নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের জীবনী মুবারকে এরূপ ঘটনা সংঘটিত হয়নি। আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হায়াতে তাইয়্যিবায় মোট চারবার সীনা মুবারক চাক করা হয়।
প্রথম হযরত হালিমা সাদীয়া আলাইহাস সালাম উনার গৃহে। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বয়স মুবারক ছিল প্রায় পাঁচ বছর। দ্বিতীয়বার ১৪/১৫ বছর বয়স মুবারকে, তৃতীয়বার আনুষ্ঠানিকভাবে নুবুওওয়াত প্রাপ্তির পূর্বে, চতুর্থবার মি’রাজ রজনীতে।
প্রতিবারই সীনা মুবারক চাক করে মহান আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত তথা ঈমান, ইলম ও হিকমত দ্বারা ক্বলব পূর্ণ করা হয়। এ প্রসঙ্গে মুসলিম শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
ثم ملئ ايمانا وحمكة.
অর্থ : “অতঃপর তার মধ্যে ঈমান, ইলম ও হিকমত (জ্ঞান-বিজ্ঞান) ভরিয়ে দেয়া হলো।”
আজকাল  কিছু লোক কিল্লতে ইলম, কিল্লতে ফাহ্ম- কম জ্ঞান ও কম বুঝের কারণে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মর্যাদা-মর্তবা উপলব্ধি করতে না পেরে ঈমান হরণকারী নানা প্রকার মন্তব্য পেশ করে থাকে। তারা বলে- “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সীনা মুবারক চাক করে সেখান থেকে কু-প্রবৃত্তিসহ অন্যান্য খারাপ জিনিসগুলো বের করে ফেলে দেয়া হয়েছে।”
অথচ এরূপ আক্বীদা পোষণ করা সম্পূর্ণরূপে কুফরী। কেননা মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শরীর মুবারকে খারাপ বা নাপাক বলতে কিছুই ছিলনা। যা ছিল, তা সম্পূর্ণ পুত পবিত্র ও বরকতময়। এ প্রসঙ্গে হানাফী মাযহাবের বিশ্ব বিখ্যাত ফতওয়ার কিতাব “রদ্দুল মোহতার”-এর ১ম খন্ডে উল্লেখ করা হয়েছে যে, “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রশ্রাব ও পায়খানা মুবারকসহ শরীর মুবারকে যা কিছু ছিল, তা সম্পূর্ণরূপে পবিত্র থেকে পবিত্রতম ও বরকতময়। আর যারা তা পান করবে বা খাবে, তাদের জন্য জাহান্নামের আগুণ হারাম হয়ে জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, হযরত মালিক ইবনে সিনান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ওহুদের দিন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রক্ত মুবারক পান করে ফেললে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “তোমাকে কখনো জাহান্নামের আগুণ স্পর্শ করবে না।” (সুবহানাল্লাহ)
মি’রাজ শরীফে গমন

নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বক্ষ মুবারক বিদীর্ণের পর একটি সওয়ারী নিয়ে আসা হয়। যার বর্ণনায় পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “আমার কাছে একটি বুরাক নামক সওয়ারী নিয়ে আসা হয়। যার রং ছিল সাদা এবং গাধার চেয়ে একটু বড় এবং খচ্চর অপেক্ষা কিছু ছোট।” (মুসলিম শরীফ)
অত:পর বুরাকে আরোহণ করে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বায়তুল মুকাদ্দাসে পৌঁছেন এবং সেখানে সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণ উনাদেরকে নিয়ে দু’রাকায়াত নামায আদায় করেন। পরে হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সঙ্গে নিয়ে চলতে লাগলেন। পথিমধ্যে হযরত নবী আলাইহিমুস সালামগণ উনাদের সাথে সাক্ষাত হয়। অতঃপর “সিদরাতুল মুনতাহা” পর্যন্ত পৌঁছেন। সেখান থেকে “রফরফে” করে আরশে আ’যীমে পৌঁছে মহান আল্লাহ পাক উনার দীদার লাভ করেন। মহান আল্লাহ পাক পবিত্র সূরা নজম শরীফ উনার মধ্যে এ প্রসঙ্গে বলেন, “তিনি নিকটবর্তী হলেন এবং ঝুঁকে পড়লেন। তখন দু’ধনুকের ব্যবধান ছিল অথবা তার চেয়ে আরো কম।”
পরে মহান আল্লাহ পাক নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হাদিয়াস্বরূপ পাঁচ ওয়াক্ত নামায দান করেন। যে নামাযকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মু’মিনদেরজন্য মি’রাজ বলে উল্লেখ করেছেন। 

No comments

ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য।

  ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য। ডাল খাওয়ার ফলে কলব প্রসারিত হয় এবং চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পায়। পূর্ববর্তী হযরত নবী-রসুল আলাইহিমুস সালাম উ...

Powered by Blogger.