পবিত্র ১লা শাওওয়াল শরীফ: সাইয়্যিদাতুনা হযরত নাক্বীবাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার সুমহান পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার সুমহান দিন
পবিত্র পহেলা শাওওয়াল শরীফ আসমান ও যমীনবাসীর জন্য মহা খুশির দিন। এদিন সাইয়্যিদাতুনা
হযরত নাক্বীবাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার সুমহান বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার সুমহান
দিন। একই সঙ্গে আমাদের সকলের ঈদের দিন। পরম ইতমিনানের দিন। মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহু
ওয়া তায়ালা এবং উনার প্রিয়তম রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, রহমতুল্লিল আলামীন, রউফুর রহীম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা পবিত্র পহেলা শাওওয়াল শরীফ-এ প্রাণের আক্বা, ক্বিবলা কা’বা,
মুজাদ্দিদে
আ’যম, সাইয়্যিদুনা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা
আলাইহিস সালাম এবং উম্মুল উমাম, ওলীয়ে মাদারযাদ, আওলাদুর রসূল, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা
হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনাদের লখতে জিগার, উনাদের নূরে চশম, ক্বায়িম-মাক্বামে হযরত
যাহরা আলাইহাস সালাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত নাক্বীবাতুল
উমাম আলাইহাস সালাম উনার সীমাহীন ছানা-ছিফত মুবারক প্রকাশের কোশেশের মাধ্যমে আমাদের
নিজেদেরকে সম্মানিত ও গৌরবান্বিত করার পথকে অবারিত করে দিয়েছেন। মহান আল্লাহ পাক উনার
এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের পরিপূর্ণ সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের দুরূহ বিষয়কে
সহজ ও সম্ভব করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
বলা হয়, ওলীআল্লাহগণ বিশেষত, মুজাদ্দিদগণ উনারা ইচ্ছাহীন। তার অর্থ এই নয় যে, উনারা রূহানী কুওওয়ত,
ক্ষমতা, শক্তি, সাহস, প্রভাব, রোব ও বীরত্বহীন। উনাদের
হিম্মতহীন হওয়ার অর্থ হলো, উনাদের নিজস্ব কোনো অভিপ্রায়
নেই। উদ্দেশ্য নেই, সিদ্ধান্ত নেই। উনাদের
কোনো কাজই আপন ইচ্ছায় সম্পাদিত হয় না। মহান আল্লাহ পাক উনার এবং নূরে মুজাসসাম, ছাহিবু ক্বাবা কাওসানী আও আদনা, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের
মুবারক ইচ্ছা, ফায়ছালা ও নির্দেশনার সঙ্গে মুজাদ্দিদগণ
উনারা উনাদের মত ও পথ মিলিয়ে দেন। এমন নিগূঢ় নৈকট্য এবং অবিচ্ছেদ্য নিয়ন্ত্রণে উনাদের
কাছে জগৎ-সংসারের ভালো-মন্দ, ইহকাল-পরকালের সবই একাকার।
এ অর্থে উনারা ইচ্ছাহীন। উনাদের মুবারক বংশ বিস্তারের ক্রমধারাও এ নিয়ন্ত্রণেরই অন্তর্ভুক্ত।
সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা কাবা আলাইহিস সালাম এবং ক্বায়িম-মাক্বামে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন
আলাইহিন্নাস সালাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল
উমাম আলাইহাস সালাম উনাদের আহাল ও ইয়াল শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সকলেই নবী উদ্যানের
সুরভিত গোলাপ। নববী ধারায় উনারা যে মুবারক বাগান রচনা করেছেন, সে বাগানের প্রথম ফুল হলেন- সাইয়্যিদাতুন নিসা, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, ক্বায়িম-মাক্বামে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম, ত্বহিরা, ত্বইয়িবা, মাহবুবা, ফক্বীহা, নূরে হাবীবা, নূরে মদীনা, গুলে মুবীনা, রাহনুমায়ে দ্বীন, ছিদ্দীক্বায়ে কুবরা,
মিছদাক্বে
কুরআন ওয়াল হাদীছ, মাহবুবায়ে ইলাহী, ছাহিবাতুল ইলম ওয়াল হিকাম ওয়াল কাশফ ওয়াল কারামত, উম্মু আবীহা, খইরু নিসায়িল আলামীন, ছাহিবাতুল হুসনা,
ছাহিবাতু
নিয়ামাতিল্লাহ, ছাহিবাতু হিদায়াহ, ওয়ারিছাতুল নাবিইয়ী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, বাহারুল উলুম, ওলীয়ে মাদারযাদ, আওলাদুর রসূল, হাবীবাতুল্লাহ, হাবীবাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত নাক্বীবাতুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “মহান আল্লাহ পাক উনার অভিপ্রায় যে, তিনি উনার প্রিয়তম হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম এবং হযরত
উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করে যমীনে পাঠাবেন।”
অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে পূত-পবিত্র করেই সৃষ্টি করেছেন।
সাইয়্যিদাতুনা হযরত নাক্বীবাতুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার
মিছদাক্ব।
উনার মুবারক বিষয়গুলোতে আমাদের অত্যন্ত সীমিত উপলব্ধিতে অগ্রগণ্য যে বিষয়টি স্থান
লাভ করে তাহলো, বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ, শত শত বছর, হাজার বছর ধরে কায়িনাত উন্মুখ প্রতীক্ষায় ছিলো।
একজন সাইয়্যিদুনা হযরত খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার জন্য।
প্রতীক্ষায় ছিলো একজন সাইয়্যিদাতুনা হযরত নাক্বীবাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার
জন্য।
প্রতীক্ষায় ছিলো একজন সাইয়্যিদাতুনা হযরত নিবরাসাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার জন্য।
প্রতীক্ষায় ছিলো একজন শাফিউল উমাম হযরত শাহদামাদ আউওয়াল ক্বিবলা আলাইহিস সালাম
উনার জন্য।
প্রতীক্ষায় ছিলো সাইয়্যিদাতুল উমাম হযরত শাহ নাওয়াসী ক্বিবলাতাইন আলাইহিমাস সালাম
উনাদের জন্য।
প্রতীক্ষায় ছিলো সাইয়্যিদুল উমাম হযরত শাহ নাওয়াসা ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার
জন্য। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত
মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম এবং উম্মুল উমাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনারা কায়িনাতবাসীর সে ব্যাকুল
প্রত্যাশা পূরণ করেছেন। আরো কতো যে নিয়ামত দানে উনারা কুল-কায়িনাতের আরো কতো আরজু পূরণ
করবেন, তা আমরা জানি না। শুধু জানি এবং
মন-প্রাণে বিশ্বাস করি যে, যাঁরা আছেন, আসবেন, থাকবেন পর্যায়ক্রমে উনারা
সকলেই হবেন কায়িনাতের কর্ণধার। হবেন কায়িনাতবাসীর হিদায়েতের নূরানী আলোকবর্তিকা। সুবহানাল্লাহ!
হবেন বিশ্ব জগতের অভিভাবক। কারণ কুফরীর জগদ্দল পাথর ভাঙতে হবে। বিদয়াত-বেশরা মিছমার
করতে হবে। বাতিল ধ্বংস করতে হবে। খিলাফত পরিচালনা করতে হবে।
নাক্বীবাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ঊলা ক্বিবলা কা’বা আলাইহাস সালাম উনার শাদী মুবারক
অনুষ্ঠিত হয় পবিত্র ২২ শাওওয়াল শরীফ-এ। সুবহানাল্লাহ! উনার যাওজুল মুহতারাম হলেন নকশায়ে
হায়দার, বাহরুল উলুম, কুতুবুল আলম, শাফিউল উমাম, আওলাদুর রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত শাহদামাদ
হুযূর ক্বিবলা কা’বা আলাইহিস সালাম। উনার ইলম, প্রজ্ঞা, তাক্বওয়া, তাওয়াল্লুক-নিছবত,
মুহব্বত-মা’রফিাতের
পরিধি বেমেছাল। তিনি নাক্বীবাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ঊলা ক্বিবলা কা’বা আলাইহাস সালাম
উনার যাওজুল মুহতারাম। এটি উনার সীমাহীন মর্যাদা ও সম্মানের প্রতীক এবং এটি উনার সর্বোচ্চ
লক্বব মুবারক।
ক্বিয়ামতব্যাপী হক্ব মত ও পথ প্রদর্শন ও বাস্তবায়ন এবং হিদায়েত ও নছীহতের অমীয়
ধারা অক্ষুণœ রাখার লক্ষ্যে নাক্বীবাতুল উমাম
হযরত শাহযাদী ক্বিবলা কা’বা আলাইহাস সালাম এবং শাফিউল উমাম হযরত শাহদামাদ হুযূর ক্বিবলা
কা’বা আলাইহিস সালাম উনারা বিশ্ববাসীকে উপহার দিয়েছেন সাইয়্যিদাতুল উমাম হযরত শাহ নাওয়াসী
ক্বিবলাতাইন আলাইহিমাস সালাম উনাদেরকে। সুবহানাল্লাহ!
আমাদের মা, বোন, আহলিয়া, নিকট আত্মীয়দের কাছে আমরা
জেনেছি-শুনেছি, নাকীবাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ঊলা
ক্বিবলা কা’বা আলাইহাস সালাম উনার মুবারক আচার-আচরণ, বাক্যালাপ, প্রত্যয়ী ব্যক্তিত্ব, সূক্ষ্মদর্শিতা,
তীক্ষè মেধা, সুগভীর মনন, মুরাকাবা, ইবাদত-বন্দেগীর নিমগ্রতা, যিকির-ফিকিরের তন্ময়তা, তাক্বওয়ার গভীরতা, প্রত্যক্ষদর্শীদেরকে হরহামেশা
হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার কথা মনে করিয়ে দেয়। উনার মুবারক অবয়বে অনুক্ষণ ফুটে
থাকে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার নূর মুবারকের স্পষ্ট আভা। হক্ব মত ও পথ প্রকাশ
ও বাস্তবায়নের নির্ভীকতায় তিনি হুবহু নকশায়ে হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
আমরা জেনেছি, সাইয়্যিদাতুনা হযরত শাহযাদী
ঊলা ক্বিবলা কা’বা আলাইহাস সালাম উনার রিয়াযত-মাশাক্বাত, ত্যাগ-তিতীক্ষা,
কষ্ট সহিষ্ণুতা, ধৈর্য ও সহনশীলতা,
যিকির-ফিকির, ইবাদত-বন্দেগী,
স্বপ্নে
পুরিতুষ্টি, দুনিয়া বিমুখতা অতুলনীয়। এসব কোনো
পুরুষের পক্ষেও বরদাশতযোগ্য নয়। এসব বরদাশত করার গুণ-বৈশিষ্ট্য কেবল পরিপূর্ণরূপে উনার
চরিত্র মুবারক বিদ্যমান। এসব উনার এবং হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের
জন্যই সহনীয় ও শোভনীয়। সুবহানাল্লাহ!
ইলমে ফিক্বাহ ও ইলমে তাসাউফে নাক্বীবাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ঊলা ক্বিবলা কা’বা
আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল প্রজ্ঞা ও সমঝের গভীরতায় মহিলারা হতবাক ও বিস্মিত হয়। হিদায়েত
ও নছীহতের অপরাজেয় মুকুট মাথা মুবারকে নিয়ে পবিত্র পহেলা শাওওয়াল শরীফ-এ উনার মুবারক
আগমন ঘটে। উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার পূর্বের, পবিত্র বিলাদত শরীফ উনার মুহূর্তের ও পরের, বর্তমানের এবং সব সময়ের যাবতীয় বিষয় ও ঘটনা পবিত্র সুন্নত উনার
সঙ্গে পরিপূর্ণরূপে সঙ্গতিপূর্ণ। উনার মাথা মুবারক থেকে ক্বদম মুবারক পর্যন্ত পবিত্র
সুন্নত মুবারকে পরিশোভিত।
খিলাফত আলা মিন হাজিন নুবুওওয়াহ-এর মজবুত ভিত রচনা ও বাস্তবায়নে তিনি উনার মুজাদ্দিদে
আ’যম পিতা আলাইহিস সালাম উনার যোগ্যতমা উত্তরসূরি। সুবহানাল্লাহ! যে অতুলনীয় যোগ্যতা, উৎকর্ষতা ও মহিমায় উনার মুবারক আবির্ভাব, তাতে বাতিলের ধ্বংস অবশ্যম্ভাবী। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র ১লা শাওওয়াল শরীফ। নাক্বীবাতুল উমাম হযরত শাহযাদী ঊলা ক্বিবলা কা’বা আলাইহিহাস
সালাম উনার মুবারক বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার সুমহান দিন ঈদের দিন। ঈদ মুবারক।
এই ঈদের পরম আনন্দে আমরা গোলমরা নেক দৃষ্টি চাই। কৃপা চাই, ক্ষমা চাই। ফায়েজ চাই। আদব ও ইছলাহ চাই।
No comments