Header Ads

Islamic Quotes Urdu Facebook Cover. QuotesGram

হাঁচি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ হতে রহমত স্বরূপ এবং সুন্নত উনার অন্তর্ভুক্ত। তাই হাঁচিকে অবজ্ঞা করা হারাম ও কুফরী



সাধারণভাবে হাঁচি হলো শ্বাসযন্ত্রের অনেকগুলো প্রতিরক্ষা কবচের একটি। শরীরের জন্য অনাকাঙ্খিত কোন বস্তুকণা বা জৈব কলা, যখন আমাদের শ্বাসযন্ত্রের উপরিভাগে ঢুকে পড়ে, তখন তা বের করে দেবার জন্য শ্বাসযন্ত্র অত্যন্ত সমন্বিত প্রক্রিয়ায় বিপুল পরিমাণে বাতাস ফুসফুসে ঢুকিয়ে তা প্রবল বেগে বের করে দেয়, যেন এই প্রবল বেগে বাতাস বেরিয়ে যাবার সময় ওই অনাকাঙ্খিত কণাটি সহ বেরিয়ে যায়। যেহেতু শরীরকে সার্বিকভাবে সুস্থ রাখার অন্যতম সহায়ক প্রক্রিয়া হলো এই হাঁচি, তাই স্বাভাবিকভাবে হাঁচি আটকান উচিত নয়।
মহান আল্লাহ পাক তিনি বান্দার হাঁচি দেয়া পছন্দ করেন। বস্তুত মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে এই হাঁচি মানুষের জন্য এক বিশেষ নিয়ামত ও বিশেষ রহমত। আর তাই সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মহান আল্লাহ পাক তিনি যার উপর বিশেষ রহমত বর্ষণ করেন সেই হাঁচি দেয়।”
হাঁচি সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـي هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ‏ اِنَّ اللهَ يُـحِبُّ الْعُطَاسَ وَيَكْرَهُ التَّثَاؤُبَ فَاِذَا عَطَسَ اَحَدُكُمْ وَحَـمِدَ اللهَ كَانَ حَقًّا عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ سَـمِعَهُ اَنْ يَقُوْلَ لَهُ يَرْحَـمُكَ اللهُ‏.‏ وَاَمَّا التَّثَاؤُبُ فَاِنَّـمَا هُوَ مِنَ الشَّيْطَانِ، فَاِذَا تَثَاوَبَ اَحَدُكُمْ فَلْيَرُدَّهُ مَا اسْتَطَاعَ فَاِنَّ اَحَدَكُمْ اِذَا تَثَاءَبَ ضَحِكَ مِنْهُ الشَّيْطَانُ‏‏.‏‏
অর্থ : “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি হাঁচি দেয়া পছন্দ করেন আর হাই তোলা অপছন্দ করেন। যদি তোমাদের কেউ হাঁচি দিয়ে ‘আল্হামদুলিল্লাহ’ বলে তবে প্রত্যেক মুসলিম শ্রোতার তার জবাবে ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’ বলা ওয়াজিব। আর হাই তোলা শয়তানের পক্ষ থেকে হয়। কাজেই তোমাদের কোন ব্যক্তির হাই উঠলে সে যেন যথাসম্ভব তা রোধ করে। কেননা কেউ হাই তুললে শয়তান তার প্রতি হাসে।” (বুখারী শরীফ : কিতাবুল আদব : বাবু ইজা তাছাওয়াবা ফালইয়াদে¦ায়া ইয়াদাহু ‘আলা ফীহি : হাদীছ শরীফ নং ৬২২৬)
গবেষণায় প্রমাণিত যে, একটি হাঁচির সাথে ৩ হাজার থেকে ১ লক্ষ রোগ-জীবাণু শরীর থেকে বেরিয়ে যায় আর মানুষ স্বাভাবিক অবস্থায় একসাথে দু’টি হাঁচি দেয়। এভাবে দু’টি হাঁচির সাথে ৬ হাজার থেকে ২ লক্ষ রোগ জীবাণু বেরিয়ে যায়। এজন্যই মহান আল্লাহ পাক তিনি হাঁচি দেয়া পছন্দ করেন। এই রোগ-জীবাণু বের হয়ে সুস্থ হওয়া অবশ্যই একটি রহমত এবং খুশির বিষয়। তাই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম তিনি উম্মতদেরকে হাঁচির পর الْـحَمْدُ لِلّٰه ‘আলহামদুলিল্লাহ’ পাঠ করতে শিক্ষা দিয়েছেন। এই হাঁচি এমন একটি নিয়ামত যে, হাঁচিদাতার হাঁচির উত্তর দেয়ার পর প্রত্যেক মুসলিম শ্রোতার তার জবাবে يَرْحَـمُكَ اللهُ ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’ বলা ওয়াজিব।
হাঁচির মাধ্যমে রোগ-জীবাণু শরীর থেকে বেরিয়ে গিয়ে শরীরকে সুস্থ-স্বাভাবিক রাখে বিধায় এটা বলার কোন সুযোগ নেই যে, হাঁচিদাতা রোগগ্রস্ত। বরং একজন মানুষ একাধারে ৩টির বেশি হাঁচি দিলে তাকে সর্দি আক্রান্ত বলে ধরে নেয়া হয়।
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـي هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ شَمِّتْ اَخَاكَ ثَلاَثًا فَمَا زَادَ فَهُوَ زُكَامٌ ‏.‏
অর্থ : “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তোমার ভাইয়ের হাঁচির উত্তর তিনবার দিবে। এরপরও হাঁচি দিতে থাকলে তবে তার মস্তিষ্কে ঠান্ডা লেগেছে (তাই আর জবাব দিতে হবে না)।” (আবূ দাঊদ শরীফ : কিতাবুল আদব : বাবু কাম মাররাতিন ইউসাম্মাতুল ‘আত্বিছ : হাদীছ শরীফ নং ৫০৩৪)
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে অন্যত্র বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ سَلَمَةَ بْنِ الْأَكْوَعِ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُشَمَّتُ الْعَاطِسُ ثَلَاثًا فَمَا زَادَ فَهُوَ مَزْكُومٌ
অর্থ: “হযরত সালামাহ ইবনে আকওয়া’ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হাঁচি দাতা ৩ বার হাঁচি দিবে। কেউ যদি এর বেশি হাঁচি দেয়, তাহলে সে সর্দিগ্রস্ত।” (ইবনে মাজাহ্ শরীফ : কিতাবুল আদব : বাবু তাশমীতিল ‘আত্বিছ : হাদীছ শরীফ নং ৩৭১৪)
সুতরাং ৩ বারের বেশি কেউ যদি হাঁচি না দেয় তাহলে তাকে রোগগ্রস্ত বলা যাচ্ছে না। উপরন্তু সম্মানিত দ্বীন ইসলাম যেহেতু পূর্ণাঙ্গ, তাই হাঁচি দেয়ার বিধানও সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে বাতলে দেয়া হয়েছে।
যেমন পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـي هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِذَا عَطَسَ وَضَعَ يَدَهُ اَوْ ثَوْبَهُ عَلَى فِيْهِ وَخَفَضَ اَوْ غَضَّ بِـهَا صَوْتَهُ‏.‏
অর্থ : “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যখন হাঁচি মুবারক আসতো তখন তিনি মুখ মুবারকে হাত বা কাপড় দিয়ে হাঁচির শব্দ নিচু করতেন।” (আবূ দাঊদ শরীফ : কিতাবুল আদব : বাবু ফিল ‘য়ুত্বছি : হাদীছ শরীফ নং ৫০২৯; তিরমিযী শরীফ : হাদীছ শরীফ নং ২৭৪৫)
এই পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মাধ্যমে শিক্ষা দেয়া হয়েছে যে- হাঁচি দেয়ার সময় মুখে হাতের দ্বারা কাপড় দিয়ে হাঁচির শব্দ নিচু করতে হবে। অর্থাৎ সম্মানিত দ্বীন ইসলাম পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন রাখার দিকটিও খেয়াল রেখে থাকে।
আর তাই সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মানুষের হাঁচির মাধ্যমে যে জীবাণু বের হয় তা পরিবেশে পৌঁছার পূর্বেই মরে যায়।”
সুতরাং সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার পূর্ণ অনুসরণের মাধ্যমে হাঁচির দ্বারা মানুষ যেমন সুস্থ থাকছে তেমনি পরিবেশও থাকছে নির্মল।
বর্তমান সময়ে অনেকে করোনা কেভিট-১৯ ভাইরাসের উপসর্গ হিসেবে হাঁচির বিষয়টি তুলে ধরে মানুষকে পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার ব্যাপারে বিদ্ধেষী করে তুলছে। অথচ তাদের এ মতামতটি কেবল কল্পনাপ্রসূত। কারণ হাঁচি শরীরের একটি স্বাভাবিক কার্যক্রম। যা সৃষ্টির শুরু হতে হয়ে আসছে। সব মানুষই কম-বেশি হাঁচি দিয়ে থাকে। তাই হাঁচিকে করোনার উপসর্গ বলা হলে- বলতে হয় সৃষ্টির শুরু হতে এ পর্যন্ত সমস্ত মানুষেরই করোনা ছিল। যা শুধু হাস্যকরই নয় বরং চরম জিহালতপূর্ণ বক্তব্য ও ধারণা।
মূলত, স্বাভাবিকভাবে বিভিন্ন রোগের জীবাণু পরিবেশেই থাকে। সে জীবাণু শ্বাসের সাথে হোক, মুখ দিয়ে হোক বা অন্য কোন উপায়ে হোক শরীরের ভিতর প্রবেশ করার পর রোগ প্রকাশ পায়। কিন্তু হাঁচির মাধ্যমে শরীর থেকে বহিস্কৃত জীবাণু যেহেতু পরিবেশে পৌঁছার পূর্বেই মরে যায়, তাই হাঁচির মাধ্যমে কোন রোগ সৃষ্টি হওয়ার কোন সুযোগ নেই। কেননা, যে কাজটিকে স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি পছন্দ করেন সে কাজটি কোন মানুষের দ্বারা সংঘটিত হলে তার আশে-পাশের অন্য মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হবে- এটা চিন্তা করাটাও কুফরী অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া হাঁচি দেয়া একটি সম্মানিত সুন্নতও বটে। তাই হাঁচি দেয়াকে অবজ্ঞা করা কুফরী। কেননা এতে একদিকে যেমন মহান আল্লাহ পাক উনার পছন্দনীয় কাজকে অবজ্ঞা করা হয়। অন্যদিকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একখানা সম্মানিত সুন্নত মুবারক উনাকেও অবজ্ঞা করা হয়। সুতরাং যারা হাঁচিকে অবজ্ঞা করে থাকে তাদের তওবা করে সম্মানিত দ্বীন ইসলামে প্রত্যাবর্তন করতে হবে।

No comments

ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য।

  ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য। ডাল খাওয়ার ফলে কলব প্রসারিত হয় এবং চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পায়। পূর্ববর্তী হযরত নবী-রসুল আলাইহিমুস সালাম উ...

Powered by Blogger.