সম্মানিত কুরবানী উনার মাসয়ালা-মাসায়িল শিক্ষা করা ওয়াজিব

সম্মানিত শরীয়ত উনার পরিভাষায় খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার নৈকট্য ও সন্তুষ্টি
লাভের উদ্দেশ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার নামে নির্দিষ্ট তারিখে নির্দিষ্ট নিয়মে নির্দিষ্ট
প্রাণী যবেহ করার নাম পবিত্র কুরবানী। অর্থাৎ পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার ১০, ১১ ও ১২ তারিখে যেকোন দিনে দুম্বা, ভেড়া, খাসী, ছাগল, উট, গরু, মহিষ প্রভৃত্তি গৃহপালিত চতুষ্পদ প্রাণী সমূহকে মহান আল্লাহ পাক উনার দেয়া নিয়ম-নীতি
অনুসরণ করে, উনার পবিত্র নাম মুবারক উচ্চারণ করে উনার সন্তুষ্টি মুবারক লাভের
উদ্দেশ্যে যবেহ করাকে পবিত্র কুরবানী বলে। সুবহানাল্লাহ। পবিত্র কুরবানী উনার বিধান
সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “হে আমার হাবীব নূরে মুজাস্সামাম
হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! নিশ্চয়ই আমি আপনাকে কাওছার
বা সমস্ত কল্যান হাদিয়া করেছি। অতএব (এর শুকরিয়া স্বরূপ) আপনি নামায পড়–ন এবং কুরবানী
করুন।” (পবিত্র সূরা কাউছার শরীফ:১,২)
পবিত্র কুরবানী উনার বিধান শুধু আমাদের জন্যই দেয়া হয়েছে তা নয় বরং পূর্ববর্তী
উম্মতের প্রতি ও উনার বিধান প্রবর্তিত ছিল। যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক
করেন, “আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্য পবিত্র কুরবানী উনার বিধান
দিয়েছি, যাতে তারা গৃহপালিত পশুর উপরে মহান আল্লাহ পাক উনার নাম মুবারক
স্মরণ করে”। অর্থাৎ মহান অল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি ও নির্দেশ মুতাবিক উনার নামে পশু
কুরবানী করে। (পবিত্র সূরা হজ্জ শরীফ: ৩৪)। এই সম্মানিত আয়াত শরীফ সমূহ থেকে জানা গেল
যে, কুরবানী করতে হবে মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি হাছিলের উদ্দেশ্যে।
তবেই পবিত্র কুরবানী কবুল হবে এবং অসংখ্য অগনিত নেকী বা ফযীলত হাছিল হবে। মহান আল্লাহ
পাক তিনিও খুশি হবেন। সুবহানাল্লাহ! বর্তমান যামানায় পবিত্র কুরবানী উনার পশু কেনা
হচ্ছে প্রতিযোগিতা করে, লোক দেখানোর জন্য। নাউযুবিল্লাহ! আবার পশু কেনার পর
ছবি তোলা হচ্ছে এমনকি পশুকে কুরবানী করার দৃশ্য ভিডিও করা হচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ! আবার
পশুর হাটে খুব জোরে গান-বাজনা ছেড়ে রাখা হয়। নাউযুবিল্লাহ। আবার যাদের দিয়ে পবিত্র
কুরবানী করানো হয় তাদের অনেকেরই আক্বীদা শুদ্ধ না। যারা কসাই তাদের শরীয়ত সম্মত জ্ঞান
নাই, যার ফলে তারা যবাই এর পর তাড়াতাড়ি জানটা বের হওয়ার জন্য হাত
পায়ের রগ কেটে দেয়। নাউযুবিল্লাহ। অথচ এই সবগুলো কাজই সম্মানিত শরীয়ত উনার খেলাফ।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মহান অল্লাহ পাক উনার
নিকট পবিত্র কুরবানী উনার পশুর গোশত, রক্ত ইত্যাদি কিছুই পৌঁছে
না । বরং উনার কাছে শুধুমাত্র তাক্বওয়া তথা তোমাদের অন্তরের বিশুদ্ধ নিয়ত পৌঁছে থাকে।
(পবিত্র সূরা হজ্জ শরীফ: ৩৭)।
এই সম্মানিত আয়াত শরীফ থেকে জানা গেল যে, খালেছ নিয়্যত কবুল হয়ে
থাকে। সুবহানাল্লাহ। এই জন্য প্রত্যেক স্বচ্ছল সামর্থবান মুসলমান নর-নারীর জন্য দায়িত্ব-কর্তব্য
হচ্ছে, মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাদের সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কুরবানী করা এবং উনারা যেই নিয়ম-নীতি দিয়েছেন সেই নিয়ম-নীতি
অনুসরন করে কুরবানী করা এবং সমস্ত হারাম নাযায়িয কাজগুলো পরিহার করা। সম্মানিত শরীয়ত
উনার বিষয়গুলো ভালোভাবে জানার জন্য, আমল করার জন্য যামানার
মহান মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত ছোহবত
মুবারকে আসা। তাহলেই মুসলমানগণ সম্মানিত শরীয়ত উনার প্রতিটা বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন
এবং আমল করতে পারবেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন সমস্ত মুসলমানদেরকে তা নসীব করুন। আমীন।
No comments