Header Ads

Islamic Quotes Urdu Facebook Cover. QuotesGram

পবিত্রতম আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের পবিত্রতম পরিচিতি মুবারক



আহলু বাইত البيت اهل  এই যৌগিক শব্দখানা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক উনার সাথে اضافة বা সম্বন্ধ করা ছাড়াই উনার পবিত্রতম আহলু বাইত শরীফ তথা পবিত্রতম পরিবার-পরিজন আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে বুঝানো হয়। উনারা হলেন- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আব্বা-আম্মা আলাইহিমুস সালাম, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, হযরত ‘আব্নাউ’ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্রতম ছেলে আওলাদ আলাইহিমুস সালাম ও “বানাতু” রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তথা মেয়ে আওলাদ আলাইহিন্নাস সালাম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত জামাতা আলাইহিমুস সালাম এবং হযরত সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা সবাই পবিত্রতম (اهل البيت) আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম হিসেবে গোটা কায়িনাতে সুপ্রসিদ্ধ।
ঠিক একইভাবে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাদের থেকে যাঁরাই আসবেন- উনারা সকলেই সমগ্র কায়িনাত-এ (اولاد الرسول صلى الله عليه وسلم) আওলাদুর রসূল আলাইহিমুস সালাম নাম মুবারকেও সুপরিচিত। সুবহানাল্লাহ! (লিসানুল আরব ১ম খন্ড/১৬৩-১৬৪ পৃষ্ঠাসহ অন্যান্য লুগাত, তাফসীরে মাযহারী, তফসীরে রূহুল বায়ান, তাফসীরে তাবারাী ইত্যাদি)
اهل শব্দখানাকএ বচন, বহুবচনে اهلات- اهلات- اهال- اهال- اهلون হিসেবে ব্যবহার হয়। যার আভিধানিক অর্থ হচ্ছে পরিবার-পরিজন, আপনজন, সন্তান-সন্ততি, বংশধর, পারিবারিক, আভ্যন্তরীন, আত্মীয়-স্বজন, অনুসারীবৃন্দ, মালিক, অধিকারী, বাসী, অধিবাসী, বাসিন্দা, লোকজন, যথাযোগ্য ইত্যাদি। (লিসানুল আরব, আল মু’জামুল ওয়াফী, মিছবাহুল লুগাত, আল মানার, আল মুনীর, আল মুনজিদ, আল মুনজিদ ফিল লুগাত)
আর اهل শব্দখানা শুধু কোন ব্যক্তি বা বস্তুর সাথে ইযাফত বা সমন্ধযুক্ত হলে উক্ত ব্যক্তি বা বস্তুর সংশ্লিষ্টতাকেই বুঝাবে। ঠিক একইভাবে آل শব্দখানাও অনুরূপভাবে ব্যবহার হয়ে থাকে। آل মূলত اهل শব্দ থেকেই এসেছে এবং পারস্পারিক সমার্থবোধক। আর بيت শব্দখানা একবচন, বহুবচনে بيوت যার আভিধানিক অর্থ হচ্ছে- ঘর, বাড়ী, বাসস্থান, হুজরা, কামরা, কক্ষ, পরিবার। (লিসানুল আরব, অন্যান্য বিশ্বখ্যাত লুগাত গ্রন্থসমূহ)
পবিত্রতম আহলুল বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের পরিচয় প্রসঙ্গে লিসানুল আরব ১ম খন্ডের ১৬৪ পৃষ্ঠায় আছে,
أَهْلُ البيت أَخَصُّ الناس به وأَهْلُ بيت النبي صلى الله عليه وسلم أَزواجُه صلى الله عليه وسلم وبَناته صلى الله عليه وسلم وصِهْرُه صلى الله عليه وسلم........... قال سيبويه هو على النسب
অর্থাৎ আহলে বাইত শরীফ দ্বারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্রতম পরিবার আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে বিশেষ ব্যক্তিত্বগণ হচ্ছেন, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্রতম ‘বানাত আওলাদ’ তথা তথা মেয়ে আওলাদ আলাইহিন্নাস সালাম ও পবিত্রতম ‘আবনা আওলাদ’ আলাইহিমুস সালাম, পবিত্রতম জামাতা আলাইহিমুস সালাম। ................. ইমাম সিবাওয়াই রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, পবিত্রতম আহলে বাইত শরীফ বলতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্রতম নসবগতভাবে যত ‘বংশধর আলাইহিমুস সালাম’ আসবেন উনারা সবাই উদ্দেশ্য। (লিসানুল আরব ১ম খন্ড)
উল্লেখ্য যে, হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রথম স্তর মুবারকে রয়েছেন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আব্বাজান আলাইহিস সালাম ও হযরত আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনারা। সুবহানাল্লাহ। আর দ্বিতীয় স্তর মুবারকে রয়েছেন হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা। সুবহানাল্লাহ। আর তৃতীয় স্তর মুবারকে রয়েছেন হযরত আবনাউ ও বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা। সুবহানাল্লাহ।


পবিত্র আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারাই পবিত্র রিযামন্দি-সন্তুষ্টি, মুহব্বত-মা’রিফাত মুবারক হাছিলের একমাত্র ওয়াসীলা। উনাদের মুবারক ওয়াসীলা বা মধ্যস্থতা ব্যতীত কস্মিনকালেও কোন নিয়ামত হাছিল করা সম্ভব নয়

এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن حضرة جعفر الصادق عليه السلام انه قال نـحن ال بيت رسول الله صلى الله عليه وسلم و نـحن الوسيلة الى الله و لا وسيلة الى الله الا عن غير طريقنا او من سوانا
অর্থ : ইমামুস সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদুনা ইমাম হযরত জা’ফর ছাদিক আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা হচ্ছি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্রতম ‘বংশধর’ তথা আহলে বাইত শরীফ ও আওলাদুর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। আমরাই হচ্ছি- মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত, মা’রিফাত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি ও নিয়ামত মুবারক পাওয়ার একমাত্র সর্বোত্তম ওয়াসীলা। সুবহানাল্লাহ! কাজেই আমাদের পবিত্রতম তরীক্বা অথবা আমাদের পবিত্রতম ওয়াসীলা বা পবিত্রতম মাধ্যম ব্যতীত মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে পৌঁছার- আর কেউই ওয়াসীলা বা মাধ্যমই নেই। সবুহানাল্লাহ! অর্থাৎ আমাদের ওয়াসীলা বা মাধ্যম ব্যতীত মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্রতম কুরবত, মুহব্বত-মা’রিফাত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করা কারো পক্ষে কস্মিনকালেও সম্ভব হবে না। সুবহানাল্লাহ! (শরহে আক্বীদাতুত ত্বাহাবী লিল হাওয়ালী)
মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে পরিপূর্ণ মুহব্বত, মা’রিফাত, তায়াল্লুক, নিসবত, খাছ রেযামন্দি, সন্তুষ্টি মুবারকসহ ও পবিত্র থেকে পবিত্রতম করেই সৃষ্টি করেছেন। সুবহানাল্লাহ! লক্ষ-কোটি বছর হায়াতে বেঁচে থাকলেও পবিত্রতম আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের পবিত্রতম মুহব্বত, মা’রিফাত লাভের জন্য রিয়াজত-মাশাক্কাত করতে হবে। আর সেই লক্ষ কোটি বছর রিয়াজত-মাশাক্কাত করেও যা হাছিল করা যাবে না; তা উনাদের পবিত্রতম দীদার মুবারক লাভে ধন্য হয়ে পবিত্রতম খিদমত মুবারকে নিজেদেরকে বিলীন করে নিসবত মুবারক হাছিল করতে পারলে- অতি অল্প সময়ে তার চেয়ে লক্ষ-কোটিগুণে উনাদের রিযামন্দি-সন্তুষ্টি, মুহব্বত, মা’রিফাত মুবারক লাভ করা অতি সহজেই সম্ভব। সুবহানাল্লাহ!
অতএব ফিকির করতে হবে, পবিত্রতম হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের শান-মান, বুযূর্গী কত যে বে-মিছাল। সুবহানাল্লাহ! উনারা শুধু হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম নন। তাছাড়া সর্বদিক থেকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হুবহু কায়িম-মাকাম। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্রতম শান মুবারক-এ পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে যত পবিত্র আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফ আছেন তা সবকিছুই পবিত্রতম আহলে বাইত আলাইহিমুস সালাম উনাদের পবিত্রতম শান মুবারকই প্রযোজ্য। সুবহানাল্লাহ! পবিত্র আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকেই পবিত্র থেকে পবিত্রতম অর্থাৎ উনাদেরকে পবিত্র থেকে পবিত্রতম করেই সৃষ্টি করা হয়েছে।

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বত মুবারক হাছিলের জন্যই সর্বপ্রথম পবিত্র আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহব্বত মুবারক স্থাপন করা ফরযে আইন। সুবহানাল্লাহ!

যেমন এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عن حضرة ابن عباس رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم احبوا الله لـما يعذوكم من نعمة واحبونـى لـحب الله واحبوا اهل بيتـى لـحبى.
অর্থ : “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহহুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক উনাকে তোমরা মুহব্বত করো; কেননা তিনি খাওয়া-পরার মাধ্যমে অনুগ্রহ করে থাকেন। আর আমাকে তোমরা মুহব্বত করো, মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্রতম মুহব্বত মুবারক হাছিলের জন্য। আর আমার আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে তোমরা মুহব্বত করো আমার মুহব্বত মুবারক হাছিলের জন্য।” (তিরমিযী শরীফ)
এ হাদীছ শরীফ খানা উনার মাধ্যমে তিনটি পবিত্রতম ফরয সাব্যস্ত হয়েছে-
প্রথমত: মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্রতম মুহব্বত মুবারক পোষণ করা ফরয।
দ্বিতীয়: নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্রতম মুহব্বত মুবারক পোষণ করা ফরয।
তৃতীয়ত: পবিত্রতম আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহব্বত মুবারক পোষণ করা ফরয।
এই সম্মানিত তিন প্রকার ফরয মুবারক পারস্পারিক- এমনিভাবে সম্পর্র্কযুক্ত যে, কোন এক প্রকার ফরয মুবারক ব্যতিরেকে অন্য কোন প্রকার ফরয মুবারক হাছিল করা সম্ভব নয়।
কাজেই, মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত ও সন্তুষ্টি মুবারক লাভ করতে হলে মহান আল্লাহ পাক উনার যিনি হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বত ও সন্তুষ্টি মুবারক লাভ করতে হবে। আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহহুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বত ও সন্তুষ্টি মুবারক লাভ করতে হলে উনার আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করতে হবে ও সন্তুষ্ট করতে হবে। মূলতঃ হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের পবিত্রতম মুহব্বতই হচ্ছেন পবিত্রতম ঈমান। সুবহানাল্লাহ!

পবিত্র আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহব্বতই ঈমানের মূল উনাদের মুহব্বত মুবারক ব্যতীত কস্মিনকালেও কোন অন্তরে পবিত্র ঈমান প্রবেশ করবে না। নাউযুবিল্লাহ!

এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن حضرة العباس رضى الله تعالى عنه بن حضرة عبد الـمطلب عليه السلام قال كنا نلقى النفر من قريش و هم يتحدثون فيقطعون حديثهم فذكرنا ذلك للنبـى صلى الله عليه وسلم فقال ما بال اقوام يتحدثون فاذا رأوا الرجل من اهل بيتـى قطعوا حديثهم و الله لا يدخل قلب رجل الايـمان حتـى يـحبهم لله ولقرابتهم منـى
অর্থ: হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আমরা কুরাইশদের আলোচনারত অবস্থায় তাদের দলের সাথে মিলিত হতাম। ফলে তারা (আমাদের দেখে) তাদের কথা বন্ধ করে দিত। তারপর আমরা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে তা নিয়ে আলোচনা করলাম। জবাব মুবারক-এ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, লোকদের কি হলো যে, তারা আলোচনারত থাকে, অতঃপর যখন আমার পবিত্র আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের লোকটিকে দেখে তখন তাদের আলোচনা বন্ধ করে দেয়। মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! কোন ব্যক্তির ক্বালবের মাঝে ততক্ষণ পর্যন্ত ঈমান প্রবেশ করবে না যতক্ষণ পর্যন্ত মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য এবং উনাদের সাথে আমার আত্মীয়তার কারণে পবিত্র আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত না করবেন। সুবহানাল্লাহ! (ইবনু মাজাহ, হাকিম, তাবরানী, বাযযার, আহমদ ফিল ফাদ্বাইল, ইবনু আসাকির, জামিউল আহাদীছ, জামউল জাওয়ামি’ আও আলজামিউল কাবীর, কানযুল উম্মাল, মুসনাদুছ ছাহাবা)

পবিত্র আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুহব্বত মুবারক উনার ব্যাপারে ৪টি গুণের যে কোন একটি গুণ যাদের মধ্যে পাওয়া যাবে- কিয়ামতের দিন শুধুমাত্র তারাই শাফায়াত তথা সুপারিশ লাভ করবেন। সুবহানাল্লাহ!

এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
قال النبى صلى الله عليه وسلم "اربعة" انا لـهم شفيع يوم القيامة. الـمكرم لذريتى، القاضى لـهم حوائجهم، الساعى لـهم فى امورهم عند اضطرارهم اليه، الـمحب لـهم بقلبه ولسانه
অর্থ : নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি চার শ্রেণী লোকের জন্য কিয়ামতের দিন অবশ্যই সুপারিশ করবো অর্থাৎ দুনিয়া-আখিরাতে সর্বস্থানে সব সময় তাদের জন্য সুপারিশ করবো-
১)       যে ব্যক্তি আমার পবিত্রতম বংশধর তথা আমার পবিত্রতম আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে তা’যীম-তাকরীম, ইয্যত-সম্মান মুবারক করবেন।
২)       যে ব্যক্তি আমার পবিত্র আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের চাহিদা পুরা করবেন তথা উনাদের মালি তথা আর্থিক খিদমতে মুবারক-এ যারা আঞ্জাম দিবেন।
৩)       যে ব্যক্তি আমার পবিত্র আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কোন কাজের বা খিদমতের প্রয়োজনে শারিরীক খিদমতের আঞ্জাম দিবেন তথা জান-প্রাণ দিয়ে উনাদের খিদমত মুবারক-এ আঞ্জাম দিবেন- আমি তার জন্য কিয়ামতের দিন- মুছীবতের দিন অবশ্যই সুপারিশ করবো তথা সুপারিশ করে পবিত্র জান্নাত-এ প্রবেশ করিয়ে দিব। সুবহানাল্লাহ!
৪)       যে ব্যক্তি তার কলব বা অন্তর দ্বারা এবং যবান বা মুখ দ্বারা উভয় দিক থেকে আমার পবিত্রতম আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করবেন, আমি কিয়ামতের দিন তাকে শাফায়াত করে পবিত্র জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দিব। সুবহানাল্লাহ! (আল বুরহানু ফী তাফসীরিল কুরআন লিল বাহরানী ১/২৩, তাফসীরু নূরিছ ছাক্বালাইন লিল হুয়াইযী ২/৫০৪, আউলিয়া আল্লাহি বাইনাল মাফহূমিছ ছূফী লি-আবদির রহমান আদ দামিশক্বী, দ্বূয়িশ শামস ১/২৫১, ২৫৫, যাখায়িরুল উকবা/১৮)

পবিত্র আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ‘পবিত্রতম-হক্ব’ সম্পর্কে যে ব্যক্তি জানে না, সে মুনাফিক অথবা সে অবৈধ সন্তান অথবা তার মা তাকে অপবিত্র অবস্থায় ধারণ করেছে। নাঊযুবিল্লাহ!

পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত হয়েছে,
عَنْ حضرة عَلِيٍّ كرم الله وجهه عليه السلام، قَالَ سَـمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ "مَنْ لَـمْ يَعْرِفْ حَقَّ عِتْرَتِـي، وَالْأَنْصَارِ، وَالْعَرَبِ فَهُوَ لِأَحَدِ ثَلَاثٍ إِمَّا مُنَافِقًا، وَإِمَّا لِزَنيةٍ، وَإِمَّا لِغَيْرٍ، وَإِمَّا لِغَيْرٍ أي حَـمَلَتْهُ أُمُّهُ عَلَى غَيْرِ طُهُورٍ" و فى رواية وإما حـملته أمه على غير طهر.
অর্থ : হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইরশাদ মুবারক করতে শুনেছি যে, যে ব্যক্তি আমার আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম তথা আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের এবং হযরত আনছার ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ও সম্মানিত আরব সম্প্রদায় উনাদের হক্ব সম্পর্কে তথা মুহব্বত, মা’রিফাত, তা’যীম-তাকরীম, ইযযত-সম্মান ও খিদমত মুবারক সম্পর্কে জানেনা; মূলত উক্ত ব্যক্তির তিনটি অবস্থার যে কোন একটি অবস্থা অবশ্যই হতে হবে। তাহলো- (১) হয়তোবা সে ব্যক্তি মুনাফিক (২) হয়তোবা সে ব্যক্তি কোন ব্যভিচারিণীর সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত (৩) হয়তোবা সে ব্যক্তি অন্য কোন বড় ধরনের দোষে দোষী অর্থাৎ হয়তোবা তার মা তাকে অপবিত্র অবস্থায় গর্ভে ধারণ করেছিল তথা হয়তোবা সে অবৈধ সন্তান অথবা নিষিদ্ধ অবস্থায় মায়ের গর্ভে এসেছিল। নাঊযুবিল্লাহ! (বায়হাকী: শুয়াবুল ঈমান, জামিউল আহাদীছ, জামউল জাওয়ামি, কানযুল উম্মাল, জামিউল কবীর, দায়লামী শরীফ, যখীরাতুল হুফ্ফায)


যারা পবিত্র আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি বিদ্বেষপোষণ করে মূলতঃ তারাই জাহান্নামী। নাঊযুবিল্লাহ

এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত হয়েছে-
عن حضرة أبـي سعيد الـخدرى رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلّى الله عليه وسلّم والذي نفسي بيده لا يبغضنا أهل البيت رجل إلا أدخله الله تعالى النار
অর্থ : হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ওই পবিত্র সত্ত্বা উনার কসম! উনার কুদরতী হাত মুবারক উনার মধ্যে আমার পবিত্র প্রাণ মুবারক। যে ব্যক্তি আমার পবিত্র আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করবে মহান আল্লাহ পাক তিনি অবশ্যই তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ বা প্রবেশ করবেন। নাউযুবিল্লাহ! (রুহুল মায়ানী)
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن حضرة ابـى سعيد الـخدرى رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم والذى نفسى بيده لا يبغضنا اهل البيت احد الا ادخله الله النار
অর্থ : হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ওই পবিত্র সত্ত্বা উনার কসম! উনার কুদরতী হাত মুবারক উনার মধ্যে আমার পবিত্র জান মুবারক, আমার পবিত্র আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে কেউ অপছন্দ করলে অবশ্যই মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন। নাউযুবিল্লাহ! (আল হাকিম, ছহীহ ইবনু হিব্বান, জামিউল আহাদীছ, জামউল জাওয়ামি’ লিস সুয়ূতী, কানযুল উম্মাল)

যে ব্যক্তি পবিত্র আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কষ্ট দিল সে মূলতঃ মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদেরকেই কষ্ট দিল তথা সে গযবে পতিত হল। নাঊযুবিল্লাহ!
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن حضرة على عليه السلام قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم قال قال "من اذانى فى اهلى، فقد اذى الله عز و جل"
অর্থ : হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার পবিত্রতম পরিবার তথা পবিত্রতম হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ব্যাপারে আমাকে কষ্ট দেয় বা দিবে সে ব্যক্তি মূলত মহান আল্লাহ পাক উনাকে কষ্ট দেয় বা দিবে। নাউযুবিল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ ফী ছীরাতি খাইরিল ইবাদ, আবূ নুয়াইম)
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن حضرة على بن ابـى طالب عليه السلام و هو اخذ بشعره حدثنـى رسول الله صلى الله عليه وسلم و هو اخذ بشعره قال من اذى شعرة منـى فقد اذانـى و من اذانـى فقد اذى الله تبارك و تعالى وَمِنْ اَذَى اللهَ عزَّ وجلَّ لَعَنَهُ اللهُ مِلْءَ السماوات و ملء الارض لا يقبل الله منه صرفا ولا عدلا
অর্থ : হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি উনার চুল মুবারক ধরা অবস্থায় ছিলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বীয় চুল মুবারক ধরা অবস্থায় আমার কাছে ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার একটি চুল মুবারক উনাকেও কষ্ট দিল সে ব্যক্তি আমাকে কষ্ট দিল। নাঊযুবিল্লাহ! আর যে ব্যক্তি আমাকে কষ্ট দিল সে ব্যক্তি মূলতঃ মহান আল্লাহ পাক উনাকে কষ্ট দিল, আর যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনাকে কষ্ট দেয় ওই ব্যক্তি কে মহান আল্লাহ পাক তিনি আসমান ও যমীন সমপরিমাণ লা’নত দিয়ে থাকেন। নাঊযুবিল্লাহ! অর্থাৎ নিশ্চিত সে ব্যক্তি ধ্বংস হয়ে যায়। মহান আল্লাহ পাক তিনি তার থেকে কোন তওবা এবং কোন দান কবুল করবেন না। নাউযুবিল্লাহ! (তারীখু দিমাশক্ব লি ইবনি আসাকির, ইবনুল মুফাদ্দাল ফী মুসালসালাতিহ, জামিউল আহাদীছ, জামউল জাওয়ামি’ আও আল জামিউল কাবীর, কানযুল উম্মাল)
উপরোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ খানা থেকে স্পষ্ট যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র চুল মুবারক উনাকে কষ্ট দিলে যদি মহান আল্লাহ পাক উনাকে কষ্ট দেয়া হয় এবং তার কোন তওবা ও দোয়া কবুল না হয়; তাহলে পবিত্রতম আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কলিজা মুবারক উনার টুকরা মুবারক, উনাদেরকে কষ্ট দিলে তার উপর যে আযাব অবধারিত হয়ে যায়-
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن حضرة ابـى سعيد رضى الله تعالى عنه ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال اشتد غضب الله على من اذانـى فى عترتى
অর্থ: হযরত আবূ সাঈদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন। আমার আহলে বাইত শরীফ তথা আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের ব্যাপারে যে ব্যক্তি আমাকে কষ্ট দিবে মহান আল্লাহ পাক উনার ক্রোধ তার উপর কঠোর হবে তথা মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে তার উপর কঠিন গযব নাযিল হবে। নাউযুবিল্লাহ! (দায়লামী শরীফ, আসসওয়ায়ি’কুল মুহাররিক্বাহ, জামিউ’ল আহাদীছ, জামউল জাওয়ামি’ আল জামিউল কাবীর লিসসুয়ূতী, কানযুল উম্মাল, আল জামিউস ছগীর)


No comments

ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য।

  ডাল একটি বরকতময় পবিত্র খাদ্য। ডাল খাওয়ার ফলে কলব প্রসারিত হয় এবং চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পায়। পূর্ববর্তী হযরত নবী-রসুল আলাইহিমুস সালাম উ...

Powered by Blogger.