মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ইসলামী শরীয়ত উনার ফতওয়া অনুযায়ী- ইফা’সহ যে সকল উলামায়ে সূ’রা করোনাকে সংক্রামক তথা ছোঁয়াচে রোগ বলেছে এবং সীমিত সংখ্যক মুসল্লী ব্যতিত অন্যদেরকে জামাতে আসতে নিষেধ করেছে, তারা প্রত্যেকেই মুশরিক ও মুরতাদ হয়ে গেছে
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে ছোঁয়াচে বলতে কোনো রোগই নেই। কোনো
রোগের কোনো ক্ষমতা নেই যে, মহান আল্লাহ পাক উনার ইচ্ছা ব্যতীত কারো উপর আক্রমণ
করে। আইয়্যামে জাহিলীয়াতের যুগে মুশরিকরা ছোঁয়াচে রোগ বিশ্বাস করতো।
এ সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عن ثعلبة بن
يزيد الحماني قال سمعت عليا يقول: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: "لا صفر
ولا هامة ولا يعدي سقيم صحيحا" قلت: أنت سمعت هذا من رسول الله صلى الله عليه
وسلم؟ قال: نعم سمعت أذني وبصرت عيني. ابن جرير وصححه.
অর্থ: “হযরত ছা’লাবাহ্ ইবনে ইয়াযীদ হিম্মানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন, আমি সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম
উনাকে বলতে শুনেছি, নূরে মুজাসমাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, সম্মানিত ছফর শরীফ মাসে অশুভ বলতে কিছুই নেই, পেঁচার মধ্যে কুলক্ষণ
নেই এবং অসুস্থ ব্যক্তি সুস্থ ব্যক্তি সংক্রামিত করতে পারে না। (রাবী বলেন,) আমি বললাম, আপনি কি এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার কাছ থেকে শুনেছেন? জবাবে সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস
সালাম তিনি বললেন, হ্যাঁ, আমি আমার নিজ কান মুবারক-এ
শুনেছি এবং নিজ চোখ মুবারক দেখেছি। ইবনে জারীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এই হাদীছ শরীফখানা
বর্ণনা করেছেন এবং ছহীহ বলেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (কানযুল উম্মাল ১০/১২৬, হাদীছ শরীফ নং ২৮৬৩৬, তাহ্যীবুল আছার লিত ত্ববারী ৩/৪২৪, আল মাক্বছাদুল ‘আলী ৪/২৯৮, নাখবুল আফকার ফী তানক্বীহি
মাবানিইল আখবার ফী শারহি মা‘আনিইল আছার লিবাদরিদ্দীন আইনী হানাফী ১৪/৭৮, আল ঈমা’ ৫/১২১ ইত্যাদি)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَرْبَعٌ فِي أُمَّتِي
مِنْ أَمْرِ الْجَاهِلِيَّةِ لَنْ يَدَعَهُنَّ النَّاسُ النِّيَاحَةُ وَالطَّعْنُ
فِي الأَحْسَابِ وَالْعَدْوَى أَجْرَبَ بَعِيرٌ فَأَجْرَبَ مِائَةَ بَعِيرٍ مَنْ
أَجْرَبَ الْبَعِيرَ الأَوَّلَ وَالأَنْوَاءُ مُطِرْنَا بِنَوْءِ كَذَا وَكَذَا.
قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ
অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু অলাইহি ওয়া সাল্লাম
ইরশাদ মুবারক করেন, আমার উম্মতের মাঝে জাহিলী যুগের (মুশরিকদের) চারটি
বিষয় রয়েছে, যেগুলো মানুষ কখনও সম্পূর্ণরূপে ছাড়তে পারবে না। (অথচ সেগুলো
মুনাষের জন্য ছেড়ে দেয়া অত্যাবশ্যক)- ১. মৃত ব্যক্তির জন্য (উচ্চ স্বরে) বিলাপ করা, ২. বংশ তুলে গালি দেয়া, ৩. ছোঁয়াচে রোগে বিশ্বাসী হওয়া, যেমন- একটি উট খুঁজলি-পাঁচড়া যুক্ত হলে, সেটি আবার একশত উটকে খুঁজলি-পাঁচড়া
যুক্ত করে। এরূপ বিশ্বাস করা। (যারা এরূপ বলে থাকে, তাদের ব্যাপারে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি তিনি বলেন,) তাহলে প্রথম উটটিকে কে খুঁজলি-পাঁচড়া যুক্ত করলো? ৪. এবং তারকার (উদয় বা অস্ত যাওয়ার) দ্বারা ভাগ্য নির্ধারণ করা এবং বলা অমুক অমুক
নক্ষত্রের প্রভাবে আমাদের উপর বৃষ্টি হয়েছে।” না‘উযুবিল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ ১০০১, শারহু মা‘আনিয়িল আছার ৪/৩০৯, মুসনাদে আহমদ ২/৪৫৫, মুসনাদের ত্বয়ালসী হাদীছ শরীফ নঅং ২৩৯৫, আহকামুশ শার‘ইয়্যাহ্ লিল
ইশবিলী ১/১৬৬, ছহীহ ইবনে হিব্বান ৭/৪১২, আল মাত্বালিবুল ‘আলিয়্যাহ্ ৫/৩৭৯, মুসনাদে বায্যার ১৭/১১৯, তাহযীবুল আছার লিত ত্ববারী ৩/৪৩৪, ফাওয়াইদু আবী মুহম্মদ ফাকিহী ১/৩৫৫, ইত্যাদি)
এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা ছহীহ। আল্লামা হযরত ইমাম ইবনে হাজার
হাইছামী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছেন, এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
হাদীছ শরীফখানা উনার প্রত্যেক রাবী ছিক্বাহ। মুসনাদে আহমাদের তা’লীক্বে শু‘য়াইব আরনাঊত
বলেছে, এটি ছহীহ হাদীছ। ওহাবীদের গুরু আলবানী তার ‘আস সিলসিলাতুছ ছহীহা’র
মধ্যে এই হাদীছ শরীফখানা উল্লেখ করেছে।
‘মুসলিম শরীফ’ উনার বিশ্বখ্যাত শরাহগ্রন্থ ‘আল মু’লিম বিফাওয়াইদিল মুসলিম’ উনার
মধ্যে উল্লেখ রয়েছে,
وقوله: لاَ
عَدوى.تفسيره أن العرب كانت تعتقد أنّ المرض يعدي وينتقل إلى الصحيح فأنكر صلى
الله عليه وسلم اعتقادهم.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কথা মুবারক ‘ছোঁয়াচে বা সংক্রামক রোগ বলে কিছুই নেই’। (এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
হাদীছ শরীফ) উনার ব্যাখ্যা মুবারক হচ্ছেন, জাহিলী যুগে আরবরা এটা
বিশ্বাস করতো যে, রোগ অসুস্থ ব্যক্তির থেকে সুস্থ ব্যক্তির দিকে সংক্রামিত
হয়, স্থানান্তরিত হয়। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাদের এই বিশ্বাসকে বাতিল বলে ঘোষণা করেছেন।” সুবহানাল্লাহ!
(আল মু’লিম বিফাওয়াইদিল মুসলিম ৩/১৭৭)
আর করোনা ভাইরাস এটা কোন রোগ না। এটা হচ্ছে কাফির-মুশরিক ও তাদের গোলামদের প্রতি
একটা কাট্টা গযব। কাজেই, ইফাবাসহ যেসকল উলামায়ে সূ’রা করোনাকে সংক্রামক তথা
ছোঁয়াচে রোগ বলেছে এবং এ বিষয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে, তারা আইয়্যামে জাহিলয়াহ্
যুগের মুশরিকদের অনুরূপ। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ইসলামী শরীয়ত উনার ফতওয়া অনুযায়ী
তারা প্রত্যেকেই মুশিরক হিসেবে সাব্যস্ত হয়েছে। না‘ঊযুবিল্লাহ!
এ সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنِ ابْنِ
عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ
فَهُوَ مِنْهُمْ .
অর্থ: “হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল রাখবে, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হবে।” (আবূ দাঊদ শরীফ হাদীছ শরীফ নং ৪০৩৩, মুসনাদে আহমদ, মিশকাত শরীফ, মুসনাদে বায্যার ৭/৩৬৮, আল মু’জামুল আওসাত্ব লিত ত্ববারনী ৮/১৭৯, মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ্
১২/৩৫১ ইত্যাদি)
অন্যদিকে তারা সীমিত সংখ্যক মুসল্লী ব্যতিত অন্যদেরকে জামাতে আসতে নিষেধ করায় কুফরী
করেছে। কেননা যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
وَمَنْ
اَظْلَمُ مِـمَّنْ مَّنَعَ مَسٰجِدَ اللهِ اَنْ يُّذْكَرَ فِيْهَا اسْـمُهٗ
وَسَعٰى فِـىْ خَرَابِـهَا اُولٰٓئِكَ مَا
كَانَ لَـهُمْ اَنْ يَّدْخُلُوْهَا اِلَّا خَآئِفِيْنَ لَـهُمْ فِـى الدُّنْيَا
خِزْىٌ وَّلَـهُمْ فِى الْاٰخِرَةِ عَذَابٌ عَظِيْمٌ.
অর্থ: “ওই ব্যক্তির চেয়ে বড় যালিম আর কে? যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ
পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহে উনার যিকির মুবারক করতে, উনার সম্মানিত নাম মুবারক উচ্চারণ করতে বাধা দেয় এবং সেগুলোকে উজাড় করতে চেষ্টা
করে। (অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ বন্ধ করে রাখে, হক্ব আদায় করে না তা’যীম-তাকরীম করে না) তাদের জন্য ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় অর্থাৎ
খালিছ তওবা-ইস্তিগফার করা ব্যতীত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহে প্রবেশ
করা জায়িয নেই। তাদের জন্য রয়েছে ইহকালে লাঞ্ছনা এবং পরকালে কঠিন শাস্তি।” সুবহানাল্লাহ!
(সম্মানিত ও পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : সম্মানিত আয়াত শরীফ ১১৪)
এই সম্মানিত আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় ‘তাফসীরে জালালাইন শরীফ ও তাফসীরে মাযহারী
শরীফ’ উনাদের মধ্যে উল্লেখ রয়েছে,
لَا اَحَدَ
اَظْـلَمُ مِـمَّنْ مَّنَعَ مَسٰجِدَ اللهِ اَنْ يُّذْكَرَ فِيْهَا اسْـمُهٗ
অর্থ: “ওই ব্যক্তিই সবচেয়ে বড় যালিম, যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ
উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহে উনার যিকির মুবারক করতে, উনার সম্মানিত নাম মুবারক স্মরণ করতে বাধা দেয়।” (অর্থাৎ জামাতে আসতে নিষেধ করে)
(তাফসীরে জালালাইন ১/২৪, তাফসীরে মাযহারী ১/১১৬)
‘তাফসীরে সমরকন্দী শরীফ, তাফসীরে খাযিন শরীফ ও তাফসীরে বাগবী শরীফ’ উনার মধ্যে
وَمَنْ
اَظْـلَمُ “ওই ব্যক্তির চেয়ে বড় যালিম আর কে?” এই অংশের ব্যাখ্যায় উল্লেখ
রয়েছে, وَمَنْ اَكْفَرُ“ওই ব্যক্তির চেয়ে বড় কাফির
আর কে? অর্থাৎ ওই ব্যক্তিই সবচেয়ে বড় কাট্টা কাফির, যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহে উনার
যিকির মুবারক করতে, উনার সম্মানিত নাম মুবারক স্মরণ করতে বাধা দেয় এবং
সেগুলোকে উজাড় করতে চেষ্টা করে।” (অর্থাৎ জামাতে আসতে নিষেধ করে।) না‘ঊযুবিল্লাহ!
(তাফসীরে সমরকন্দী শরীফ ১/৮৬, তাফসীরে খাযিন শরীফ ১/৭২, তাফসীরে বাগবী শরীফ ১/১৫৭)
কাজেই, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ইসলামী শরীয়ত উনার ফতওয়া অনুযায়ী- ইফাসহ
যেসকল উলামায়ে সূ’রা করোনাকে সংক্রামক তথা ছোঁয়াচে রোগ বলেছে এবং সীমিত সংখ্যক মুসল্লী
ব্যতিত অন্যদেরকে জামাতে আসতে নিষেধ করেছে, তারা প্রত্যেকেই মুশরিক, কাফির ও মুরতাদ হয়ে গেছে।
সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার ফতওয়া অনুযায়ী- তারা যদি ৩ দিনের মধ্যে প্রকাশ্যে তওবা
না করে, তাহলে তাদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদন্ড। তাদের গোসল, কাফন-দাফন করা, জানাযার নামায পড়া জায়েয নেই এবং তাদেরেেক সম্মানিত
মুসলমান উনাদের কবরস্থানে দাফন করাও জায়িয নেই। বরং তাদেরকে কুকুর-শৃগালের মত গর্তে
পুতে রাখতে হবে। যারা তাদের গোসল, কাফন-দাফন করবে, জানাযার নামায পড়বে, তাদের উপরও একই হুকুম বর্তাবে। না‘ঊযুবিল্লাহ!
No comments