প্রাণীর ছবির ক্ষেত্রে শরয়ী ফায়সালা --> পর্ব-১০ (যারা আজ টিভিতে প্রোগ্রাম করছে বা করেছে তাদের কিতাবেও রয়েছে টিভিতে প্রোগ্রাম করা হারাম)
পবিত্র কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরী
করা, কারানো ও ছবি আঁকা, তোলা,
তোলানো, রাখা,
রাখানো, দেখা,
দেখানো
হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে শরয়ী ফায়সালা:
►✒ শরীয়তের দৃষ্টিতে টিভি চ্যানেলে ইসলামী প্রোগ্রাম
করা ও দেখা হারামঃ
কোন কোন জাহিল বলে থাকে যে, টিভি চ্যানেল একটি
ভাল প্রচার মাধ্যম| নাউযুবিল্লাহ্| আবার কেউ কেউ বলে টিভিতে ইসলামী প্রোগ্রাম করা
ও দেখা জায়িয| কারণ, এতে অনেক ফায়দা বা শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে| নাউযুবিল্লাহ্|
মূলতঃ কোন প্রচার যন্ত্র ভাল কিংবা মন্দ,
সেটা
কারো ব্যক্তিগত অভিমতের সাথে সম্পর্কযুক্ত নয়| বরং ভাল-মন্দ ফায়সালা হবে শরীয়তের দৃষ্টিতে| টেলিভিশনের মূলই হচ্ছে ছবি, যা দেখা এবং দেখানো শরীয়তে সম্পূর্ণরূপে হারাম
ও নাজায়িয|
√ মিশকাত শরীফ এর ৩৮৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
عن عبد الله بن مسعود رضى الله تعالى عنه قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول اشد الناس عذابا عند الله المصورون.
অর্থঃ- হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমি সাইয়্যিদুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি- তিনি বলেছেন, মহান আল্লাহ্ পাক তিনি ঐ ব্যক্তিকে কঠিন শাস্তি দেবেন, যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি তোলে বা আঁকে|
√ উমদাতুল ক্বারী, ফতওয়ায়ে ছিদ্দীকিয়া ৩৭৮ পৃষ্ঠা, আজ জাওয়াজির ২য় জিঃ, ৩৩ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
‘তাওজীহ্’ নামক কিতাবে
উল্লেখ আছে যে, জীব জন্তুর ছবি বা
প্রতিমূর্তি নির্মাণ করা নিষেধ, বরং কঠোর নিষিদ্ধ
কাজ (অর্থাৎ) এটা কবীরাহ্ গুনাহ্|
চাই
ওটাকে যত্ন বা সম্মান প্রদর্শন করুক কিংবা অন্য যে কোন উদ্দেশ্যেই বানায়ে থাকুক| এরূপ কাজে আল্লাহর সৃষ্টির অনুকরণ করা হয়| ওটা বস্ত্রে, বিছানায়, মোহরে, মুদ্রায়, পয়সায়, পাত্রে কিংবা প্রাচীন
গাত্রে যে কোন স্থানে আঁকা বা নির্মাণ করা হারাম|”
√ শরহে মুসলিম, নববী ও ফতওয়ায়ে ছিদ্দিক্বিয়াহ্ কিতাবের ৩৭৮ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
“উক্ত হাদীছসমূহে
প্রাণীর ছবি তৈরী করা বা মূর্তি নির্মাণ করা হারাম হওয়া সম্বন্ধে প্রকাশ্যেই বলা হয়েছে| এটা তৈরী বা নির্মাণ করা জঘন্যতম পাপের কাজ ও
হারামও বটে| উক্ত কিতাবে আরও
আছে, যদি কেউ মূর্তি বা প্রাণীর
ছবি পূজা বা সৃষ্টির অনুকরণের জন্য নাও বানায়ে থাকে তবুও সে ফাসেক হবে এবং কবীরাহ্
গুনাহে গুনাহগার হবে|”
কাজেই, প্রচার যন্ত্র হিসেবে
টেলিভিশন যতই ভাল হোক না কেন, আর তার দ্বারা প্রকাশ্যে
দেশ ও জাতির যতবড় ফায়দা বা কল্যাণই সাধিত হোক না কেন, তা শরীয়তে গ্রহণযোগ্য নয়| কারণ হাক্বীক্বীভাবে টেলিভিশনের মাধ্যমে মানুষের
ঈমান, আমল, আখলাক সমস্ত কিছুই বরবাদ হয়ে যায়|
পবিত্র কুরআন শরীফের সূরা বাক্বারা-২১৯ আয়াত শরীফে মহান আল্লাহ্ পাক ইরশাদ মুবারক
করেন,
“হে হাবীব! আপনাকে
প্রশ্ন করা হয়, মদ ও জুয়া সম্পর্কে| আপনি বলে দিন, এ দু’টির মধ্যে রয়েছে কবীরাহ গুনাহ| এবং মানুষের জন্য ফায়দাও রয়েছে| তবে ফায়দার চেয়ে গুনাহই বড়|”
এখানে লক্ষ্যণীয় যে, মহান আল্লাহ্ পাক
নিজেই স্বীকার করেছেন যে, মদ ও জুয়ার মধ্যে
দুনিয়াবী ফায়দা রয়েছে| মদ পান করলে স্বাস্থ্য
ভাল হয়, জুয়া খেললে রাতারাতি অনেক
টাকা পাওয়া যায়| তথাপি এগুলোর মধ্যে
ফায়দার চেয়ে গুণাহ বেশী বলে এগুলোকে হারাম করা হয়েছে| সুতরাং মদ ও জুয়ার মধ্যে উপকারিতা থাকা সত্বেও
এগুলো গ্রহণযোগ্য নয়, এগুলো হারাম| মদ ও জুয়ার মধ্যে উপকারিতার জন্য কেউ যদি এটাকে
জায়িয মনে করে, তবে সে কুফরী করলো| তদ্রুপ ছবির মাধ্যমে প্রচারিত শিক্ষণীয় বিষয়কে
কেউ যদি জায়িয মনে করে তবে সেও কুফরী করলো|
মহান আল্লাহ্ পাক পবিত্র কুরআন শরীফের সূরা আ’রাফের-৫৮ নং আয়াত শরীফে ইরশাদ মুবারক
করেন, “যা নাপাক তা থেকে নাপাক ব্যতীত
কিছু বের হয় না|”
যেমন পেশাবের মধ্যে এসিড রয়েছে যার কারণে তা দিয়ে ময়লা কাপড় ধৌত করলে পরিষ্কার
হবে, কিন্তু পাক হবে না| যদিও বাহ্যিকভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন দেখা যায়, তথাপিও আভ্যন্তরীণ নাপাকীর কারণে তা পরিধান করে
নামায পড়া জায়িয হবে না|
সুতরাং টেলিভিশন, ভিসিআর ইত্যাদির
মধ্যে যদিও কোন প্রকার শিক্ষণীয় বিষয় প্রচার অথবা ইসলামী প্রোগ্রাম অনুষ্ঠান হয়, কিন্তু যেহেতু তার মূলই হলো ছবি যা স্পষ্টতই
হারাম ও নাজায়িয| তাই টেলিভিশনও সম্পূর্ণরূপে
হারাম ও নাজায়িয|
এছাড়াও বর্তমানে টেলিভিশনের অন্যান্য অশ্লীলতার কারণেও এগুলো হারামের অন্তুর্ভূক্ত| কেননা মহান আল্লাহ্ পাক ইরশাদ মুবারক করেন-
“সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করো না|”
√ (সূরা বাক্বারা-৪২)
মহান আল্লাহ্ পাক আরো বলেন- “তোমরা কিতাবের কিছু অংশ মানবে, আর কিছু অংশ মানবে না, তা হবে না|”
√ (সূরা বাক্বারা-৮৫)
সুতরাং টিভিতে বা ভিসিআর এ জ্ঞানমূলক,
শিক্ষামূলক
কিংবা ইসলামী অনুষ্ঠান প্রচার বা দেখার মধ্যে বাহ্যিকভাবে কিছু উপকারিতা থাকা সত্বেও, যেহেতু এসবের মূল হচ্ছে ছবি, যার ফায়দার চেয়ে গুণাহই বড়| তাই টিভি, ভিডিওতে কোন অনুষ্ঠান করা বা দেখা সম্পূর্ণরূপে হারাম ও নাজায়িয|
অতএব, টিভি বা যে কোন প্রচার মাধ্যমে
ছবির সাহায্যে কোন কিছু প্রচার-প্রসার করা হলে, তা যতই শিক্ষণীয় হোক বা যে কোন ব্যক্তির মাধ্যমে পরিচালিত হোক
না কেন, সেটা সম্পূর্ণরূপে হারাম
ও নাজায়িয|
►✒ যারা আজ টিভিতে প্রোগ্রাম করছে বা করেছে তাদের
কিতাবেও রয়েছে টিভিতে প্রোগ্রাম করা হারামঃ
উল্লেখ্য, যারা টিভি চ্যানেলে
প্রোগ্রাম করেছিল যেমন মৃত তথাকথিত শাইখুল হাদীছ, মৃত মুফতে আমীনী গং অথচ তারাই তাদের কিতাবে টিভিতে যেকোন ধরনের
প্রোগ্রাম এমনকি হজ্জ প্রচার করাকেও হারাম বলে ফতওয়া দিয়েছে| যেমন মৃত তথাকথিত শায়খুল হাদীছের মাদরাসা থেকে
প্রকাশিত ‘ফতওয়ায়ে রহমানিয়াতে’ লিখেছে,
► জিজ্ঞাসাঃ মাসিক মুজাহিদ বার্তা অক্টোবর’৯৯ সংখ্যায়
২৭ নং প্রশ্নের উত্তরে লিখেছেন, বাদ্য ব্যতীত ইসলামী
গান, গযল ও খবর রেডিওতে পরিবেশন
ও শোনা যাবে| টেলিভিশনে মহিলা
ব্যতীত পরিবেশিত খবর ও ইসলামী অনুষ্ঠান ও শিক্ষামূলক ধর্মীয় অনুষ্ঠান দেখা যাবে| অথচ মাসিক রাহমানী পয়গাম অক্টোবর’৯৯ সংখ্যায়
লিখছেন কোন অবস্থায়ই টেলিভিশনের কোন অনুষ্ঠান দেখা জায়িয হবে না| সঠিক উত্তর জানতে ইচ্ছুক|
✒
জবাবঃ
মুজাহিদ বার্তায় যে টেলিভিশনের কথা বলেছে তা আজ কোথায় আছে? স্যাটেলাইট ও ইন্টারনেটের এ যুগে মুজাহিদ বার্তার
মাসয়ালা কল্পনা বিলাস ছাড়া আর কি হতে পারে?
তাছাড়া
টিভি দেখা না জায়িয হওয়ার উল্লেখযোগ্য একটি কারণ হলো ধারণকৃত প্রাণীর ছবি| কারণ শরীয়তের দৃষ্টিতে প্রাণীর ছবি ধারণ করে
রাখা অঙ্কনের নামান্তর| আর ধারণ করা যেমন
না জায়িয, তেমনি ইচ্ছাকৃতভাবে তা দেখাও
না জায়িয| কারণ এতে ছবি দেখার সাথে
সাথে হারাম কাজের সহযোগিত করা হয়|
অথচ
কিছু খেলাধুলা ছাড়া টিভির প্রোগ্রাম সাধারণত পূর্ব থেকে ধারণকৃতই হয়ে থাকে| সুতরাং সর্বাবস্থায় এটা রাখা ও দেখা হারাম|
সর্বক্ষণ যার মধ্যে চরম বেহায়াপনাসহ হারাম প্রোগ্রাম চলতে থাকে তার মধ্যে সামান্য
কিছু সময় ইসলামী প্রোগ্রাম করা দ্বীন অবমাননা এবং দ্বীন নিয়ে ঠাট্টা তামাশার শামিল| এর দৃষ্টান্ত এরূপ যে, নাচ-গানের আসরের ফাঁকে ফাঁকে দ্বীনের নছীহত করা, ওয়াজ করা বা নর্দমা দিয়ে মিষ্টান্ন ভেসে আসা| সুতরাং যা স্বয়ং কুরআন শরীফেই নিষেধ করা হয়েছে
এবং এটাকে ইহুদীদের চরিত্র বলা হয়েছে|
সুতরাং
বর্তমানে টিভিতে দ্বীনী প্রোগ্রাম জায়িয হওয়ার প্রশ্নই আসেনা|
► জিজ্ঞাসাঃ ভি.সি.আর দেখা শরীয়তের দৃষ্টিতে জায়িয
কি না?
✒
জবাবঃ
প্রচলিত টিভি, ভিসিআর ইত্যাদি দেখা
বা ঘরে রাখা সম্পূর্ণরূপে নাজায়িয,
হারাম
ও কবীরা গুণাহ্| দুনিয়া ও আখিরাত
উভয় দিক দিয়েই এসবের মধ্যে বহু ক্ষতি রয়েছে|
এর
বিস্তারিত ব্যাখ্যার জন্য একটি পুস্তক রচনার প্রয়োজন| ইসলাম বিদ্বেষীদের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে আজ সাধারণতঃ
এগুলোতে যা কিছু প্রদর্শিত হচ্ছে,
এসবের
মাধ্যমে সমাজে হাজারো অপকর্ম ও গুণাহের দ্বার উম্মুক্ত করে দিয়ে পুরো সমাজটাকে ধ্বংস
করে মুসলমানদের ঈমান নষ্ট করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে| এসব পবিত্র বিধ্বংসী উপকরণ কোন ঘরে প্রবেশ করলে একথা নির্দ্বিধায়
বলা যায় যে, সে ঘর থেকে কালক্রমে
দ্বীন ইসলামের অস্তিত্ব মুছে যেতে বাধ্য|
এখানেই
শেষ নয়, এর কারণে আমাদের সমাজ থেকে
ইসলামী সভ্যতা-সংস্কৃতি বিদায় নিয়ে বিজাতীর নোংড়া সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে| যার বিষক্রিয়ায় আমাদের রাষ্ট্র ও সমাজ নির্লজ্জ
ও নৈতিকতাহীনতার চরম বিপর্যয়ে নিপতিত হচ্ছে|
সার্বক্ষনিক
অসংখ্য নোংরামি মাঝে কখনো এক আধটু ধর্মীয় কিংবা সভ্যতার বাণী প্রচার করা হলেও তা অপবিত্র
নোংরা ড্রেনের দুধের প্রস্রবন সদৃশ|
সে
দুধ যেমন কোন রুচিশীল মানুষ পান করতে পারে না, তেমনি ওদের এসব প্রচারণা জাতীয় কল্যান বলে আনতে পারে না| আর এগুলোতে যে চিত্র দেখানো হয় তা মূলতঃ ফিল্মের
স্থির চিত্র যা যন্ত্রের সাহায্যে চলমান করা হয়| আর এধরনের ফিল্ম চিত্র ফটোর শামিল| কোন মানুষ বা প্রাণীর ছবি যেমন ঘরে সাজিয়ে রাখা, লটকানো বা প্রদর্শিত করা যায় না| তেমনিভাবে এগুলোও নাজায়িয| সুতরাং বাহ্যিকভাবে ভালো কোন অনুষ্ঠান চিত্র
যেমন সংবাদ, তিলাওয়াত, ওয়াজ ও ইসলামী কোন প্রোগ্রাম-চিত্রও টিভিতে দেখা
জায়িয নয়| এর দ্বারা গুনাহের কাজে সহযোগিতা
করা হয়|
► জিজ্ঞাসাঃ টিভিতে প্রচাতির হজ্জের কার্যসমূহ
দেখার ব্যাপারে শরীয়তের দৃষ্টিতে কোন নিষেধ আছে কি না? যদি নিষেধ থাকে, তাহলে কেন? আর সরাসরি সম্প্রচার করা বা পূর্বে ভিডিও করে সম্প্রচার করার
মাঝে কোন পার্থক্য আছে কিনা? বিস্তারিত জানতে
ইচ্ছুক|
✒
জবাবঃ
বর্তমানে প্রচাতির টিভিতে কোন অনুষ্ঠান দেখা বা দেখানোর অনুমতি শরীয়তে নেই| বরং সকল প্রকার অনুষ্ঠান দেখাই কবীরাহ গুনাহ
ও হারাম| যদিও সেটা ইসলামী অনুষ্ঠান
হয়| সুতরাং হজ্জের কার্যাবলীও
টিভিতে দেখা জায়িয হবে না| সরাসরি সম্প্রচার
করা হোক অথবা পূর্বে উক্ত দৃশ্য যন্ত্রের সাহায্যে ধারণ করে পরে সম্প্রচার করা হোক| এতদুভয়ের মাঝে কোন তফাৎ নেই| কেননা ফিল্ম কোম্পানী এ কাজ করতে যে সকল যন্ত্র
ব্যবহার করে থাকে, সবই খেল-তামাশার
বস্তু| আর এমন বস্তুকে দ্বীনের মৌলিক
ইবাদতের মধ্যে প্রবেশ করানো দ্বীনের অবমাননা ও দ্বীনকে তামাশার বস্তুতে পরিণত করার
নামান্তর| আর এতদ সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে
ভয়াবহ আযাবের কথা ঘোষণা দেয়া হয়েছে|
তাছাড়া হজ্জের অধিকাংশ কার্যক্রমই হল আমলে তা’আব্বুদী তথা শরীয়ত কর্তৃক অবধারিত
হুকুম| যার মাঝে যুক্তির বিন্দুমাত্র
অবকাশও নেই| সুতরাং ইসলাম বিরোধীরা
যখন এ ধরনের বিষয় টিভিতে দেখবে, তখন তারা অহেতুক
যুক্তির পেছনে পড়ে নিজেদের শরীয়ত বিরোধী দাবীসমূহ প্রমাণের অপপ্রয়াস চালাবে| আর দ্বীনের এসব বিষয় নিয়ে উপহাস করতে থাকবে|
শুধু তাই নয়, বরং হজ্জের অনুষ্ঠান
দেখার সময় বেগানা মহিলাদের চেহারা থেকে মুক্তি থাকাও সম্ভব নয়| যেমন,
অনুষ্ঠান
আরম্ভ হওয়ার ঘোষণা সাধারণত মেয়েরাই দিয়ে থাকে| অতঃপর মাঝে মাঝে বিভিন্ন জিনিসের নাজায়িয বিজ্ঞাপন প্রচার করা
হয়ে থাকে| যেগুলো দর্শন করা শরীয়সম্মত
নয়|
প্রকাশ থাকে যে, টিভি’র অনুষ্ঠানমালা
যদি পূর্বে ধারণ করে সম্প্রচার করা হয়,
তাহলেও
সেটা ফটো ও ছবি ব্যবহার করা হুকুমে পড়বে যা সম্পূর্ণ হারাম| পক্ষান্তরে যদি পূর্বে ধারণ না করে সরাসরি সম্প্রচার
করা হয়, তাহলে দ্বীন ও ইবাদতকে তামাশার
বস্তুতে রূপান্তরিত করার কারণে তা নাজায়িয হবে|”
অতএব, পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র
হাদীছ শরীফের অকাট্য দলীলের দ্বারা সুস্পষ্ট ও অকাট্যভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে, প্রাণীর ছবিভিত্তিক সর্বপ্রকার টিভি চ্যানেলই
ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে হারাম ও নাজায়িয|
চাই
তা ইসলামের নামে হোক অথবা অনৈসলামিক হোক|
কারণ
ক্ষেত্র বিশেষে বেপর্দা ও গান-বাজনা থেকে বাঁচা সম্ভব হলেও ছবি তোলার গুনাহ থেকে বাঁচা
কখনোই সম্ভব নয়| অথচ ছবি তোলা সম্পূর্ণ
হারাম ও নাজায়িয| যার বহু প্রমাণ উপরে
উল্লেখ করা হয়েছে| সুতরাং যে সকল মাওলানা
টিভি চ্যানেলে ইসলামের নামে প্রোগ্রাম করছে তারা ছবি তুলে প্রকাশ্য হারাম কাজ করছে| শুধু তাই নয়, যে টিভি চ্যানেলে ২৪ ঘন্টা বেপর্দা, অশ্লীলতা, গান-বাজনা,
সিনেমা, নাটকসহ অসংখ্য হারাম, কুফরী ও শরীয়ত বিরোধী কর্মকান্ড প্রচার হচ্ছে
তার সাথে ‘ইসলামকে’ মিশ্রিত করছে|
অর্থাৎ
হক্বকে না হক্বের সাথে মিশ্রিত করছে|
কাজেই, যারা প্রকাশ্যে হারাম
কাজে মশগুল, যারা হক্বকে নাহক্বের
সাথে মিশ্রিত করে, তারা কি করে হক্কানী
আলিম হতে পারে| পবিত্র কুরআন, পবিত্র সুন্নাহ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে তারা কস্মিনকালেও
হক্কানী আলিম নয়| বরং তারা হচ্ছে নাহক্ব
আলিম তথা উলামায়ে ‘ছূ’ অর্থাৎ ধর্মব্যবসায়ী মৌলবী|
এসমস্ত উলামায়ে ‘ছূ’ ধর্মব্যবসায়ীদের সম্পর্কেই পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক
হয়েছে-
“হযরত আহওয়াছ ইবনে
হাকীম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পিতা হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
নিকট নিকৃষ্ট লোক সম্পর্কে জানার জন্যে প্রশ্ন করলেন| তখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “তুমি আমাকে খারাপ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করো না বরং
ভালো সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করো| তিনি উহা তিনবার
বললেন| অতঃপর বললেন, সাবধান! নিশ্চয়ই নিকৃষ্টেরও নিকৃষ্ট লোক হলো-
উলামায়ে ‘ছূ’ অর্থাৎ দুনিয়ালোভি ধর্মব্যবসায়ী মাওলানারা| আর নিশ্চয়ই সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ হচ্ছেন হক্কানী-রব্বানী
আলিমগণ|”
No comments