মুজাদ্দিদে আ’যমে ছানী, খলীফাতুল উমাম, সাইয়্যিদুনা হযরত আল মানছূর আলাইহিস সালাম উনার রচিত এক অনবদ্য তাজদীদ মুবারক ‘আত-তাক্বউয়ীমুশ শামসী’ যা পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম ইসলামী সৌর বর্ষপঞ্জি
বিভিন্ন সময়ে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে নানা রকম ক্যালেন্ডার বা বর্ষপঞ্জি ব্যবহারের
তথ্য আমরা ইতিহাস থেকে পাই। যা বর্তমানে চালু নেই, যেমন : চাইনিজ, রোমান, জুলিয়ান, বেবিলনিয়ান, বাইজেন্টাইন, মিসরীয় বর্ষপঞ্জি ইত্যাদি।
বর্তমান পৃথিবীতে গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জির পাশাপাশি বিশ্বের প্রায় সব দেশেই সম্মানিত
মুসলমানদের কাছে হিজরী বর্ষপঞ্জির প্রচলন রয়েছে। কিন্তু গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি রচিত
হয়েছে সূর্যের আবর্তনের সাপেক্ষে আর হিজরী বর্ষপঞ্জি রচিত হয় চাঁদের আবর্তনের সাপেক্ষে।
মাস শুরু এবং শেষ, বিশেষ দিন ধরে হিজরী বর্ষপঞ্জির
যেমন প্রয়োজনীয়তা রয়েছে তেমনি ওয়াক্ত নির্ণয়ে প্রয়োজন রয়েছে সৌর বর্ষপঞ্জির। কিন্তু
ইতিহাসে সম্মানিত মুসলমানদের রচিত কোনো সৌর বর্ষপঞ্জির তথ্য পাওয়া যায় না। ফলে গ্রেগরিয়ান
বর্ষপঞ্জি ব্যবহারে সম্মানিত মুসলমানরা অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কিন্তু সম্মানিত ইসলামী
শরীয়ত উনার দৃষ্টিকোণ হতে সম্মানিত মুসলমানদের গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি ব্যবহার করা উচিত
নয়।
কেননা, মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন
শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
وَلَا تُطِعِ
الْكَافِرِينَ وَالْمُنَافِقِينَ
অর্থ : “তোমরা কাফির ও মুনাফিক্বদের অনুসরণ-অনুকরণ করোনা।” (পবিত্র সূরা আহযাব
শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৪৮)
আর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضرَتْ
عمرو بْنِ شُعَيْب رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ عَنْ اَبِيْهِ عَنْ جَده اَنَّ رَسُوْل
اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَيْسَ مِنَّا مَنْ تَشَبَّهَ
بِغَيْرِنَا لاَتَشَبَّهُوْا بِالْيَهُوْدِ وَلا بِالنَّصَارٰى.
অর্থ : “হযরত আমর বিন শুয়াইব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার পিতা থেকে উনার পিতা
উনার দাদা থেকে বর্ণনা করেন যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
যে ব্যক্তি
আমাদের ভিন্ন অন্য জাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করে সে আমাদের দলভুক্ত নয়। কাজেই আপনারা ইয়াহুদী
এবং নাছারাদের সাদৃশ্য অবলম্বন করবেন না।” (তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ ৩৯৯ পৃষ্ঠা)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضرَتْ
عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَر رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ.
অর্থ : “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক
করেন, যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে
মিল রাখে, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ
তার হাশর-নশর তাদের সাথে হবে।” (আবূ দাঊদ শরীফ, মুসনাদে আহমদ শরীফ)
আর সে কারণেই যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ,
মুজাদ্দিদে
আ’যম, খ¦লীফাতুল্লাহ, খ¦লীফাতু রসূলিল্লাহ,
ইমামুল আইম্মাহ, মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার নেক দোয়া এবং
পৃষ্ঠপোষকতায় উনার একমাত্র ছাহিবযাদা,
আওলাদুর
রসূল, কুতুবুল আলম, ফখরুল আউলিয়া, খ¦লীফাতুল্লাহ, খ¦লীফাতু রসূলিল্লাহ,
সাইয়্যিদুনা
হযরত খ¦লীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন উনার এবং নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সঙ্গে গভীর
নিসবত মুবারক উনার বদৌলতে এই মুবারক তাক্বউয়ীম (দিন গণনা পদ্ধতি) রচনা করেন।
আরবীতে اَلتَّقْوِيْـمُ ‘তাক্বউয়ীম’ অর্থ
বর্ষপঞ্জি আর اَلشَّمْسِىِ ‘শামসী’ অর্থ হচ্ছে
সৌর বা সূর্য সম্পর্কিত আর দুইয়ে মিলে হয়েছে,
اَلتَّقْوِيْـمُ
اَلشَّمْسِىٌّ “আত-তাক্বউয়ীমুশ শামসী”।
অর্থাৎ সৌর বর্ষপঞ্জি।
“আত-তাক্বউয়ীমুশ শামসী” উনার উদ্দেশ্য
এবং প্রচলিত সৌর বর্ষপঞ্জির সাথে পার্থক্য:
১. উদ্দেশ্য
আত-তাক্বউয়ীমুশ শামসী : সম্মানিত মুসলমানরা যেন কাফিরদের গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি
অনুসরণ না করেন বরং এই মুবারক বর্ষপঞ্জি অনুসরণ করার মাধ্যমে পবিত্র কুরআন শরীফ এবং
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের পূর্ণ অনুসরণ করতে পারেন।
গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি : ইউরোপের খ্রিস্টানরা ২১শে মার্চ ইস্টার দিবস পালন করতো
(যেদিন দিন-রাত সমান হয়)। কিন্তু দেখা গেলো জুলিয়ান বর্ষপঞ্জি অনুসরণ করলে ইস্টার ডে
চলে আসে ১২ই মার্চ। ফলে তারা তাদের এই ইস্টার ডে পালনের জন্যই জুলিয়ান বর্ষপঞ্জি সংশোধন
করে গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি তৈরি করে। উল্লেখ্য, ইস্টার ডে হচ্ছে কাফিরদের কাছে সেই দিন,
যেদিন তারা
মনে করে হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার তিনদিন পর এই দিনে
আবার ফিরে আসেন। নাঊযুবিল্লাহ!
ফসলী সন : ফসলী সন তৈরি হয় মোঘল শাসক আকবরের নির্দেশে। সে মুসলমানদের হিজরী সন
বাদ দেবার জন্যই এই বাংলা সন চালু করেছিলো। তার সিংহাসন আরোহণের দিন মনে রাখার জন্যই
এই সন চালু করে। যে ব্যক্তি দ্বীন-এ-ইলাহী নামক নতুন একটি ধর্ম তৈরি করে সম্মানিত দ্বীন
ইসলাম উনাকে ধ্বংস করার কাজে নিয়োজিত ছিল তার নির্দেশে রচিত সৌর সন অনুসরণের কোনই প্রয়োজন
মুসলমানদের নেই।
২. প্রবর্তন এবং নামকরণ
আত-তাক্বউয়ীমুশ শামসী : এই সৌর বছর গণনা পদ্ধতি প্রবর্তন এবং নামকরণ করেছেন খ¦লীফাতুল্লাহ, খ¦লীফাতু রসূলিল্লাহ,
আল মানছূর, সাইয়্যিদুনা হযরত খ¦লীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি : এর নামকরণ করা হয়েছে খ্রিস্টানদের তথাকথিত ধর্মযাজক, দুশ্চরিত্র (যার বিবাহ বহির্ভূত একটি সন্তান ছিল) পোপ গ্রেগরির
নামানুসারে। নাঊযুবিল্লাহ!
৩. উৎস
আত-তাক্বউয়ীমুশ শামসী : এই সৌর বছর গণনা পদ্ধতি পৃথিবীর কোন বর্ষপঞ্জির অনুকরণে
তৈরি না করে বরং খাছ খোদায়ী মদদে ইলহাম-ইলক্বা উনার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে।
গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি : কুসংস্কারাচ্ছন্ন রোমানদের বর্ষপঞ্জি ও তাদের কল্পনা থেকে।
ফসলী সন : চন্দ্রমাস নির্ভর হিজরী বর্ষপঞ্জি এবং সৌরমাস নির্ভর হিন্দু বর্ষপঞ্জির
সংমিশ্রণে মোঘল বাদশাহ আকবর কর্তৃক এর উদ্ভব ঘটনো হয় যাতে মুসলমানগণ হিজরী বর্ষ গণনা
পরিহার করে হিন্দু বর্ষ গণনায় অভ্যস্ত হয়।
৪. শুরুর সময়কাল
আত-তাক্বউয়ীমুশ শামসী : নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিছালী
শান মুবারক প্রকাশের বছর, ১১ হিজরী এবং সে বছরের
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (পবিত্র ১২ই
রবী‘উল আউয়াল শরীফ)। উক্ত মুবারক মাস উনার ১ম দিন থেকে এই আত-তাক্বউয়ীমুশ শামসী উনার
০ বছর ১ম মাস ১ম দিন শুরু হয়েছে।
আর প্রতিটি দিন গণনা করা শুরু করা হয় ছুবহে সাদিক থেকে। কেননা ছুবহে সাদিক উনার
মুবারক মুহুর্তে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র বিলাদতী
শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। আর হিজরী বর্ষপঞ্জিতে দিবসের শুরু হয় সূর্যাস্তের পর থেকে।
গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি : জুলিয়ান বর্ষপঞ্জিকে সংশোধন করে গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি করা
হয়েছে। ফলে জুলিয়ান বর্ষপঞ্জির শেষ তারিখ ছিল ৪ঠা অক্টোবর, ১৫৮২, বৃহস্পতিবার আর ১০ দিন
সংশোধন করে ১৫ই অক্টোবর, ১৫৮২ জুমু’আবার থেকে গ্রেগরিয়ান
বর্ষপঞ্জির ১ম তারিখ গণনা করা হচ্ছে।
আর এই বর্ষপঞ্জিতে দিন গণনা শুরু হয় রাত ১২ টার পর থেকে।
ফসলী সন : চন্দ্রমাস নির্ভর হিজরী বর্ষপঞ্জি এবং সৌরমাস নির্ভর হিন্দু বর্ষপঞ্জির
সংমিশ্রণে ৯৬৩ হিজরী, ২ রবীউছ ছানী, জুমু‘য়াবার (১৫৫৬ ঈসায়ী সনে ১৪ এপ্রিল) থেকে এই বর্ষপঞ্জির ১ম
তারিখ গণনা করা হচ্ছে। কিন্তু শুরুর দিন ১ সাল ছিল না বরং হিজরী বর্ষপঞ্জির সাথ মিল
রেখে ৯৬৩ সাল ছিল। বস্তুত ওই দিনটি যেহেতু মোঘল বাদশাহ আকবরের সিংহাসনে অভিষেক দিবস
ছিল, তাই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার
জন্যই ওই দিন পহেলা তারিখ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়।
আর এই বর্ষপঞ্জিতে সূর্যোদয় থেকে দিন গণনার রীতি থাকলেও ১৪০২ সালের ১ বৈশাখ থেকে
বাংলা একাডেমী এই নিয়ম বাতিল করে আন্তর্জাতিক রীতির সাথে সামঞ্জস্য রাখতে রাত ১২টায়
দিন গণনা শুরুর নিয়ম চালু করে।
৫. শুরুর সময়কালের তাৎপর্য
আত-তাক্বউয়ীমুশ শামসী : নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল
আ’দাদ শরীফ (পবিত্র ১২ই শরীফ), সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল
আইয়্যাম শরীফ (ইছনাইনিল আযীম শরীফ) পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। ফলে শামসী
তাক্বউয়ীম শুরু করা হয়েছে নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিছালী
শান মুবারক প্রকাশের বছর মুবারক উনার থেকে এবং এই তাক্বউয়ীম উনার শূণ্য বছরের ১ম মাসের
১২ তারিখ হচ্ছে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম
শরীফ (মুবারক ১২ই রবী‘উল আউওয়াল শরীফ),
সাইয়্যিদু
সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইছনাইনিল আযীম শরীফ)। সুবহনাল্লাহ! এর মাধ্যমে খুব সহজেই
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক স্মরণ
হচ্ছে। আলহামদুলিল্লাহ্! আবার প্রত্যেক দিন শুরুর ক্ষেত্রেও খুব সহজেই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক স্মরণ হচ্ছে। আলহামদুলিল্লাহ্!
গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি : গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জির শুরুর কোন তাৎপর্য নেই বরং গ্রেগরিয়ান
বর্ষপঞ্জির মাধ্যমে বদ চরিত্র পোপ পোপ গ্রেগরিকে স্মরণ করা হচ্ছে। নাঊযুবিল্লাহ! যা
মুসলমানদের জন্য হারাম ও কুফরী।
ফসলী সন : ফসলী সন শুরুরও কোন তাৎপর্য নেই বরং এর মাধ্যমে মোঘল বাদশাহ আকবরের স্মরণ
হচ্ছে। নাঊযুবিল্লাহ!
৬. মাসসমূহের নামকরণ
আত-তাক্বউয়ীমুশ শামসী : এই তাক্বউয়ীম উনার মাসের নামকরণ করা হয়েছে আরবী পদ্ধতি
অনুযায়ী।
যেমন, স্থানীয় মান অনুযায়ী আরবীতে প্রথম
স্থানকে বলা হয় আউওয়াল। এভাবে ১ম মাস থেকে ১২তম মাস পর্যন্ত নামকরণ করা হয়েছে। যথা
:
১. আউওয়াল (اَوَّلٌ), ২. ছানী (ثَانِىْ),
৩. ছালিছ (ثَالِثٌ), ৪. রবি’ (رَابِعٌ),
৫. খমিস (خَامِسٌ), ৬. সাদিস (سَادِسٌ),
৭. সাবি’ (سَابِعٌ), ৮. ছামিন (ثَامِنٌ),
৯. তাসি’ (تَاسِعٌ), ১০. ‘আশির (عَاشِرٌ),
১১. হাদী ‘আশার (حَادِىْ عَشَرَ) এবং
১২. ছানী ‘আশার (ثَانِىْ عَشَرَ)।
গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি : এই বর্ষপঞ্জির ৬টি মাসের নামকরণ করা হয়েছে দেব-দেবীর নামে, ৪টি মাসের নামকরণ হয়েছে রোমান শব্দ থেকে আর ২টি মাসের নামকরণ
করা হয়েছে দুই রোমান সম্রাটের স্মরণে। মাসের নামের দ্বারা কাফির-মুশরিক এবং দেব-দেবীর
নাম স্মরণ করা হয়। নাঊযুবিল্লাহ!
ফসলী সন : এই বর্ষপঞ্জির প্রায় প্রত্যেক মাসের নামকরণ করা হয়েছে দেব-দেবীর নামে।
মাসের নামের দ্বারা মুশরিক এবং দেব-দেবীর নাম স্মরণ করা হয়। নাঊযুবিল্লাহ!
৭. দিনের নামকরণ
আত-তাক্বউয়ীমুশ শামসী : আরবী মাসের দিনের নামানুসারেই দিনগুলোর নামকরণ হয়েছে।
যথা : ইছনাইনিল আযীম (সোমবার),
ছুলাছা (মঙ্গলবার), আরবিয়া (বুধবার),
খ¦মীস (বৃহস্পতিবার), জুমু‘আহ (জুমু‘আ বার),
সাব্ত (শনিবার), আহাদ (রোববার)।
গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি : গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জির উদ্ভব:
বর্তমানে সমগ্র পৃথিবীতে প্রচলিত সৌরবর্ষপঞ্জিটি খ্রিস্টানদের তথাকথিত ধর্মযাজক
পোপ গ্রেগরির নামানুসারে “গ্রেগরিয়ার বর্ষপঞ্জি” নামে পরিচিত। তবে আমাদের দেশে এই বর্ষপঞ্জিটি
“ইংরেজি ক্যালেন্ডার” নামেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। পোপ গ্রেগরির প্রকৃত নাম উগো বেনকোমপাগনাই; সে ছিল ১৩তম পোপ। ১৫৮২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি, গ্রেগরি একটি ডিক্রি জারীর মাধ্যমে গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি চালু
করে। সে খ্রিস্টানদের ধর্মীয় গুরু হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও প্রকৃতপক্ষে সে ছিল একজন
চরিত্রহীন মানুষ। সে ছিল একজন অবৈধ সন্তানের জনক। যার নাম ইতিহাসে লেখা আছে জিয়াজোমো
বেনকোমপাগনাই। পরবর্তীতে ক্ষমতার অপব্যবহার করে তার এই অবৈধ সন্তানকে সে আর্মির প্রধান
এবং তারপরে ডিউক পদে অধিষ্ঠিত করেছিলো। নাঊযুবিল্লাহ!
এই পোপ গ্রেগরী তার শাসনামলে পুর্তগালের রাজা সিবাসতিয়ানকে প্ররোচিত করেছিলো মরক্কোর
বাদশাহ আব্দুল মালিকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে। যা তার ইসলাম বিদ্বেষী মনোভাবের সামান্য
নমুনা মাত্র।
গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জির মাধ্যমে গ্রিক দেব-দেবীর স্মরণ :
এই বর্ষপঞ্জির ৬টি মাসের (জানুয়ারী,
ফেব্রুয়ারী, মার্চ, এপ্রিল, মে ও জুন) নামকরণ করা হয়েছে দেব-দেবীর নামে, ৪টি মাসের (সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বর) নামকরণ হয়েছে
রোমান শব্দ থেকে আর ২টি মাসের (জুলাই ও অগাস্ট) নামকরণ করা হয়েছে দুই রোমান শাসকের
স্মরণে। মাসের নামের দ্বারা দেব-দেবী ও রোমান শাসকের নাম স্মরণ করা হয়। নাঊযুবিল্লাহ!
January (জানুয়ারী) : রোমে ‘জানুস’
নামক এক দেবতা ছিল। রোমবাসী তাকে সূচনার দেবতা বলে মানত। যে কোনো কিছু করার আগে তারা
এ দেবতার নাম স্মরণ করত। তাই বছরের প্রথম মাসটিও তার নামে রাখা হয়েছে।
February (ফেব্রুয়ারী) : রোমান দেবতা
‘ফেব্রুস’-এর নাম অনুসারে ফেব্রুয়ারী মাসের নামকরণ করা হয়েছে।
March (মার্চ) : রোমান যুদ্ধ-দেবতা
‘মরিস’ এর নামানুসারে তারা মার্চ মাসের নামকরণ করে।
April (এপ্রিল) : কেউ বলে এ শব্দটি
এসেছে aphrodite (aphros) অথবা apru দেবীর নাম থেকে। কেউ বলে এপ্রিল নাম এসেছে একজন কাল্পনিক
দেবতা aper বা aprus থেকে।
May (মে) : রোমানদের আলোক দেবী
‘মেইয়ার’-এর নামানুসারে মাসটির নাম রাখা হয় মে।
June (জুন) : রোমানদের নারী, চাঁদ ও শিকারের দেবী ছিল ‘জুনো’। তার নামেই জুনের সৃষ্টি।
July (জুলাই) : জুলিয়াস সিজারের
নামানুসারে জুলাই মাসের নামকরণ।
August (আগস্ট) : অগস্টাস সিজার
বছরকে ঢেলে সাজানোর পর আগস্ট মাসটি তার নিজের নামে রাখার জন্য সিনেটকে নির্দেশ দেয়।
সেই থেকে শুরু হয় আগস্ট মাস।
September (সেপ্টেম্বর) : সেপ্টেম্বর
শব্দের শাব্দিক অর্থ সপ্তম মাস। কিন্তু সিজার বর্ষ পরিবর্তনের পর তা এসে দাঁড়ায় নবম
মাসে। তারপর এটা কেউ পরিবর্তন করেনি।
October (অক্টোবর) : ‘অক্টোবর’-এর
শাব্দিক অর্থ বছরের অষ্টম মাস। সেই অষ্টম মাস ক্যালেন্ডারে এখন স্থান পেয়েছে দশম মাসে।
November (নভেম্বর) : ‘নভেম’ শব্দের
অর্থ নয় (৯)। সেই অর্থানুযায়ী তখন নভেম্বর ছিল নবম মাস। জুলিয়াস সিজারের কারণে আজ নভেম্বরের
স্থান এগারতে।
December (ডিসেম্বর) : ল্যাটিন শব্দ
‘ডিসেম’ অর্থ দশম। সিজারের বর্ষ পরিবর্তনের আগে অর্থানুযায়ী এটি ছিল দশম মাস। কিন্তু
আজ এ মাসের অবস্থান ক্যালেন্ডারের শেষ প্রান্তে।
এছাড়া এই বর্ষপঞ্জির প্রতিটি দিনেরও নামকরণ করা হয়েছে দেব-দেবীর নামে। নাঊযুবিল্লাহ!
যেহেতু রোমানরা গ্রহের সাথে দেবতার সম্পর্ক করতো; তাই তাদের সপ্তাহের দিনে নামগুলো ছিল এরূপ-
Sunday (সানডে)- Day of God (বিধাতার দিন)। নাঊযুবিল্লাহ! দক্ষিণ
ইউরোপের সাধারণ ‘লোকেরা বিশ্বাস করত এবং ভাবত যে একজন দেবতা রয়েছে যে শুধুমাত্র আকাশে
গোলাকার আলোর বল অঙ্কন করে। ল্যাটিন ভাষায় যাকে বলা হয় Solis ‘সলিস’। এর থেকেই Dies Solis ‘ডাইচ সলিস’ অর্থাৎ সূর্যের দিন। উত্তর ইউরোপের লোকেরা এই দেবতাকে
ডাকত Sunnadaeg ‘সাননানডায়েজ’ নামে। যা
পরবর্তীতে বর্তমান সান ডে-তে রূপান্তরিত হয়। নাঊযুবিল্লাহ!
Monday (মানডে)- MoonÕs day
(চাঁদের
দেবীর দিন)। নাঊযুবিল্লাহ! এই নামের সাথেও দক্ষিণ ইউরোপের লোকেরা জড়িত। রাতের বেলায়
আকাশের গায়ে রূপালী বল দেখে তারা ডাকত Luna
‘লুনা’ নামে।
ল্যাটিন শব্দ Lunaedies ‘লুনায়েডাইস’। উত্তর ইউরোপের
লোকেরা ডাকত Monandaeg ‘মোনানডায়েজ’। এ মানডে
কিন্তু মোনানডায়েজ থেকে রূপান্তর হয়। নাঊযুবিল্লাহ!
Tuesday (টুইসডে)- দেবতা Ti-এর নাম থেকে। নাঊযুবিল্লাহ! রোমানরা বিশ্বাস করত যে, Twi ‘টিউ’ নামক একজন দেবতা আছে যে যুদ্ধ দেখাশুনা করে।
তারা ভাবত যারা টিউকে আশা করত টিউ তাদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা করত যুদ্ধের ময়দানে এবং
যারা পরলোক গমন করেছে তাদেরকে টিউ পাহাড় থেকে নেমে একদল মহিলা কর্মী নিয়ে বিশ্রামের
জায়গা ঠিক করত। লোকেরা এই ‘টিউ’ দেবতার সম্মানে একদিনের নাম করে Tiwesdaeg ‘টিউয়েজডায়েজ’। যার ইংরেজি অর্থ টুইস ডে। নাঊযুবিল্লাহ!
Wednesday- Mercury দেবতার নাম থেকে। বুধবারের
ইংরেজি রূপ Wednesday, দেবতাদের মধ্যে সবচেয়ে
শক্তিশালী ‘উডেন’ বলে দক্ষিণ ইউরোপের লোকেরা ভাবত। সে সারা দিন ঘুরে জ্ঞান লাভ করতো
যার জন্য তার একটি চোখ হারাতে হয়েছিল। এই হারানো চোখকে সে সবসময় লম্বাটুপি দিয়ে আবৃত
করে রাখতো। দুটো পাখি উডেনের গোয়েন্দা হিসেবে কাজ করত, তারা উডেনের কাঁধে বসে থাকত। রাতে তারা সারা পৃথিবীর ঘটনাবলী
উডেনকে শুনাত। এভাবেই উডেন সারা পৃথিবীর খবর শুনতে সক্ষম হয়। এজন্য লোকেরা নাম রাখল
Wednesdaeg ‘উডেনেসডায়েজ’। যা বর্তমান ওয়েডনেস
ডে নামে পরিচিত। নাঊযুবিল্লাহ!
Thursday- Thor দেবতার নাম থেকে। বৃহস্পতিবারের
ইংরেজি রূপ Thursday, বজ্রপাত ও বিদ্যুৎ চমকানোর
সম্পর্ক না জানার ফলে মানুষ মনে করত যে,
বজ্রপাত
ও বিদ্যুৎ চমকানোর জন্য একজন দেবতা দায়ী। তারা শুধু আলো জ্বলতে ও বিদ্যুৎ চমকাতে দেখত।
তারা দেবতার নাম রাখে Thor ‘থর’ যাকে ThunderI বলা হয়। জার্মান বজ্র-দেবতা থর-এর রোমান শব্দ Jupiter ‘জুপিটার’ এবং গ্রীক শব্দ Jeus ‘জিউস’। তাদের মধ্যে এই অন্ধ বিশ্বাস ছিল যে, দেবতা থর যখন রাগান্বিত হয় তখন সে রাগে আকাশে একটা হাতুড়ি নিক্ষেপ
করে দুটি ছাগলের গাড়িতে বসে। ছাগলের গাড়ি চাকার শব্দ হচ্ছে বজ্রপাত ও হাতুড়ির আঘাত
হচ্ছে বিদ্যুৎ চমকানো। থরের প্রতি সম্মান রক্ষার্থে তারা সপ্তাহের একটি দিনের নাম রাখে
Thoresdaeg ‘থরেসডায়েজ’। যাকে আজ থার্স ডে
বা বৃহস্পতিবার বলা হয়। নাঊযুবিল্লাহ!
Friday – দেবী Frigg -এর নাম থেকে, শুক্রবারকে ইংরেজিতে বলা হয় Friday,
রোমানরা
বিশ্বাস করত যে, Odin ‘ওডিন’ একজন শক্তিশালী
দেবতা। তার স্ত্রী দেবী ফ্রিগ। প্রকৃতির দেবী ভালোবাসা ও বিবাহের দেবীও ছিল ফ্রিগ।
এই জন্য লোকেরা বাকি একটি দিনের নাম Frigdaeg
‘ফ্রিগডায়েজ’
বা ফ্রাইডে রাখে। নাঊযুবিল্লাহ!
Saturday – শনি গ্রহের (Saturn) সম্মানে। নাঊযুবিল্লাহ! শনিবারের ইংরেজিতে বলা হয়
Saturday, রোমান আমলের লোকেরা এই বলে বিশ্বাস
করত যে, চাষাবাদের জন্য ‘স্যাটার্ন’ নামের
একজন দেবতা আছে। যার হাতে আবহাওয়া ভালো-খারাপ করা লেখাটি আছে। তাই তাকে সম্মান করার
জন্যই তার নামে একটি গ্রহের সাথে সপ্তাহের একটি দিনের নাম Satuidaeg ‘স্যাটর্নিডায়েজ’ রাখা হয়েছে। যার অর্থ হচ্ছে স্যাটার্নের
দিন। বর্তমানে তা ‘স্যাটারডে’ নামেই পরিচিত। নাঊযুবিল্লাহ!
মুসলমান উনাদের জন্য এভাবে গ্রহ-নক্ষত্র,
দেব-দেবীর
নামানুসারে দিনের নাম ব্যবহার করা কুফরী।
সম্মানিত মুসলমানদের জন্য এভাবে গ্রহ-নক্ষত্র, দেব-দেবীর নামানুসারে দিনের নাম ব্যবহার করা হারাম ও কুফরী।
ফসলী সন : এই বর্ষপঞ্জির ৪টি দিনের নামকরণ করা হয়েছে হিন্দু দেব-দেবীর নামে আর
৩টি দিনের নামকরণ হয়েছে গ্রহের নামানুসারে। মুসলমানগণ উনাদের জন্য এভাবে গ্রহ-নক্ষত্র, দেব-দেবীর নামানুসারে দিনের নাম ব্যবহার করা কুফরী। নাঊযুবিল্লাহ!
৮. মাস গণনা পদ্ধতি
আত-তাক্বউয়ীমুশ শামসী : প্রতিটি বিজোড়তম মাস ৩০ দিনে এবং জোড়তম মাসগুলো ৩১ দিনে
শুধু ব্যতিক্রম হবে ১২তম মাস। কিন্তু ৪ দ্বারা বিভাজ্য সালগুলোতে ১২তম মাসটি ৩১ দিনে
হবে; তবে ১২৮ দ্বারা বিভাজ্য সালগুলো
ব্যতীত।
গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি : ফেব্রুয়ারী,
এপ্রিল, জুন, সেপ্টেম্বর, নভেম্বর এই মাসগুলো বাদে বাকী সব মাস ৩১ দিনে।
আর এপ্রিল, জুন, সেপ্টেম্বর, নভেম্বর মাস ৩০ দিনে।
কিন্তু ফেব্রুয়ারী মাস ২৮ দিনে।
তবে অধিবর্ষে (৪ দ্বারা বিভাজ্য সালগুলো) ২৯ দিন হবে। প্রতি ১০০ বছরে ১টি অধিবর্ষ
বাদ যাবে, আবার প্রতি ৪০০ বছরে অতিরিক্ত
১টি অধিবর্ষ যোগ হবে।
ফসলী সন : বছরের প্রথম ৫ মাস বৈশাখ হতে ভাদ্র ৩১ দিনের বাকী মাসগুলো অর্থাৎ আশ্বিন
হতে চৈত্র প্রতিটি ৩০ দিনের মাস। প্রতি চতুর্থ বছরের ফাল্গুন মাসে একটি দিন যোগ করে
তা ৩১ দিনের। বাংলা একাডেমী সরকারীভাবে এই সংশোধিত মাসের হিসাব গ্রহণ করে ।
৯. বার্ষিক বিচ্যুতি
আত-তাক্বউয়ীমুশ শামসী : ০.২ সেকেন্ডেরও কম।
গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি : প্রায় ২৭ সেকেন্ড।
ফসলী সন : ২৭ সেকেন্ডের বেশি।
১০. অধিবর্ষ পদ্ধতি
আত-তাক্বউয়ীমুশ শামসী : অতিরিক্ত একদিন বছর শেষে যোগ হওয়ায় পরিবর্তন লক্ষণীয় নয়
(যা চার বছর পর পর করা হয়)। কেননা নতুন বছর শুরু হয়ে যায়।
গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি : ফেব্রুয়ারী মাস ২৮ দিনে, অধিবর্ষে ২৯ দিনে। বছরের দ্বিতীয় মাসে অতিরিক্ত একদিন যোগ হওয়াতে বাকী ১০ মাসই
১ দিন পিছিয়ে যায়।
ফসলী সন : ফাল্গুুন মাস ৩০ দিনে, অধিবর্ষে ৩১ দিনে। বছরের
১১তম মাসে অতিরিক্ত একদিন যোগ হওয়াতে এতে কোন ছন্দ নেই।
১১. অনুসরণের ফল
আত-তাক্বউয়ীমুশ শামসী : এই তাক্বউয়ীম ব্যবহারে কাফিরদের অনুসরণ হয় না বরং মহান
আল্লাহ পাক উনার এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের স্মরণ হয়।
ফলে সম্মানিত মুসলমানরা রহমত, বরকত, সাকীনা লাভ করে। সুবহানাল্লাহ!
গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি : কাফিরদের তৈরি বর্ষপঞ্জি/ক্যালেন্ডার অনুসরণের ফলে শুধু
কাফির-মুশরিক ও দেব-দেবীদের নাম প্রতিনিয়ত উচ্চারণ ও স্মরণ করা হয়; যা সম্মানিত মুসলমানদের জন্য সম্পূর্ণ হারাম। এ ছাড়াও এর অনুসরণে
কল্যাণ নেই বরং অকল্যাণ রয়েছে। নাঊযুবিল্লাহ!
ফসলী সন : হিন্দুদের পুজার সুবিধার্থে তৈরি বর্ষপঞ্জি/ক্যালেন্ডার অনুসরণের ফলে
শুধু দেব-দেবীদের নাম প্রতিনিয়ত উচ্চারণ ও স্মরণ করা হয়; যা সম্মানিত মুসলমানদের জন্য সম্পূর্ণ হারাম। এ ছাড়াও এর অনুসরণে
কল্যাণ নেই বরং অকল্যাণ রয়েছে। নাঊযুবিল্লাহ!
বস্তুত কাফির-মুশরিকরা দেবদেবীর নাম ব্যবহার করার মূল কারণ হচ্ছে তারা বিশ্বাস
করে দেবদেবীর নামের কারণে তাদের কল্যাণ আসে। নাঊযুবিল্লাহ! তাই যতবেশী দেবদেবীর নাম
উচ্চারণ করা হবে ততবেশী মঙ্গল।
তাহলে দেখা যাচ্ছে, মুসলমানরা যদি দেবদেবীর
নামের ক্যালেন্ডার ব্যবহার করে তাহলে দেবদেবীদের অস্তিত্ব, গুরুত্ব ও তারা কল্যাণ দিতে পারে- এ কথা স্বীকৃতি দেয়া হয় যা
স্পষ্ট শিরক।
অথচ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَصْرَتْ
جَابِرٍ رَضِىَ اللّهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللّهِ صَلَّى اللّهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثِنْتَانِ مُوْجِبَتَانِ. قَالَ رَجُلٌ يَا رَسُوْلَ اللّهِ
صَلَّى اللّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا الْمُوجِبَتَانِ؟ قَالَ مَنْ مَاتَ يُشْرِكُ
بِاللّهِ شَيْئًا دَخَلَ النَّارَ وَمَنْ مَاتَ لَا يُشْرِكُ بِاللّهِ شَيْئًا
دَخَلَ الْـجَنَّةَ
অর্থ : “হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক
করেন, দুটি জিনিস ওয়াজিব হয়ে গেলো! হযরত
ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহ তায়ালা আনহুম উনারা জিজ্ঞাসা করলেন, কোন দুটি জিনিস?
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
যে ব্যক্তি
মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে কোন না কোন বিষয়ে শিরক করে মৃত্যুবরণ করলো সে সরাসরি জাহান্নামে
প্রবেশ করবে, আর যে ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলো
কিন্তু মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে কোন শিরক করলো না, সে ব্যক্তি সরাসরি জান্নাতে প্রবেশ করবে।” (মিশকাত শরীফ)
১২. সম্মানিত মুসলমানদের শ্রেষ্ঠত্ব
আত-তাক্বউয়ীমুশ শামসী : কাফিররা সব ক্ষেত্রে সম্মানিত মুসলমানদের অনুসরণ করবে।
কারণ এদের সৃষ্টি করা হয়েছে সম্মানিত মুসলমানদের খিদমতের জন্য। এই শামসী তাক্বউয়ীম
তৈরির ফলে উনার ব্যাপক প্রচার-প্রসার হলে ধীরে ধীরে কাফিররা এর অনুসরণ করবে এবং সম্মানিত
মুসলমানদের শ্রেষ্ঠত্ব ও আভিজাত্য বৃদ্ধি পাবে ইনশাআল্লাহ।
গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি : সম্মানিত মুসলমানরা কাফিরদের অনুসরণ এবং এর অনুসরণের বদ
তাছির থেকে বেঁচে থাকতে পারবেন এবং কাফিররা তাদের বর্ষপঞ্জির ত্রুটিগুলো অনুধাবন করবে
এবং হীনম্মন্যতায় ভুগবে। ইনশাআল্লাহ।
ফসলী সন : সম্মানিত মুসলমানরা মুশরিকদের অনুসরণ এবং এর অনুসরণের বদ তাছির থেকে
বেঁচে থাকতে পারবেন এবং মুশরিকরা তাদের বর্ষপঞ্জির ত্রুটিগুলো অনুধাবন করবে এবং হীনম্মন্যতায়
ভুগবে। ইনশাআল্লাহ।
মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা আমাদের এই আত-তাক্বউয়ীমুশ
শামসী অনুসরণ-অনুকরণ করার তাওফীক দান করুন। আমীন!
No comments