সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যমে ছানী, সাইয়্যিদুনা হযরত খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি মনোনীত ছদিকুল মাছদূক্ব
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مِّنَ
الْمُؤْمِنِيْنَ رِجَالٌ صَدَقُوْا مَا عَاهَدُوا اللهَ عَلَيْهِ ۖ فَمِنْهُم مَّن
قَضٰى نَحْبَهُ وَمِنْهُم مَّنْ يَنتَظِرُ ۖ وَمَا بَدَّلُوْا تَبْدِيْلًا
অর্থ: মু’মিনগণের মধ্যে এমন অনেক লোক রয়েছেন যারা মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে কৃত
ওয়াদা পূর্ণ করেছেন। উনাদের মধ্যে কেউ কেউ ইন্তিকাল বরণ করেছেন। আর কেউ কেউ ইন্তিজার
তথা অপেক্ষমান রয়েছেন, দুনিয়াতে অবস্থান মুবারক
করছে। উনারা উনাদের সংকল্প মোটেই পরিবর্তন করেননি। (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ: পবিত্র
আয়াত শরীফ ২৩)
সুলত্বানুল আরিফীন, বাহরুল উলূম ওয়াল হিকাম, হাফিযুল কুরআন ওয়াল হাদীছ সাইয়্যিদুনা হযরত খলীফাতুল উমাম আলাইহিস
সালাম তিনি উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার পরিপূর্ণ মিছদাক্ব। সুবহানাল্লাহ!
যারা মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে কৃত ওয়াদা পূরণে রত রয়েছেন, দুনিয়াতে অবস্থান মুবারক করছেন উনাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। তিনি
সততা প্রতিপাদনকারী, সত্যবাদী, সত্যনিষ্ঠ তথা ছদিকুল মাছদূক্ব।
তিনি রূহে আযলে মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে কৃত ওয়াদা বাস্তবায়নে অত্যন্ত সৃদৃঢ়।
একটুও সরে যাননি।
মহান আল্লাহ পাক তিনি রূহ মুবারকসমূহ সৃষ্টি করে উনাদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন-
أَلَسْتُ
بِرَبِّكُمْ ۖ قَالُوْا بَلٰى شَهِدْنَا
অর্থ: আমি কি তোমাদের প্রতিপালক নই?
উনারা বলেছিলেন, হ্যাঁ। মহান আল্লাহ পাক আপনি আমাদের রব। আমরা সাক্ষ্য দিলাম।
(পবিত্র সূরা আ’রাফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৭২)
উত্তরকালে এই ধরাধামে এসে দুনিয়ার মোহে মোহগ্রস্ত হয়ে অনেকে সেই ওয়াদার কথা বেমালুম
ভুলে গেছে। কেউ বা ভুল পথে, গোমরাহীর পথে পরিচালিত
হয়েছে। কেউ বা কখনো সেই ভুলের অনুশোচনা করতঃ সে পথ থেকে ফিরে এসেছে। সঠিক সরল পথে চলছেন।
আর যারা আখাছছুল খাছ তথা বিশেভাবে মনোনীত তথা হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম, হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের মধ্যে বিশেষ
এক শ্রেণী। উনারা কখনোই তা ভুলেননি। গোটা জীবনে কখনোও কোনোভাবেই তা লঙ্ঘিত হয়নি। এমনও
আউলিয়ায়ে কিরাম রয়েছেন যারা বলেছেন যে,
আমরা রূহে
আযলে মহান আল্লাহ পাক উনার সেই ওয়াদার কথা এখনো আমাদের কান মুবারকে ভেসে আসে। সুবহানাল্লাহ!
সুলতানুল আরেফীন, শাফিউল মুজনেবীন, মুজাদ্দিদে আ’যমে ছানী, সাইয়্যিদুনা হযরত খলীফাতুল উমাম আল মানছূর আলাইহিস সালাম তিনি ঐ সকল আউলিয়ায়ে কিরাম
উনাদের মধ্যমণি। সুবহানাল্লাহ! তিনি তাশরীফ মুবারক আনার পর থেকে অদ্যবধি সেই ওয়াদা
মুবারকের ব্যতিক্রম কিছু করেননি। বিপরীত কোনো ঘটনা ঘটেনি। সুবহানাল্লাহ!
তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার সম্মানিত রসূল নূরে মুজাসাসম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি, রেযামন্দির জন্য তিনি সবকিছু বিসর্জন দিয়েছেন। আর এরূপ মহান
ব্যক্তিত্বকে মহান আল্লাহ পাক তিনি কত অধিক মুহব্বত করেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمِنَ
النَّاسِ مَن يَشْرِىْ نَفْسَهُ ابْتِغَاءَ مَرْضَاتِ اللهِ ۗ وَاللهُ رَءُوفٌ
بِالْعِبَادِ
অর্থ: মানুষের মধ্যে বিশেষ এক শ্রেণী আছেন যারা মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টিকল্পে
নিজেদের জানকে বিসর্জন দেন। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি ঐ সকল বান্দাগণের প্রতি অত্যন্ত
দয়াশীল ও মেহেরবান। (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২০৭)
সুলত্বানুল আরিফীন, বাহরুল উলূম ওয়াল হিকাম
সাইয়্যিদুনা হযরত খলীফাতুল উমাম আল মানছুর আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার
এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাদের সন্তুষ্টি রেযামন্দির লক্ষে দুনিয়া ও আখিরাত উভয়কে বিসর্জন দিয়েছেন। তিনি মহান
আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনাকে ব্যতীত কোনো কিছুরই মুহতাজ নন। উনার পবিত্র জীবন-যাপন মুবারক সম্পূর্ণ
ব্যতিক্রম।
মুসলিম উম্মাহ বৎসরে দু’বার উনার মুবারক সাক্ষাত লাভ করতে পারেন, উনার ক্বদমবুছী মুবারক করে উনার পবিত্র ছোহবত মুবারকের বরকত
লাভ করতে পারেন। উনারা উনাদের মনের গহীন কোঠায় লালিত আবেগ উচ্ছাসটুকু নিবেদন করতে পারেন।
একবার ঈদুল ফিতরের দিন, আর একবার ৯ই রমাদ্বান
শরীফ। যেদিন উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। আর এ দুদিনের ক্ষণিকের ছোহবত
মুবারক দ্বারাই উম্মাহর সকল নিয়ামতপ্রাপ্তির দ্বার উন্মোচিত হয়। আশিকীন, যাকিরীন, শাকিরীনগণের নেক মাকসুদ
পূর্ণ হয়। মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার সম্মানিত রসূল নূরে মুজাসাসম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাদের মা’রিফাত মুহব্বতের পথ প্রসারিত হয়। কেননা তিনি সেই সকল আউলিয়ায়ে কিরামগণ উনাদের
লক্ষ্যস্থল যাঁদের সম্পর্কে নূরে মুজাসাসম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
عَنْ حَضْرَتْ
أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ رُبَّ أَشْعَثَ
مَدْفُوعٍ بِالأَبْوَابِ لَوْ أَقْسَمَ عَلَى اللهِ لأَبَرَّهُ
অর্থ: হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক উনার
পবিত্র ইশকে ফানা এমন অনেক আউলিয়ায়ে কিরাম রয়েছেন, উনারা যদি মহান আল্লাহ পাক উনার দরবার শরীফে কসম করে বসেন, কোনো কিছু প্রার্থনা করেন তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি তা অবশ্যই
পূরণ করে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! (মুসলিম শরীফ)
পবিত্র ৯ই রমাদ্বান শরীফ সেই কাঙ্খিত নিয়ামত প্রাপ্তির সুবর্ণ সুযোগ।
মহান আল্লাহ পাক তিনি, খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ ইমামুল আইম্মাহ, মুহইসসুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম
উনার মুবারক উসীলায় ৯ই রমাদ্বান শরীফ উনার পরিপূর্ণ হিস্যা আমাদের নছীব করুন। আমীন।
No comments