যে জাতি বা গোষ্ঠী পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ তথা সম্মানিত শরীয়াহ উনার খিলাফ- অশ্লীল-অশালীন কাজে প্রকাশ্যভাবে লিপ্ত হবে, সে জাতির উপর কঠিনভাবে মহামারীসহ ৫টি খোদায়ী আযাব-গযব আপতিত হবে
ছিহাহ সিত্তাহ উনার অন্যতম বিশুদ্ধ পবিত্র হাদীছ শরীফ গ্রন্থ “ইবনে মাজাহ শরীফ”
৪০১৯ নং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে-
عَن
حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ: أَقْبَلَ
عَلَيْنَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ يَا مَعْشَرَ
الْمُهَاجِرِينَ خَمْسٌ إِذَا ابْتُلِيتُمْ بِهِنَّ وَأَعُوذُ بِاللهِ أَنْ
تُدْرِكُوهُنَّ لَمْ تَظْهَرِ الْفَاحِشَةُ فِى قَوْمٍ قَطُّ حَتَّى يُعْلِنُوا
بِهَا إِلاَّ فَشَا فِيهِمُ الطَّاعُونُ وَالأَوْجَاعُ الَّتِى لَمْ تَكُنْ مَضَتْ
فِى أَسْلاَفِهِمُ الِّذِينَ مَضَوْا وَلَمْ يَنْقُصُوا الْمِكْيَالَ
وَالْمِيزَانَ إِلاَّ أُخِذُوا بِالسِّنِينَ وَشِدَّةِ الْمَؤُنَةِ وَجَوْرِ
السُّلْطَانِ عَلَيْهِمْ وَلَمْ يَمْنَعُوا زَكَاةَ أَمْوَالِهِمْ إِلاَّ مُنِعُوا
الْقَطْرَ مِنَ السَّمَاءِ وَلَوْلاَ الْبَهَائِمُ لَمْ يُمْطَرُوا وَلَمْ
يَنْقُضُوا عَهْدَ اللهِ وَعَهْدَ رَسُولِهِ إِلاَّ سَلَّطَ اللهُ عَلَيْهِمْ
عَدُوًّا مِنْ غَيْرِهِمْ فَأَخَذُوا بَعْضَ مَا فِى أَيْدِيهِمْ وَمَا لَمْ
تَحْكُمْ أَئِمَّتُهُمْ بِكِتَابِ اللهِ وَيَتَخَيَّرُوا مِمَّا أَنْزَلَ اللهُ
إِلاَّ جَعَلَ اللهُ بَأْسَهُمْ بَيْنَهُمْ
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত
আছে, তিনি বর্ণনা করেন- নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদের মাঝে পবিত্রতম তাশরীফ
মুবারক নিয়ে আমাদেরকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন যে, “হে হযরত মুহাজির ছাহাবায়ে
কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহুম! (আপনারা জেনে রাখুন) পাঁচটি কর্ম এমন রয়েছে, যাতে আপনারা লিপ্ত হয়ে পড়লে তথা আমার উম্মতের মধ্যে কেউ যদি
উক্ত ৫টি কাজের মধ্যে লিপ্ত হয়, তাহলে তাদেরকে কঠিন আযাব-গযব
তথা শাস্তি গ্রাস করবে অর্থাৎ তাদের উপর কঠিন আযাব-গযব তথা শাস্তি নিপতিত হবে। নাউযুবিল্লাহ!
আমি মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট পানাহ চাই,
যাতে তোমরা
তা প্রত্যক্ষ কর। (অর্থাৎ তা থেকে তোমরা বিরত থাকো যাতে করে তোমাদের দ্বারা উক্ত কাজগুলো
সংঘটিত না হয়)।
উক্ত ৫টি কর্ম হলো:-
(১) যখনই কোন জাতি বা গোষ্ঠীর মধ্যে
ব্যাপকহারে অশ্লীলতা তথা ব্যভিচার-অনাচার প্রকাশ্যভাবে সংঘটিত হবে, তখনই সেই জাতির উপর প্লেগ রোগ এবং মহামারী এমন ব্যাপকহারে দেখা
দিবে, যা তাদের পূর্বপুরুষদের উপরেও
কখনই আপতিত হয়নি। নাউযুবিল্লাহ!
(২) যে জাতি- মাপে ও ওজনে কম দেবে, সে জাতির উপর কঠিন দুর্ভিক্ষ, কঠিন খাদ্য-সংকট এবং দুনিয়াদার গোমরাহ শাসকগোষ্ঠীর যুলূম নির্যাতন ও অত্যাচারের
শিকার হবে। নাউযুবিল্লাহ!
(৩) যে জাতি- তার মালের পবিত্র
যাকাত দেওয়া বন্ধ করবে, সে জাতির উপরও শাস্তিস্বরুপ
আকাশ হতে বৃষ্টি বন্ধ করে দেওয়া হবে। যদি অন্যান্য প্রাণীকুল না থাকতো, তাহলে তাদের জন্য আদৌ বৃষ্টি হতো না। নাউযুবিল্লাহ!
(৪) যে জাতি- যিনি খালিক্ব যিনি
মালিক যিনি রব মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের পবিত্রতম ওয়াদা তথা প্রতিশ্রুতি
ভঙ্গ করবে অর্থাৎ যিনি খালিক্ব যিনি মালিক যিনি রব মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাদের এবং মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের পবিত্রতম
শান-মান মর্যাদা-মর্তবা মুবারক উনার খিলাফ করবে- সে জাতির উপরেও তাদের বিজাতীয় তথা
বেদ্বীন-বদদ্বীন শত্রুদলকে ক্ষমতাসীন করা হবে; যারা তাদের মালিকানাভুক্ত বহু ধন-সম্পদ নিজেদের কুক্ষিগত করে নিবে। তথা তাদের উপর
সীমাহীন যুলূম নির্যাতন করবে। নাউযুবিল্লাহ!
(৫) আর যে জাতির শাসকগোষ্ঠী যতক্ষণ
পর্যন্ত না- যিনি খালিক্ব যিনি মালিক যিনি রব মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্রতম কিতাব
তথা পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ,
পবিত্র ক্বিয়াস
শরীফ অনুযায়ী দেশ শাসন করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত যিনি খালিক্ব
যিনি মালিক যিনি রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ঐ জাতির মাঝে কঠিন শাস্তি নাযিল করবেন, অর্থাৎ সমগ্র জাতিকে আযাব গযবে নিপতিত রাখবেন ।” নাউযুবিল্লাহ!
(ইবনে মাজাহ পৃষ্ঠা-৩০০ বাবুল উক্বুবাত, ছহীহ তারগীব,
বাইহাকী)
কাজেই উপরোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ থেকে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে, পবিত্র কুরআন শরীফ,
পবিত্র হাদীছ
শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ এবং পবিত্র ক্বিয়াস
শরীফ উনাদের খিলাফ তথা সম্মানিত শরীয়ত বিরোধী কার্য্যকলাপ যথা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্রতম শান মুবারকে, পবিত্রতম হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের পবিত্রতম
শান মুবারকে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করা, ব্যঙ্গ চিত্র অংকন করা, সিনেমা প্রকাশ করা,
নোবেল নাটক
প্রকাশ করা, কুরুচিপূর্ণ লেখা প্রকাশ করা, বাল্য বিবাহ দন্ডনীয় অপরাধ এই মর্মে আইন প্রনয়নের কারণে এবং
পবিত্র কুরআন শরীফ পরিবর্তন করার ঘোষণা দেয়া,
পবিত্র মসজিদ-মাদরাসা
বন্ধ করা, হিজাব বা বোরকা পড়া নিষিদ্ধ করা, মুসলমানদের শেয়ার তথা দাড়ি, টুপি, পাগড়ি, মসজিদে আযান, নামাযে বাধা, পবিত্র কুরবানীতে বাধা প্রদানসহ সম্মানিত মুসলমান ও ইসলাম নিধন
করার ঘোষণা দেয়ার কারণে তৎসঙ্গে বিশ্ব সমাজে প্রকাশ্যে ব্যাপকহারে ব্যভিচার-অনাচার, বেপর্দা, বেহায়া, নাচ, গান, সুদ, ঘুষ, ছবি আকা-তোলা ইত্যাদি অশ্লীল-অশালীন কাজে জড়িয়ে পড়ার কারণেই
কাফের-মুশরিকদের উপর কঠিনভাবে করোনাসহ আরো কোটি কোটি আযাব-গযব আপতিত হচ্ছে এবং হতেই
থাকবে। এটা সম্মানিত মুসলমানদের জন্য নয়। তাই বাংলাদেশের করোনা ভাইরাস এটা একটা মহাগুজব।
অতএব, এই অবস্থায় মুসলমানদের উচিত খালিছভাবে
তওবা-ইস্তেগফার করে যামানার যিনি খাছ লক্ষস্থল, আখাচ্ছুল খাছ আহলু বাইতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস
সালাম উনার পবিত্রতম ক্বদম মুবারকে আশ্রয় গ্রহণ করে ইহকালীন ও পরকালীন সমস্ত আযাব-গযব
থেকে মুক্তি লাভের কোশেষ করা।
করোনা মহাগযব সহ সমস্ত প্রকার আযাব-গযব মহামারী থেকে মুক্তি লাভের জন্য মুসলমানদের
প্রতি মহাপবিত্রতম মুবারক ফরমান শরীফ
সর্বকালের, সর্বযুগের, সর্বশ্রেষ্ঠ মুজাদ্দিদ, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল
উমাম আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
করোনা ভাইরাস
নিয়ে অনেকেই নানা ধরণের তথ্য প্রচার করছে। যা নিয়ে অনেকেই অহেতুক আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন।
এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের মুসলমানদের করণীয় হলো, করোনা ভাইরাসসহ সকল প্রকার আযাব-গযব থেকে বাঁচতে হলে, মুক্তি লাভ করতে হলে খালিছ তওবা-ইস্তেগফার করে পবিত্র মসজিদে
মসজিদে, মাদরাসায় মাদরাসায়, প্রতিটি বাড়ীতে বাড়ীতে বেশী বেশী পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করতে
হবে এবং পবিত্র সুন্নতী খাবার-খাদ্য খেতে হবে। কারণ পবিত্র সুন্নতী খাদ্য- খাবার সমূহে
আছে বে-মেছাল রহমত, বরকত, ছাকীনা ও নাজাত যা শক্তিশালী রোগপ্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার থেকে জানা যায়,
সম্মানিত
সিরকা, কালোজিরা, মধু, ত্বীন, যায়তুন, খেজুর ইত্যাদি মহাসম্মানিত
সুন্নতী খাদ্যসমূহ সর্বপ্রকার অসুখ-বিসুখ,
রোগ-বালাই
ধ্বংস করে, প্রতিরোধ করে এবং পরিপূর্ণভাবে
শিফা দান করে। সুবহানাল্লাহ!
No comments