আফদ্বলুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত সাওয়ানেহ উমরী মুবারক
আফদ্বলুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সবচেয়ে
বড় পরিচয় মুবারক হচ্ছেন, তিনি হলেন নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা লখতে জিগার
মুবারক, মহাসম্মানিতা বানাত (মেয়ে) আলাইহাস
সালাম। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা হযরত বানাত (মেয়ে) আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে তিনি
হচ্ছেন ‘আছ ছালিছাহ তথা তৃতীয়া’। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন
এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান,
ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ!
উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারকই হচ্ছেন ঈমান। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ:
মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস
সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে
সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারক প্রকাশের ৫ বছর পূর্বে ১১ই জুমাদাল ঊলা শরীফ লাইলাতুস্
সাব্ত শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় ৩৫ বছর। আর উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা
হযরত কুবরা আলাইহাস সালামউনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৫০ বছর।” সুবহানাল্লাহ!
স্মরণীয় যে, দুনিয়ার কোনো কিতাবে উপরোক্ত
বর্ণনাটি উল্লেখ নেই; বরং এটা মুজাদ্দিদে আ’যম
মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু
ওয়াস সালাম উনার একখানা অভূতপূর্ব বেমেছাল সম্মানিত তাজদীদ মুবারক, যা উনার বেমেছাল শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ। সুবহানাল্লাহ!
এর মাধ্যমেই প্রতিভাত হয় যে, মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস
সালাম উনাদের সাথে মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ
হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার কত বেমেছাল আখাচ্ছুল খাছ সম্মানিত তাওয়াল্লুক-নিসবত
মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশে সম্মানিত খুশি মুবারক
প্রকাশ:
সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন,
উম্মু আবীহা
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময়
বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশে স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি, উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা
আলাইহাস সালাম তিনি, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা,
হযরত নবী-রসূল
আলাইহিমুস সালাম উনারা, হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস
সালাম উনারা এবং সমস্ত কায়িনাতবাসী সকলেই সম্মানিত খুশি মুবারক প্রকাশ করেছেন, মহাসম্মানিত ‘ফালইয়াফরহূ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করেছেন।
সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত আক্বীক্বাহ মুবারক দেয়া এবং সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক রাখা:
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার
মহাসম্মানিতা আওলাদ, লখতে জিগার সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী
শান মুবারক প্রকাশের সপ্তম দিন উনার পক্ষ থেকে সম্মানিত আক্বীক্বাহ মুবারক দেন এবং
উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক রাখেন ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত উমাইয়্যাহ আলাইহাস
সালাম’। সুবহানাল্লাহ!
এই সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
وَاسْمُ
سَيِّدَتِنَاحَضْرَتْ اُمِّ كُلْثُوْمٍ ۢبِنْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ
عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَضْرَتْ اُمَيَّةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম বিনতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক হচ্ছেন ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত উমাইয়্যাহ
আলাইহাস সালাম’।” সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরকে হাকিম ৪/৫৩)
সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক:
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক
ছিলেন ‘উম্মু কুলছূম আলাইহাস সালাম’। সুবহানাল্লাহ! আরবী ‘কুলছূম’ শব্দ মুবারক উনার
অর্থ মুবারক হচ্ছেন- ‘এমন একজন সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক, যিনি পূর্ণ গোলাকার মুখম-ল মুবারক উনার অধিকারিণী’। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিতা
আওলাদ, লখতে জিগার সাইয়্যিদাতুনা হযরত
আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনাকে অত্যন্ত মুহব্বত মুবারক করে ‘উম্মু কুলছূম আলাইহাস
সালাম’ বলে আহ্বান মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ! তখন থেকেই তিনি সকলের নিকট ‘উম্মু কুলছূম
আলাইহাস সালাম’ কুনিয়াত মুবারক-এ পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস
সালাম তিনি সেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক যিনি নাম মুবারক দ্বারা সম্মানিত পরিচিতি
মুবারক গ্রহণ না করে, সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক
দ্বারা সম্মানিত পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
এই সম্পর্কে কিতাবে উল্লেখ রয়েছে,
وِهِىَ
مِـمَّنْ عُرِفَ بِكُنْيَتِهٖ وَلَـمْ يُعْرَفْ لَـهَا اسْمٌ.
অর্থ: “তিনি সেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক যিনি সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম
মুবারক দ্বারা সম্মানিত পরিচিতি মুবারক গ্রহণ না করে সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক দ্বারা
সম্মানিত পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (যখাইরুল ‘উক্ববা ১/১৬৪, তারীখুল খমীস ১/২৭৫)
সম্মানিত লালন-পালন মুবারক:
আফদ্বলুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম
তিনি উনার মহাসম্মানিত পিতা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
এবং উনার মহাসম্মানিতা মাতা উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার
অর্থাৎ উনাদের সর্বাধিক সম্মানিত আদর-যতœ মুবারক-এ, সম্মানিত তত্ত্বাবধান মুবারক-এ লালিত-পালিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
তিনি উনার মহাসম্মানিত পিতা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিতা মাতা উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস
সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের যাবতীয় সমস্ত খুছূছিয়াত ও বৈশিষ্ট্য মুবারক উনার অধিকারিণী
ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ইলম মুবারক:
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ
মুবারক করেন-
اِنَّـمَا
اَنَا قَاسِمٌ وَاللهُ يُعْطِىْ.
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি হচ্ছেন দাতা আর আমি হচ্ছি বণ্টনকারী।” সুবহানাল্লাহ!
(বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)
মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হাবীব,
নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা উম্মু আবীহা
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনাকে সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত
সমস্ত প্রকার সম্মানিত ইলম মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! শুধু সম্মানিত
ওহী মুবারক নাযিল হওয়া ব্যতীত সমস্ত প্রকার সম্মানিত ইলম মুবারক উনার অধিকারিণী হচ্ছেন
তিনি। সুবহানাল্লাহ! মূলত উনার সম্মানার্থে সমস্ত কায়িনাতবাসী ইলম-আমল, ইখলাছ, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারকসহ
সমস্ত কিছু লাভ করেছে, করছে এবং অনন্তকাল যাবৎ
করতেই থাকবে। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ছূরত মুবারক:
বিদ্ব‘য়াতুম মির রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি
‘আলাল আলামীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন বেমেছাল
সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারিণী। সুবহানাল্লাহ!
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ
হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা
প্রত্যেকেই প্রত্যেকের মাক্বাম মুবারক-এ অনন্যা।” সুবহানাল্লাহ!
তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি
‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস
সালাম উনার হুবহু নকশা মুবারক। সুবহানাল্লাহ! আর সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা
আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হুবহু নকশা মুবারক। সুবহানাল্লাহ! আর সাইয়্যিদাতুন
নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল
জান্নাহ, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদাতুন
নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল
জান্নাহ, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ
উনাদের দুইজনেরই নিসবত মুবারক ছিলো উভয় দিক থেকে। অর্থাৎ উনারা দু’জন নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উম্মুল মু’মিনীন আল
ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের থেকে সমানভাবে সম্মানিত নিসবত
মুবারক পেয়েছিলেন।” সুবহানাল্লাহ!
আর এ কারণেই কিতাবে বর্ণিত রয়েছে যে, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার এবং
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের মাঝে
সম্মানিত সীরত-ছূরত মুবারক, আকার-আকৃতি মুবারক, চাল-চলন মুবারক সর্বদিক থেকে হুবহু মিল ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত পবিত্রতা মুবারক:
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
اِنَّـمَا
يُرِيْدُ اللهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَاَهْلَ الْبَيْتِ
وَيُـطَـهِّـرَكُمْتَطْهِيْرًا.
অর্থ: “হে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম! নিশ্চয়ই
মহান আল্লাহ পাক তিনি চান আপনাদের থেকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা দূর করে আপনাদেরকে পবিত্র
করার মতো পবিত্র করতে। অর্থাৎ তিনি আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই সৃষ্টি মুবারক
করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা আহযাব শরীফ: সম্মানিত আয়াত শরীফ ৩৩)
এই সম্মানিত আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
ইরশাদ মুবারক করেন,
هُمْ اَهْلُ
بَيْتٍ طَهَّرَهُمُ اللهُ مِنَ السُّوْءِ وَاخْتَصَّهُمْ بِرَحْـمَتِهٖ.
অর্থ: “উনারা হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম।
মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা ও পাপ থেকে পূত-পবিত্র রেখেছেন
এবং উনার সম্মানিত রহমত মুবারক দ্বারা খাছ করে নিয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
اَنَّ
النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُوْلُ نَـحْنُ اَهْلُ
بَيْتٍ طَهَّرَهُمُ اللهُ مِنْ شَجَرَةِ النُّبُوَّةِ وَمَوْضِعِ الرِّسَالَـةِ
وَمُـخْتَلِفِ الْمَلَائِكَةِ وَبَيْتِ الرَّحْمَةِ وَمَعْدِنِ الْعِلْمِ.
অর্থ: “নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবসময় ইরশাদ
মুবারক করতেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে (আমাদেরকে) সম্মানিত নুবুওওয়াত
মুবারক উনার বৃক্ষ, সম্মানিত রিসালাত মুবারক
উনার স্থান, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম
উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত
মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর
মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক উনার খনি মুবারক (ইত্যাদি সমস্ত কিছু) থেকে পবিত্র
রেখেছেন, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)
করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে দুররে মানছূর ৬/৬০৬, ইবনে আবী হাতিম ৯/৩১৩৩)
অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা সম্মানিত
নুবুওওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, বিভিন্ন ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের, উনাদের দ্বারা সম্মানিত খিদমত মুবারক, সম্মানিত রহমত মুবারক উনার ঘর মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারক
উনার খনি মুবারক ইত্যাদি সমস্ত কিছু থেকে পবিত্র, ছমাদ তথা বেনিয়ায (অমুখাপেক্ষী)। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! উনাদের
কারণেই সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক, সম্মানিত রিসালাত মুবারক, সমস্ত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা, সম্মানিত রহমত মুবারক এবং সম্মানিত ইলম মুবারকসহ সমস্ত কিছুই
ফযীলতপ্রাপ্ত হয়েছেন, সম্মানিত হয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ!
সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
উপরোক্ত সম্মানিত আয়াত শরীফ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের পরিপূর্ণ
মিছদাক্ব হচ্ছেন উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি।
সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ
আলাইহাস সালাম উনাকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই সৃষ্টি মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
উনার কারণেই সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক,
সম্মানিত
রিসালাত মুবারক, সমস্ত ফেরেশতা আলাইহিমুস
সালাম উনারা, সম্মানিত রহমত মুবারক এবং সম্মানিত
ইলম মুবারকসহ সমস্ত কিছুই ফযীলতপ্রাপ্ত হয়েছেন, সম্মানিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত আক্বদ শরীফ:
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম প্রকাশ পাওয়ার পূর্বে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ
আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আক্বদ শরীফ হয়েছিলো আবূ লাহাবের পুত্র উতবার সাথে এবং
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আক্বদ শরীফ হয়েছিলো
উতাইবার সাথে। তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত
বয়স মুবারক ছিলেন ৭ বছরের কাছাকাছি। আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস
সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৫ বছরের কাছাকাছি। এটি ছিল শুধু একটি আনুষ্ঠানিক
আক্বদ শরীফ। উনাদেরকে তাদের গৃহে যেতে হয়নি। সুবহানাল্লাহ! তার আগেই সম্মানিত সূরা
‘লাহাব শরীফ’ নাযিল হওয়ার পর আবূ লাহাব ও তার স্ত্রীর কারণে উতবাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত
আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক থেকে মাহরূম হয়ে যায় অর্থাৎ
সম্মানিত খিদমত মুবারক করার ব্যাপারে অযোগ্য বলে প্রমাণিত হয়। এবং উতাইবাহ সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক থেকে মাহরূম হয়ে যায়।
অর্থাৎ সম্মানিত খিদমত মুবারক করার ব্যাপারে অযোগ্য বলে প্রমাণিত হয়। নাঊযুবিল্লাহ!
অপর বর্ণনায় রয়েছে, যখন কুরাইশরা অনুভব করলো
যে, কোনো পরিকল্পনা করেই নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত রিসালাত মুবারক
উনার দাওয়াত মুবারক দেয়া থেকে বিরত রাখা যাচ্ছে না; তখন তারা নতুন পরিকল্পনা করলো। কুরাইশরা বলে উঠলো, তোমাদের সর্বনাশ হোক,
তোমরা নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা
আওলাদ আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সাথে নিজেদের ছেলেদের বিবাহ করিয়ে উনার দুশ্চিন্তা
নিজেদের ঘাড়ে তুলে নিয়েছো। নাঊযুবিল্লাহ! তোমরা যদি উনার মহাসম্মানিতা আওলাদ আলাইহিন্নাস
সালাম উনাদের থেকে নিজেদের ছেলেদেরকে বিচ্ছিন্ন করে নাও, তাহলে তিনি উনাদেরকে নিয়েই ব্যস্ত থাকবেন। নাঊযুবিল্লাহ! তাদের
মধ্যে অনেকে এ কথা সমর্থন করে বললো, এ তো চমৎকার যুক্তি। নাঊযুবিল্লাহ!
তারা দল বেঁধে উতবাহ এবং উতাইবার নিকট গিয়ে বললো, “তোমরা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাও। যদি
তোমরা তা করো, তাহলে উনাদের পরিবর্তে তোমরা তোমাদের
পছন্দমত কুরাইশদের যেকোনো সুন্দরী নারীকে বিবাহ করতে পারবে।” না‘ঊযুবিল্লাহ!
তারা রাজি হয়ে যায়। ফলে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার
সম্মানিত খিদমত মুবারক থেকে উতবাহ মাহরূম হয়ে যায় অর্থাৎ সম্মানিত খিদমত মুবারক করার
ব্যাপারে অযোগ্য বলে প্রমাণিত হয় এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস
সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক থেকে উতাইবাহ মাহরূম হয়ে যায় অর্থাৎ সম্মানিত খিদমত
মুবারক করার ব্যাপারে অযোগ্য বলে প্রমাণিত হয়। নাঊযুবিল্লাহ! অতঃপর তারা তাদের পছন্দমত
কুরাইশদের দুইজন মহিলাকে বিবাহ করে নেয়। না‘ঊযুবিল্লাহ!
মূলত, এখান থেকে এই বিষয়টি অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে
প্রমাণিত যে, উতবাহ এবং উতাইবাহ তারা সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ
আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার ব্যাপারে
চরম অযোগ্য ছিলো। মহান আল্লাহ পাক তিনি চাননি যে, তাদের মতো এরূপ অযোগ্য বর্বর সর্বনিকৃষ্ট কাফির ও মুশরিকদের ঘরে উনারা সম্মানিত
তাশরীফ মুবারক রাখেন। যার কারণে মহান আল্লাহ পাক তিনি কুদরতীভাবে উনাদেরকে এই অযোগ্য
বর্বর সর্বনিকৃষ্ট কাফির ও মুশরিকদের ঘরে তাশরীফ মুবারক নেয়া থেকে হিফাযত করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
কারণ উনারা হচ্ছেন পূত-পবিত্রা। শুধু তাই নয়,
উনারা হচ্ছেন
পূত-পবিত্রতাদানকারিণী। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনিই
ছিলেন উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার একমাত্র উপযুক্ত ব্যক্তিত্ব
মুবারক। তাই মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাকে
উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ:
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ
হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারক প্রকাশ
পাওয়ার পর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
তা সর্বপ্রথম উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার নিকট প্রকাশ করেন।
উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি পুরুষ-মহিলা সকলের পূর্বে সর্বপ্রথম
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন এবং সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
উনার সাথে সাথে উনার মহাসম্মানিতা আওলাদ আলাইহিন্নাস সালাম বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি এবং বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ
উনারাও সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম তিনিও সংবাদ মুবারক
পাওয়ার সাথে সাথে এসে সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! উনারাই হচ্ছেন
পুরুষ-মহিলা সকলের মাঝে সর্বপ্রথম সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশকারিণী।” সুবহানাল্লাহ!
এই সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
اَوَّلُ مَنْ
اَسْلَمَ وَاٰمَنَ فِـىْ خَلْقِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ لَـمْ يَتَقَدَّمْهَا رَجُلٌ
وَّلَا امْرَاَةٌ اُمُّ الْـمُؤْمِنِيْنَ الْاُوْلـٰى سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ
خَدِيـْجَةُ الْكُبْرٰى عَلَيْهَا السَّلَامُ ثُـمَّ اَسْلَمَ وَاٰمَنَ بِنْتٌ
مِّنْ بَنَاتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَيِّدَتُنَا
حَضْرَتْ اَلنُّوْرُ اَلثَّانِيَةُ عَلَيْها السَّلَامُ ثُـمَّ اَسْلَمَ وَاٰمَنَ
بِنْتٌ مِّنْ بَنَاتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلنُّوْرُ اَلثَّالِثَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ ثُـمَّ
اَسْلَمَ وَاٰمَنَ بِنْتٌ مِّنْ بَنَاتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ اَلنُّوْرُ الرَّابِعَةُ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ فَاطِمَةُ الزَّهْرَاءِ
عَلَيْهَا السَّلَامُ ثُـمَّ اَسْلَمَ وَاٰمَنَ بِنْتٌ مِّنْ بَنَاتِ رَسُوْلِ
اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلنُّوْرُ
اَلْاُوْلـٰى عَلَيْهَا السَّلَامُ
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনিই মহান
আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টি জগতে সর্বপ্রথম সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন ও সম্মানিত
ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! উনার পূর্বে কোন পুরুষ মহিলা সম্মানিত দ্বীন
ইসলাম গ্রহণ করেনি এবং সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেনি। অতঃপর বিনতু রসূলিল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম
তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন এবং সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
তারপর বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন এবং সম্মানিত ঈমান মুবারক
প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম
গ্রহণ করেন এবং সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর খাইরু বানাতি
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস
সালাম তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন এবং সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন।”
সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ওয়াজ শরীফ থেকে সংকলিত)
তাই মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত
আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “উনারাই যেহেতু পুরুষ-মহিলা সকলের মাঝে সর্বপ্রথম সম্মানিত ঈমান
মুবারক প্রকাশ করেছেন। কাজেই, ক্বিয়ামত পর্যন্ত যত মানুষ
ঈমান আনবেন এবং যত নেক আমল করবেন, সমস্ত ফযীলত উনাদের সম্মানিত
আমল নামা মুবারক-এ যেয়ে পৌঁছবে। সুবহানাল্লাহ! যদিও উনারা এ সমস্ত কিছুর মুহতাজ নন; তারপরেও সাধারণভাবে উনাদের সম্মানিত ফযীলত মুবারক বুঝতে সহজ
হয়।” সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া:
মহান আল্লাহ পাক তিনি বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনাকে সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য মু‘য়াল্লিমাহ হিসেবে সৃষ্টি করেছেন।
সুবহানাল্লাহ! তিনি নূরে মুজসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়ে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু
তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকেসহ সমস্ত জিন-ইনসান,
তামাম কায়িনাতবাসীকে
শিক্ষা দিয়েছেন যে, কিভাবে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক
উনার আনজাম মুবারক দিতে হয়। সুবহানাল্লাহ!
যখন মুশরিকরা নানাভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট-তাকলীফ দিতো এবং উনার উপর যুলুম
নির্যাতন করতো, তখন একজন মা তার সন্তানকে যেভাবে
স্নেহভরে আদর-যতœ করে থাকেন, ঠিক সেইভাবে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম
তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত
খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিতেন। সুবহানাল্লাহ!
শি‘আবে আবী ত্বালিবে সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম:
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম,
হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত
ও রিসালাত মুবারক প্রকাশ পাওয়ার সপ্তম (৭ম) বছর শি‘আবে আবী ত্বালিবে সম্মানিত তাশরীফ
মুবারক গ্রহণ করেন। তিনি সেখানে তিন বছর সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। শি‘আবে আবী
ত্বালিবের কথা। যখন উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম
তিনি সেখানে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেন,
তখন দুনিয়াবী
দৃষ্টিতে উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় ৬১ বছর। শি‘আবে আবী ত্বালিবে কাফির-মুশরিকরা
খাবার পৌঁছাতে বাধা সৃষ্টি করে। তাদের বাধার কারণে সেখানে সাধারণত খাবার পৌঁছতো না
বিধায় হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের এরূপ অবস্থা হয়েছিলো
যে, উনারা খাদ্য হিসেবে গাছের লতা-পাতা, ছাল-বাকল পর্যন্ত খেয়েছিলেন। এমনকি উনারা চামড়ার না’লাঈন শরীফ
(জুতা মুবারক) পানিতে সিদ্ধ করে চিবিয়েছেন। গাছের লতা-পাতা, ছাল-বাকল খাবার হিসেবে গ্রহণ করার ফলে উনাদের ইস্তিঞ্জা মুবারক
বকরীর লেদের মত হয়ে গিয়েছিলো। সুবহানাল্লাহ! ক্ষুধার্ত শিশু উনাদের কান্না মুবারক-এ
আশে-পাশের লোকেরা রাতে ঘুমাতে পারতো না।তারপরও হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা
আনহুম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
থেকে দূরে সড়ে যাননি। কি অপূর্ব আত্মত্যাগ! সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উম্মুল
মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন অনেক বেশি।
সেই সময় বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল
ঊলা আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূর (আবুল আছ) আলাইহিস সালাম উনার
সম্মানিত হুজরা শরীফ-এ। তারপরেও তিনি সেখান থেকে এসে শি‘আবে আবী ত্বালীবে সম্মানিত
অবস্থান মুবারক করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার মূল আনজাম মুবারক দেন। আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি তখন সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সাথে
হাবশায় সম্মানিত হিজরত মুবারক-এ গিয়েছিলেন।
এমতাবস্থায় শি‘আবে আবী ত্বালিবে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম
তিনিও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত
খিদমত মুবারক উনার মূল আনজাম মুবারক দেন এবং শি‘আবে ত্বালিবের এই প্রতিকূল অবস্থার
মুকাবিলা করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় ১২ বছর। এই
অল্প বয়স মুবারক-এ শি‘আবে আবী ত্বালিবে থেকে সমস্ত প্রতিকূল অবস্থার মুকাবিলা করে নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত
মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার মাধ্যমে তিনি কায়িনাতের মাঝে এক বেনজীর দৃষ্টান্ত মুবারক
স্থাপন করেছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি শি‘আবে আবী ত্বালিবে যে কষ্ট মুবারক স্বীকার করেছেন, তা কায়িনাতের মাঝে তুলনাহীন। সুবহানাল্লাহ! মূলত, উনার কাছ থেকেই হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম
উনারা শিক্ষা গ্রহণ করেছেন কিভাবে সমস্ত কিছু ত্যাগ করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ওজুদ মুবারক উনার মধ্যে ফানা-বাক্বা
হতে হয়, উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার
আনজাম মুবারক দিতে হয়। সুবহানাল্লাহ! পাশাপাশি সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত
যাহরা আলাইহাস সালাম তিনিও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ!
তবে দুনিয়াবী দৃষ্টিতে তখন উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন অল্প অর্থাৎ ১০ বছর।
উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পূর্বে এবং পরে:
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে
সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারক প্রকাশের দশম (১০ম) বর্ষে শি‘আবে আবী ত্বালিব
থেকে প্রত্যাবর্তন করেন। শি‘আবে আবী ত্বালিবে অবস্থানকালীন সময়েই উম্মুল মু’মিনীন আল
ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি কখনো কখনো সম্মানিত মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ
করতেন (অসুস্থতা মুবারক গ্রহণ করতেন) আবার কখনো কখনো ছিহ্হাতী শান মুবারক প্রকাশ করতেন
(সুস্থতা মুবারক গ্রহণ করতেন)। শি‘আবে আবী ত্বালিব থেকে প্রত্যাবর্তনের পর উনার সম্মানিত
মারীদ্বী শান মুবারক বেশি আকারে প্রকাশ পায়।
ফলে তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত হুজরা
শরীফ উনার কাজসহ উনার মহাসম্মানিত পিতা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিতা মাতা উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা
আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের যাবতীয় সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার বেমেছাল আনজাম
মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ! উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পূর্ব মুহূর্তে যখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা
হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত মাথা মুবারক উনার পাশে বসে উনাকে সান্তনা মুবারক
দিচ্ছিলেন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতিশ্রুত সম্মানিত জান্নাত মুবারক ও রেযামন্দি-সন্তুষ্টি
মুবারক উনাদের বিষয়ে সুসংবাদ মুবারক দিচ্ছিলেন, তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম তিনি, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি এবং
সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা পাশে বসে
এই দৃশ্য মুবারক অবলোকন করছিলেন। তখন উনাদের মাঝে কিরূপ কঠিন মুহূর্ত অতিবাহিত হয়েছে, তা সহজেই অনুমেয়। তখন উনাদের কারো সম্মানিত বয়স মুবারক প্রায়
১৯ বছর, কারো সম্মানিত বয়স মুবারক প্রায়
১৫ বছর, কারো সম্মানিত বয়স মুবারক প্রায়
১৩ বছর। অবশেষে উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিতা
বানাত আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের থেকে বিদায় নিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী
শান মুবারক প্রকাশ করে মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত দীদার মুবারক-এ তশরীফ মুবারক
নেন। সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত জুদায়ী মুবারক
উনার কারণে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
অজস্র ধারায় সম্মানিত নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রবাহিত করেন। সুবহানাল্লাহ! বানাতু রসূলিল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম তিনি, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি এবং
সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারাও উনাদের
মহাসম্মানিত পিতা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার সাথে উনাদের মহাসম্মানিতা মাতা উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম
উনার সম্মানিত জুদায়ী মুবারক উনার কারণে অজস্র ধারায় সম্মানিত নূরুল মুহব্বত মুবারক
প্রবাহিত করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম
উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় ১৫ বছর। সময়টি ছিলো শি‘আবে আবী ত্বালিব থেকে
ফেরার কয়েক মাস পর। অর্থাৎ আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারক প্রকাশের
১০ম বৎসর ১৭ই রমাদ্বান শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার পর সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস
সালম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক
দেন। সুবহানাল্লাহ!
‘উম্মু আবীহা’ সম্মানিত লক্বব মুবারক
উনার মালিকাহ:
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ
হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “শুধু শি‘আবে আবী ত্বালিবে নয়; বরং এর পূর্বে এবং পরে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল
সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছিলেন। বিশেষত উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা
হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ
করার পর সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তুলনাহীন সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার
আনজাম মুবারক দিয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ! একজন মা তার সন্তানকে যেভাবে দেখা-শোনা করে
থাকেন; ঠিক সেইভাবে সাইয়্যিদাতুনা হযরত
আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছিলেন।
সুবহানাল্লাহ! তাই উনার একখানা সম্মানিত লক্বব মুবারক হচ্ছেন ‘উম্মু আবীহা’। সুবহানাল্লাহ!
এই সম্মানিত লক্বব মুবারক উনার অর্থ মুবারক হচ্ছেন ‘তিনি উনার স্বীয় পিতা নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মা’। সুবহানাল্লাহ!
যেভাবে তিনি উনার মহাসম্মানিত পিতা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছিলেন:
উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি এবং আবূ ত্বালিব উনারা প্রায়
কাছাকাছি সময়ে অর্থাৎ প্রায় ২ মাস পার্থক্যে দুনিয়ার যমীন থেকে বিদায় মুবারক গ্রহণ
করেন। আবূ ত্বালিবের ইন্তেকালের পর কুরাইশরা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর সীমাহীন যুলুম-নির্যাতন শুরু করে দেয়। না‘ঊযুবিল্লাহ!
এই সম্পর্কে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
مَا بَيْنَ
ذٰلِكَ مَا نَالَتْ مِنِّـىْ قُرَيْشٌ شَيْئًا اَكْرَهُهٗ حَتّٰى مَاتَ اَبُوْ
طَالِبٍ.
অর্থ: “আবূ তালিবের ইন্তেকালের পূর্বে আমি কষ্ট পাই এমন কোনো কাজ কুরাইশরা করতে
সাহস পেতো না। এখন তারা তা শুরু করেছে।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (দালাইলুন নুবুওওয়াহ লিলবাইহাক্বী
২/৩৫০, সিয়ারু আ’লামিন নুবালা ১/১৯৩, তারীখুল ইসলাম ১/২৩৫,
খছাইছুল
কুবরা ১/১৪৮, তারীখে দিমাশক্ব ইত্যাদি)
এই কঠিন মুহূর্তে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি ছায়ার
মতো অত্যন্ত বেমেছালভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ!
এই সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ
عَبْدِ اللهِ بْنِ جَعْفَرٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ لَمَّا مَاتَ
اَبُوْ طَالِبٍ عَرَضَ لِرَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَفِيْهٌ
مِّنْ سُفَهَاءِ قُرَيْشٍ فَاَلْقٰـى عَلَيْهِ تُرَابًا فَرَجَعَ اِلـٰى بَيْتِهٖ
فَاَتَتِ امْرَاَةٌ مِّنْۢ بَنَاتِهٖ تَـمْسَحُ عَنْ وَّجْهِهِ التُّرَابَ
وَتَبْكِىْ قَالَ فَجَعَلَ يَقُوْلُ اَىْ بُنَيَّةُ لَا تَبْكِيَنَّ فَاِنَّ اللهَ
عَزَّ وَجَلَّ مَانِعٌ اَبَاكِ.
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে জা’ফর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন, আবূ ত্বালিবের ইন্তিকালের পর কুরাইশদের
এক মূর্খ-বদবখত ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার সামনে এসে উনার উপর ধূলি-বালি নিক্ষেপ করে।
ধূলি-ধূসরিত জিসম মুবারক উনার দিকি তিনি সম্মানিত হুজরা শরীফ-এ ফিরে আসেন। তখন
উনার একজন মহাসম্মানিতা বানাত (মেয়ে) আলাইহাস সালাম তিনি এসে অত্যন্ত কঠিনভাবে সম্মানিত
নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রবাহিত করতে থাকেন এবং সম্মানিত নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রবাহিত
করতে করতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
সম্মানিত নূরুর রহমত মুবারক (চেহারা মুবারক) থেকে ধূলি-বালি মুবারক পরিষ্কার করতে থাকেন।
সুবহানাল্লাহ! (রাবি) বলেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে সান্তনা মুবারক দিয়ে বলতে লাগলেন,
اَىْ بُنَيَّةُ
لَا تَبْكِيَنَّ فَاِنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ مَانِعٌ اَبَاكِ.
অর্থ: “হে আমার মহাসম্মানিতা প্রিয় বানাত (মেয়ে) আলাইহাস সালাম! আপনি সম্মানিত
নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রবাহিত করবেন না (কান্না মুবারক করবেন না)। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ
পাক তিনিই আপনার মহাসম্মানিত পিতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হিফাযত মুবারক
করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (দালাইলুন নুবুওওয়াহ লিলবাইহাক্বী ২/৩৫০, সিয়ারু আ’লামিন নুবালা ১/১৯৩, তারীখুল ইসলাম ১/২৩৫, খছাইছুল কুবরা ১/১৪৮, তারীখে দিমাশক্ব ইত্যাদি)
আলোচ্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত সেই সুমহান ব্যক্তিত্বা
মুবারকই ছিলেন বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম
তিনি। সুবহানাল্লাহ! তাহলে তিনি যে কতো বেমেছালভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক
দিয়েছেন, তা এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায়।
সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত মি’রাজ শরীফ:
আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের ১১তম বছরের ২৭শে রজবুল
হারাম শরীফ লাইলাতুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
সম্মানিত মি’রাজ শরীফ-এ তশরীফ মুবারক নেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একখানা বিশেষ শান মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ মুবারক
ঘটে। সুবহানাল্লাহ! তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে উম্মতের জন্য ৫ ওয়াক্ত ছলাত
(নামায) মুবারক হাদিয়াস্বরূপ নিয়ে আসেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত মি’রাজ শরীফ উনার বিষয়টি বিশ্বাস করে সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর
আলাইহিস সালাম তিনি ‘ছিদ্দীক্বে আকবর’ লক্বব মুবারক-এ ভূষিত হন। সুবহানাল্লাহ! আর কাফিরেরা
চরম বিরোধিতা করতে থাকে। না‘ঊযুবিল্লাহ! সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস
সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত পিতা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিশেষ শান মুবারক প্রকাশে যেমন অত্যন্ত খুশি মুবারক প্রকাশ
করেন তেমনিভাবে এই বিষয়ে কাফিরদের বিরোধিতায় নিজ মহাসম্মানিত পিতা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সান্তনা মুবারকও দেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশের ন্যায় সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস
সালাম তিনি এবং উনার অন্যান্য মহাসম্মানিতা বোন অর্থাৎ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল
ঊলা আলাইহাস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম
তিনি অর্থাৎ উনারা পুরুষ-মহিলা সকলের মাঝে সর্বপ্রথম ৫ ওয়াক্ত ছলাত মুবারক আদায় শুরু
করেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত হিজরত মুবারক:
মহান আল্লাহ পাক উনার মুবারক নির্দেশে যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত মদীনা শরীফ-এ সম্মানিত হিজরত মুবারক
করার প্রায় এক থেকে দেড় মাস পর সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম
তিনি, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ
আলাইহাস সালাম তিনি, সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর
রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি,
উম্মুল মু’মিনীন
আছ ছালিছাহ হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি এবং উম্মুল মু’মিনীন হযরত আছ ছানিয়াহ
(সাওদা) আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা এক সাথে সম্মানিত মদীনা শরীফ উনার উদ্দেশ্যে
রওয়ানা হন। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক নির্দেশক্রমে নির্দিষ্ট স্থান থেকে হযরত জায়িদ ইবনে হারিছাহ
রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এবং হযরত আবূ রাফি’ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি
অর্থাৎ উনারা উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম দিয়ে সম্মানিত মদীনা শরীফ-এ
নিয়ে যান। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত তা’লীম-তালক্বীন মুবারক:
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি যখন সম্মানিত মদীনা শরীফ
সম্মানিত হিজরত মুবারক করেন, তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে
উনার সম্মানিত বয়স মুবারক প্রায় ১৮ বছর। সম্মানিত মক্কা শরীফ অবস্থান মুবারক করা অবস্থাতেই
তিনি হযরত মহিলা ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুন্না উনাদেরকে সম্মানিত
তা’লীম-তালক্বীন মুবারক দিয়ে আসতেছিলেন। অতঃপর তিনি যখন সম্মানিত মদীনা শরীফ সম্মানিত
তাশরীফ মুবারক রাখেন, তখন আরো ব্যাপকভাবে সমস্ত
মহিলা ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুন্না উনাদেরকে সম্মানিত তা’লীম-তালক্বীন
মুবারক দিতে থাকেন। উনার সম্মানিত তা’লীম-তালক্বীন মুবারক ও সম্মানিত ছোহবত মুবারক
উনাদের মাধ্যমে হযরত মহিলা ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুন্নাগণ বেমেছাল
নি‘য়ামত মুবারক লাভে ধন্য হন। সুবহানাল্লাহ!
চূড়ান্ত বিজয়ী শান মুবারক অবলোকন:
বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত মক্কা শরীফ বিজয় ও হুনাইন বিজয় প্রত্যেকটিই অবলোকন
করেন। একে একে কাফিররা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। উনার সামনে উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনীত সম্মানিত
দ্বীন ইসলাম পৃথিবীর বুকে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। যেই কুরাইশরা উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চরম বিরোধিতা করতো। উনারা এখন ছাহাবী হয়েছেন।
সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি উনার মহাসম্মানিত
আব্বাজান নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
এই চূড়ান্ত বিজয়ী শান মুবারক দেখে বেমেছাল খুশি মুবারক প্রকাশ করেন। সুবাহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ:
সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন,
সাইয়্যিদাতু
নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার পূর্বে কিছু দিন সম্মানিত মারিদ্বী
শান মুবারক প্রকাশ করেন। অতঃপর এই সম্মানিত মারিদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করা অবস্থায়
তিনি ৯ম হিজরী সনের ৬ রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফবা’দ ফজর মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ২৬ বছর ৩ মাস
২৫ দিন দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত গোসল মুবারক এবং সম্মানিত কাফন মুবারক:
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত
দিক-নির্দেশনা মুবারক অনুযায়ী সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার
সম্মানিত গোসল মুবারক ও সম্মানিত কাফন মুবারক সম্পন করা হয়। সুবহানাল্লাহ! ‘আবূ দাঊদ
শরীফ’ উনার মধ্যে এসেছে,
اَنَّ حَضْرَتْ
لَيْلـٰى بِنْتَ قَانِفِۣ الثَّقَفِيَّةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهَا قَالَتْ
كُنْتُ فِـيْمَنْ غَسَّلَ حَضْرَتْ اُمَّ كُلْثُوْمٍ عَلَيْهَا السَّلَامُ بِنْتَ
رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عِنْدَ وَفَاتـِهَا فَكَانَ
اَوَّلُ مَا اَعْطَانَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْـحِقَاءَ ثُـمَّ
الـدِّرْعَ ثُـمَّ الْـخِمَارَ ثُـمَّ الْمِلْحَفَةَ ثُـمَّ اُدْرِجَتْ بَعْدُ
فِـى الثَّوْبِ الْاٰخَرِ قَالَتْ وَرَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ جَالِسٌ عِنْدَ الْبَابِ مَعَهٗ كَفَنُهَا يُنَاوِلُنَاهَا ثَوْبًا
ثَوْبًا.
অর্থ: “হযরত লায়লাহ বিনতে ক্বানিফ ছাকাফিয়্যাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি
বলেন, বিনতু রসূলিল্লাহ ছাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর যারা উনার সম্মানিত গোসল মুবারক
করান, আমি উনাদের মধ্যে ছিলাম। নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি প্রথমে আমাদেরকে
ইযার মুবারক দিয়েছিলেন। অতঃপর ক্বমীছ বা কোর্তা মুবারক, ওড়না বা সেরবন্দ মুবারক এবং লেফাফা বা চাদর মুবারক দিয়েছিলেন।
পরে উনাকে একটি কাপড় মুবারক বা ছিনাবন্দ মুবারক দ্বারা জড়ানো হয়েছিলো। যখন সাইয়্যিদাতুনা
হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনাকে গোসল মুবারক করানো হচ্ছিলো, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত দরজা মুবারক-এ সম্মানিত কাফন মুবারক উনার কাপড় মুবারকসহ
বসা ছিলেন এবং একটি একটি করে সম্মানিত কাপড় মুবারক সরবরাহ করে যাচ্ছিলেন।” সুবহানাল্লাহ!
(আবূ দাঊদ শরীফ, মুসনাদে আহমদ, আল আহাদ ওয়াল মাছানী,
আস সুনানুল
কুবরা লিলবাইহাক্বী, মা’রিফাতুস সুনান ওয়াল
আছার ইত্যাদি)
সম্মানিত জানাযা উনার নামায মুবারক পড়া এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ
উনার মধ্যে রাখা:
স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিইয়্যীন,
নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত ইমামতী মুবারক
করে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত জানাযা উনার
নামায মুবারক পড়ান। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক অনুযায়ী সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ
ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখা হয়।
সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার জন্য নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত নূরুল মুহব্বত মুবারক
প্রকাশ:
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন,
তখন উনার
সম্মানিত মুহব্বত মুবারক-এ, উনার সম্মানিত জুদায়ী
মুবারক উনার কারণে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি উনার সম্মানিত দু’চোখ মুবারক দিয়ে অজস্র ধারায় সম্মানিত নূরুল মুহব্বত মুবারক
প্রবাহিত করেন। এই সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক
হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ
اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ شَهِدْنَا بِنْتَ رَسُوْلِ اللهِ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَرَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ جَالِسٌ عَلَى القَبْرِ فَرَاَيْتُ عَيْنَيْهِ تَدْمَعَانِ.
অর্থ: “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ
আলাইহাস সালাম উনাকে যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখা হয়, তখন আমরা উপস্থিত ছিলাম। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস
সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ উনার নিকট বসা ছিলেন। আর আমি দেখেছি
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত
দু’চোখ মুবারক দিয়ে অজস্র ধারায় সম্মানিত নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রবাহিত হচ্ছেন।” সুবহানাল্লাহ!
(বুখারী শরীফ)
উল্লেখ্য যে, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন
নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার কোনো আওলাদ ছিলেন না।
No comments