সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা, উম্মুল আইম্মাহ, উম্মুল হাসানাঈন, আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার কতিপয় বেমেছাল খুছূছিয়াত মুবারক

=====================================================================================
একখানা সম্মানিত বরকতময় ঘটনা:
আল্লামা হাফিয আবুল আব্বাস আহমদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে মুহম্মদ মুহিব্বুদ্দীন ত্ববারী
রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিছাল শরীফ ৬৯৪ হিজরী) উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ
ফী মানাক্বিবে যাওইল কুরবা শরীফ’ কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
اِنَّ
النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اَتَانِـىْ حَضْرَتْ
جِبْرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ بِتُفَّاحَةٍ مِّنَ الْـجَنَّةِ فَاَكَلْتُهَا
وَوَاقَعْتُ اُمَّ الْـمُؤْمِنِيْنَ الْاُوْلـٰى سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ
اَلْكُبْرٰى (حَضْرَتْ خَدِيْـجَةَ) عَلَيْهَا السَّلَامُ فَحَمَلَتْ بِـحَضْرَتْ
فَاطِمَةَ الزَّهْرَاءِ عَلَيْهَا السَّلَامُ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ
মুবারক করেন, একদা হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত জান্নাত মুবারক
থেকে একখানা আপেল মুবারক নিয়ে আমার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ উপস্থিত হন। অতঃপর আমি
উক্ত সম্মানিত জান্নাতী আপেল মুবারক খাই। তারপর উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা
হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি আমার সম্মানিত ছোহবত মুবারক গ্রহণ করেন। অতঃপর উম্মুল
মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা
হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রেহেম শরীফ-এ ধারণ মুবারক
করেন।” সুবহানাল্লাহ! (যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ ১/৪৪, তারীখুল খমীস ১/২৭৭)
এ সম্মানিত ওয়াকেয়া মুবারক দ্বারা সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা আন নূরুর
রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল খুছূছিয়াত বা বৈশিষ্ট্য
মুবারক উনার বিষয়টি স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত বিশেষ সুসংবাদ মুবারক হাদিয়া:
বর্ণিত রয়েছে যে, উম্মু আবীহা আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত
যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস
সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র রেহেম শরীফ-এ অবস্থানকালীন সময় একদা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা
হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন, হে উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম! হযরত জিবরীল
আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে একখানা বিশেষ সম্মানিত সুসংবাদ
মুবারক নিয়ে এসেছেন। তিনি বলেছেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি
ইরশাদ মুবারক করেছেন, আপনার সম্মানিত ও পবিত্র রেহেম শরীফ-এ আমার একজন মহাসম্মানিতা
মেয়ে আওলাদ আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত অবস্থান মুবারক করছেন। আমার সম্মানিত বংশ মুবারক
উনার মাধ্যম দিয়ে দুনিয়ার যমীনে বিস্তার লাভ করবেন এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত জারি থাকবেন।
সুবহানাল্লাহ! আর উনার বংশধরগণ অত্যন্ত দ্বীনদার, পরহেযগার এবং মহান আল্লাহ
পাক উনার আখাচ্ছুল খাছ মাহবূব হবেন। সুবহানাল্লাহ! উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা
হযরত কুবরা আলাইহিস সালাম তিনি এই সুসংবাদ মুবারক শুনে অত্যন্ত খুশি মুবারক প্রকাশ
করেন। সুবহানাল্লাহ!
আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি
উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত
খিদমত মুবারক-এ অবস্থানকালীন সময় কোনো প্রকার তাকলীফী শান মুবারক গ্রহণ করতে হয়নি:
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন
উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত
তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন, তখন সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন সাইয়্যিদাতুনা
হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কোনো প্রকার তাকলীফী শান
মুবারক গ্রহণ করতে হয়নি। সুবহানাল্লাহ! ঠিক একইভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার লখতে জিগার আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা
হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি যখন উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা
আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র রেহেম শরীফ-এ সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন, তখন উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনাকেও কোনো
প্রকার তাকলীফী শান মুবারক গ্রহণ করতে হয়নি। সুবহানাল্লাহ! এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত
রয়েছে,
فَحَمَلَتْ
بِـحَضْرَتْ فَاطِمَةَ الزَّهْرَاءِ عَلَيْهَا السَّلَامُ فَقَالَتْ اِنِّـىْ
حَمَلْتُ حَمْلًا خَفِيْفًا.
অর্থ: “অতঃপর উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি
আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে উনার সম্মানিত ও পবিত্র
রেহেম শরীফ-এ ধারণ মুবারক করেন। উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস
সালাম তিনি বলেন, আমি উনাকে আমার সম্মানিত ও পবিত্র রেহেম শরীফ-এ অতি
উত্তমভাবে এবং অতি সহজে ধারণ মুবারক করেছি। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ এতে আমার কোনো প্রকার
তাকলীফী শান মুবারক গ্রহণ করতে হয়নি।” সুবহানাল্লাহ! (যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ ১/৪৫, তারীখুল খমীস)
আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন
আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ অবস্থানকালীন
সময় তিনি সবসময় সম্মানিত বেহেশতী সুঘ্রাণ মুবারক পেতেন:
আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
রেহেম শরীফ-এ থাকা অবস্থায় উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস
সালাম তিনি সবসময় সম্মানিত বেহেশতী সুঘ্রাণ মুবারক পেতেন। সুবহানাল্লাহ! এ সম্পর্কে
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
فَلَمَّا
حَمَلَتْ اُمُّ الْـمُؤْمِنِيْنَ الْاُوْلـٰى سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلْكُبْرٰى
(حَضْرَتْ خَدِيْـجَةُ) عَلَيْهَا السَّلَامُ بِـالنُّوْرِ الرّابِعَةِ
سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اَلزَّهْرَاءِ (حَضْرَتْ فَاطِمَةَ) عَلَيْهَا السَّلَامُ
وَجَدَتْ رَائِحَةَ الْـجَنَّةِ تِسْعَةَ اَشْهُرٍ فَلَمَّا اَرْضَعَتْهَا
اِنْتَقَلَتِ الرَّائِحَةُ اِلَيْهَا.
অর্থ: “যখন উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি
সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস
সালাম উনাকে সম্মানিত ও পবিত্র রেহেম শরীফ-এ ধারণ মুবারক করেন, তখন থেকে তিনি দীর্ঘ ৯ মাস (অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান
মুবারক প্রকাশ পর্যন্ত) সম্মানিত বেহেশতী সুঘ্রাণ মুবারক পেতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ!
অতঃপর যখন আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন উক্ত সম্মানিত বেহেশতী
সুঘ্রাণ মুবারক উনার মাঝে শোভা পেতে থাকেন।” সুবহানাল্লাহ! (নুযহাতুল মাজালিস ২/১৭১)
মূলত, সম্মানিত জান্নাত মুবারকসহ সমস্ত কায়িনাত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
হযরত আহলু বাইতি শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কারণে সমস্ত প্রকার নি‘য়ামত মুবারক লাভ
করেছে। শুধু তাই নয়, সম্মানিত জান্নাত মুবারক যে সুঘ্রাণ মুবারক লাভ করেছে, সেটা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিস সালাম উনাদের থেকেই
লাভ করেছে। সুবহানাল্লাহ! সেই সম্মানিত সুঘ্রাণ মুবারকই আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা
হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মাঝে শোভা পেয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ এবং সম্মানিত বিশেষ
ঘটনা মুবারক:
সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, উম্মু আবীহা আন নূরুর
রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময়
বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার সময় উনার এবং উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান উম্মুল মু’মিনীন
আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের সম্মানিত খিদমত
মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য স্বয়ং যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক
তিনি সম্মানিত জান্নাত মুবারক থেকে বিশেষ চার জন সম্মানিতা মহিলা আলাইহিন্নাস সালাম
উনাদেরকে প্রেরণ করেন। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
دَخَلَ عَلَيْهَا اَرْبَعُ نِسْوَةٍ
عَلَيْهِنَّ مِنَ الْـجَمَالِ وَالنُّوْرِ مَا لَا يُوْصَفُ فَقَالَتْ لَـهَا
اِحْدَاهُنَّ اَنَا اُمُّكِ حَضْرَتْ حَوَّاءُ عَلَيْهَا السَّلَامُ وَقَالَتِ
الْاُخْرٰى اَنَا حَضْرَتْ اٰسِيَةُ بِنْتُ مُزَاحِمٍ عَلَيْهَا السَّلَامُ
وَقَالَتِ الْاُخْرٰى اَنَا حَضْرَتْ كُلْثُوْمٌ عَلَيْهَا السَّلَامُ اُخْتُ
حَضْرَتْ مُوْسٰى عَلَيْهِ السَّلَامُ وَقَالَتِ الْاُخْرٰى اَنَا حَضْرَتْ
مَرْيَـمُ بِنْتُ عِمْرَانَ عَلَيْهَا السَّلَامُ اُمُّ عِيْسٰى عَلَيْهِ
السَّلَامُ جِئْنَا لِنَلِىْ مِنْ اَمْرِكِ.
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত
খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য চারজন সম্মানিতা মহিলা আলাইহিন্নাস সালাম
উনারা সম্মানিত ও পবিত্র হুজরা শরীফ-এ প্রবেশ করলেন, উপস্থিত হলেন। উনাদের
চেহারা মুবারক অত্যন্ত সুন্দর ও নূরানী। ছূরতান উনাদেরকে পরিচিত মনে হচ্ছিলো না। তখন
উনাদের মধ্যে প্রথমজন উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম
উনাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, আমি আপনার সম্মানিতা আম্মাজান উম্মুল বাশার সাইয়্যিদাতুনা
হযরত হাওয়া আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! দি¦তীয়জন বললেন, আমি সাইয়্যিদাতুনা হযরত
‘আসিয়াহ্ বিনতে মুযাহিম আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তৃতীয়জন বললেন, আমি জলীলুল ক্বদর রসূল হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বোন
হযরত কুলছূম আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! চতুর্থজন বললেন, আমি জলীলুল ক্বদর রসূল হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিতা আম্মাজান
হযরত মারইয়াম বিনতে ইমরান আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! আমরা এসেছি আপনার সম্মানিত
খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য।” সুবহানাল্লাহ! (যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ ১/৪৫)
অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি কুদরতীভাবে উম্মু আবীহা আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা
হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক
প্রকাশের বিষয়টা ফায়ছালা মুবারক করেন। অর্থাৎ তিনি কুদরতীভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! সময় মুবারক ছিলেন আনুষ্ঠানিকভাবে
মহাসম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারক প্রকাশের প্রায় ৩ বছর পূর্বে ২০শে জুমাদাল
উখরা শরীফ ইয়াওমুল জুমু‘য়াহ্ শরীফ সুবহে ছাদিক্ব উনার সময়। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী
দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
সম্মানিত বয়স মুবারক ৩৭ বছর পার হয়ে ৩৮ বছর চলাকালীন। সুবহানাল্লাহ! আর উম্মুল মু’মিনীন
আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ৫২ বছর পার
হয়ে ৫৩ বছর চলাকালীন। সুবহানাল্লাহ!
স্মরণীয় যে, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ছাহিবু ইলমিল আউওয়ালি ওয়াল ইলমিল আখিরি, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ
মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস
সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “শুধু উম্মু আবীহা আন নূরুর
রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সময় নয়; বরং মহাসম্মানিত হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের
এবং মহাসম্মানিতা হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের প্রত্যেকের
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের সময়ই উনাদের সম্মানিত
খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত জান্নাত
মুবারক থেকে বিশেষ বিশেষ সম্মানিতা মহিলা আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে প্রেরণ করেছেন
এবং উনারা উনাদের যথাযথ সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়ে নিজেদেরকে ধন্য
করেছেন।” সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত সিজদারত অবস্থায় এবং সম্মানিত ও পবিত্র অঙ্গুলি মুবারক উত্তোলন করা অবস্থায়
দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক:
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যেমন সম্মানিত সিজদারত অবস্থায় এবং
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শক্ব মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র অঙ্গুলি মুবারক)
উত্তোলন করা অবস্থায় দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রেখেছেন, ঠিক তেমনিভাবে উনার মহাসম্মানিত লখতে জিগার মুবারক, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস
সালাম তিনিও সম্মানিত সিজদারত অবস্থায় এবং সম্মানিত ও পবিত্র অঙ্গুলি মুবারক উত্তোলন
করা অবস্থায় দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রেখেছেন। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
قَالَتْ
فَوُلِدَتْ اَلنُّوْرُ الرَّابِعَةُ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلزَّهْرَاءُ
(حَضْرَتْ فَاطِمَةُ) عَلَيْهَا السَّلَامُ فَوَقَعَتْ حِيْنَ وَقَعَتْ عَلَى
الْاَرْضِ سَاجِدَةً رَّافِعَةً اُصْبُعَهَا.
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, অতঃপর সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা
আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন।
সুবহানাল্লাহ! তিনি যখন দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখেন, তখন তিনি সম্মানিত সিজদারত অবস্থায় এবং সম্মানিত ও পবিত্র অঙ্গুলি মুবারক উত্তোলন
করা অবস্থায় দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখেন।” সুবহানাল্লাহ! (যাখায়েরুল
‘উক্ববাহ ফী মানাক্বিবে যাওইল কুরবা শরীফ ১/৪৫)
সম্মানিত ও পবিত্র জিসম মুবারক থেকে সারা কায়িনাতে সম্মানিত নূর মুবারক বিচ্ছূরিত
হওয়া:
উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত
ও পবিত্র হুজরা শরীফ এমনিতেই নূরানী। সুবহানাল্লাহ! তথাপি সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল
আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের কারণে উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা
হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র হুজরা শরীফ আরো নূরানী হয়ে গেলেন
এবং উনার সম্মানিত ও পবিত্র জিসম মুবারক থেকে সম্মানিত নূর মুবারক বিচ্ছূরিত হতে লাগলেন।
সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত নূর মুবারক উনার আলোতে সমস্ত কিছু আলোকিত হয়ে গেলো। সুবহানাল্লাহ!
পৃথিবীর চতুর্দিকে এবং সারা কায়িনাতে উনার সম্মানিত নূর মুবারক উনার আলো মুবারক ছড়িয়ে
পড়লেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত জান্নাত মুবারক থেকে সম্মানিত হুর উনাদের আগমন এবং সম্মানিত জান্নাতী
পানি মুবারক দ্বারা সম্মানিত গোসল মুবারক করানো:
আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের সময় উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক
দেয়ার জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত জান্নাত মুবারক থেকে বিশেষ চার জন সম্মানিতা
মহিলা আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকেই শুধু প্রেরণ করেননি; বরং অসংখ্য-অগণিত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম এবং অসংখ্য-অগণিত সম্মানিত জান্নাতী
বিশেষ হুর-গেলমান উনাদেরকেও প্রেরণ করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিতা জান্নাতী বিশেষ
হুর উনাদের হাত মুবারক-এ গোসল মুবারক করানোর জন্য বড় বাটি এবং উজ্জ্বল, চাকচিক্যময় পানির মশক ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! প্রত্যেকটি মশক সম্মানিত জান্নাত মুবারক
উনার সম্মানিত পবিত্র পানি মুবারক দ্বারা পরিপূর্ণ ছিলেন। এই সকল সম্মানিতা বিশেষ হুর
উনারা অত্যন্ত আদবের সাথে আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম
উনাকে সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার সম্মানিত পানি মুবারক দ্বারা সম্মানিত গোসল মুবারক
করান এবং খুশবূ মুবারক মিশ্রিত সম্মানিত জান্নাতী লেবাস মুবারক পরিধান করিয়ে দেন। সুবহানাল্লাহ!
অতঃপর উনারা অত্যন্ত আদবের সাথে উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস
সালাম উনার সম্মানিত কোল মুবারক-এ আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস
সালাম উনাকে তুলে দেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেই উম্মতে হাবীবী
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের জন্য সম্মানিত দু’য়া মুবারক করা:
আল্লামা হাফিয আবুল আব্বাস আহমদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে মুহম্মদ মুহিব্বুদ্দীন ত্ববারী
রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন,
قَالَتْ
فَوُلِدَتْ اَلنُّوْرُ الرَّابِعَةُ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلزَّهْرَاءُ
(حَضْرَتْ فَاطِمَةُ) عَلَيْهَا السَّلَامُ فَوَقَعَتْ حِيْنَ وَقَعَتْ عَلَى
الْاَرْضِ سَاجِدَةً رَّافِعَةً اُصْبُعَهَا.
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, অতঃপর সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা
আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন।
সুবহানাল্লাহ! তিনি যখন দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখেন, তখন তিনি সম্মানিত সিজদা মুবারকরত অবস্থায় এবং সম্মানিত ও পবিত্র অঙ্গুলি মুবারক
উত্তোলন করা অবস্থায় দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখেন।” সুবহানাল্লাহ!
(যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ শরীফ ১/৪৫)
মূলত, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার পর পর সম্মানিত সিজদারত অবস্থায়
যেমন উনার উম্মত উনাদের গুণাহ মাফের জন্য সম্মানিত দু’য়া মুবারক করেছেন, ঠিক তেমনিভাবে সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা আন নূরুর
রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনিও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময়
বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার পর পর সম্মানিত সিজদারত অবস্থায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মত উনাদের গুণাহ মাফের জন্য সম্মানিত
দু’য়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! উপরোক্ত সম্মানিত ওয়াকেয়াহ মুবারক সেই দিকেই ইঙ্গিত
বহন করে। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশে মহাসম্মানিত ‘ফালইয়াফরহূ
শরীফ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন:
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
یٰۤاَیُّہَا
النَّاسُ قَدْ جَآءَتْكُمْ مَّوْعِظَةٌ مّـِنْ
رَّبّـِكـُمْ وَشِفَآءٌ لِّـمَا فِى الصُّدُوْرِ وَهُدًى
وَّرَحْمَةٌ لّـِلْمُؤْمِنِيْنَ. قُلْ بِفَضْلِ اللهِ وَبِرَحْمَتِهٖ فَبِذٰلِكَ
فَلْيَفْرَحُوْا هُوَ خَيْرٌ مِّـمَّا يَـجْمَعُوْنَ.
অর্থ: “হে মানুষেরা! হে সমস্ত জিন-ইনসান, কায়িনাতবাসী! অবশ্যই তোমাদের
মাঝে মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ নছীহতকারী, তোমাদের অন্তরের সর্বপ্রকার ব্যাধিসমূহের সর্বশ্রেষ্ঠ আরোগ্যদানকারী, সর্বশ্রেষ্ঠ হিদায়েত দানকারী এবং খাছ করে ঈমানদার উনাদের জন্য, আমভাবে সমস্ত কায়িনাতবাসীর জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ রহমতস্বরূপ আমার যিনি হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাশরীফ
মুবারক এনেছেন। সুবহানাল্লাহ! হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি
সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীকে জানিয়ে দিন, মহান আল্লাহ পাক তিনি যে, সম্মানিত ফযল মুবারক এবং
সম্মানিত রহমত মুবারক হিসেবে উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাঠিয়েছেন, সেজন্য তারা যেন মহাসম্মানিত ‘ফালইয়াফরহূ শরীফ’ তথা সম্মানিত খুশি মুবারক প্রকাশ
করে, মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে। এই মহাসম্মানিত
‘ফালইয়াফরহূ শরীফ’ তথা সম্মানিত খুশি মুবারক প্রকাশ করা, মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা সবকিছু থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বোত্তম, যা তারা দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য সঞ্চয় করে।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র
সূরা ইউনূস শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৭-৫৮)
এ সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার পরিপূর্ণ মিছদাক্ব হচ্ছেন উম্মু আবীহা আন নূরুর
রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! তাই নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উপলক্ষে মহাসম্মানিত ‘ফালইয়াফরহূ শরীফ’ সাইয়্যিদুল
আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা যেমন ফরয, তেমনিভাবে উনার মহাসম্মানিতা
আওলাদ উম্মু আবীহা আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উপলক্ষে মহাসম্মানিত ‘ফালইয়াফরাহূ শরীফ’
সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করাও ফরয তো অবশ্যই; বরং ফরয উনার উপর ফরয।
সুবহানাল্লাহ!
কেননা উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশে স্বয়ং মহান
আল্লাহ পাক তিনি, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা এবং হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস
সালাম উনারাসহ কুল-কায়িনাতের সকলেই মহাসম্মানিত ‘ফালইয়াফরহূ শরীফ’ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ
শরীফ পালন করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ও পবিত্র জিসম মুবারক থেকে সম্মানিত বেহেশতী সুঘ্রাণ মুবারক:
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে যে, আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহিস
সালাম তিনি সম্মানিত ও পবিত্র রেহেম শরীফ-এ থাকা অবস্থায় উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা
হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি সবসময় সম্মানিত বেহেশতী সুঘ্রাণ মুবারক পেতেন। সুবহানাল্লাহ!
অতঃপর যখন আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন উক্ত বেহেশতী সুঘ্রাণ
মুবারক উনার মাঝে শোভা পেতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! যেমন এই সম্পর্কে ‘নুযহাতুল মাজালিস’
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
فَلَمَّا
حَمَلَتْ اُمُّ الْـمُؤْمِنِيْنَ الْاُوْلـٰى سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلْكُبْرٰى
(حَضْرَتْ خَدِيـْجَةُ) عَلَيْهَا السَّلَامُ بِالنُّوْرِ الرَّابِعَةِ
سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اَلزَّهْرَاءِ (حَضْرَتْ فَاطِمَةَ) عَلَيْهَا السَّلَامُ
وَجَدَتْ رَائِحَةَ الْـجَنَّةِ تِسْعَةَ اَشْهُرٍ فَلَمَّا اَرْضَعَتْهَا
اِنْتَقَلَتِ الرَّائِحَةُ اِلَيْهَا.
অর্থ: “যখন উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি
সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, উম্মু আবীহা আন নূরুর
রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত ও পবিত্র রেহেম শরীফ-এ
ধারণ মুবারক করেন, তখন থেকে তিনি দীর্ঘ ৯ মাস (অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও
মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ পর্যন্ত) সম্মানিত বেহেশতী সুঘ্রাণ মুবারক
পেতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর যখন আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস
সালাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন উক্ত সম্মানিত বেহেশতী সুঘ্রাণ মুবারক উনার মাঝে শোভা পেতে থাকেন।” সুবহানাল্লাহ!
(নুযহাতুল মাজালিস ২/১৭১)
মূলত, সম্মানিত জান্নাত মুবারকসহ সমস্ত কায়িনাত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
হযরত আহলু বাইতি শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কারণে সমস্ত প্রকার নিয়ামত মুবারক লাভ
করেছে। শুধু তাই নয়, সম্মানিত জান্নাত মুবারক যে সুঘ্রাণ মুবারক লাভ করেছে, সেটা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিস সালাম উনাদের থেকেই
লাভ করেছে। সুবহানাল্লাহ! সেই সম্মানিত সুঘ্রাণ মুবারকই আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা
হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মাঝে শোভা পেয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ও পবিত্র আক্বীক্বাহ মুবারক দেয়া এবং সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক
রাখা:
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার
লখতে জিগার আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত
ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের ৭ম দিন তথা ২৬ শে জুমাদাল উখরা শরীফ
ইয়াওমুল খমীস শরীফ উনার পক্ষ থেকে সম্মানিত ও পবিত্র আক্বীক্বাহ মুবারক দেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে
উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক রাখেন ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত ফাত্বিমাহ আলাইহাস
সালাম’। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক:
আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত কুনিয়াত
মুবারক হচ্ছেন ‘উম্মুল হাসান আলাইহাস সালাম’। সুবহানাল্লাহ!
No comments