সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত যাবীহুল্লাহ শান মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ সম্মানিত যাবীহুল্লাহ লক্বব মুবারক সম্পর্কে কিছু পর্যালোচনা
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন,
اَنَا ابْنُ الذَّبِـيْحَيْنِ
অর্থ: “আমি দুই যাবীহুল্লাহ আলাইহিমাস
সালাম উনাদের সন্তান।” সুবহানাল্লাহ! (শারফুল মুস্ত¡ফা, শরহুশ শিফা, মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়্যাহ, কাশশাফ, সুবুলুল হুদা ওয়ার
রশাদ,
তারীখুল খমীস)
‘মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়্যাহ শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে,
قَوْلُهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَنَا ابْنُ الذَّبِـيْحَيْنِ
اَىْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَحَضْرَتْ اِسْـمٰعِيْلَ عَلَيْهِ
السَّلَامُ.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ, ‘আমি দুই যাবীহুল্লাহ আলাইহিমাস সালাম উনাদের সন্তান। অর্থাৎ
(দুই যাবীহুল্লাহ আলাইহিমাস সালাম উনারা হচ্ছেন) সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস
সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইসমাঈল আলাইহিস সালাম তিনি।” সুবহানাল্লাহ! (মাওয়াহিবুল
লাদুন্নিয়্যাহ)
সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে
আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عن حَضْرَتْ مُعَاوِيَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ
كُنَّا عِنْدَ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاَتَاهُ الْاَعْرَابِـىُّ
فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَلَّفْتُ الْبِلَادَ
يَابِسَةً وَّالْمَاءَ يَابِسًا هَلَكَ الْعِـيَالُ وَضَاعَ الْمَالُ فَعُدْ عَلَىَّ
بـِمَا اَفَاءَ اللهُ عَلَيْكَ يَا ابْنَ الذَّبِـيْحَيْنِ فَتَبَسَّمَ رَسُوْلُ اللهِ
صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَـمْ يُنْكِرْ عَلَيْهِ.
অর্থ: “হযরত মুয়াবিয়া ইবনে আবূ সূফিয়ান
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমারা একদা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ উপস্থিত ছিলাম। এমন সময় এক আ’রাবী
(গ্রামে বসবাসকারী ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ উপস্থিত হয়ে
আরয করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম, ভূমি শুকিয়ে গেছে। পানি ফুরিয়ে গেছে। পরিবার
ধ্বংস হয়ে গেছে এবং ধন-সম্পদ নষ্ট হয়ে গেছে।
হে দুই যাবীহুল্লাহ আলাইহিমাস সালাম উনাদের
সন্তান, মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে যা হাদিয়া
মুবারক করেছেন, তা হতে আমাকে কিছু দান করুন! নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উক্ত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু উনার বক্তব্য মুবারক শুনে মুচকি হাসি মুবারক দিলেন এবং তা অস্বীকার করলেন
না।” সুবহানাল্লাহ! (মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়্যাহ, মাদারিজুন নুবুওওয়াহ, খছাইছুল কুবরা, শারহুয যারক্বানী আলা মাওয়াহিব, মুস্তাদরকে হাকিম, শারফুল মুস্ত¡ফা, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ইত্যাদি)
এই সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ থেকে
একটি বিষয় অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যাবীহুল্লাহ
আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ বলে সম্বোধন করলে, তিনি অত্যন্ত সন্তুষ্ট হন এবং খুশি মুবারক প্রকাশ করেন। অর্থাৎ
উনার মহাসম্মানিত হযরত আব্বাজান আলাইহিস সালাম উনাকে ‘যাবীহুল্লাহ’ বললে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনি সন্তুষ্ট হন এবং খুশি মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
এখান থেকে আরো একটি বিষয় সুস্পষ্ট যে, সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মুবারক উসীলা
দিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট
কোন কিছু আরজী পেশ করলে, তিনি সেই আরজীকে বিশেষভাবে
কবূল করে থাকেন। সুবহানাল্লাহ!
মূলত ‘যাবীহুল্লাহ’ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আব্বাজান আলাইহিস
সালাম উনার একখানা আখাছ্ছুল খাছ লক্বব মুবারক। সুবহানাল্লাহ! এই সম্মানিত লক্বব মুবারকেই
তিনি সকলের মাঝে সম্মানিত পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! সকলে উনাকে এই
সম্মানিত লক্বব মুবারকেই চিনে থাকেন। সুবহানাল্লাহ!
যাবীহুল্লাহ শান মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে যে, ‘সম্মানিত যমযম কূপ মুবারক খনন করার সময় কুরাইশদের সাথে সাইয়্যিদুনা
হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যে বিবাদ হয়েছিলো, তার প্রেক্ষিতে তিনি সম্মানিত মানত মুবারক করেছিলেন যে, যদি উনার দশ জন সম্মানিত আওলাদ (পুত্র সন্তান) আলাইহিমুস সালাম
উনারা সম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন এবং প্রাপ্ত বয়স মুবারক-এ উপনীত
হয়ে উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম দেয়ার উপযুক্ত হন, তাহলে উনাদের একজনকে মহান আল্লাহ পাক উনার রেযামন্দি-সন্তুষ্টি
মুবারক হাছিলের লক্ষ্যে সম্মানিত কা’বা শরীফ উনার নিকটে সম্মানিত যবেহ বা কুরবানী মুবারক
করবেন। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পুত্র সন্তান আলাইহিমুস সালাম উনাদের সংখ্যা যখন দশ জন পূর্ণ
হলেন এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদের মাধ্যমে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত চোখ মুবারক উনাকে শিতল করলেন। তখন সাইয়্যিদুনা
হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এক রজনী মুবারক-এ সম্মানিত
কা’বা শরীফ উনার নিকটে ঘুমিয়ে ছিলেন। তিনি স্বপ্ন মুবারক-এ দেখলেন যে,
قَائِلًا يَّـقُوْلُ يَا حَضْرَتْ عَبْدَ الْـمُطَّلِبِ عَلَيْهِ
السَّلَامُ اَوْفِ بِنَذْرِكَ لِرَبِّ هٰذَا الْبَيْتِ فَاسْتَيْقَظَ فَزِعًا مَّرْعُوْبًا
وَّاَمَرَ بِذَبْحِ كَبْشٍ وَّاَطْعَمَهٗ لِلْفُقَرَاءِ وَالْـمَسَاكِيْنَ ثُـمَّ نَامَ
فَرَاٰى اَنْ قَـرِّبْ مَا هُوَ اَكْبَرُ مِنْ ذٰلِكَ فَاسْتَيْقَظَ مِنْ نَوْمِهٖ
وَقَــرَّبَ ثَوْرًا ثُـمَّ نَامَ فَرَاٰى اَنْ قَـرِّبْ مَا هُوَ اَكْبَرُ مِنْ ذٰلِكَ
فَانْتَبَهَ وَقَــرَّبَ جَـمَلًا وَّاَطْعَمَهٗ لِلْمَسَاكِيْنَ ثُـمَّ نَامَ فَنُوْدِىَ
اَنْ قَـرِّبْ مَا هُوَ اَكْبَرُ مِنْ ذٰلِكَ فَقَالَ مَا اَكْبَرُ مِنْ ذٰلِكَ فَقَالَ
قَـرِّبْ اَحَدَ اَوْلَادِكَ الَّذِىْ نَذَرْتَهٗ.
অর্থ: “উনাকে একজন বললেন, হে সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম! আপনি এই সম্মানিত কা’বা শরীফ উনার রব মহান আল্লাহ পাক উনার রেযামন্দি-সন্তুষ্টি
মুবারক হাছিলের লক্ষ্যে আপনার সম্মানিত মানত মুবারক পূর্ণ করুন। এই স্বপ্ন মুবারক দেখে
তিনি চিন্তিত ও শঙ্কিত অবস্থায় ঘুম থেকে জাগ্রত হলেন এবং তিনি একটি দুম্বা মুবারক যবেহ
করে ফক্বীর ও মিসকীনদেরকে খাওয়ালেন। তারপর তিনি পরবর্তী রাতে ঘুমিয়ে স্বপ্ন মুবারক-এ
দেখলেন যে, উনাকে বলা হচ্ছে আপনি এর চেয়ে বড় কিছু
কোরবানী করুন। তিনি ঘুম থেকে উঠে একটি ষাড় (গরু) কুরবানী মুবারক করেন। পরবর্তী রাতে
তিনি ঘুমালেন। পুনরায় উনাকে স্বপ্ন মুবারক-এ বলা হলো, আপনি এর চেয়ে বড় কিছু কুরবানী করুন। তারপর তিনি ঘুম থেকে উঠে
একটি উট কুরবানী মুবারক করে মিসকীনদেরকে খাওয়ালেন। এর পরবর্তী রাত্রিতে তিনি ঘুমালেন, তখন উনাকে নিদা মুবারক করা হলো, আপনি এর চেয়ে বড় কিছু কুরবানী মুবারক করুন। তিনি বললেন, এর চেয়ে বড় কী? তখন উনাকে বলা হলো, আপনি আপনার সম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে
একজনকে কুরবানী মুবারক করুন, যেটা আপনি সম্মানিত মানত মুবারক
করেছিলেন।” সুবহানাল্লাহ! (নিহায়াতুল ইজায ১/৪০, মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়্যাহ ১/৬৬, শারহুয যারক্বানী
আলা মাওয়াহিব ১/১৭৬)
তারপর সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার সম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সকলকে
একত্রিত করে উনার সম্মানিত মানত মুবারক সম্পর্কে অবহিত করলেন এবং উনাদেরকে উনার সম্মানিত
ওয়াদা মুবারক পূরণ করার ব্যাপারে আহ্বান মুবারক করলেন। তখন উনারা সকলে বললেন,
اِنَّـا نُطِيْعُكَ فَمَنْ تَذْبَحُ مِنَّا
অর্থ: “হে আমাদের মহাসম্মানিত হযরত আব্বাজান
আলাইহিস সালাম, নিশ্চয়ই আমরা প্রত্যেকেই আপনার অনুগত।
আপনি আমাদের মধ্য থেকে কাকে কুরবানী মুবারক করতে চান?”
তখন সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার দশ জন সম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের
মাঝে লটারী মুবারক করলেন। লটারী মুবারক-এ সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম
উনার সম্মানিত নাম মুবারক উঠলেন। তিনি উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ
আলাইহিস সালাম উনাকে কুরবানী মুবারক করার জন্য পূর্ণ প্রস্তুতি মুবারক গ্রহণ করেন এবং
উনাকে নিয়ে সম্মানিত ক্বা’বা শরীফ উনার সামনে উপস্থিত হন। অতঃপর যখন তিনি উনাকে শুয়ায়ে
ছুরি মুবারক দিয়ে কুরবানী মুবারক করবেন, তখন তা দেখে কুরাইশরা
তাদের মজলিশ থেকে দৌড়ে এসে বললো, আপনি কি করছেন? তিনি বললেন, আমি উনাকে যবেহ
করবো। কুরাইশ এবং উনার সম্মানিত আওলাদগণ যাঁরা ছিলেন উনারা সকলেই বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! কোনো নিশ্চিত বিকল্প ধারা না হওয়া
পর্যন্ত আপনি উনাকে যবেহ করতে পারবেন না। যদি করেন তাহলে পুত্র কুরবানী দেয়ার ধারা
চালু হয়ে যাবে। এমতাবস্থায় মানুষের নিরাপত্তা কিভাবে রক্ষা হবে?
সম্মানিত মদীনা শরীফ-এ সাজাহ নামে একজন
বিশেষ ব্যক্তি বসবাস করতেন। যিনি আসমানী কিতাব সম্পর্কে ইলম রাখতেন। কুরাইশরা সাইয়্যিদুনা
হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ওই ব্যক্তি উনার নিকট
যেয়ে এই বিষয়টি বলার জন্য অনুরোধ করলো।
সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি লোকজন নিয়ে সাজাহ নামীয় ওই বিশেষ ব্যক্তির নিকট যেয়ে সবকিছু
খুলে বললেন। সব শুনে ওই ব্যক্তি বললেন, আপনাদের সমাজে মুক্তিপণের
পরিমাণ কত? সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, দশটি উট। ওই ব্যক্তি
বললেন,
আপনারা দেশে ফিরে যান। গিয়ে দশটি উট ও আপনার মহাসম্মানিত
আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার মধ্যে লটারী করুন। লটারী মুবারক-এ যদি আপনার মহাসম্মানিত
আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নাম মুবারক আসে, তাহলে আরো দশটি উট নিয়ে আবারো লটারী করুন। এভাবে দশটি করে উট বাড়িয়ে লটারী করতে
থাকুন। অতঃপর যখন উটের নাম আসবে, তখন আপনি আপনার
মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম উনার পরিবর্তে উটগুলো কুরবানী করুন। এতে মহান আল্লাহ
পাক তিনি সন্তুষ্ট হয়েছেন বলে প্রমাণিত হবে। সুবহানাল্লাহ! আর আপনার মহাসম্মানিত আওলাদ
আলাইহিস সালাম উনার জীবন মুবারকও বেঁচে যাবে। অর্থাৎ উনার সম্মানিত যাবীহুল্লাহ শান
মুবারক উনার সম্মানিত বহিঃপ্রকাশ মুবারক ঘটবে। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সবাইকে নিয়ে সম্মানিত মক্কা শরীফ-এ আসলেন। অতঃপর সকলের উপস্থিতে
লটারী শুরু হলো। সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট সম্মানিত দোয়া মুবারক করতে লাগলেন। প্রথমে দশটি উট
ও সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মাঝে লটারী করা হলো। নাম আসলো সাইয়্যিদুনা
হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার। এবার আরো দশটি উট বাড়িয়ে লটারী দেয়া হলো। এভাবে
দশটি করে উট বাড়িয়ে লটারী করা হলো। কিন্তু প্রতিবারই সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ
আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নাম মুবারক উঠতে লাগলেন। অবশেষে একশত উট আর সাইয়্যিদুনা
হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মাঝে লটারী দেয়া হলে উটের নাম উঠলো। তখন সাইয়্যিদুনা
হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত কা’বা শরীফ উনার
সম্মুখে দাঁড়িয়ে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট সম্মানিত দোয়া মুবারক করছিলেন। কুরাইশরা
উনাকে জানালেন যে, সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনার উপর সন্তুষ্ট হয়েছেন। সুবহানাল্লহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, না এতে আমি সন্তুষ্ট
না। আরো তিনবার লটারী না করা পর্যন্ত আমি নিশ্চিত হতে পারছি না। সুবহানাল্লাহ! তারপর
উনার কথা মুবারক অনুযায়ী আরো তিনবার লটারী করা হলো। প্রতিবারই উটের নাম আসলো। তখন সাইয়্যিদুনা
হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিশ্চিত হলেন এবং মহান
আল্লাহ পাক উনার শুকরিয়া মুবারক আদায় করলেন। সুবহানাল্লাহ!
তারপর সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একশ উট মুবারক যবেহ করে বিশেষ ও সাধারণ সকল লোককে; এমন কি অন্যান্য মাখলূকাতকেও আহার করালেন। সুবহানাল্লাহ!
এভাবে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম
উনার সম্মানিত যাবীহুল্লাহ শান মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ মুবারক ঘটে। সুবহানাল্লাহ! এরপর
থেকেই আরব দেশে এক ব্যক্তির রক্তপণ নির্ধারিত হলো একশত উট। যদিও ইতঃপূর্বে রক্তপণের
জন্য নির্ধারিত ছিলো দশ উট। পরবর্তীতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একশত উটই রক্তপণরূপে নির্ধারণ মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
(মাদারিজুন নুবুওওয়াহ, মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়্যাহ, শারহুয যারক্বানী আলাল মাওয়াহিব, আর রওদুল উনফ, আল বিদায়াহ ওয়ান
নিহায়াহ ইত্যাদি)
No comments