যুল ওয়াসীলাহ, খইরুল আলামীন, সাইয়্যিদুছ ছাক্বলাইন, ছাহিবুল কাওছার, যিক্রুল্লাহ, খইরু খলক্বিল্লাহ, আস সিরাজুল মুনীর, ইমামুল মুত্তাক্বীন, মালিকুল কায়িনাত, আবূ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার একক অনন্য বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত,বুযূর্গী-সম্মান ও খুছূছিয়াত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক
সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস
সালাম উনার সম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ সম্পর্কে পূর্ববর্তী আসমানী
কিতাব মুবারক-এ আলোচনা মুবারক
‘নুযহাতুল মাজালিস’ কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
فَعَلِمَتْ اَحْبَارُ الشَّامِ بِـسَيِّـدِنَـا حَضْرَتْ عَبْدِ
اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ لِاَنَّ فِـىْ كُتُبِهِمْ اِذَا قَطَرَتْ جُبَّةُ حَضْرَتْ
يَـحْيٰـى عَلَيْهِ السَّلَامُ فَقَدْ وُلِدَ وَالِدُ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ
অর্থ: “শাম দেশের পাদ্রীরা সাইয়্যিদুনা
হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার ব্যাপারে জানতো। কেননা তাদের আসমানী কিতাবসমূহে
লিখা ছিলো যে, যখন হযরত ইয়াহইয়া আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত
জুব্বা মুবারক থেকে ফোঁটা ফোঁটা করে রক্ত মুবারক ঝরতে থাকবে, তখন বুঝতে হবে যে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান সাইয়্যিদুনা হযরত
যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন।”
সুবহানাল্লাহ! (নুযহাতুল মাজালিস ২/৭৫)
আল্লামা হুসাইন ইবনে মুহম্মদ ইবনে হাসান
দিয়ার বাকরী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিছাল শরীফ: ৯৬৬) তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘তারীখুল
খমীস শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেন,
وَكَانَ يَوْمَ وُلِدَ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ عَبْدُ اللهِ عَلَيْهِ
السَّلَامُ عَلِمَ بِـمَوْلِدِهٖ جَمِيْعُ اَحْبَارِ الشَّامِ وَذٰلِكَ اَنَّهٗ كَانَتْ
عِنْدَهُمْ جُبَّةُ صُوْفٍ ۢبَيْضَاءُ وَكَانَتِ الْـجُبَّةُ مَغْمُوْسَةً فِىْ دَمِ
حَضْرَتْ يَـحْيـَى بْنِ زَكَرِيَّا عَلَيْهِ السَّلَامُ وَكَانُوْا قَدْ وَجَدُوْا
فِـىْ كُتُبِهِمْ اِذَا رَاَيْتُمُ الْـجُبَّةَ الْبَيْضَاءَ وَالدَّمُ يَقْطُرُ مِنْهَا
فَاعْلَمُوْا اَنَّ اَبَا سَيِّـدِنَـا مُحَمَّدِ ۣ الْـمُصْطَفٰى صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ قَدْ وُلِدَ تِلْكَ اللَّيْلَةَ.
অর্থ: “যেই দিন সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ
আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, সেই দিনই উনার মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ
সম্পর্কে শাম দেশের সকল পাদ্রীরা জেনেছিলো। আর তা এই কারণে যে, তাদের নিকট একটি সাদা পশমী জুব্বা মুবারক ছিলো। উক্ত জুব্বা
মুবারকখানা হযরত ইয়াহইয়া ইবনে যাকারিয়া আলাইহিস সালাম উনার রক্ত মুবারক-এ সিক্ত হয়েছিলো।
তারা তাদের আসমানী কিতাবসমূহে পেয়েছিলো যে, যখন তোমরা দেখবে
উক্ত সাদা জুব্বা মুবারক থেকে ফোঁটা ফোঁটা করে রক্ত মুবারক ঝরছে, তখন তোমরা নিশ্চিতভাবে জানবে যে, ওই রাতেই সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান সাইয়্যিদুনা হযরত
যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন।”
সুবহানাল্লাহ! (তারীখুল খমীস শরীফ ১/৮২)
তাহলে এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান
মুবারক কতো বেমেছাল। সুবহানাল্লাহ! যেটা ভাষায় প্রকাশ করা কস্মিনকালেও সম্ভব নয়। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস
সালাম উনার সম্মানিত বিশেষ শান মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ
এই সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
وَكَانَ سَيِّدُنَـا حَضْرَتْ عَبْدُ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ
يُـخْبِرُ اَبَاهُ بِـمَا يَرٰى مِنَ الْعَجَائِبِ يَقُوْلُ يَا اَبَتِ اِنّـِــىْ
اِذَا خَرَجْتُ اِلـٰى بَطْحَاءِ مَكَّةَ وَصِرْتُ عَلـٰى جَبَلِ ثَبِيْرٍ خَرَجَ مِنْ
ظَهْرِىْ نُوْرَانِ اَخَذَ اَحَدُهُـمَا شَرْقَ الْاَرْضِ وَالْاٰخَرُ غَرْبَـهَا ثُـمَّ
اَنَّ ذَيْنِكَ النُّوْرَيْنِ يَسْتَدِيْرَانِ حَتّٰى يَصِيْرَا كَالسَّحَابَةِ ثُـمَّ
تَنْفَرِجُ لَـهُمَا السَّمَاءُ فَيَدْخُلَانِ فِيْهَا ثُـمَّ يَـخْرُجَانِ ثُـمَّ
يَرْجِعَانِ اِلـىَّ فِـىْ لَمْحَةٍ وَّاحِدَةٍ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস
সালাম তিনি যে সকল আশ্চর্যজনক ও বিস্ময়কর বিষয় মুবারক দেখতেন, সেগুলো তিনি উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতেন। একদা তিনি বলেন, হে আমার মহাসম্মানিত হযরত আব্বাজান আলাইহিস সালাম! আমি যখন সম্মানিত
মক্কা শরীফ উনার সমভূমি থেকে বের হয়ে ছাবীর পর্বতের উপর পৌঁছি, তখন আমার সম্মানিত পৃষ্ঠ মুবারক থেকে দুইখানা সম্মানিত নূর মুবারক
বের হয়ে একখানা সম্মানিত নূর মুবারক পৃথিবীর পূর্ব প্রান্ত ঘেরাও করে নেন, অপরখানা নূর মুবারক পৃথিবীর পশ্চিম প্রান্ত ঘেরাও করে নেন। অতঃপর
নিশ্চয়ই ওই সম্মানিত দুইখানা নূর মুবারক গোলাকার হয়ে ঘুরতে ঘুরতে মেঘের মতো হয়ে যান।
তারপর উক্ত সম্মানিত দুইখানা নূর মুবারক উনাদের জন্য আসমান ফেটে যায় এবং উক্ত সম্মানিত
দুইখানা নূর মুবারক আসমানের ভিতর প্রবেশ করেন। অতঃপর আবার এক নিমিষে আমার নিকট প্রত্যাবর্তন
করেন। অর্থাৎ পুনরায় আমার মাঝে অবস্থান মুবারক করেন।” সুবহানাল্লাহ! (তারীখুল খমীস
১/১৮২)
সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস
সালাম উনাকে কুল কায়িনাতের সকলেই চিনতো এবং বৃক্ষরাজী উনাকে সিজদা করতো
এই সম্পর্কে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ
আলাইহিস সালাম তিনি নিজেই উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট বর্ণনা করেন,
وَاِنّـِــىْ لَاَجْلِسُ فِـى الْـمَوْضِعِ فَاَسْـمَعُ فِيْهِ
مِنْ تَـحْتِـىْ سَلَامٌ عَلَيْكَ اَيُّهَا الْـمُسْتَوْدِعُ ظَهْرُهٗ نُوْرُ سَيِّدِنَا
مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاِنّـِــىْ لَاَجْلِسُ فِـى الْـمَوْضِعِ
الْيَابِسِ اَوْ تَـحْتَ الشَّجَرَةِ الْيَابِسَةِ فَتَخْضَرُ وتُلْقِىْ عَلَىَّ اَغْصَانَـهَا
فَاِذَا قُمْتُ وَتَرَكْـتُهَا عَادَتْ اِلـٰى مَا كَانَتْ فَقَالَ لَهٗ عَبْدُ الْـمُطَّلِبِ
عَلَيْهِ السَّلَامُ اَبْشِرْ يَا بُنَـىَّ فَاِنّـِـىْ اَرْجُوْ اَنْ يُّـخْرِجَ اللهُ
مِنْ ظَهْرِكَ الْـمُسْتَوْدَعَ الْمُكَرَّمَ فَاِنَّا قَدْ وَعَدْنَا ذٰلِكَ وَاِنّـِـىْ
رَاَيْتُ قَبْلَكَ رُؤْيَا كُلَّهَا تَدُلُّ عَلـٰى اَنَّهٗ يَـخْرُجُ مِنْ ظَهْرِكَ
اَكْرَمُ الْعَالَـمِيْنَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ: “নিশ্চয়ই আমি যখন কোনো স্থানে বসি, তখন আমি সেখানে শুনতে পাই, আমার নিচ থেকে কে যেন বলছেন, আপনার উপর সালাম।
হে মহাসম্মানিত সংরক্ষণকারী! আপনার মাঝে নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি সম্মানিত অবস্থান মুবারক করছেন। সুবহানাল্লাহ! আর আমি যখন কোনো শুষ্ক স্থান অথবা
শুকনো (বা মৃত) গাছের নিচে বসি, তখন উক্ত শুষ্ক
স্থানটা সজীব হয়ে যায় আর শুকনো বা মৃত গাছটা সতেজ হয়ে যায়, প্রাণ ফিরে পায় এবং তার ডালপালাগুলো আমার দিকে ঝুঁকিয়ে দেয়।
অর্থাৎ গাছ আমাকে সিজদা করে। সুবহানাল্লাহ! আর যখন আমি দাঁড়িয়ে যাই এবং তা ছেড়ে চলে
যাই,
তখন গাছ তার পূর্বের অবস্থায় ফিরে যায়। সুবহানাল্লাহ!
তখন সাইয়্যিদুনা হযরত জাদ্দু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার
মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে বলেন, হে আমার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম! আপনি সম্মানিত সুসংবাদ
মুবারক গ্রহণ করুন। সুবহানাল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি এটা আশা করছি যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনার থেকে পবিত্র মহাসম্মানিত আমানত মুবারক
তথা নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বের করবেন অর্থাৎ আপনি নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত
আব্বাজান আলাইহিস সালাম হবেন। সুবহানাল্লাহ! কেননা আমরা তথা আমি এবং আমার পূর্বপুরুষ
আলাইহিমুস সালাম আমরা সকলেই এই বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছিলাম। সুবহানাল্লাহ! আর নিশ্চয়ই
আমি আপনার পূর্বে (এই বিষয়ে) সমস্ত প্রকার নিদর্শন মুবারক দেখেছি। সুবহানাল্লাহ! যা
প্রমাণ করে যে, নিশ্চয়ই আপনার থেকেই তথা আপনার মাধ্যমেই
আকরামুল ‘আলামীন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখবেন। অর্থাৎ
আপনার মাধ্যমে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
তিনি মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করবেন। আপনি হবেন উনার মহাসম্মানিত
হযরত আব্বাজান আলাইহিস সালাম।” সুবহানাল্লাহ! (তারীখুল খমীস ১/১৮২)
সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস
সালাম উনাকে দেখলেই মুশরিকদের বড় বড় মূর্তিগুলো কান্না করতো
এই সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
وَكَانَ سَيِّدُنَـا حَضْرَتْ عَبْدُ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ
اَبُو النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كُلَّمَا اَصْبَحَ وَذَهَبَ لِيَدْخُلَ
عَلـٰى صَنَمِهِمُ الْاَكْبَرِ وَهُوَ اللَّاتُ وَالْعُزّٰى صَاحَ كَمَا تَصِيْحُ الْـهِرَّةُ
وَنَطَقَ وَهُوَ يَقُوْلُ مَا لَنَا وَلَكَ اَيُّهَا الْـمُسْتَوْدِعُ ظَهْرُهٗ نُوْرُ
سَيِّدِنَـا مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الَّذِىْ يَكُوْنُ هَلَاكُنَا
وَهَلَاكُ اَصْنَامِ الدُّنْيَا عَلـٰى يَدَيْهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ: “আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি যখনই সম্মানিত
কা’বা শরীফ উনার ভিতর প্রবেশ করতেন বা নিকটে যেতেন বা সম্মানিত কা’বা শরীফ উনার পাশ
দিয়ে অতিক্রম করতেন, তখনই মুশরিকদের বড় বড় মূর্তি
যেমন লাত, উয্যা এগুলো বিড়ালের ন্যায় চিৎকার করতো
এবং কথা বলতো। সেগুলো বলতো, আমাদের কী হলো? আর আপনার জন্য আমাদের এই করুণ অবস্থা, হে মহাসম্মানিত সংরক্ষণকারী! আপনার মাঝে নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহ
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অবস্থান মুবারক করছেন। উনার সম্মানিত হাত মুবারক-এ আমাদের
এবং পৃথিবীর সমস্ত মূর্তিগুলোর হালাকী ঘটবে। অর্থাৎ আপনার মহাসম্মানিত সুমহান আওলাদ
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদেরকেসহ
পৃথিবীর সমস্ত মূর্তিগুলো ধ্বংস করে দিবেন, নিশ্চিহ্ন করে দিবেন।”
সুবহানাল্লাহ! (তারীখুল খমীস ১/১৮২)
সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস
সালাম উনার নিকট আরব মহিলা উনাদের সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ হওয়ার প্রস্তাব
এবং উনার বেমেছাল পবিত্রতা মুবারক উনার
বহিঃপ্রকাশ
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা
সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
ইরশাদ মুবারক করেন, “আরবের হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ সম্ভ্রান্তশীলা মহিলা উনারা সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ
আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত কপাল মুবারক-এ ‘নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’
অবলোকন করে আশিকাহ হয়ে উনার সাথে সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ হওয়ার জন্য বেকারার-পেরেশান
হয়ে গিয়েছিলেন এবং উনার নিকট সরাসরি এই ব্যাপারে প্রস্তাবও দিয়েছিলেন। এই জন্য উনারা
উনাদের ধন-সম্পদসহ সমস্ত কিছু; এমনকি নিজেদের জীবন
কুরবান করে দেয়ার জন্য সদা প্রস্তুত ছিলেন। উনারা বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন।
যখনই উনারা উনাকে দেখতেন, তখনই উনারা উনাদের প্রস্তাব
পেশ করতেন, আরজি পেশ করতেন। ” সুবহানাল্লাহ!
মূলত, সীরাতগ্রন্থগুলোতে এই বিষয়ে অনেক ঘটনা মুবারক উল্লেখ রয়েছে।
যেমন ‘শরহুয যারক্বানী আলাল মাওয়াহিব শরীফ’
উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে,
سَيِّدُنَا حَضْرَتْ عَبْدُ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ لِاَنَّهٗ
كَانَ يَتَلَاْلَاُ نُوْرًا فِـىْ قُرَيْشٍ وَّكَانَ اَجْـمَلَهُمْ فَشَغَفَتْ بِهٖ
نِسَاءُهُمْ وَكِدْنَ اَنْ تَذْهَلَ عُقُوْلُـهُنَّ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস
সালাম উনার মাঝে মহাসম্মানিত নূর মুবারক তথা নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
জ্বলজ্বল করতেন এবং তিনি ছিলেন সম্মানিত কুরাইশ তথা সমগ্র কায়িনাতবাসীর মাঝে সর্বাধিক
সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারী। সুবহানাল্লাহ! ফলে সম্মানিত কুরাইশী মহিলাগণ উনারা উনার
সম্মানিত মুহব্বত মুবারক-এ অত্যন্ত কঠিনভাবে গরক্ব ছিলেন। সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ
আলাইহিস সালাম উনাকে দেখে বিস্ময়াভিভূত হয়ে সম্মানিত কুরাইশী মহিলাগণ উনাদের আক্বল-বুদ্ধি
লোপ পেয়ে যেতো। উনারা বেকারার পেরেশান হয়ে যেতেন এবং উনাকে পাওয়ার জন্য, উনার সম্মানিত ছোহবত মুবারক গ্রহণ করার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন
করতেন।” (শরহুয যারক্বানী ‘আলা মাওয়াহিব ১/২০৭, তারীখুল খমীস ১/৮২)
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে,
قَالَ اَهْلُ السِّيَرِ فَلَقِىَ سَيِّدُنَا حَضْرَتْ عَبْدُ
اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ فِـىْ زَمَنِهٖ مِنَ الـنِّـسَاءِ مَا لَقِىَ حَضْرَتْ يُوْسُفُ
عَلَيْهِ السَّلَامُ فِـىْ زَمَنِهٖ مِنِ امْرَاَةِ الْعَزِيْزِ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস
সালাম তিনি উনার যামানায় মহিলা উনাদের কর্তৃক তদ্রুপ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিলেন, যেরূপ পরিস্থির সম্মুখীন হয়েছিলেন হযরত ইউসূফ আলাইহিস সালাম
তিনি উনার যামানায় আযীযে মিছর উনার আহলিয়া তথা হযরত যুলায়খা আলাইহাস সালাম উনার কর্তৃক।”
(শরহুয যারক্বানী ‘আলা মাওয়াহিব ১/২০৭, তারীখুল খমীস ১/৮২)
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম, ইমামুল মুহাদ্দিছীন মিনাল আউওয়ালীন ইলাল
আখিরীন, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা
সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
ইরশাদ মুবারক করেন, “হযরত ইঊসুফ আলাইহিস সালাম
উনাকে পাওয়ার জন্য তো শুধু একজন তথা হযরত যুলায়খা আলাইহাস সালাম তিনি বেকারার পেরেশান
হয়ে গিয়েছিলেন এবং তিনি উনার সমস্ত কৌশল অবলম্বন করেছিলেন। কিন্তু সাইয়্যিদুনা হযরত
যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে পাওয়ার জন্য লক্ষ লক্ষ মহিলা বেকারার পেরেশান হয়ে
গিয়েছিলেন এবং উনারা উনাদের সমস্ত কৌশল অবলম্বন করেছিলেন। এমনকি তৎকালিন তথাকথিত পরাশক্তি
রোম-পারস্য শাসকদের পক্ষ থেকেও সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত
খিদমত মুবারক-এ তাদের মেয়েদের ব্যাপারে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু তিনি তা অস্বীকার
করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ! মূলত, সাইয়্যিদুনা হযরত
যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সৌন্দর্য মুবারক উনার সাথে অন্য কারো সৌন্দর্য মুবারকের
তুলনা হবে না। সুবহানাল্লাহ! তুলনা করাটা চরম আদবের খিলাফ হবে এবং কাট্টা কুফরী ও চিরজাহান্নামী
হওয়ার কারণ হবে। এখানে ওই সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফখানাই প্রযোজ্য, যেই সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ
رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَـحْنُ اَهْلُ بَيْتٍ لَّا يُقَاسُ
بِنَا اَحَدٌ.
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা
আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস
সালাম। আমাদের সাথে অন্য কারো তুলনা করা যাবে না।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
(দায়লামী ৪/২৮৩, জামি‘উল আহাদীছ ২২/২১৯, কানজুল ‘উম্মাল ১২/১০৪, জাম‘উল জাওয়ামি’ ১/২৪৯৫০, যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ
ফী মানাক্বিবে যাওইল কুরবা লিমুহিব্বে ত্ববারী ১/১৭, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/৭ ইত্যাদি)
আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু
বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে প্রথম স্তরে রয়েছেন সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ
আলাইহিস সালাম তিনি। তাহলে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত
সৌন্দর্য মুবারক এবং উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী
সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! এক কথায় তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক
তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
নন;
এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের
অধিকারী।” সুবহানাল্লাহ!
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
كَانَ سَيِّدُنَـا حَضْرَتْ عَبْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ
عَلَيْهِمَا السَّلَامُ اَحْسَنَ رَجُلٍ رُؤِىَ قَطُّ خَرَجَ يَوْمًا عَلـٰى نِسَاءِ
قُرَيْشٍ مُّـجْتَمِعَاتٍ فَقَالَتِ امْرَاَةٌ مِّنْـهُـنَّ اَيَّتُكُنَّ تَتَزَوَّجُ
بِـهٰذَا الْفَتٰى فَتَصْطَبُّ النُّوْرَ الَّذِىْ بَيْنَ عَيْنَيْهِ فاِنّـِـىْ اَرٰى
بَيْنَ عَيْنَيْهِ نُورًا وَّفِـىْ رِوَايَةٍ وَّكَانَ بَيْنَ عَيْنَيْهِ نُوْرٌ .
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস
সালাম তিনি ছিলেন মানুষের মাঝে সর্বাধিক সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারী। উনার মত এরূপ
সুদর্শন পুরুষ (কায়িনাতে) কখনও দেখা যেতো না। সুবহানাল্লাহ! একদা সাইয়্যিদুনা হযরত
যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত কুরাইশী মহিলা উনাদের একটি জামায়াতের নিকট
দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন মহিলা উনাদের মধ্য হতে একজন সবাইকে
সম্বোধন করে বললেন, হে মহিলাগণ! আপনাদের মধ্যে
কে আছেন যে এই সম্মানিত যুবক উনাকে সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ করবেন। (আপনারা কি চান
যে এই সম্মানিত যুবক তিনি আপনাদের কাউকে সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ করেন।) অতঃপর উনার
সম্মানিত কপাল মুবারক উনার মধ্যে যেই মহাসম্মানিত নূর মুবারক রয়েছেন, সেই মহাসম্মানিত নূর মুবারক উনাকে ধারণ করবেন। সুবহানাল্লাহ!
কেননা নিশ্চয়ই আমি উনার সম্মানিত কপাল মুবারক-এ মহাসম্মানিত নূর মুবারক তথা নূরে হাবীবী
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দেখতে পাচ্ছি। সুবহানাল্লাহ! অপর বর্ণনায় রয়েছে, সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত কপাল
মুবারক-এ তখন নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অবস্থান করছিলেন।” সুবহানাল্লাহ!
(সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১/৩২৫, দালায়িলুন নুবুওওয়াহ
লিল বাইহাক্বী ১/১৩৩, আবূ নাঈম, খছায়িছুল কুবরা ১/৭১, মুছান্নাফে আব্দুর
রাজ্জাক শরীফ ৫/৩১৩ ইত্যাদি)
মূলত, সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত কপাল মুবারক-এ দায়িমীভাবে
‘নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ উনাকে দেখা যেতো। সুবহানাল্লাহ! যার
কারণে এই ‘মহাসম্মানিত নূর মুবারক’ লাভ করার জন্য আরবের সকল সম্ভ্রান্তশীলা মহিলাগণ
উনারা উনাদের ধন-সম্পদসহ সমস্ত কিছু; এমনকি নিজেদের জীবনের
বিনিময়ে হলেও সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সাথে সম্মানিত নিসবতে
আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ হওয়ার জন্য সদা প্রস্তুত ছিলেন। অসংখ্য মহিলাগণ উনারা ধন-সম্পদের
দোহাই দিয়ে সরাসরি সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত নিসবতে
আযীম শরীফ উনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
সীরাতগ্রন্থগুলোতে এই বিষয়ে অনেক ওয়াকেয়া
মুবারক উল্লেখ রয়েছে। এক দিনের ঘটনা। ফাতিমা বিনতে র্মুর নামক এক ইহুদী মহিলা যিনি
সম্মানিত তাওরাত শরীফ, ইনযীল শরীফ তথা পূর্ববর্তী
আসমানী কিতাবে অভিজ্ঞা ছিলেন। তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার
সম্মানিত কপাল মুবারক-এ ‘নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ দেখে সেই মহাসম্মানিত
নূর মুবারক নিজের মধ্যে পাওয়ার জন্য, সাইয়্যিদুনা হযরত
যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত ছোহবত মুবারক লাভের জন্য উনাকে প্রস্তাব পেশ
করে বললেন যে, যদি আপনি এখন আমার সঙ্গে অবস্থান মুবারক
করেন,
তাহলে আমি আপনাকে একশত উট হাদিয়া করবো। যেমন, এই সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
قَدْ قَرَاَتِ الْكُتُبَ يُقَالُ لَـهَا فَاطِمَةُ بِنْتُ مُـرِّۣ
الْـخَثْعَمِيَّةُ فَرَاَتْ نُوْرَ النُّبُوَّةِ فِـىْ وَجْهِ سَيِّدِنَـا حَضْرَتْ
عَبْدِ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَقَالَتْ يَا فَتٰى هَلْ لَّكَ اَنْ تَقَعَ عَلَىَّ
الْاٰنَ وَاُعْطِيْكَ مِائَةً مِّـنَ الْاِبِلِ. فَقَالَ سَيِّدُنَـا حَضْرَتْ عَبْدُ
اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ:
اَمَّا الْـحَرَامُ فَالْمَمَاتُ دُوْنَهْ ... وَالْـحِلُّ لَا
حِلٌّ فَاَسْتَبِيْنَهْ
فَكَيْفَ بِالْاَمْرِ الَّذِىْ تَبْغِيْنَهْ ... يَـحْمِى الْكَرِيْـمُ
عِرْضَهٗ وَدِيْنَهْ.
অর্থ: “তিনি পূর্ববর্তী আসমানী কিতাব পড়েছেন। উনাকে
ফাতিমা বিনতে র্মুর খছ‘আমিইয়্যাহ বলা হতো। তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস
সালাম উনার সম্মানিত কপাল মুবারক-এ ‘মহাসম্মানিত নূরুন নুবুওওয়াহ মুবারক তথা নূরে হাবীবী
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ দেখতে পেলেন। অতঃপর উক্ত মহিলা তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত
যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, হে মহাসম্মানিত যুবক! আপনি কি এখন আমার সাথে অবস্থান মুবারক
করবেন?
তাহলে আমি আপনাকে একশত উট হাদিয়া মুবারক করবো।
জবাবে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস
সালাম তিনি বললেন,
اَمَّا الْـحَرَامُ فَالْمَمَاتُ دُوْنَهْ ... وَالْـحِلُّ لَا
حِلٌّ فَاَسْتَبِيْنَهْ
فَكَيْفَ بِالْاَمْرِ الَّذِىْ تَبْغِيْنَهْ ... يَـحْمِى الْكَرِيْـمُ
عِرْضَهٗ وَدِيْنَهْ
অর্থ: “এতো হারাম! আর হারাম গ্রহণ অপেক্ষা
মৃত্যুই শ্রেয়। আমি তো বৈধ সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ উনার সন্ধান করছি। আর এমন কাজ
মোটেও হালাল নয়, যা প্রকাশ করা যায় না। কিভাবে আমি আপনার
আহ্বানে সাড়া দিবো? যে অবৈধ কাজে আপনি আগ্রহী
তা আমার দ্বারা কস্মিনকালেও সম্ভব নয়। সম্ভ্রান্ত মানুষ তো নিজের মান-সম্মান ও দ্বীন
রক্ষা করেন।” সুবহানাল্লাহ! (বিদায়াহ-নিহায়াহ, সীরাতুল মুস্তাফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস
সালাম উনার এই জবাব মুবারক উনার থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, তিনি কত বেমেছাল পবিত্র ছিলেন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে
উনার কতো বেমেছাল সম্মানিত তায়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক ছিলো। সুবহানাল্লাহ! যার কারণে
তিনি লক্ষ লক্ষ মহিলা উনাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। অথচ এটা ছিলো আইয়ামে জাহিলিয়াতের
যুগ। মানুষ হালাল-হারাম বিবেচনা করতো না এবং ব্যভিচারে-পাপাচারে লিপ্ত হওয়া তাদের জন্য
একটা স্বাভাবিক বিষয় ছিলো। অন্যদিকে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি
ছিলেন কুরাইশ উনাদের সাইয়্যিদ, সাইয়্যিদুনা হযরত
আব্দুল মুত্ত্বালিব আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
তারপরেও তিনি স্পষ্ট ভাষায় অত্যন্ত শক্তভাবে জবাব দিয়ে দিলেন যে,
اَمَّا الْـحَرَامُ فَالْمَمَاتُ دُوْنَهْ ... وَالْـحِلُّ لَا
حِلٌّ فَاَسْتَبِيْنَهْ
فَكَيْفَ بِالْاَمْرِ الَّذِىْ تَبْغِيْنَهْ ... يَـحْمِى الْكَرِيْـمُ
عِرْضَهٗ وَدِيْنَهْ
অর্থ: “এতো হারাম! আর হারাম গ্রহণ অপেক্ষা
মৃত্যুই শ্রেয়। আমি তো বৈধ সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ উনার সন্ধান করছি। আর এমন কাজ
মোটেও হালাল নয়, যা প্রকাশ করা যায় না। কিভাবে আমি আপনার
আহ্বানে সাড়া দিবো? যে অবৈধ কাজে আপনি আগ্রহী
তা আমার দ্বারা কস্মিনকালেও সম্ভব নয়। সম্ভ্রান্ত মানুষ তো নিজের মান-সম্মান ও দ্বীন
রক্ষা করেন।” সুবহানাল্লাহ!
তাহলে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম
তিনি কতো বেমেছাল পবিত্রতা মুবারক উনার অধিকারী ছিলেন, তা আর বলার অপেক্ষাই রাখেন না। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি উনার জবাবে, এটাও বলেছেন যে,
يَـحْمِى الْكَرِيْـمُ عِرْضَهٗ وَدِيْنَهْ
অর্থ: “সম্ভ্রান্ত মানুষ তো নিজের মান-সম্মান
ও দ্বীন রক্ষা করেন।” সুবহানাল্লাহ!
তিনি উনার এই সম্মানিত বাক্য মুবারক উনার
দ্বারা এটাই প্রমাণ করে দিলেন যে, তিনি একটি সম্মানিত
দ্বীন উনার উপর রয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! আর সেই সম্মানিত দ্বীন মুবারক হচ্ছেন ‘দ্বীনে
হানীফ’। সুবহানাল্লাহ!
আর প্রথমে যে তিনি বললেন,
اَمَّا الْـحَرَامُ فَالْمَمَاتُ دُوْنَهْ
অর্থ: “এতো হারাম! আর হারাম গ্রহণ অপেক্ষা
মৃত্যুই শ্রেয়।”
তিনি এই কথা মুবারক দ্বারা এটাই প্রমাণ
করে দিলেন যে, তিনি হারাম গ্রহণ করার চেয়ে মৃত্যুকে উত্তম
মনে করেন। অর্থাৎ তিনি এটাই স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, হারাম থেকে বেঁচে থাকার জন্য যদি উনাকে বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করতে হয়, তাহলে তিনি সেটাই করবেন। তারপরেও তিনি কস্মিনকালেও হারাম গ্রহণ
করবেন না। সুবহানাল্লাহ!
উনার এই কথা মুবারক দ্বারা স্পষ্ট হয়ে
যায় যে, তিনি কতো বেমেছাল পবিত্রতা মুবারক উনার
অধিকারী ছিলেন এবং সম্মানিত দ্বীন ও সম্মানিত ঈমান উনাদের উপর কতটুকু দায়িম-ক্বায়িম
ও ইস্তিক্বামাত ছিলেন। যার কোনো মেছাল নেই। সুবহানাল্লাহ!
তারপরেও কিভাবে উলামায়ে ‘সূ’রা, গ- মূর্খরা বলতে পারে যে, সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি ঈমানদার ছিলেন না। না‘ঊযুবিল্লাহ!
না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! তিনি কুফরীর মধ্যে ইন্তেকাল করেছেন। না‘ঊযুবিল্লাহ!
না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! তিনি জাহান্নামী। না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ!
মূলত, যারা সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার ব্যাপারে এরূপ চূ-চেরা, ক্বীল-ক্বাল করে, কুফরী মূলক বক্তব্য
পেশ করবে, সম্মানিত শরীয়ত মুবারক উনার ফতওয়া অনুযায়ী
তারা সবচেয়ে বড় কাট্টা কাফির, চিরজাহান্নামী, চির মাল‘ঊন। তারা যদি মুসলমান বা ঈমানদার দাবি করে, তাহলে তাদের উপর মুরতাদের হুকুম বর্তাবে এবং মুরতাদের শাস্তিও
বর্তাবে এবং তাদের প্রাপ্য হলো চির লা’নত ও চির জাহান্নাম। আর যদি কাফির হয়, তাহলে তারা তাদের কুফরীকে আরো বৃদ্ধি করলো। তাদের শাস্তিও মৃত্যুদ-।
তাদেরও প্রাপ্য হলো চির লা’নত ও চির জাহান্নাম। তারা ইবলিসের ন্যায়; বরং ইবলিসের চেয়েও চরম মাল‘ঊন। তাদের প্রত্যেককেই লা’নাতুল্লাহি
আলাইহি বলা ফরয, ফরয এবং ফরয।
সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস
সালাম উনাকে আহাল হিসেবে না পাওয়ার কারণে দুঃখ-অনুতাপে দুই শত কুরাইশী মহিলা উনাদের
ইন্তেকাল
হযরত ইমাম আল্লামা আবূ সা’দ আব্দুল মালিক
ইবনে মুহম্মদ ইবনে ইবরাহীম নীশাপুরী খরকূশী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিছাল শরীফ: ৪০৯ হিজরী)
তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘শরফুল মুস্ত¡ফা শরীফ’ উনার মধ্যে
উল্লেখ করেন,
فَلَمَّا ابْتَنٰى بِـهَا سَيِّدُنَـا حَضْرَتْ عَبْدُ اللهِ
بْنُ عَبْدِ الْـمُطَّلِبِ عَلَيْهِمَا السَّلَامُ مَرِضَ نِسَاءُ قُرَيْشٍ وَّمَاتَ
مِنْهُنَّ مِائَتَا امْرَاَةٍ اَسِفًا عَلـٰى سَيِّدِنَـا حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ
عَبْدِ الْـمُطَّلِبِ عَلَيْهِمَا السَّلَامُ.
অর্থ: “যখন সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ
আলাইহিস সালাম উনার সাথে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার আযীমুশ শান সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হয়, তখন কুরাইশ বংশীয় সমস্ত মহিলা উনারা অসুস্থ হয়ে পড়েন। এমনকি
সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে (আহাল হিসেবে) না পাওয়ার দুঃখ-অনুতাপে
দুইশত কুরাইশী মহিলা ইন্তেকাল করেন।” সুবহানাল্লাহ! (শরফুল মুস্ত¡ফা শরীফ ১/৩৪৭)
আবূ আব্দিল্লাহ মুহম্মদ ইবনে আব্দুল বাক্বী
ইবনে ইঊসুফ ইবনে আহমদ ইবনে শিহাবুদ্দীন ইবনে মুহম্মদ যারক্বানী মালিকী রহমতুল্লাহি
আলাইহি তিনি (বিছাল শরীফ : ১১২২ হিজরী শরীফ) উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘শরহুয যারক্বানী
আলাল মাওয়াহিবিল লাদুন্নিয়্যাহ বিল মানহিল মুহম্মদিয়্যাহ শরীফ উনার ১ম খ-ের ১৯৩ পৃষ্ঠায়’
উল্লেখ করেন,
وَقَدْ رُوِىَ عَنْ سَيِّدِنَـا حَضْرَتْ اَلْعَبَّاسِ عَلَيْهِ
السَّلَامُ اَنَّهٗ لَـمَّا بَنـٰى سَيِّدُنَا حَضْرَتْ عَبْدُ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ
بِسَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اٰمِنَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ اَحْصَوْا مِائَتَىِ امْرَاَةٍ
مِّنْۢ بَنِـىْ مَـخْزُوْمٍ وَّبَنِـىْ عَبْدِ مَنَافٍ مُّتـْنَ وَلَـمْ يَتَزَوَّجْنَ
اَسِفًا عَلـٰى مَا فَاتَـهُنَّ مِنْ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ
وَاَنَّهٗ لَـمْ تَبْقَ امْرَاَةٌ فِـىْ قُرَيْشٍ اِلَّا مَرِضَتْ لَيْلَةً دَخَلَ
سَيِّدُنَا حَضْرَتْ عَبْدُ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ بِسَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اٰمِنَةَ
عَلَيْهَا السَّلَامُ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস আলাইহিস
সালাম উনার থেকে বর্ণিত রয়েছে। যখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার আযীমুশ
শান সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন গণনা করে দেখা গেছে যে, বনূ মাখযূম এবং
বনূ আবদে মানাফ এই দুই সম্প্রদায় থেকে দুইশত মহিলা দুঃখ-অনুতাপে (হার্ট ফেইল করে) ইন্তেকাল
করেন। কারণ উনারা সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সাথে সম্মানিত নিসবতে
আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ হতে না পেরে এক মহাসম্মানিত নিয়ামত মুবারক হাতছাড়া করেছেন। (অর্থাৎ
উনারা নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে লাভ করতে পারেননি।) আর যেই
রাত সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিশেষ ছোহবত মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক নিয়েছেন, সেই রাতে কুরাইশ বংশীয় সকল মহিলাগণ উনারা অসুস্থ হয়ে পড়েন।”
‘তারীখুল খমীস শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে,
فَلَيْلَةً ۢبَنـٰى سَيِّدُنَـا حَضْرَتْ عَبْدُ اللهِ عَلَيْهِ
السَّلَامُ بِـهَا لَـمْ تَبْقَ امْرَاَةٌ فِـىْ قُرَيْشٍ اِلَّا مَرِضَتْ قَالَ حَضْرَتْ
عَبْدُ اللهِ بْنُ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ عَنْ اَبِيْهِ سَيِّدِنَا
حَضْرَتْ عَبَّاسٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ اَنَّ لَيْلَةً ۢبَنـٰى سَيِّدُنَا حَضْرَتْ
عَبْدُ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ بِسَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اٰمِنَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ
اَحْصَيْنَا مِائَتَىِ امْرَاَةٍ مّـِنْۢ بَنِـىْ مَـخْزُوْمٍ وَّعَبْدِ شَـمْسٍ وَّعَبْدِ
مَنَافٍ مُّتْـنَ وَخَرَجْنَ مِنَ الدُّنْيَا وَلَـمْ يَتَزَوَّجْنَ اَسِفًا عَلـٰى
مَا فَاتَـهُنَّ مِنْ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ عَلَيْهِ السَّلَامُ.
অর্থ: “যেই রাতে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু
রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ
আলাইহিস সালাম উনার আযীমুশ শান সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ প্রতিষ্ঠিত হয়, সেই রাতে কুরাইশ বংশীয় সমস্ত মহিলাগণ উনারা অসুস্থ হয়ে পড়েন।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি উনার পিতা সাইয়্যিদুনা
হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণনা করেন, যেই রাতে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার সাথে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার আযীমুশ শান সম্মানিত নিসবতে
আযীম শরীফ প্রতিষ্ঠিত হয়, আমরা গণনা করেছি বনূ মাখযূম, বনূ আবদে শামস এবং বনূ আবদে মানাফ গোত্র থেকে দুই শত মহিলা ইন্তেকাল
করেছেন, দুনিয়ার যমীন থেকে বিদায় নিয়েছেন। এই দুঃখ-অনুতাপে
যে,
উনারা সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার
সাথে সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ হতে না পেরে এক বিশেষ সম্মানিত নিয়ামত মুবারক
হাতছাড়া করেছেন। (অর্থাৎ উনারা নূরে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে লাভ
করতে পারেননি।)” (তারীখুল খমীস শরীফ ১/১৮৪-১৮৫)
এখন বলার বিষয় হচ্ছে দুই বা তিন গোত্র
থেকে যদি দুই শত মহিলা ইন্তেকাল করেন, তাহলে অন্যান্য
গোত্র এবং সারা পৃথিবী থেকে কতো মহিলা ইন্তেকাল করেছেন, সেটা চিন্তা-ফিকিরের বিষয়। সুবহানাল্লাহ!
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম, ছাহিবু ইলমিল আউওয়ালি ওয়াল ইলমিল আখিরি, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ
হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সেই বিষয়টিই স্পষ্ট করে দিয়ে ইরশাদ
মুবারক করেছেন, “কিতাবে যদিও বলা হয়েছে যে, দুই শত মহিলা ইন্তেকাল করেছেন, প্রকৃতপক্ষে হাজার হাজার মহিলা ইন্তেকাল করেছেন এবং লক্ষ লক্ষ
মহিলা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।” সুবহানাল্লাহ!
তাহলে এখান থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি কতো বেমেছাল
সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারী ছিলেন এবং তিনি সারা পৃথিবীতে কতো বেমেছাল সম্মান মুবারক
উনার অধিকারী ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
মূলত, পৃথিবীর ইতিহাসে এটাই একটি বিরল ঘটনা মুবারক যে, একজনের সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ হওয়ার পর উনাকে না পাওয়ার কারণে লক্ষ লক্ষ মহিলা
অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এবং হাজার হাজার মহিলা ইন্তেকাল করেছেন। প্রকৃতপক্ষে এই ঘটনা মুবারক
দ্বারা মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত জিন-ইনসান ও তামাম কায়িনাতবাসীকে এই বিষয়টিই স্পষ্টভাবে
শিক্ষা দিয়েছেন যে, সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ
আলাইহিস সালাম তিনি কায়িনাতের বুকে একক খুছূছিয়াত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক উনার অধিকারী।
সুবহানাল্লাহ! উনার সাথে সৃষ্টি জগতের কারো তুলনা করা যাবে না। সুবহানাল্লাহ! এক কথায়
তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
নন;
এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনার
অধিকারী। সুবহানাল্লাহ!
No comments