সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক পাঠ করার, আলোচনা করার এবং উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করার গুরুত্ব, তাৎপর্য ও বেমেছাল ফযীলত
সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে
ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
اِنَّ ذِكْرَ الصَّالِـحِيْنَ تَنْزِلُ الرَّحْـمَـَةُ.
অর্থ: “নিশ্চয়ই ওলীআল্লাহগণ উনাদের আলোচনা
মুবারক করলে সম্মানিত রহমত মুবারক নাযিল হয়।” সুবহানাল্লাহ্! (ইহ্ইয়াউ ‘উলূমিদ্দীন, ফাদ্বাইলে আশারাহ লিযামাখশারী, কাশফুল খফা)
এখন বলার বিষয় যে, যদি ওলীআল্লাহ উনাদের আলোচনা মুবারক করলে সম্মানিত রহমত মুবারক
নাযিল হয়, তাহলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আব্বাজান আলাইহিস সালাম
উনার সম্মানিত সাওয়ানেহ ‘উমরী মুবারক আলোচনা করলে, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করলে কতো সীমাহীন রহমত মুবারক বর্ষিত হবে, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর
চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! কেননা, উনার সম্মানার্থে, উনাকে মুহব্বত মুবারক করেই
মানুষ ওলীআল্লাহ হয়ে থাকেন। সেই ওলীআল্লাহ উনাদের আলোচনা করলে যদি সম্মানিত রহমত মুবারক
নাযিল হয়, তাহলে যিনি সম্মানিত রহমত মুবারক উনার
মালিক,
রহমতুল্লিল ‘আলামীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত
হযরত আব্বাজান আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত সাওয়ানেহ ‘উমরী মুবারক আলোচনা করলে, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করলে কি পরিমাণ সম্মানিত রহমত, বরকত, সাকীনা, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক বর্ষিত হবে, তা কেউ কস্মিনকালেও ভাষা দিয়ে প্রকাশ করতে পারবে না। সুবহানাল্লাহ!
প্রকৃত কথা হলো, যারা সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত
সাওয়ানেহ ‘উমরী মুবারক আলোচনা করবে, পাঠ করবে, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করবে, তারা মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস
সালাম উনাদের আখাছ্ছুল খাছ সম্মানিত মুহব্বত-মা’রিফত, নিসবত-কুরবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি
মুবারক হাছিল করবে। সুবহানাল্লাহ!
মাওলানা জালালুদ্দীন রূমী রহমতুল্লাহি
আলাইহি উনার লিখিত বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘মছনবী শরীফ’ উনার ফযীলত বর্ণনা করতে যেয়ে হযরত
আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেছেন, “যারা ‘মছনবী শরীফ’ পাঠ করবে, তারা ওলীউল্লাহ
না হলেও ‘মছনবী শরীফ’ পাঠ করা অবস্থায় তাদের নামগুলো ওলীউল্লাহ উনাদের দফতরে লিখা থাকবে।”
সুবহানাল্লাহ!
আর দ্বিতীয় হাজারের মুজাদ্দিদ হযরত মুজাদ্দিদে
আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘মাকতূবাত শরীফ’ উনার ব্যাপারে
বলেছেন, “কেউ যদি উনার ‘মাকতূবাত শরীফ’ পাঠ করে, ‘মাকতূবাত শরীফ’ পাঠ করা অবস্থায় নবী না হওয়া সত্ত্বেও তার নাম
‘সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক’ উনার দফতরে লিখা হয়।” সুবহানাল্লাহ!
যদি তাই হয়, তাহলে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত
শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক আলোচনা করলে, পাঠ করলে, উনার সম্মানিত সাওয়ানেহ
‘উমরী মুবারক আলোচনা করলে, পাঠ করলে, বান্দা-বান্দী, উম্মতের নাম কোন
ত্ববকায় লিখা থাকবে, সেটা চিন্তা-ফিকির করতে হবে।
সুবহানাল্লাহ! মূলত, তাদের নাম তখন সম্মানিত রিসালত
মুবারক উনার তবক্বায় লিখা থাকবে। সুবহানাল্লাহ!
আর যদি কেউ সম্মানিত মুহব্বত মুবারক উনার
সাথে সাইয়্যিদুনা হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান
মুবারক আলোচনা করে, পাঠ করে, উনার সম্মানিত সাওয়ানেহ ‘উমরী মুবারক আলোচনা করে, পাঠ করে, তাহলে অবশ্য অবশ্যই
তার উপর জাহান্নাম হারাম হয়ে সম্মানিত জান্নাত মুবারক ওয়াজিব হয়ে যাবে। সুবহানাল্লাহ!
শুধু তাই নয়, সেই ব্যক্তি সর্বোচ্চ সম্মানিত জান্নাত
মুবারক-এ স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু
বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে আবাদুল আবাদের তরে অবস্থান মুবারক করবে। সুবহানাল্লাহ!
এতে বিন্দু থেকে বিন্দুতমও সন্দেহের অবকাশ নেই। কেননা, সম্মানিত ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ
رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ اَحَبَّ سُنَّتِـىْ فَقَدْ اَحَبَّـنِـىْ
وَمَنْ اَحَبَّنِـىْ كَانَ مَعِـىَ فِـى الْـجَنَّةِ.
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি আমার কোনো একখানা সম্মানিত সুন্নত মুবারক উনাকে মুহব্বত
করলেন,
তিনি মূলত, আমাকেই মুহব্বত
করলেন। আর যিনি আমাকে মুহব্বত করলেন, তিনি মূলত, আমার সাথেই সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ অবস্থান মুবারক করবেন।”
সুবহানাল্লাহ! (তুহফাতুল আহওয়াযী বিশরহি জামিয়িত তিরমিযী, জামি‘উল উছূল ফী আহাদীছির রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বওয়া‘য়িদুত তাহদীছ, শরহুল বুখারী, তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ, মিরক্বাত শরীফ)
এখন বলার বিষয় হচ্ছে, একখানা সম্মানিত সুন্নত মুবারক উনাকে মুহব্বত করলে যদি নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সম্মানিত
জান্নাত মুবারক-এ অবস্থান করা যায়, তাহলে নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আব্বাজান
আলাইহিস সালাম তিনি তো হচ্ছেন সমস্ত সম্মানিত সুন্নত মুবারক উনাদের মালিক। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে উনাকে যারা মুহব্বত মুবারক করবে, তাদের ফায়ছালা কী
হবে?
তারা কার সাথে, কোন সম্মানিত জান্নাত
মুবারক-এ অবস্থান করবে? মূলত, অবশ্য অবশ্যই ওই সকল ব্যক্তিরা স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে সর্বোচ্চ সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ
চিরস্থায়ীভাবে অবস্থান করবে এবং উনাদের মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক ও জিয়ারত মুবারক-এ
আবাদুল আবাদের তরে মশগূল থাকবে। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, তারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার আখাছ্ছুল খাছ উম্মত হিসেবে বিবেচিত হবে এবং স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার ওই সকল উম্মত উনাদেরকে ইহকাল ও
পরকালে দায়িমীভাবে সম্মানিত শাফায়াত মুবারক করবেন, উনার আখাছ্ছুল খাছ বিশেষ নেক দৃষ্টি মুবারক, মুহব্বত-মা’রিফত, নিসবত-কুরবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক দান করবেন। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম
মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে কবূল করুন। আমীন!
No comments